Ajker Patrika

ইসলামী ব্যাংকের এমডি মুনিরুল মওলার পদত্যাগ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, ০২: ১২
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলা। ছবি: সংগৃহীত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলা। ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে বেসরকারি খাতের শরিয়াহ পরিচালিত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা পদত্যাগ করছেন। তিনি চলতি সপ্তাহ থেকে অফিস করছেন না। মূলত তিনি কর্তাদের বাধার মুখে ১৯ ডিসেম্বর অফিস ছেড়ে পদত্যাগপত্র ই-মেইল যোগে পাঠান। আগামী ২৯ ডিসেম্বর ব্যাংকটির বোর্ড সভায় তাঁর পদত্যাগপত্রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, এস আলমে ঋণ জালিয়াতির সহায়তাকারী হিসেবে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা নানাভাবে আন্দোলন করে আসছিল। পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের তোপের মুখে বাধ্য হন চলে যেতে। পরে আবারও তিনি অফিস শুরু করেন আগের দায়িত্বে (এমডি)। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে। সবশেষে গত ১৯ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামী ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এখন অনুপস্থিত আছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ‘এ বিষয়ে আমরা শুনেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে জানা হবে ২৯ ডিসেম্বর।’

জানা গেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৯২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম, ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিইও ও এমডি মুনিরুল মাওলাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয়–১–এ বাদী হয়ে মামলা করেন সংস্থাটির উপপরিচালক ইয়াছিন আরাফাত। মামলার এজাহার মতপ, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে মুরাদ এন্টারপ্রাইজের নামে এ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন।

মামলার আসামিরা হলেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলম, সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমদ, সাবেক পরিচালক মো. ফসিউল আলম, কাজী শহীদুল আলম, মো. সিরাজুল করিম, জামাল মোস্তফা চৌধুরী, মো. জয়নাল আবেদীন, খুরশীদ উল আলম, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ সালেহ জহুর ও মোহাম্মদ সোলায়মান, পরিচালক মো. কামরুল হাসান ও সাবেক নমিনি পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মাওলা, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী ও কে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, সাবেক ডিএমডি ও চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, মিফতাহ উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ সাব্বির, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. রেজাউল করিম, বর্তমান উপব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম, সাবেক এসইভিপি ও এএমডি মো. আলতাফ হোসেন, এসইভিপি জি এম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের, আবু ছাঈদ মুহাম্মদ ইদ্রিস ও সাবেক এসইভিপি মোহাম্মদ উল্লাহ, বিনিয়োগ প্রশাসন বিভাগের প্রধান ও এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফরিদ উদ্দিন, ব্যাংকের কক্সবাজার শাখার ম্যানেজার আমান উল্লাহ, চট্টগ্রামের চাক্তাই শাখার সাবেক ম্যানেজার ও বর্তমানের এফএভিপি মোহাম্মদ আলী আজগর, চাক্তাই শাখার সাবেক বিনিয়োগ ইনচার্জ খাজা মোহাম্মদ খালেদ, চাক্তাই শাখার প্রধান ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনজুর হাসান, ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জোনের প্রধান মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী ও দক্ষিণের অপর জোনপ্রধান ও এসইভিপি মিয়া মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ।

ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে আসামিরা হলেন—মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার চৌধুরী, চৌধুরী অ্যান্ড হোসাইন ট্রেড লিংকের মোহাম্মদ এরশাদ হোসাইন চৌধুরী, বিসমিল্লাহ ট্রেডিং করপোরেশনের মোরশেদুল আলম, মেসার্স ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী, রেইনবো করপোরেশনের রায়হান মাহমুদ চৌধুরী, আনছার এন্টারপ্রাইজের আনছারুল আলম চৌধুরী, সোনালী ট্রেডার্সের সহিদুল আলম, ফেমাস ট্রেডিং করপোরেশনের আরশাদুর রহমান চৌধুরী, গ্রিন এক্সপোজ ট্রেডার্সের এম এ মোনায়েম, কোস্টলাইন ট্রেডিং হাউসের এরশাদ উদ্দিন, জাস্ট রাইট ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মো. গিয়াস উদ্দিন, এক্সক্লুসিভ বিজনেস হাউসের ফেরদৌস আহম্মদ বাপ্পি, অ্যানেক্স বিজনেস কর্নারের আনোয়ারুল আজম, সেন্ট্রাল পার্ক ট্রেডিং হাউসের মোহাম্মদ মঞ্জুর আলম, জুপিটার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ মামুন, চৌধুরী বিজনেস হাউসের মোহাম্মদ রাসেল চৌধুরী, ডিলাক্সিয়াম ট্রেডিং করপোরেশনের কাজী মেজবাহ উদ্দিন, চেমন ইস্পাত লিমিটেডের পরিচালক মুহা. নজরুল ইসলাম, এমডি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের এমডি মো. আরিফুল ইসলাম চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের এমডি মো. রাশেদুল আলম ও পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সবুর, সোশ্যাল ট্রেড সেন্টারের আলী জহুর ও শাহ আমানত ট্রেডার্সের মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী চৌধুরী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা 
রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি

রাজস্ব খাতে ব্যাপক সংস্কার এবং সব খাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা (অটোমেশন) চালুর উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বাড়তি তৎপরতা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। প্রতিমাসে রাজকোষের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে ঘাটতির ব্যবধান স্পষ্ট হচ্ছে এবং চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সেই ধারাবাহিকতা বজায় আছে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা ১৩.৮৯ শতাংশ।

তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো—রাজস্ব আদায়ে বৃদ্ধি হয়েছে ১৫.১৫ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আদায় হয়েছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যের ধীরগতির কারণে রাজস্ব আদায় প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে। তবে বছরের শেষ দিকে সাধারণত আদায় বাড়ে। করের আওতা বৃদ্ধি, কর পরিপালন জোরদার করা এবং ফাঁকি প্রতিরোধে এনবিআর সক্রিয়।

অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক মন্দাভাব, কাঠামোগত দুর্বলতা ও সক্ষমতার অভাব সরাসরি রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া অর্থবছরের মাঝপথে লক্ষ্যমাত্রা একলাফে ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর কারণে বাস্তবতার সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার ব্যবধান আরও প্রকট হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের জন্য মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। তবে ১০ নভেম্বর বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি তা ৫ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করে। ফলে বাকি সাত মাসে এনবিআরকে ৪ লাখ ৫ হাজার ২৪ কোটি টাকা আদায় করতে হবে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিবছর রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থাকে। প্রধান কারণ হলো এনবিআরের সক্ষমতার চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। মানবসম্পদ, কারিগরি দক্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা পর্যাপ্ত নয়; পাশাপাশি করদাতা এবং করযোগ্য ব্যক্তির মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে, কর ফাঁকিও প্রচুর। বর্তমান ব্যবসায়িক মন্দা, খরচ বৃদ্ধি, আয় হ্রাস এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগ কমে যাওয়াও রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানো, অটোমেশন ও সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করলে রাজস্ব ফাঁকি রোধ করে আদায় বাড়ানো সম্ভব।

সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, এনবিআরের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি প্রশাসনিক পদে বড় রদবদলের কারণে কার্যক্রম গোছাতে কিছুটা সময় লাগা স্বাভাবিক।

রাজস্ব খাত অনুযায়ী, ভ্যাট থেকে সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে। প্রথম পাঁচ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ২৩১ কোটি টাকা, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা; ঘাটতি ৩ হাজার ৮১৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ৬.১৫ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১.৯৭ শতাংশ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাজস্ব আসে আয়কর খাতে। আদায় হয়েছে ৪৭ হাজার ৮৮১ কোটি, লক্ষ্যমাত্রা ৫৯ হাজার ৯৯৫ কোটি ২৫ লাখ; ঘাটতি ২০.১৯ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ শতাংশ। কাস্টমস বা শুল্ক খাতে ৪২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার ৯৭৯ কোটি ৫৬ লাখ; ঘাটতি ১৫.৯১ শতাংশ, তবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২৮ শতাংশ।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার অপরিহার্য। এনবিআরের মানবসম্পদ, প্রযুক্তি ব্যবহার, প্রক্রিয়ার সরলীকরণ এবং অটোমেশন কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আদালতের রায়ে ইতিহাস গড়লেন ইলন মাস্ক, সম্পদ ছাড়াল ৭০০ বিলিয়ন ডলার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৪
টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত
টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত

পে প্যাকেজ বা বেতন-ভাতাসংক্রান্ত একটি মামলার রায়ের পর টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের সম্পদ গত শুক্রবার রাতে ৭৪৯ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।

ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।

উল্লেখ্য, গত বছর আদালত এই সুবিধাগুলো বাতিল করেছিলেন।

২০১৮ সালে মাস্কের যে বেতন প্যাকেজের মূল্য ৫৬ বিলিয়ন ডলার ছিল, সেটিই গত শুক্রবার ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট পুনর্বহাল করেন। এর দুই বছর আগে নিম্ন আদালত ওই পারিশ্রমিক চুক্তিকে ‘অবিশ্বাস্য’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করেছিলেন।

সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছেন, ২০২৪ সালে দেওয়া যে সিদ্ধান্তে বেতনের প্যাকেজটি বাতিল করা হয়েছিল, তা সঠিক ছিল না এবং মাস্কের প্রতি অন্যায্য ছিল।

এর আগে চলতি সপ্তাহে মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স শেয়ারবাজারে আসতে পারে—এমন প্রতিবেদনের পর মাস্কের সম্পদ ৬০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে তিনি ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন।

এদিকে গত নভেম্বরে টেসলার শেয়ারহোল্ডাররা আলাদাভাবে মাস্কের জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি পারিশ্রমিক পরিকল্পনা অনুমোদন করেন।

এটি করপোরেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বেতন প্যাকেজ। বিনিয়োগকারীরা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিকসভিত্তিক এক শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে মাস্কের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানান।

ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, মাস্কের বর্তমান সম্পদমূল্য গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের চেয়ে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার বেশি। ল্যারি পেজ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুঁজিবাজারে নথি জমা এখন এক ক্লিকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পুঁজিবাজারে নথি জমা এখন এক ক্লিকে

দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম (এসএসএস)।

নতুন এই সিস্টেমের মাধ্যমে কোম্পানি ও ফান্ডগুলো মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণা, আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য রেগুলেটরি ফাইলিং কাগজ ছাড়াই অনলাইনে জমা দিতে পারবে। এতে সময় ও খরচ কমার পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং ট্র্যাকিং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

ডিএসই সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই প্ল্যাটফর্ম ধাপে ধাপে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ দুটি নতুন মডিউল যুক্ত হওয়ায় এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তথ্য একই ডিজিটাল গেটওয়ে দিয়ে জমা দেওয়া সম্ভব। ফলে দ্বৈত সাবমিশনের ঝামেলা প্রায় সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে কাগুজে নথির ওপর নির্ভরতা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল সাবমিশন শুধু সুবিধার বিষয় নয়, এটি বাজার শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার একটি কাঠামোগত পরিবর্তন।

ডিএসই জানায়, চায়নিজ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কাজ করে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়ানোর পর সিস্টেমটি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন ফিচার যুক্ত করা সহজ হবে।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মো. আসিফুর রহমান বলেন, একক ডিজিটাল সাবমিশন পয়েন্ট চালু হওয়ায় ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপজনিত ভুল কমবে এবং তথ্য জমার প্রতিটি ধাপ ডিজিটালি যাচাইযোগ্য থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের প্রভাব শুধু স্টক এক্সচেঞ্জেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হতে যাচ্ছে কক্সবাজার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই তথ্য জানান।

গভর্নর বলেন, ‘২০২৭ সালের মধ্যে দেশের অন্তত ৭৫ শতাংশ খুচরা লেনদেন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের প্রতিটি নাগরিকের হাতে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।’

চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা শীর্ষক এই সভায় গভর্নর চট্টগ্রামকে দেশের ‘অর্থনৈতিক লাইফলাইন’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান সমুদ্রবন্দর, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), ভারী শিল্প এবং জ্বালানি অবকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দু এই চট্টগ্রাম। সিঙ্গাপুর, দুবাই বা হংকংয়ের মতো চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংযোগ শক্তিশালী করতে হবে। তবেই এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’

আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ করতে দেশের সব সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে শিগগিরই ২৪ ঘণ্টা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) সিস্টেম চালু করা হবে বলে জানান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এটি একটি তাৎক্ষণিক ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবস্থা যা বাণিজ্যের গতি বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ ছাড়া, তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএমই) এবং কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ও সহজ শর্তে ঋণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন গভর্নর। জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে উৎপাদনশীল খাতের বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক চেম্বার, ব্যাংকার, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত