Ajker Patrika

দেউলিয়া ঝুঁকিতে বিশ্বের ৭ অর্থনীতি, বাংলাদেশের পরিস্থিতি কী

আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ১৩
দেউলিয়া ঝুঁকিতে বিশ্বের ৭ অর্থনীতি, বাংলাদেশের পরিস্থিতি কী

জাতিসংঘের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ২০২২ সালে বলেছিলেন, ৫০টি দরিদ্র দেশ দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। দেউলিয়া হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে— উচ্চ মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি সংকট এবং ক্রমবর্ধমান ঋণের বোঝা। ইউএনডিপি প্রধান আচিম স্টেইনারের বিবৃতি আজও প্রাসঙ্গিক, কারণ বেশ কয়েকটি দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে, আবার অনেকেই দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। 

ভারতীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিএনবিসি টিভি১৮ দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে। এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। 

পাকিস্তান 
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পাকিস্তানকে আপাতত দেউলিয়া অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়েছে কিন্তু দেশটির অর্থনীতি এখনো ভঙ্গুর। ২০২৩ সালে আইএমএফের দেওয়া ৩ মার্কিন বিলিয়ন ডলারের ঋণসহায়তা দেশটিকে দেউলিয়া এড়াতে পারে, তবে রাজনৈতিক সংকটে থাকা দেশটির এ বছর আরও একটি ঋণসহায়তা প্রয়োজন। 

সর্বশেষ আইএমএফ ৭ বিলিয়ন ডলারের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সাহারা মরুভূমিতে এক বিন্দু জলের মতোই। কারণ দেশটির মোট আয়কর রাজস্বের অন্তত ৬০ শতাংশ পুরোনো ঋণ পরিশোধেই যাবে। ২০২৪ সালের মে মাসে আইএমএফ অনুমান করেছিল, ২০২৯ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের অন্তত ১২৩ বিলিয়ন ডলারের বাহ্যিক অর্থ সহায়তার প্রয়োজন হবে। দেশের জিডিপি ২০২২ সালে ৩৭৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৩-২৪ সালে ৩৭৪ দশমিক ৯০৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। 

অর্থনীতি নিম্নমুখী হওয়া সত্ত্বেও আগস্টে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ৯৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের আগে পাকিস্তানের জনগণকে আরও অর্থকষ্টের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। ২০২২ সালের এপ্রিলের পর প্রথমবারের মতো দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে উঠেছে, তবে এর মধ্যে আইএমএফের ১ বিলিয়ন ডলারের ট্রাঞ্চ রয়েছে। কিন্তু এই রিজার্ভ পাকিস্তানের তিন মাসের আমদানি ব্যয়ও মেটাতে পারবে না। 

শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কার মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ৫০ মিলিয়ন ডলারে নেমে এলে ২০২২ সালের এপ্রিলে ৮৩ বিলিয়ন ডলারের দেউলিয়ায় পড়ে দ্বীপরাষ্ট্রটি। তবে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে। দেশটির ফরেক্স রিজার্ভ এখন ৫ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। 

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি ছিল ৬৭ শতাংশ, যা ২০২৪ সালের আগস্টে কমে মাত্র ১ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। ২০১৭ সালে দেশটির জিডিপি প্রায় ৯৪ বিলিয়ন ছিল। কিন্তু সেটি ২০২৩ সালে হঠাৎ কমে ৮৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে নামে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুনে শ্রীলঙ্কার জিডিপি বেড়েছে। 

২০২২ এবং ২০২৩ সালে অর্থনীতি ৯ দশমিক ৫ শতাংশ সংকোচনের পরে স্থিতিশীল হয়েছে। যা হোক, ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য এবং ঋণের বাধ্যবাধকতার কারণে দেশটি স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরতে জটিলতার মধ্যে পড়তে পারে। দুই বছর আগে শ্রীলঙ্কার ঋণ খেলাপি হয়েছে। সেপ্টেম্বরে দেশটি ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পুনর্গঠনের জন্য ঋণদাতাদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। ঋণদাতারা চুক্তির অংশ হিসাবে ২৭ শতাংশ নেবে। 

বাংলাদেশ 
বাংলাদেশের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৬ বিলিয়ন ডলার, যা ২০০৮ সালের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের মতো বিশ্বব্যাপী রেটিং এজেন্সিগুলো বাংলাদেশকে ‘জাঙ্ক’ বা আস্তাকুঁড় হিসাবে চিহ্নিত করেছে। সর্বশেষ রাজনৈতিক সংকট ও ক্ষমতার পটপরিবর্তনের আগেও বাংলাদেশের ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের সক্ষমতা নিম্নগামী ছিল। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ৩২ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংক গত কয়েক বছরে টাকার অবমূল্যায়ন করেছে, কিন্তু এই পদক্ষেপ এখনো পর্যন্ত কোনো কাজে আসেনি। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ধারণা করছে, খাদ্যদ্রব্যর দাম বৃদ্ধির কারণে ২০২৫ সালে মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ঋণখেলাপি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকে তারল্য সংকটের আশঙ্কাও রয়েছে। এখনই কোনো ঋণ সংকট না থাকলেও অর্থনীতির অবনতি ঘটছে এবং এর দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। আইএমএফ অনুমোদিত ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কিছুটা শক্তি দিয়েছে, যা পরিশোধ করতে ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। 

ভেনেজুয়েলা 
ইতিহাসের এক সময়ে ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে ধনী দেশ ছিল ভেনেজুয়েলা। তবে নিকোলাস মাদুরোর নিয়ন্ত্রণমূলক শাসন ব্যবস্থায় দেশটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। দেশটি ২০১৭ সালে খেলাপি শুরু করে। বর্তমানে মোট ঋণ ১৫৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। জিডিপি ২০১২ সালে ৩৭২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন থেকে কমে ২০২৪ সালে ১০৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। 

মাদুরো চলতি বছরের জুলাই মাসে বিতর্কিত নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। এর প্রভাব পড়ে অর্থনীতির ওপর। দেশটির অর্থনীতি গত বছর ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল এবং এই বছর ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশটির এই অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা আংশিকভাবে দায়ী। তেলসমৃদ্ধ দেশটি ঋণ পুনর্গঠনের জন্যও আলোচনায় রয়েছে। 

ভেনেজুয়েলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, মুদ্রাস্ফীতি ক্রমহ্রাসমান হলেও দেশটির ৮২ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে। এক বছরের আগের তুলনায় দ্রব্যমূল্যর দাম ২৫ শতাংশ বেড়েছে। 

আর্জেন্টিনা 
দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি একবিংশ শতাব্দীতে এরই মধ্যে তিনবার ঋণখেলাপি করেছে। পাওনাদারদের কাছে আর্জেন্টিনার ৪০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পাওনা রয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালসহ অতীতে দেশটি বেশ কয়েকটি ঋণ পুনর্গঠন করেছে। প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলির সংস্কারকালে আট মাসে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি ৩০০ শতাংশ থেকে ২৩৬ শতাংশে নেমেছে। কিন্তু এটি এখনো স্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি হারের চেয়ে অনেক বেশি। দেশটির অর্থনীতিও ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করেছে। তবে দারিদ্র্যের মাত্রা ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। অক্সফোর্ড ইকোনমিকস বলছে, অনিশ্চিত অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ২০২৫ এবং ২০২৭ সালে আর্জেন্টিনার আবারও দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা ৭৫ শতাংশ। 

জাম্বিয়া
দক্ষিণ আফ্রিকার দেশটি ২০২০ সালে ইউরো বন্ড ঋণে খেলাপি করেছে। চলতি বছর ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন বাহ্যিক ঋণ পুনর্গঠনের জন্য প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে জাম্বিয়া। কিন্তু দেশটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। দেশটির আন্তর্জাতিক বকেয়া স্টক ২০২৩ সালের মধ্যে জিডিপির ২৬ শতাংশে পৌঁছেছে। আইএমএফের ভাষ্যমতে, এটি টেকসই নয়। এ ছাড়াও দেশটি এখনো কমপক্ষে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন বাণিজ্যিক ঋণ পুনর্গঠন করতে পারেনি। আইএমএফ বলছে, বাণিজ্যিক ঋণ পুনর্গঠনে ব্যর্থতা এবং ২০২৪ সালের ঋণ পুনর্গঠন চুক্তির কিছু ধারা জাম্বিয়াকে আরেকটি খেলাপির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। 

ঘানা
আফ্রিকার দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ বিলিয়ন ডলার, যা মোট জিডিপির ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ। দেশটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ঋণে খেলাপি করে অর্থনীতিকে সংকটে ফেলেছে। ঋণের খরচ ও মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। ঘানার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২০২৩ সালে ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। 

দেশটির অর্থনীতি এখন পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত জিডিপি বৃদ্ধির গড় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ ছিল। ২০২২ সাল থেকে মুদ্রাস্ফীতি সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। আইএমএফ বলছে, ২০২৩ সালের মে মাসে অনুমোদিত ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণসহায়তা দেশটির অর্থনীতিকে সাহায্য করেছে। সম্প্রতি ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পুনর্গঠন চুক্তিতে পৌঁছানোর পর দেশটির সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে মনে হচ্ছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তির অংশ হিসেবে ঋণদাতারা ঋণের ৪০ শতাংশ ছেড়ে দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আকাশপথে পণ্য পরিবহনে অফডক চান ব্যবসায়ীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ১০
গ্রাফিকস: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিকস: আজকের পত্রিকা

আকাশপথে আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থার দুর্বলতা নতুন করে সামনে এনেছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড। ওই ঘটনায় কয়েক দিনের জন্য কার্গো কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন। এই প্রেক্ষাপটে আকাশপথে পণ্য পরিবহনকে নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সংকটসহনীয় করতে বিমানবন্দরের বাইরে অফডকভিত্তিক এয়ার কার্গো ব্যবস্থা চালুর দাবি জোরালো হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রুত এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, অফডকভিত্তিক এয়ার কার্গো অপারেশন চালু না হলে যেকোনো সংকটে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

অফডক হলো বন্দর বা বিমানবন্দরের মূল এলাকার বাইরে অবস্থিত এমন নির্ধারিত স্থাপনা, যেখানে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের খালাস, সংরক্ষণ, পরীক্ষা ও হ্যান্ডলিং করা হয়। সহজভাবে বলা যায়, বন্দরের ভেতরে সব কাজ না করে বন্দরের বাইরে আলাদা জায়গায় কার্গোর কাজ করা, এটাই অফডক।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মতো আকাশপথেও অফডক ব্যবস্থা চালু করা যায় বলে মনে করেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিং সেবা মূলত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা খুবই সীমিত। অনেক সময় পণ্য খালাসে অতিরিক্ত দুই থেকে তিন দিন সময় লেগে যায়। এতে রপ্তানি ও আমদানি উভয় ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েন।

অফডক চালু হলে এ ধরনের জটিলতা থাকবে না জানিয়ে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এতে পণ্য খালাস দ্রুত হবে এবং সামগ্রিকভাবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও সহজ ও গতিশীল হবে।

অফডক দরকার কেন

সংশ্লিষ্টরা জানান, অফডক ব্যবস্থা চালু হলে বেসরকারি উদ্যোগে একাধিক অপারেটর থাকবে। ফলে কার্গো আমদানি-রপ্তানি পরিবহনে টার্মিনাল হ্যান্ডলিং, কার্গো হ্যান্ডলিং, স্ক্যানিং চার্জসহ অন্যান্য ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক বাজারব্যবস্থা সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে সেবার মানও বাড়বে।

তথ্যমতে, বর্তমানে আকাশপথে প্রতি কেজি পণ্য রপ্তানিতে প্রায় ২৬ টাকা সার্ভিস চার্জ নেয় বিমান বাংলাদেশ ও সিভিল এভিয়েশন। একই সেবা পেতে ব্যাংককে প্রতি কেজিতে ৬.৪২ টাকা, কলকাতায় ৪.৮৮ টাকা এবং দিল্লিতে ৬.১০ টাকা দিতে হয়। এতে করে আকাশপথে পণ্য পরিবহন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, দেশে এয়ার কার্গো অপারেশনে অফডক পদ্ধতি চালু হলে অধিকতর কার্গো নিরাপত্তার সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। ইলেকট্রনিক কার্গো ট্র্যাকিং সিস্টেম (ইসিটিএস) চালু হবে। ফলে সহজে কার্গোর অবস্থান জানা যাবে। দ্রুত পণ্য খালাসে সুবিধা পাবে এবং জট কমবে। ওষুধের কাঁচামাল, জরুরি গার্মেন্টস পণ্যের নমুনাসহ আনুষঙ্গিক পণ্য সহজে পরিবহন করা যাবে। এতে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ত্বরান্বিত হবে।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা এর সুফল ভোগ করতে পারবেন। বিশ্বের অনেক দেশে অফডক ব্যবস্থা চালু আছে। যেমন সিঙ্গাপুর, দুবাই, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, জাপান, ভারত, হংকং, ইউএসএ। সেখানে এই ব্যবস্থার ফলে কার্গো পরিবহনে সময়ের সাশ্রয় ও পণ্য খালাসে জটিলতা নেই বললেই চলে।

ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে অফডক ব্যবস্থা চালু আছে এবং তা সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। একই ধরনের ব্যবস্থা ঢাকার বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় চালু করা গেলে আকাশপথে পণ্য পরিবহন আরও সহজ হবে।

এদিকে এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন চেয়ে ২৩ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, ঢাকা বিমানবন্দর এবং এর আশপাশে অফডক সুবিধা চালু হলে আমদানি প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং রপ্তানির গতি বাড়বে। তবে অফডকের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কম খরচে ভালো সেবা নিশ্চিত করতে স্পষ্ট শর্ত থাকা প্রয়োজন।

বিজিএমইএ আরও জানিয়েছে, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তাই অফডক ব্যবস্থায় বিমানের সঙ্গে সমন্বয় ও চুক্তির বিষয়টি নীতিমালায় স্পষ্ট থাকা জরুরি।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, অফডক চালু হলে ডিএইচএল বা ফেডেক্সের মতো কুরিয়ার কোম্পানিগুলো বন্ড লাইসেন্স নিয়ে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করার পরে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে সরাসরি ডেলিভারি করতে পারবে। তখন আর বিমানের ওপর নির্ভর করতে হবে না। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

১০ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ‘এয়ার এক্সপ্রেস সার্ভিস ডেলিভারি’ বিষয়ক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ—বিডা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে এয়ার কার্গো কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) কাস্টমস ও মূল্য সংযোজন কর বিভাগ থেকে ‘এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) স্থাপন, ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, তদারকি ও কাস্টমস নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২৫ ’-এর খসড়াও প্রণয়ন করা হয়েছে।

এয়ার কার্গো অপারেটর’স স্টেশন নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে আইআরডি সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব বিধিমালা চূড়ান্ত করে তা বাস্তবায়ন করতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জন্য মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি তাদের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জন্য অ্যান্টি মানি লন্ডারিং (এএমএল) ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ (সিএফটি) সংক্রান্ত এক সচেতনতামূলক কর্মশালার আয়োজন করেছে। গত ২১ ডিসেম্বর ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মেহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্য এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

এএমএল ও সিএফটি কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণে পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকা এবং প্রাসঙ্গিক নিয়ন্ত্রক নির্দেশনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিই ছিল এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। কর্মশালায় আলোচিত প্রধান বিষয় ছিল—ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে এবং মানি লন্ডারিং তদারকিতে পরিচালনা পর্ষদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কর্তৃক বিভিন্ন সময় সিস্টেম চেক পরিদর্শন থেকে প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। দেশের সাম্প্রতিক মানি লন্ডারিং পরিস্থিতি এবং রিপোর্টিং সংস্থা হিসেবে ব্যাংকের করণীয়।

কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউর অতিরিক্ত পরিচালক রেজওয়ানুর রহমান ও যুগ্ম পরিচালক জুয়াইরিয়া হক।

এ ছাড়া ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. এবতাদুল ইসলাম, কাজী মো. মাহবুব কাশেম এফসিএ, মো. গোলাম মোস্তফা ও মুহাম্মদ মনজুরুল হক উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা, উপব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এই সচেতনতামূলক সেশনে অংশ নেন।

আইএফআইসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে এ ধরনের কর্মশালা নিয়মিত আয়োজন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএসআরএম স্টিলসের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ০৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশিকা অনুযায়ী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় শেয়ারহোল্ডাররা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ (ক্যাশ ডিভিডেন্ড) সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেছেন। কোম্পানির চেয়ারম্যান আলী হোসেন আকবরআলী এফসিএ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী এবং পরিচালকমণ্ডলীর প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়। শেয়ারহোল্ডাররা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য কোম্পানির পরিচালক পুনর্নিয়োগ এবং নিরীক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করেন।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহোসেন পরিচালকমণ্ডলীর বিবরণী উপস্থাপন করেন এবং কোম্পানির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অবহিত করেন।

বিপুলসংখ্যক শেয়ারহোল্ডার নিজ নিজ বিও (BO) আইডি ব্যবহার করে ওয়েব লিংকের মাধ্যমে এই ভার্চুয়াল সভায় সরাসরি অংশ নেন। নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণীসহ বিভিন্ন বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের প্রশ্নের উত্তর দেন কোম্পানি সচিব।

শেয়ারহোল্ডাররা তাঁদের মন্তব্যে কোম্পানির বর্তমান ব্যবস্থাপনা ও পরিচালকমণ্ডলীর প্রতি গভীর আস্থা ও নির্ভরতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সভায় কোম্পানির পরিচালকবৃন্দ, কোম্পানি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কোম্পানির ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রোজার আগে কমেছে খেজুরের আমদানি শুল্ক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩১
বিভিন্ন ধরনের খেজুরের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা। গতকাল রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা।
বিভিন্ন ধরনের খেজুরের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা। গতকাল রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা।

রমজান মাস উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে বড় ধরনের শুল্কছাড় দিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রোজার অন্যতম ইফতারসামগ্রী খেজুরের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে বলে আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে এনবিআর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে খেজুরের সরবরাহ ও বাজারমূল্য স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে খেজুর আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে এনবিআর। এই শুল্ক অব্যাহতি আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এর ফলে খেজুরের আমদানি বাড়বে এবং দামও কমবে বলে আশা করছেন এনবিআর কর্মকর্তারা।

গত বছরও রোজার আগে নভেম্বর মাসে আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ ও অগ্রিম আয়কর ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছিল।

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে সব ধরনের খেজুর আমদানিতে সব মিলিয়ে ৫৭ দশমিক ২০ শতাংশ শুল্ক-কর ছিল। এর মধ্যে আমদানি শুল্ক (সিডি) ২৫ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অগ্রিম কর ৫ শতাংশ ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩ শতাংশ।

এখন ১০ শতাংশ কমানোর ফলে মোট শুল্ক-কর ৪৭ দশমিক ২০ শতাংশে দাঁড়াল। তবে এই সার্কুলার এখনো এনবিআরের সার্ভারে যুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা। তিন দিন ছুটি থাকায় আগামী রোববারে নতুন সার্কুলারে পণ্য শুল্কায়ন শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

এ ছাড়া এই শুল্ক কামানোর ফলে প্রতি কেজি খেজুরের দাম কত কমতে পারে, এ বিষয়ে এখনই কোনো ধারণা দিতে পারেননি আমদানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, ১০ শতাংশ শুল্ক কমার ফলে দাম কিছুটা কমবে। তবে কতটুকু কমবে, তা শুল্কায়ন শুরু হলে বোঝা যাবে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমদানি শুল্ক কমানোর সঙ্গে সঙ্গে অগ্রিম কর ও রেগুলেটরি ডিউটি কমানোর দাবিও ছিল আমাদের। কিন্তু সরকার তা মানেনি। আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমানোর ফলে খেজুরের দাম সামান্য কমতে পারে। তবে এটি বাজারে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের খেজুর আমদানিতে মূল সমস্যা হলো ট্যারিফ হার বা শুল্কায়ন মূল্য। আমরা যে দামে আমদানি করি, শুল্ক ধরা হয় তার চেয়ে অনেক বেশি দামের ওপর। এতেই ট্যাক্সের হার বেড়ে যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত