ফারুক মেহেদী

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
৮ মিনিট আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
৪ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
৪ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
৪ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
৪ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
৮ মিনিট আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
৪ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’
জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’
জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
৮ মিনিট আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
৪ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
৮ মিনিট আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
৪ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
৪ ঘণ্টা আগে