Ajker Patrika

টিআইবির গবেষণা

ঘুষ, চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণ আদায়ের নিরাপদ মাধ্যম হয়ে উঠেছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঘুষ, চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণ আদায়ের নিরাপদ মাধ্যম হয়ে উঠেছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা

ঘুষ, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণের টাকা লেনদেনে এমএফএস (মোবাইল আর্থিক সেবা) সুবিধাজনক মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

‘মোবাইল আর্থিক সেবা খাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়, মোবাইল আর্থিক সেবা ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনা ক্রমেই উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।

এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যকর ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ ব্যবস্থা অনুপস্থিত থাকায় প্রতারক চক্র সহজেই গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এমএফএসপিতে কর্মরত বা সাবেক কর্মী, এজেন্ট ও পরিবেশকেরা অর্থের বিনিময়ে গ্রাহকের হিসাব সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য প্রতারক ও জালিয়াতি চক্রের কাছে সরবরাহ করে, কিংবা নিজেরাই এমন চক্রের অংশ হিসেবে জালিয়াতি ও প্রতারণামূলক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে। কিছু ক্ষেত্রে এজেন্ট পয়েন্ট থেকে কৌশলে লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে এসব চক্র গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে।

অনেক সময় কৌশলে অনৈতিকভাবে হস্তগত করা অন্যের এনআইডি দিয়ে নতুন হিসাব খোলার সুযোগ থাকায় প্রতারণা ও জালিয়াতিতে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। ঘুষ, চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণের অর্থ আদান-প্রদানেও এমএফএস একটি সুবিধাজনক মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এমএফএস লেনদেন বিবরণী আয়কর রিটার্নে সংযুক্ত করার বাধ্যবাধকতা না থাকায় কিছু অসাধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এই ব্যবস্থার অপব্যবহার করে ঘুষ লেনদেন করছে।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট কাজী আমিনুল হাসান এবং রিসার্চ ফেলো মোহাম্মদ নূরে আলম। তাঁরা জানান, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। গবেষণার তথ্য সংগ্রহের জন্য দেশের ৩২ জেলার ১ হাজার ৭৮৪ ব্যক্তিগত হিসাবধারী, ৪২৯ মার্চেন্ট হিসাবধারী এবং ৬৬৪ এজেন্টের ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে।

জরিপে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিগত হিসাবধারীদের ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, এজেন্ট হিসাবধারীদের ১৭ শতাংশ এবং মার্চেন্ট হিসাবধারীদের ১ দশমিক ৬ শতাংশ জানান, তাঁরা জালিয়াতি ও প্রতারণার শিকার হয়েছেন। আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন যথাক্রমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, ৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৪ শতাংশ হিসাবধারী। জালিয়াতি ও প্রতারণার শিকার হয়ে ব্যক্তিগত হিসাবধারীদের সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮৩ হাজার টাকা পর্যন্ত, এজেন্টদের সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা পর্যন্ত এবং মার্চেন্ট হিসাবধারীরা সর্বনিম্ন ৫৩ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

এ ক্ষেত্রে প্রলোভন বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে এমএফএস গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার হার ৫২ শতাংশ। ফোনকল বা এসএমএসের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ৪২ শতাংশ, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ১২ শতাংশ। আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েও ব্যক্তিগত হিসাবধারীদের মাত্র ৭ শতাংশ, এজেন্ট হিসাবধারীদের ২৭ শতাংশ এবং মার্চেন্ট হিসাবধারীদের ৪ শতাংশ থানায় মামলা বা জিডি করেছে।

টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমএফএসে ব্যক্তিগত হিসাবধারীদের ১৪ শতাংশ মোবাইল আর্থিক সেবা নিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হোন। ব্যক্তিগত হিসাবধারী পুরুষদের তুলনায় নারীরা অধিক সমস্যার সম্মুখীন হন। অভিযোগকারী গ্রাহকদের মধ্যে ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ গ্রাহক সমস্যার সমাধান পাননি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ পরিচালনায় নির্ধারিত আইনি কাঠামো অনুসরণ করা হয়নি। গবেষণা প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপে নগদের বিষয়ে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের বিধিমালায় ব্যাংক ব্যতীত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের এমএফএসপি হিসেবে নিবন্ধন গ্রহণের এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদনের সুযোগ না থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক বিধি লঙ্ঘন করে ডাক বিভাগের ডিজিটাল সেবা ‘নগদ’কে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয়। এ ছাড়া এমএফএস বিধিমালা অনুযায়ী অনাপত্তি সনদ বা এনওসি নিয়ে শুধু অবকাঠামো স্থাপনের অনুমতি থাকলেও ‘নগদ’ গ্রাহক অন্তর্ভুক্তিসহ সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি।

আবার বিধান না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক ডাক বিভাগকে ‘নগদ’ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী লাইসেন্স দিয়ে এবং ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাবসিডিয়ারি গঠনের শর্তে ছয় বার অন্তর্বর্তী লাইসেন্সের মেয়াদ বৃদ্ধি করে—যা এখনো চলমান।

নগদের পরিচালন প্রক্রিয়াতেও বিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলে মনে করে টিআইবি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডাক বিভাগের ডিজিটাল সেবা ‘নগদ’ পরিচালনায় নির্ধারিত আইনি কাঠামো অনুসরণ না করে, অর্থাৎ সাবসিডিয়ারি গঠন ব্যতিরেকে ‘থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড’-এর সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়েছে, যা স্পষ্টতই বিদ্যমান বিধিমালার লঙ্ঘন। অধিকন্তু, ডাক বিভাগের অনুমতি ও অংশগ্রহণ ছাড়াই চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর সেবামূল্য নির্ধারণ, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডিরেক্টর মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’

সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনবিআর কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, সতর্কবার্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’

জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল আরও ৫৭ হাজার টন গম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতাদের হাতে উপহার হস্তান্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৪৪
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতের সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটনের চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২৩-এ দেশজুড়ে ওয়ালটন পণ্য কিনে গ্রাহকেরা পাচ্ছেন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাইড বাই সাইড ফ্রিজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য ফ্রি এবং নিশ্চিত উপহার। গত ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনে প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতার হাতে উপহারের পণ্য তুলে দিচ্ছে ওয়ালটন।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ালটন প্লাজা ও ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম থেকে ফ্রিজ ও টিভি কিনে ফ্রি পাওয়া সাইড বাই সাইড ফ্রিজ ও স্মার্ট টিভি ৯ ক্রেতার হাতে তুলে দিয়েছে ওয়ালটন। পণ্য ফ্রি পাওয়া ক্রেতারা হচ্ছেন পটিয়ার সাজ্জাদ হোসেন, বাঁশখালীর রহিমা আক্তার, ফটিকছড়ির জহির উদ্দীন, রাউজানের অরুণ কান্তি দাস, লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জের কবির হোসেন, মিরসরাইয়ের মো. আছলাম, রাঙামাটির যতীন চাকমা, দোহাজারীর জাকির হোসেন ও সীতাকুণ্ডের মো. জোবায়ের।

গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বন্দরনগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সৌভাগ্যবান ক্রেতাদের হাতে উপহার তুলে দেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের চিফ ডিভিশনাল অফিসার ইমরোজ হায়দার খান।

উপহারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে আমিন খান বলেন, দেশের কোটি কোটি গ্রাহকের, ক্রেতার আস্থা ও ভালোবাসায়ই ওয়ালটন দেশের শীর্ষ ও টেক জায়ান্ট হয়ে উঠেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইলেকট্রনিকস খাতের আমদানিনির্ভরতা ব্যাপক হারে কমায় সাশ্রয় হচ্ছে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। সমৃদ্ধ হয়েছে দেশীয় শিল্প খাত। দেশীয় অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে সবাইকে দেশীয় পণ্য ক্রয় ও ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি।

আমিন খান জানান, ওয়ালটনের গুণগত মানের পণ্য শুধু দেশীয় ক্রেতাদেরই নয়; বৈশ্বিক ক্রেতাদেরও আস্থা ও মন জয় করে নিতে সক্ষম হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য এখন বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে রপ্তানি ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বিশ্বের শতাধিক দেশে ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের টার্গেট নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন।

অনুষ্ঠানে সাধারণ ক্রেতাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উপহারের পণ্য তুলে দেওয়ায় ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানান বিজয়ীরা।

কর্মকর্তারা জানান, সিজন-২৩-এর আওতায় ক্রেতারা দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম কিংবা অনলাইনে ই-প্লাজা থেকে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন ও বিএলডিসি ফ্যান কেনার পর পণ্যটির ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। এরপর ক্রেতাদের মোবাইলে ওয়ালটন থেকে উপহার পাওয়ার এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি ওয়ালটনের ক্রেতাদের জন্য তৈরি ‘আমার আওয়াজ’ মোবাইল অ্যাপ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারী ক্রেতাদের জন্যও এবারের ক্যাম্পেইনে বাড়তি সুবিধা রয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের জন্য এই বিশেষ সুবিধা থাকছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত