Ajker Patrika

বৈশ্বিক মজুরি বৈষম্য দুই-তৃতীয়াংশ কমেছে, সাম্যের পথ এখনো বন্ধুর: আইএলও

আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২২: ৫০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে শ্রমিকেরা ন্যায্য মজুরি ও অধিকারের জন্য লড়াই করছেন যুগ যুগ ধরে। তবে গত দুই দশকে মজুরি বৈষম্যের দীর্ঘ ইতিহাসে কিছুটা আশার আলো দেখা গেছে। বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ দেশে মজুরি বৈষম্য কমছে। এই ইতিবাচক প্রবণতার আড়ালে এখনো চাপা পড়ে আছে অসাম্য আর শ্রমিক জীবনের অনিশ্চয়তা।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘বৈশ্বিক মজুরি রিপোর্ট ২০২৪-২৫: বৈশ্বিক মজুরি বৈষম্য কি কমছে?’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালের শুরু থেকে মজুরি বৈষম্য অনেক দেশে গড়ে বছরে শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৭ শতাংশ হারে হ্রাস পেয়েছে। এখানে উচ্চ ও নিম্ন মজুরি প্রাপকদের মধ্যে তুলনা করা হয়েছে।

আইএলও জানিয়েছে, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে গত দুই দশকে মজুরি বৈষম্য বার্ষিক গড়ে ৩ দশমিক ২ থেকে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ হারে কমেছে, যা বৈশ্বিক হারের চেয়ে অনেক বেশি।

অন্যদিকে, ধনী দেশগুলোতে এই হ্রাসের হার তুলনামূলক ধীর গতির। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বৈষম্য বার্ষিক শূন্য দশমিক ৩ থেকে ১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং উচ্চ আয়ের দেশে শূন্য দশমিক ৩ থেকে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ হারে কমেছে।

প্রতিবেদনটি আরও জানায়, সামগ্রিকভাবে মজুরি বৈষম্য হ্রাস পেলেও উচ্চ-মজুরি প্রাপকেরাই এখানে এগিয়ে। স্বল্প আয়ের মানুষেরা আগের অবস্থাতেই রয়ে গেছে।

বাস্তবে মজুরি বাড়লেও আঞ্চলিক পার্থক্য রয়ে গেছে

প্রতিবেদন অনুসারে, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী মজুরি বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির চেয়ে দ্রুততর হয়েছে। ২০২৩ সালে বৈশ্বিক বাস্তব মজুরি ১ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০২৪ সালে প্রাক্কলন বৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ শতাংশ ধরা হয়েছে, যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

২০২২ সালে মুদ্রাস্ফীতির চাপে মজুরি বৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ থেকে এ বৃদ্ধি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তবে আঞ্চলিকভাবে মজুরি বৃদ্ধির হার এখনো অসম। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতে মজুরি বৃদ্ধির হার উন্নত অর্থনীতির তুলনায় বেশি।

উন্নত জি২০ দেশগুলোতে ২০২২ ও ২০২৩ সালে বাস্তব মজুরি দুই বছর ধরে হ্রাস পেয়েছে। ২০২২ সালে ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। তবে উদীয়মান জি২০ অর্থনীতির দেশগুলোতে এই সময়ে বাস্তব মজুরি বৃদ্ধির হার ইতিবাচক ছিল। ২০২২ সালে ১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ৬ দশমিক শূন্য শতাংশ।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপে বাস্তব মজুরি অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

আইএলওর মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হুয়াংবো বলেন, ‘বাস্তব মজুরি বৃদ্ধির প্রত্যাবর্তন অবশ্যই ইতিবাচক। তবে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে উচ্চ জীবনযাপনের ব্যয়ের কারণে লাখ লাখ শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের জীবনযাত্রা এখনো নিম্নমানের। বিভিন্ন দেশের মধ্যে মজুরির ব্যবধান এখনো অগ্রহণযোগ্য পর্যায়ে রয়েছে।’

স্থায়ী মজুরি বৈষম্য

সাম্প্রতিক অগ্রগতির সত্ত্বেও উচ্চমাত্রার মজুরি বৈষম্য গুরুতর সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে নিম্নআয়ের ১০ শতাংশ শ্রমিক মোট বৈশ্বিক মজুরির মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পান। অন্যদিকে সবচেয়ে উচ্চ আয়ের ১০ শতাংশ শ্রমিক পান প্রায় ৩৮ শতাংশ।

নিম্নআয়ের দেশগুলোতে মজুরি বৈষম্য সবচেয়ে প্রকট। এসব দেশে প্রায় ২২ শতাংশ শ্রমিক নিম্ন মজুরি পান। নারী এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকেরা সাধারণত সবচেয়ে কম মজুরি পাওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।

এসব তথ্য লক্ষ্যভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। যাতে মজুরি ও কর্মসংস্থানে বিদ্যমান ব্যবধান দূর করে সব শ্রমিকের জন্য ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা যায়।

মজুরি বৈষম্য পৃথিবীর সব দেশ ও অঞ্চলেই রয়েছে। বিশ্বব্যাপী এক-তৃতীয়াংশ কর্মীই বেতনভুক্ত কর্মী নন। অধিকাংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বেশির ভাগ মানুষই আত্ম-কর্মসংস্থানে যুক্ত। তাঁরা অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে জীবিকা অর্জন করেন।

এ কারণে আইএলও প্রতিবেদনে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের ক্ষেত্রে আত্ম-কর্মসংস্থানও অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতে দেখা গেছে, এসব অঞ্চলে আত্ম-কর্মসংস্থানে যুক্ত ব্যক্তিদের মজুরি বেতনভুক্ত কর্মীদের মজুরির চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

আইএলও অর্থনীতিবিদ এবং প্রতিবেদনের অন্যতম প্রধান লেখক জিউলিয়া দে লাজারি বলেছেন, ‘অসমতা কমানোর জন্য জাতীয় কৌশলে শক্তিশালী মজুরি নীতি এবং প্রতিষ্ঠানের ওপর জোর দিতে হবে। এর পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, শোভন কাজ এবং অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির আনুষ্ঠানিকীকরণের জন্য নীতিমালা প্রণয়নও সমান গুরুত্বপূর্ণ।’

বৈষম্য কমাতে মজুরি নীতিকে শক্তিশালী করা

প্রতিবেদনটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য লক্ষ্যভিত্তিক নীতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মজুরি বৈষম্য হ্রাসের জন্য শক্তিশালী মজুরি নীতি এবং সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধির জন্য কাঠামোগত সহায়তা প্রয়োজন।

এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে দেশগুলো মজুরি বৈষম্য হ্রাস, শ্রমিকদের জন্য ন্যায্য ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে।

আইএলওর সুপারিশ

প্রতিবেদনটি মজুরি বৈষম্য কমানোর জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দিয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে:

সামাজিক সংলাপের মাধ্যমে মজুরি নির্ধারণ: মজুরি নির্ধারণ এবং সামঞ্জস্যকরণকে যৌথ দর–কষাকষি বা ন্যূনতম মজুরি ব্যবস্থা দিয়ে বাস্তবায়ন করা উচিত। যেখানে সরকার, শ্রমিক এবং নিয়োগকর্তারা অংশগ্রহণ করবেন।

তথ্যভিত্তিক পদ্ধতি গ্রহণ: মজুরি নির্ধারণে শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের প্রয়োজন এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে।

সমতা ও সমান সুযোগকে উৎসাহিত করা: মজুরি নীতিতে লিঙ্গ সমতা, সাম্য এবং বৈষম্যহীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

সঠিক তথ্য ব্যবহার: সিদ্ধান্ত গ্রহণে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যবহার করতে হবে।

নিম্ন মজুরির মূল কারণ চিহ্নিত করা: প্রতিটি দেশের নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট অনুযায়ী জাতীয় নীতিমালা গঠন করতে হবে। নিম্ন মজুরির মূল কারণ, যেমন অনানুষ্ঠানিকতা, কম উৎপাদনশীলতা এবং সেবা খাতের কাজ মূল্যায়নের মতো বিষয়গুলো মোকাবিলা করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সারা দেশের সাত হাজার ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ৭০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা নগদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘নগদ ফিল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫’ নামের এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ বোনাসের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জনের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায় এই অর্থ।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া, খাওয়া, হোটেলে অবস্থানসহ অন্য সব খরচ নগদের পক্ষ থেকে বহন করা হয়।

সেরা পারফর্মারদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের মাঝেও বাজারে নগদ একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের আরও প্রসার ঘটাতে নগদ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা রয়েছে। সুতরাং, যত অপপ্রচারই নগদকে নিয়ে হোক না কেন, সেসবে কান না দিয়ে নগদের সাফল্যের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

নগদের সেবার প্রসার ঘটাতে এ সময় মোতাছিম বিল্লাহ ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের কাছ থেকে নগদ বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ জানতে চান। তাঁদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নগদ প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ের ভেতরই সেবার কলেবর আরও বাড়বে নগদে। ফলে লেনদেনের অঙ্ক যেমন অনেক গুণ বাড়বে, একই সঙ্গে গ্রাহকেরাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, ডাক বিভাগনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. আবু তালেব, নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, আগামী বছরে বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স, বাংলা কিউআর, সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য আন্তসংযোগ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে নগদ। ফলে ২০২৬ সাল নগদের সেরা সাফল্যের বছর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসেবা আরও সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ইনফরমেশন হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদান আরও সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারী ও অন্য অংশীজনদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও গ্রাহকবান্ধব ও স্বচ্ছ হবে।

ডিএসইর এমডি আশা প্রকাশ করেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্যের জন্য +৮৮-০২-৪১০৪০১৮৯, ০৯৬৬৬৭০২০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

দেশের অন্যতম ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড (BTTHA) ২০২৫’-এর লিড স্পনসর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি গ্রুপ।

একই সঙ্গে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা এই আয়োজনের হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দেশের ভ্রমণ, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে একমাত্র স্বীকৃত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। গ্যালাক্সি গ্রুপের পক্ষে লিড স্পনসর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ। অন্যদিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার পক্ষে হসপিটালিটি পার্টনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, গ্যালাক্সি ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সম্পৃক্ততায় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের মর্যাদা ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ ও আতিথেয়তা শিল্পে উৎকর্ষতা অর্জন এবং উত্তম চর্চা উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে উদ্ভাবন, সেবার মান এবং টেকসই উন্নয়নকে স্বীকৃতি প্রদানকারী একটি মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা গর্বিত।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন বিশ্বমানের আতিথেয়তা প্রদানের পাশাপাশি অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

চলতি বছর ২৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। শুধু আবেদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিচারক প্যানেল বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন এবং পাবলিক ভোটিংয়ের ভিত্তিতে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করবেন।

এবার নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে দুটি বিশেষ ক্যাটাগরি—সর্বাধিক পর্যটনবান্ধব বিদেশি গন্তব্য, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এই দুটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সরাসরি পাবলিক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মনিটর ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের প্রবর্তন করে।

প্রথম আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃশ্যমানতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামে নতুন একটি সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে প্রতিটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ, অবস্থানকাল এবং খালি ট্রাকের ফেরত-সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রাথমিকভাবে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই সাব-মডিউলের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাক প্রবেশ ও বহির্গমনের তথ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এতে ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ধারণ, সীমান্ত এলাকায় ট্রাক চলাচল কার্যকরভাবে মনিটরিং এবং রিয়েল-টাইম রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, রাজস্বহানি রোধে সহায়ক হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় এই ডিজিটাল উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রাক চলাচলের নির্ভুল তথ্য থাকায় শুল্ক ও কর ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার হবে, একই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাও বাড়বে।

খুব শিগগির দেশের সব স্থলবন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলটি লাইভ অপারেশনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এতে স্থলবন্দরভিত্তিক আমদানি কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আধুনিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত