Ajker Patrika

এনবিআরের অভিযান

বেনজীরের রিসোর্টে ‘বিশাল অঙ্কের’ কর ফাঁকির তথ্য

# ‘বিশাল’ অঙ্কের করফাঁকি—সিআইসি

# প্রতিবেদনের পর ব্যবস্থা নেবে আয়কর অফিস

# প্রয়োজনে মামলাও করা হবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ৪৩
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে অভিযান চালিয়েছে রাজস্ব গোয়েন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে অভিযান চালিয়েছে রাজস্ব গোয়েন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে অভিযান চালিয়েছে রাজস্ব গোয়েন্দারা। অভিযানের বড় অঙ্কের করফাঁকির তথ্য মিলেছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। আজ মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) পরিচালক মো. তারিক ইকবার ও ওয়াকিল আহমদের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল গ্রামে ৬২১ বিঘা জমির ওপর নির্মিত বেনজীরের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের বিনিয়োগের নথি, আয়-ব্যয়ের যাবতীয় হিসাবপত্র ও কম্পিটারের হার্ডডিস্কসহ যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই করেছে সিআইসির দলটি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে বড় ধরনের করফাঁকির তথ্য পেয়েছে সিআইসি। তাঁরা সুনির্দিষ্ট অঙ্ক জানাতে রাজি হননি। তবে ফাঁকির পরিমাণকে ‘বিশাল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইসির উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রাথমিক তথ্য ইতোমধ্যে ছিল, যার ভিত্তিতে আমরা এখানে এসেছি। যেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাঁদের আয়কর নথি যাচাই করা হয়েছে। কী পরিমাণ তথ্য আয়কর নথিতে দেখানো হয়েছে, আর কী পরিমাণ দেখানো হয়নি, সেটাই আমরা এখানে যাচাই করেছি। যেটুকু নথি বা তথ্য আমাদের হাতে এসেছে, সেটুকুর ভিত্তিতে বলা যায়, যথেষ্ট পরিমাণ, বিশাল অঙ্কেরই কর ফাঁকির তথ্য আছে।’

এই রাজস্ব কর্মকর্তা যোগ করেন, ‘তারপরও সুনির্দিষ্ট হওয়ার জন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এখানে বেশ কিছু বিভাগ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন। এসি ল্যান্ড, পিডব্লিউডি, কৃষি ও মৎস্য বিভাগ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন। এসব বিভাগের কাছ থেকে আমাদের কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সব বিভাগ থেকে সুনির্দিষ্ট করে ভ্যালুয়েশন তথ্য পাওয়ার পরেই বলতে পারব, কর ফাঁকির পরিমাণ কত।’

পরবর্তী উদ্যোগ নিয়ে জানতে চাইলে সিআইসির উপপরিচালক ফজলে এলাহী বলেন, ‘কর ফাঁকির সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য আছে। কর ফাঁকির তথ্য আমরা রিপোর্ট করব; সংশ্লিষ্ট কর অফিসকে জানাব। কর অফিস সেটার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

কোনো মামলা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনে মামলার বিধান আছে। তথ্য দিয়ে কর ফাঁকি প্রতিষ্ঠিত করার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার সাপেক্ষে মামলা হবে।

গত বছর ৮ মে গভীর রাতে চুরির সময় বেনজীর আহমেদের রিসোর্টের ৬০০ কেজি মাছ জব্দ করা হয়। এরপরই আদালতের নির্দেশনায় বেনজিরের জব্দ করা সম্পত্তির রিসিভার নিয়োগ করা হয়।

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, গত ১৩ জুন থেকে পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সার্বিক তদারকি করছেন জেলা প্রশাসক ও গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ৬ সদস্যের তদারকি কমিটি। বর্তমানে তাদের তদারকিতে সাভানা পার্কে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

গত ১৫ ডিসেম্বর সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে চার মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় বেনজীর পরিবারের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে অভিযান চালিয়েছে রাজস্ব গোয়েন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে অভিযান চালিয়েছে রাজস্ব গোয়েন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

২০২৪ সালের ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ ও ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে।

এরপর ১৮ এপ্রিল দুদকের এক সভায় অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। পরে অনুসন্ধানে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও তিনটি বিও হিসাবের সন্ধান মেলে। আদালতের আদেশে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করে দুদক।

এপ্রিলে অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেনজীরের দেশ ছাড়েন। অভিযোগের বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরে দুই দফা তলব করলেও তাঁরা দুদকে আসেননি।

এছাড়াও গত ২ জুলাই বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠিয়েছিল দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগস্টের মাঝামাঝি আইনজীবীর মাধ্যমে পুলিশের সাবেক প্রধান ও তাঁর পরিবারের চার সদস্যের সম্পদ বিবরণী জমা দেন।

এর আগে গত ২৩ মে বেনজিরের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়াও ২৬ মে আদালত বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামের ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও গুলশানে ৪টি ফ্লাট জব্দের আদেশ দেন। সব মিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়। ইতোমধ্যে রিসিভারও নিয়োগ করা হয়েছে।

২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের আইজি ছিলেন বেনজীর আহমেদ। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র‍্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‍্যাব এবং র‍্যাবের সাবেক এবং চাকরিরত যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাঁদের মধ্যে বেনজীরও ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’

সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনবিআর কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, সতর্কবার্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’

জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল আরও ৫৭ হাজার টন গম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতাদের হাতে উপহার হস্তান্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতের সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটনের চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২৩-এ দেশজুড়ে ওয়ালটন পণ্য কিনে গ্রাহকেরা পাচ্ছেন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাইড বাই সাইড ফ্রিজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য ফ্রি ও নিশ্চিত উপহার। গত ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনে প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতার হাতে উপহারের পণ্য তুলে দিচ্ছে ওয়ালটন।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ালটন প্লাজা ও ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম থেকে ফ্রিজ ও টিভি কিনে ফ্রি পাওয়া সাইড বাই সাইড ফ্রিজ ও স্মার্ট টিভি ৯ ক্রেতার হাতে তুলে দিয়েছে ওয়ালটন। পণ্য ফ্রি পাওয়া ক্রেতারা হচ্ছেন—পটিয়ার সাজ্জাদ হোসেন, বাঁশখালীর রহিমা আক্তার, ফটিকছড়ির জহির উদ্দীন, রাউজানের অরুন কান্তি দাস, লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জের কবির হোসেন, মিরসরাইয়ের মো. আছলাম, রাঙামাটির যতিন চাকমা, দোহাজারীর জাকির হোসেন ও সীতাকুণ্ডের মো. জোবায়ের।

গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বন্দর নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সৌভাগ্যবান ক্রেতাদের হাতে উপহার তুলে দেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের চিফ ডিভিশনাল অফিসার ইমরোজ হায়দার খান।

উপহারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে চিত্রনায়ক আমিন খান বলেন, দেশের কোটি কোটি গ্রাহকের, ক্রেতার আস্থা ও ভালোবাসায়ই ওয়ালটন দেশের শীর্ষ ও টেক জায়ান্ট হয়ে উঠেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইলেকট্রনিকস খাতের আমদানিনির্ভরতা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়ে সাশ্রয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। সমৃদ্ধ হয়েছে দেশীয় শিল্প খাতের। দেশীয় অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে সবাইকে দেশীয় পণ্য ক্রয় ও ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি।

আমিন খান জানান, ওয়ালটনের গুণগতমানের পণ্য শুধু দেশীয় ক্রেতাদেরই নয়; বৈশ্বিক ক্রেতাদেরও আস্থা ও মন জয় করে নিতে সক্ষম হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য এখন বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে রপ্তানি ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বিশ্বের শতাধিক দেশে ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের টার্গেট নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন।

অনুষ্ঠানে সাধারণ ক্রেতাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উপহারের পণ্য তুলে দেওয়ায় ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানান বিজয়ীরা।

কর্মকর্তারা জানান, সিজন-২৩-এর আওতায় ক্রেতারা দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম কিংবা অনলাইনে ই-প্লাজা থেকে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন ও বিএলডিসি ফ্যান কেনার পর পণ্যটির ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। এরপর ক্রেতাদের মোবাইলে ওয়ালটন থেকে উপহার পাওয়ার এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি ওয়ালটনের ক্রেতাদের জন্য তৈরি ‘আমার আওয়াজ’ মোবাইল অ্যাপ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারী ক্রেতাদের জন্যও এবারের ক্যাম্পেইনে বাড়তি সুবিধা রয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের জন্য এই বিশেষ সুবিধা থাকছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত