ফারুক মেহেদী

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।
ফারুক মেহেদী

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৬ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৭ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৬ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৭ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৭ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৬ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৬ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৭ ঘণ্টা আগে