রোকন উদ্দীন, ঢাকা

বোতলের পানি এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের ভরসা। বাড়িতে পরিবারের জন্য ব্যবহার ছাড়াও হোটেল-রেস্তোরাঁ, উৎসব, সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান—সর্বত্র ব্যবহৃত হয় বোতলের পানি। দিনে দিনে এই পানি হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। ভোক্তাস্বার্থের পক্ষে কাজ করা সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এই নির্ভরশীলতার সুযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলো উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায় অযৌক্তিকভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। অনুসন্ধান বলছে, বাজার দখলে রাখতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের বড় মুনাফা দেওয়া চড়া দামের বড় কারণ।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে দেশে বোতলে পানির ব্যবহার শুরু হয়। শুরুর দিকে এই পানি কিনে খাওয়া প্রায় বিলাসিতা মনে হলেও গত সাড়ে তিন দশকে জীবনযাপনের প্রায় সাধারণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এটি। ক্রমেই বেড়েছে বাজার। প্রতিযোগিতা কমিশনের পর্যালোচনা অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে এই পানি বিক্রি হয়েছিল ৫৫ কোটি ২৪ লাখ ৫৯ হাজার লিটারের বেশি। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত (যে পর্যন্ত তথ্য পাওয়া গেছে) বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি লিটার।
একলাফে বড় মূল্যবৃদ্ধি
শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে আধা লিটার পানির বোতলের দাম একবারে ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা নির্ধারণ করে। গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিযোগিতা কমিশনের তৈরি করা ‘বোতলজাত পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিবিষয়ক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে’ এ তথ্য রয়েছে। এতে কোম্পানিভেদে মুনাফা বেড়ে যায় ৭১ দশমিক ২৩ থেকে ৪২০ শতাংশ পর্যন্ত। অনেক বেড়ে যায় ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরা বিক্রেতাদের লাভের অংশও। ফলে ৫০০ মিলির এক বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৬-৭ টাকা হলেও ক্রেতাকে তা কিনতে হচ্ছে ২০ টাকায়। অনেকের অভিযোগ, ৭-৮টি কোম্পানি বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ডলারের দাম ও কাঁচামালের আমদানি খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করেছিল কোম্পানিগুলো। তবে বিশ্লেষণ করে সরকারের প্রতিযোগিতা কমিশন দেখতে পায়, সার্বিকভাবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে নামমাত্র।
প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের অনুসন্ধানে ঢাকা ওয়াসাসহ (ব্র্যান্ড নাম শান্তি) মোট ৮ কোম্পানির উৎপাদন খরচ বিশ্লেষণ করে। এতে যোগসাজশ করে দাম বাড়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। ওয়াসা ছাড়া বাকি ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এগুলো হলো কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজ লিমিটেড (কিনলে), ট্রান্সকম বেভারেজেস (অ্যাকুয়াফিনা), মেঘনা বেভারেজ (সুপার ফ্রেশ), পারটেক্স বেভারেজ (মাম), সিটি গ্রুপ (জীবন), আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ (স্পা) এবং প্রাণ বেভারেজ লিমিটেড (প্রাণ)।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উৎপাদন খরচ আর খুচরা দামের মাঝখানের ১৩-১৪ টাকা উৎপাদনকারী, ডিস্ট্রিবিউটর এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার মধ্যে ভাগ হচ্ছে। মুনাফার ভাগ সবচেয়ে বেশি খুচরা বিক্রেতার। তথ্যমতে, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায় ডিস্ট্রিবিউটর ও পাইকারি ব্যবসায়ীর মুনাফা বেড়েছে ১ দশমিক ৩৫ গুণ। খুচরা বিক্রেতার ক্ষেত্রে তা বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৪ গুণ পর্যন্ত।
মামলার অগ্রগতি থমকে
প্রতিযোগিতা কমিশন ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করলেও কমিশনের সদস্যদের কোরাম না থাকায় শুনানি স্থগিত রয়েছে। কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ কমিশনে সাধারণত চারজন সদস্য থাকেন। চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন সদস্য শুনানি গ্রহণ করেন। তবে শুনানির জন্য ন্যূনতম তিন সদস্যের কোরাম প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা সদস্য রয়েছি মাত্র দুজন। আমাকে আবার এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনের জন্য প্রশাসকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের অনুসন্ধানেও এই অনৈতিক মুনাফার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি পানির দাম কিছুটা কমালেও সরকারের নমনীয়তায় কেউ কেউ আবার বাড়িয়ে দিয়েছে।
ক্রেতার ওপর বোঝা বাড়ছে
সেগুনবাগিচা বাজারে বোতলের পানি কেনার সময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। নাম না প্রকাশের অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘বোতলের পানির দাম বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণহীনতারই প্রমাণ।’
পূর্ব রায়েরবাজার এলাকার বাসিন্দা একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আকিব সিদ্দিকী বলেন, তাঁদের যৌথ পরিবারের শিশুরা সরবরাহের পানি পান করতে চায় না। ফিল্টার নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় পরিবারটি এখন শুধু বোতলের পানি পান করে। স্বাস্থ্যগত দিকের কথা ভেবে তাঁরা পানির পেছনে এই বাড়তি ব্যয় করেন। এর দাম বেড়ে যাওয়ায় খুব চাপে আছেন।
উৎপাদন খরচ আর বিক্রির দাম
প্রতিবেদন অনুযায়ী জীবন ব্র্যান্ডের আধা লিটারের (৫০০ এমএল) এক বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৬ দশমিক ৫৯ টাকা, কিনলের ৬ দশমিক ৯২ টাকা, অ্যাকুয়াফিনার প্রায় ৬ টাকা, সুপার ফ্রেশের ৫ দশমিক ৯২ টাকা, স্পার ৬ দশমিক ৩০ টাকা এবং ওয়াসার শান্তির ৬ দশমিক ২৯ টাকা। এগুলোর মধ্যে ব্যতিক্রম পারটেক্সের মাম। কোম্পানিটির তথ্য অনুসারে তাদের ৫০০ এমএল বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৯ দশমিক ৫৩ টাকা। গত বুধবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে প্রাণ, শান্তি ও জীবন ছাড়া বাকি সব ব্র্যান্ডের পানির খুচরা মূল্য ২০ টাকা দেখা গেছে। এদিকে বাজারের বড় দোকানগুলোর কর্মীরা বলছেন, শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর পানি পুরো এক কেস (২৪ বোতল) কিনলে তাঁরা ৩৫০-৩৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন। সে অনুযায়ী প্রতি ৫০০ এমএল বোতল ১৪ দশমিক ৬০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করলেও খুচরা বিক্রেতাদের কিছু মুনাফা থাকে।
বাজারে কোন ব্র্যান্ডের কী অবস্থা
সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাবে দেশে বোতলের পানি উৎপাদন ও বাজারজাতকারী নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩২। এগুলোর মধ্যে শীর্ষ ৭ কোম্পানির দখলেই বাজারের ৯৭ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী শীর্ষ ৭ ব্র্যান্ড ছিল ফ্রেশ (২৪ দশমিক ১৭ শতাংশ), প্রাণ (১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ) অ্যাকুয়াফিনা (১৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ) মাম (১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ), স্পা (১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ), কিনলে (৪ দশমিক ১৬ শতাংশ) ও জীবন (৪ শতাংশ)। ১ শতাংশের কিছু কম করে ব্যবসার ভাগ রয়েছে মুক্তা, সেনা, মুসকান ও শান্তি—এই চারটির।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত আধিপত্য ধরে রাখতেই খুচরা বিক্রেতাদের মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে শীর্ষ কোম্পানিগুলো। দাম বাড়ার আগে আকিজের আধা লিটার পানি বিক্রি করেই খুচরা বিক্রেতা লাভ পেতেন ৫ দশমিক ৬২ টাকা। দাম বাড়ার পর তা হয়েছে ৯ টাকা। কিনলের সমান পরিমাণ পানির বোতল ১৫ টাকায় বিক্রি করে খুচরা বিক্রেতা আগে ৬ দশমিক ৬৭ টাকা মুনাফা করতেন, দাম বাড়ানোর পর তা থেকে মুনাফা করছেন ৮ দশমিক ৪৭ টাকা।
কোম্পানিগুলো যা বলছে
পারটেক্স গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. নাহিদ ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের আগে আরও দু-একটি কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে। তাই বাজারকে ফলো করে আমরাও মাম পানির দাম বাড়িয়েছি।’
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের উপব্যবস্থাপক তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘সবাই দাম যখন বাড়িয়েছিল, আমরাও বাড়িয়েছিলাম। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এবং সরকারের নির্দেশনা মেনে আবার কমিয়েছি। এখন আমরা আগের দাম আধা লিটার ১৫ টাকা ও ১ লিটার ২৫ টাকায় বিক্রি করছি। যদিও এ কারণে বাজারে প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়েছি। কারণ, খুচরা বিক্রেতা যেটা বিক্রি করে লাভ বেশি পাবে, সেটাই দোকানে রাখবে।’
মেঘনা গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘দাম তো সবাই বাড়িয়েছে। সবাই বাড়ালে আমাদেরও বাড়াতে হয়।’
প্রতিযোগিতা কমিশন পুনর্গঠনের তাগিদ
ভোক্তাস্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনসাস কনজ্যুমারস সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব বিষয় দেখার সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রতিযোগিতা কমিশনের। এ কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতার কারণে কোম্পানিগুলো এভাবে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানোর সাহস পায়। তাই কমিশনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এ জন্য দক্ষ লোকদের দিয়ে কমিশন পুনর্গঠন করা দরকার।’

বোতলের পানি এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের ভরসা। বাড়িতে পরিবারের জন্য ব্যবহার ছাড়াও হোটেল-রেস্তোরাঁ, উৎসব, সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান—সর্বত্র ব্যবহৃত হয় বোতলের পানি। দিনে দিনে এই পানি হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। ভোক্তাস্বার্থের পক্ষে কাজ করা সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এই নির্ভরশীলতার সুযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলো উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায় অযৌক্তিকভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। অনুসন্ধান বলছে, বাজার দখলে রাখতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের বড় মুনাফা দেওয়া চড়া দামের বড় কারণ।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে দেশে বোতলে পানির ব্যবহার শুরু হয়। শুরুর দিকে এই পানি কিনে খাওয়া প্রায় বিলাসিতা মনে হলেও গত সাড়ে তিন দশকে জীবনযাপনের প্রায় সাধারণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এটি। ক্রমেই বেড়েছে বাজার। প্রতিযোগিতা কমিশনের পর্যালোচনা অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে এই পানি বিক্রি হয়েছিল ৫৫ কোটি ২৪ লাখ ৫৯ হাজার লিটারের বেশি। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত (যে পর্যন্ত তথ্য পাওয়া গেছে) বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি লিটার।
একলাফে বড় মূল্যবৃদ্ধি
শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে আধা লিটার পানির বোতলের দাম একবারে ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা নির্ধারণ করে। গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিযোগিতা কমিশনের তৈরি করা ‘বোতলজাত পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিবিষয়ক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে’ এ তথ্য রয়েছে। এতে কোম্পানিভেদে মুনাফা বেড়ে যায় ৭১ দশমিক ২৩ থেকে ৪২০ শতাংশ পর্যন্ত। অনেক বেড়ে যায় ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরা বিক্রেতাদের লাভের অংশও। ফলে ৫০০ মিলির এক বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৬-৭ টাকা হলেও ক্রেতাকে তা কিনতে হচ্ছে ২০ টাকায়। অনেকের অভিযোগ, ৭-৮টি কোম্পানি বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ডলারের দাম ও কাঁচামালের আমদানি খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করেছিল কোম্পানিগুলো। তবে বিশ্লেষণ করে সরকারের প্রতিযোগিতা কমিশন দেখতে পায়, সার্বিকভাবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে নামমাত্র।
প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের অনুসন্ধানে ঢাকা ওয়াসাসহ (ব্র্যান্ড নাম শান্তি) মোট ৮ কোম্পানির উৎপাদন খরচ বিশ্লেষণ করে। এতে যোগসাজশ করে দাম বাড়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। ওয়াসা ছাড়া বাকি ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এগুলো হলো কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজ লিমিটেড (কিনলে), ট্রান্সকম বেভারেজেস (অ্যাকুয়াফিনা), মেঘনা বেভারেজ (সুপার ফ্রেশ), পারটেক্স বেভারেজ (মাম), সিটি গ্রুপ (জীবন), আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ (স্পা) এবং প্রাণ বেভারেজ লিমিটেড (প্রাণ)।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উৎপাদন খরচ আর খুচরা দামের মাঝখানের ১৩-১৪ টাকা উৎপাদনকারী, ডিস্ট্রিবিউটর এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার মধ্যে ভাগ হচ্ছে। মুনাফার ভাগ সবচেয়ে বেশি খুচরা বিক্রেতার। তথ্যমতে, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায় ডিস্ট্রিবিউটর ও পাইকারি ব্যবসায়ীর মুনাফা বেড়েছে ১ দশমিক ৩৫ গুণ। খুচরা বিক্রেতার ক্ষেত্রে তা বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৪ গুণ পর্যন্ত।
মামলার অগ্রগতি থমকে
প্রতিযোগিতা কমিশন ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করলেও কমিশনের সদস্যদের কোরাম না থাকায় শুনানি স্থগিত রয়েছে। কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ কমিশনে সাধারণত চারজন সদস্য থাকেন। চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন সদস্য শুনানি গ্রহণ করেন। তবে শুনানির জন্য ন্যূনতম তিন সদস্যের কোরাম প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা সদস্য রয়েছি মাত্র দুজন। আমাকে আবার এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনের জন্য প্রশাসকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের অনুসন্ধানেও এই অনৈতিক মুনাফার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি পানির দাম কিছুটা কমালেও সরকারের নমনীয়তায় কেউ কেউ আবার বাড়িয়ে দিয়েছে।
ক্রেতার ওপর বোঝা বাড়ছে
সেগুনবাগিচা বাজারে বোতলের পানি কেনার সময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। নাম না প্রকাশের অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘বোতলের পানির দাম বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণহীনতারই প্রমাণ।’
পূর্ব রায়েরবাজার এলাকার বাসিন্দা একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আকিব সিদ্দিকী বলেন, তাঁদের যৌথ পরিবারের শিশুরা সরবরাহের পানি পান করতে চায় না। ফিল্টার নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় পরিবারটি এখন শুধু বোতলের পানি পান করে। স্বাস্থ্যগত দিকের কথা ভেবে তাঁরা পানির পেছনে এই বাড়তি ব্যয় করেন। এর দাম বেড়ে যাওয়ায় খুব চাপে আছেন।
উৎপাদন খরচ আর বিক্রির দাম
প্রতিবেদন অনুযায়ী জীবন ব্র্যান্ডের আধা লিটারের (৫০০ এমএল) এক বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৬ দশমিক ৫৯ টাকা, কিনলের ৬ দশমিক ৯২ টাকা, অ্যাকুয়াফিনার প্রায় ৬ টাকা, সুপার ফ্রেশের ৫ দশমিক ৯২ টাকা, স্পার ৬ দশমিক ৩০ টাকা এবং ওয়াসার শান্তির ৬ দশমিক ২৯ টাকা। এগুলোর মধ্যে ব্যতিক্রম পারটেক্সের মাম। কোম্পানিটির তথ্য অনুসারে তাদের ৫০০ এমএল বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৯ দশমিক ৫৩ টাকা। গত বুধবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে প্রাণ, শান্তি ও জীবন ছাড়া বাকি সব ব্র্যান্ডের পানির খুচরা মূল্য ২০ টাকা দেখা গেছে। এদিকে বাজারের বড় দোকানগুলোর কর্মীরা বলছেন, শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর পানি পুরো এক কেস (২৪ বোতল) কিনলে তাঁরা ৩৫০-৩৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন। সে অনুযায়ী প্রতি ৫০০ এমএল বোতল ১৪ দশমিক ৬০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করলেও খুচরা বিক্রেতাদের কিছু মুনাফা থাকে।
বাজারে কোন ব্র্যান্ডের কী অবস্থা
সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাবে দেশে বোতলের পানি উৎপাদন ও বাজারজাতকারী নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩২। এগুলোর মধ্যে শীর্ষ ৭ কোম্পানির দখলেই বাজারের ৯৭ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী শীর্ষ ৭ ব্র্যান্ড ছিল ফ্রেশ (২৪ দশমিক ১৭ শতাংশ), প্রাণ (১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ) অ্যাকুয়াফিনা (১৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ) মাম (১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ), স্পা (১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ), কিনলে (৪ দশমিক ১৬ শতাংশ) ও জীবন (৪ শতাংশ)। ১ শতাংশের কিছু কম করে ব্যবসার ভাগ রয়েছে মুক্তা, সেনা, মুসকান ও শান্তি—এই চারটির।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত আধিপত্য ধরে রাখতেই খুচরা বিক্রেতাদের মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে শীর্ষ কোম্পানিগুলো। দাম বাড়ার আগে আকিজের আধা লিটার পানি বিক্রি করেই খুচরা বিক্রেতা লাভ পেতেন ৫ দশমিক ৬২ টাকা। দাম বাড়ার পর তা হয়েছে ৯ টাকা। কিনলের সমান পরিমাণ পানির বোতল ১৫ টাকায় বিক্রি করে খুচরা বিক্রেতা আগে ৬ দশমিক ৬৭ টাকা মুনাফা করতেন, দাম বাড়ানোর পর তা থেকে মুনাফা করছেন ৮ দশমিক ৪৭ টাকা।
কোম্পানিগুলো যা বলছে
পারটেক্স গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. নাহিদ ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের আগে আরও দু-একটি কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে। তাই বাজারকে ফলো করে আমরাও মাম পানির দাম বাড়িয়েছি।’
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের উপব্যবস্থাপক তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘সবাই দাম যখন বাড়িয়েছিল, আমরাও বাড়িয়েছিলাম। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এবং সরকারের নির্দেশনা মেনে আবার কমিয়েছি। এখন আমরা আগের দাম আধা লিটার ১৫ টাকা ও ১ লিটার ২৫ টাকায় বিক্রি করছি। যদিও এ কারণে বাজারে প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়েছি। কারণ, খুচরা বিক্রেতা যেটা বিক্রি করে লাভ বেশি পাবে, সেটাই দোকানে রাখবে।’
মেঘনা গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘দাম তো সবাই বাড়িয়েছে। সবাই বাড়ালে আমাদেরও বাড়াতে হয়।’
প্রতিযোগিতা কমিশন পুনর্গঠনের তাগিদ
ভোক্তাস্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনসাস কনজ্যুমারস সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব বিষয় দেখার সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রতিযোগিতা কমিশনের। এ কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতার কারণে কোম্পানিগুলো এভাবে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানোর সাহস পায়। তাই কমিশনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এ জন্য দক্ষ লোকদের দিয়ে কমিশন পুনর্গঠন করা দরকার।’
রোকন উদ্দীন, ঢাকা

বোতলের পানি এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের ভরসা। বাড়িতে পরিবারের জন্য ব্যবহার ছাড়াও হোটেল-রেস্তোরাঁ, উৎসব, সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান—সর্বত্র ব্যবহৃত হয় বোতলের পানি। দিনে দিনে এই পানি হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। ভোক্তাস্বার্থের পক্ষে কাজ করা সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এই নির্ভরশীলতার সুযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলো উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায় অযৌক্তিকভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। অনুসন্ধান বলছে, বাজার দখলে রাখতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের বড় মুনাফা দেওয়া চড়া দামের বড় কারণ।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে দেশে বোতলে পানির ব্যবহার শুরু হয়। শুরুর দিকে এই পানি কিনে খাওয়া প্রায় বিলাসিতা মনে হলেও গত সাড়ে তিন দশকে জীবনযাপনের প্রায় সাধারণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এটি। ক্রমেই বেড়েছে বাজার। প্রতিযোগিতা কমিশনের পর্যালোচনা অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে এই পানি বিক্রি হয়েছিল ৫৫ কোটি ২৪ লাখ ৫৯ হাজার লিটারের বেশি। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত (যে পর্যন্ত তথ্য পাওয়া গেছে) বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি লিটার।
একলাফে বড় মূল্যবৃদ্ধি
শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে আধা লিটার পানির বোতলের দাম একবারে ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা নির্ধারণ করে। গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিযোগিতা কমিশনের তৈরি করা ‘বোতলজাত পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিবিষয়ক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে’ এ তথ্য রয়েছে। এতে কোম্পানিভেদে মুনাফা বেড়ে যায় ৭১ দশমিক ২৩ থেকে ৪২০ শতাংশ পর্যন্ত। অনেক বেড়ে যায় ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরা বিক্রেতাদের লাভের অংশও। ফলে ৫০০ মিলির এক বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৬-৭ টাকা হলেও ক্রেতাকে তা কিনতে হচ্ছে ২০ টাকায়। অনেকের অভিযোগ, ৭-৮টি কোম্পানি বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ডলারের দাম ও কাঁচামালের আমদানি খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করেছিল কোম্পানিগুলো। তবে বিশ্লেষণ করে সরকারের প্রতিযোগিতা কমিশন দেখতে পায়, সার্বিকভাবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে নামমাত্র।
প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের অনুসন্ধানে ঢাকা ওয়াসাসহ (ব্র্যান্ড নাম শান্তি) মোট ৮ কোম্পানির উৎপাদন খরচ বিশ্লেষণ করে। এতে যোগসাজশ করে দাম বাড়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। ওয়াসা ছাড়া বাকি ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এগুলো হলো কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজ লিমিটেড (কিনলে), ট্রান্সকম বেভারেজেস (অ্যাকুয়াফিনা), মেঘনা বেভারেজ (সুপার ফ্রেশ), পারটেক্স বেভারেজ (মাম), সিটি গ্রুপ (জীবন), আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ (স্পা) এবং প্রাণ বেভারেজ লিমিটেড (প্রাণ)।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উৎপাদন খরচ আর খুচরা দামের মাঝখানের ১৩-১৪ টাকা উৎপাদনকারী, ডিস্ট্রিবিউটর এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার মধ্যে ভাগ হচ্ছে। মুনাফার ভাগ সবচেয়ে বেশি খুচরা বিক্রেতার। তথ্যমতে, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায় ডিস্ট্রিবিউটর ও পাইকারি ব্যবসায়ীর মুনাফা বেড়েছে ১ দশমিক ৩৫ গুণ। খুচরা বিক্রেতার ক্ষেত্রে তা বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৪ গুণ পর্যন্ত।
মামলার অগ্রগতি থমকে
প্রতিযোগিতা কমিশন ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করলেও কমিশনের সদস্যদের কোরাম না থাকায় শুনানি স্থগিত রয়েছে। কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ কমিশনে সাধারণত চারজন সদস্য থাকেন। চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন সদস্য শুনানি গ্রহণ করেন। তবে শুনানির জন্য ন্যূনতম তিন সদস্যের কোরাম প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা সদস্য রয়েছি মাত্র দুজন। আমাকে আবার এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনের জন্য প্রশাসকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের অনুসন্ধানেও এই অনৈতিক মুনাফার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি পানির দাম কিছুটা কমালেও সরকারের নমনীয়তায় কেউ কেউ আবার বাড়িয়ে দিয়েছে।
ক্রেতার ওপর বোঝা বাড়ছে
সেগুনবাগিচা বাজারে বোতলের পানি কেনার সময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। নাম না প্রকাশের অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘বোতলের পানির দাম বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণহীনতারই প্রমাণ।’
পূর্ব রায়েরবাজার এলাকার বাসিন্দা একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আকিব সিদ্দিকী বলেন, তাঁদের যৌথ পরিবারের শিশুরা সরবরাহের পানি পান করতে চায় না। ফিল্টার নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় পরিবারটি এখন শুধু বোতলের পানি পান করে। স্বাস্থ্যগত দিকের কথা ভেবে তাঁরা পানির পেছনে এই বাড়তি ব্যয় করেন। এর দাম বেড়ে যাওয়ায় খুব চাপে আছেন।
উৎপাদন খরচ আর বিক্রির দাম
প্রতিবেদন অনুযায়ী জীবন ব্র্যান্ডের আধা লিটারের (৫০০ এমএল) এক বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৬ দশমিক ৫৯ টাকা, কিনলের ৬ দশমিক ৯২ টাকা, অ্যাকুয়াফিনার প্রায় ৬ টাকা, সুপার ফ্রেশের ৫ দশমিক ৯২ টাকা, স্পার ৬ দশমিক ৩০ টাকা এবং ওয়াসার শান্তির ৬ দশমিক ২৯ টাকা। এগুলোর মধ্যে ব্যতিক্রম পারটেক্সের মাম। কোম্পানিটির তথ্য অনুসারে তাদের ৫০০ এমএল বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৯ দশমিক ৫৩ টাকা। গত বুধবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে প্রাণ, শান্তি ও জীবন ছাড়া বাকি সব ব্র্যান্ডের পানির খুচরা মূল্য ২০ টাকা দেখা গেছে। এদিকে বাজারের বড় দোকানগুলোর কর্মীরা বলছেন, শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর পানি পুরো এক কেস (২৪ বোতল) কিনলে তাঁরা ৩৫০-৩৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন। সে অনুযায়ী প্রতি ৫০০ এমএল বোতল ১৪ দশমিক ৬০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করলেও খুচরা বিক্রেতাদের কিছু মুনাফা থাকে।
বাজারে কোন ব্র্যান্ডের কী অবস্থা
সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাবে দেশে বোতলের পানি উৎপাদন ও বাজারজাতকারী নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩২। এগুলোর মধ্যে শীর্ষ ৭ কোম্পানির দখলেই বাজারের ৯৭ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী শীর্ষ ৭ ব্র্যান্ড ছিল ফ্রেশ (২৪ দশমিক ১৭ শতাংশ), প্রাণ (১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ) অ্যাকুয়াফিনা (১৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ) মাম (১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ), স্পা (১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ), কিনলে (৪ দশমিক ১৬ শতাংশ) ও জীবন (৪ শতাংশ)। ১ শতাংশের কিছু কম করে ব্যবসার ভাগ রয়েছে মুক্তা, সেনা, মুসকান ও শান্তি—এই চারটির।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত আধিপত্য ধরে রাখতেই খুচরা বিক্রেতাদের মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে শীর্ষ কোম্পানিগুলো। দাম বাড়ার আগে আকিজের আধা লিটার পানি বিক্রি করেই খুচরা বিক্রেতা লাভ পেতেন ৫ দশমিক ৬২ টাকা। দাম বাড়ার পর তা হয়েছে ৯ টাকা। কিনলের সমান পরিমাণ পানির বোতল ১৫ টাকায় বিক্রি করে খুচরা বিক্রেতা আগে ৬ দশমিক ৬৭ টাকা মুনাফা করতেন, দাম বাড়ানোর পর তা থেকে মুনাফা করছেন ৮ দশমিক ৪৭ টাকা।
কোম্পানিগুলো যা বলছে
পারটেক্স গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. নাহিদ ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের আগে আরও দু-একটি কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে। তাই বাজারকে ফলো করে আমরাও মাম পানির দাম বাড়িয়েছি।’
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের উপব্যবস্থাপক তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘সবাই দাম যখন বাড়িয়েছিল, আমরাও বাড়িয়েছিলাম। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এবং সরকারের নির্দেশনা মেনে আবার কমিয়েছি। এখন আমরা আগের দাম আধা লিটার ১৫ টাকা ও ১ লিটার ২৫ টাকায় বিক্রি করছি। যদিও এ কারণে বাজারে প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়েছি। কারণ, খুচরা বিক্রেতা যেটা বিক্রি করে লাভ বেশি পাবে, সেটাই দোকানে রাখবে।’
মেঘনা গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘দাম তো সবাই বাড়িয়েছে। সবাই বাড়ালে আমাদেরও বাড়াতে হয়।’
প্রতিযোগিতা কমিশন পুনর্গঠনের তাগিদ
ভোক্তাস্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনসাস কনজ্যুমারস সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব বিষয় দেখার সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রতিযোগিতা কমিশনের। এ কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতার কারণে কোম্পানিগুলো এভাবে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানোর সাহস পায়। তাই কমিশনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এ জন্য দক্ষ লোকদের দিয়ে কমিশন পুনর্গঠন করা দরকার।’

বোতলের পানি এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের ভরসা। বাড়িতে পরিবারের জন্য ব্যবহার ছাড়াও হোটেল-রেস্তোরাঁ, উৎসব, সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান—সর্বত্র ব্যবহৃত হয় বোতলের পানি। দিনে দিনে এই পানি হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। ভোক্তাস্বার্থের পক্ষে কাজ করা সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এই নির্ভরশীলতার সুযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলো উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায় অযৌক্তিকভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। অনুসন্ধান বলছে, বাজার দখলে রাখতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের বড় মুনাফা দেওয়া চড়া দামের বড় কারণ।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে দেশে বোতলে পানির ব্যবহার শুরু হয়। শুরুর দিকে এই পানি কিনে খাওয়া প্রায় বিলাসিতা মনে হলেও গত সাড়ে তিন দশকে জীবনযাপনের প্রায় সাধারণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এটি। ক্রমেই বেড়েছে বাজার। প্রতিযোগিতা কমিশনের পর্যালোচনা অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে এই পানি বিক্রি হয়েছিল ৫৫ কোটি ২৪ লাখ ৫৯ হাজার লিটারের বেশি। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত (যে পর্যন্ত তথ্য পাওয়া গেছে) বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি লিটার।
একলাফে বড় মূল্যবৃদ্ধি
শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে আধা লিটার পানির বোতলের দাম একবারে ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা নির্ধারণ করে। গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিযোগিতা কমিশনের তৈরি করা ‘বোতলজাত পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিবিষয়ক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে’ এ তথ্য রয়েছে। এতে কোম্পানিভেদে মুনাফা বেড়ে যায় ৭১ দশমিক ২৩ থেকে ৪২০ শতাংশ পর্যন্ত। অনেক বেড়ে যায় ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরা বিক্রেতাদের লাভের অংশও। ফলে ৫০০ মিলির এক বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৬-৭ টাকা হলেও ক্রেতাকে তা কিনতে হচ্ছে ২০ টাকায়। অনেকের অভিযোগ, ৭-৮টি কোম্পানি বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ডলারের দাম ও কাঁচামালের আমদানি খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করেছিল কোম্পানিগুলো। তবে বিশ্লেষণ করে সরকারের প্রতিযোগিতা কমিশন দেখতে পায়, সার্বিকভাবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে নামমাত্র।
প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের অনুসন্ধানে ঢাকা ওয়াসাসহ (ব্র্যান্ড নাম শান্তি) মোট ৮ কোম্পানির উৎপাদন খরচ বিশ্লেষণ করে। এতে যোগসাজশ করে দাম বাড়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। ওয়াসা ছাড়া বাকি ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এগুলো হলো কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজ লিমিটেড (কিনলে), ট্রান্সকম বেভারেজেস (অ্যাকুয়াফিনা), মেঘনা বেভারেজ (সুপার ফ্রেশ), পারটেক্স বেভারেজ (মাম), সিটি গ্রুপ (জীবন), আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ (স্পা) এবং প্রাণ বেভারেজ লিমিটেড (প্রাণ)।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উৎপাদন খরচ আর খুচরা দামের মাঝখানের ১৩-১৪ টাকা উৎপাদনকারী, ডিস্ট্রিবিউটর এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার মধ্যে ভাগ হচ্ছে। মুনাফার ভাগ সবচেয়ে বেশি খুচরা বিক্রেতার। তথ্যমতে, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায় ডিস্ট্রিবিউটর ও পাইকারি ব্যবসায়ীর মুনাফা বেড়েছে ১ দশমিক ৩৫ গুণ। খুচরা বিক্রেতার ক্ষেত্রে তা বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৪ গুণ পর্যন্ত।
মামলার অগ্রগতি থমকে
প্রতিযোগিতা কমিশন ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করলেও কমিশনের সদস্যদের কোরাম না থাকায় শুনানি স্থগিত রয়েছে। কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ কমিশনে সাধারণত চারজন সদস্য থাকেন। চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন সদস্য শুনানি গ্রহণ করেন। তবে শুনানির জন্য ন্যূনতম তিন সদস্যের কোরাম প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা সদস্য রয়েছি মাত্র দুজন। আমাকে আবার এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনের জন্য প্রশাসকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের অনুসন্ধানেও এই অনৈতিক মুনাফার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি পানির দাম কিছুটা কমালেও সরকারের নমনীয়তায় কেউ কেউ আবার বাড়িয়ে দিয়েছে।
ক্রেতার ওপর বোঝা বাড়ছে
সেগুনবাগিচা বাজারে বোতলের পানি কেনার সময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। নাম না প্রকাশের অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘বোতলের পানির দাম বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণহীনতারই প্রমাণ।’
পূর্ব রায়েরবাজার এলাকার বাসিন্দা একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আকিব সিদ্দিকী বলেন, তাঁদের যৌথ পরিবারের শিশুরা সরবরাহের পানি পান করতে চায় না। ফিল্টার নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় পরিবারটি এখন শুধু বোতলের পানি পান করে। স্বাস্থ্যগত দিকের কথা ভেবে তাঁরা পানির পেছনে এই বাড়তি ব্যয় করেন। এর দাম বেড়ে যাওয়ায় খুব চাপে আছেন।
উৎপাদন খরচ আর বিক্রির দাম
প্রতিবেদন অনুযায়ী জীবন ব্র্যান্ডের আধা লিটারের (৫০০ এমএল) এক বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৬ দশমিক ৫৯ টাকা, কিনলের ৬ দশমিক ৯২ টাকা, অ্যাকুয়াফিনার প্রায় ৬ টাকা, সুপার ফ্রেশের ৫ দশমিক ৯২ টাকা, স্পার ৬ দশমিক ৩০ টাকা এবং ওয়াসার শান্তির ৬ দশমিক ২৯ টাকা। এগুলোর মধ্যে ব্যতিক্রম পারটেক্সের মাম। কোম্পানিটির তথ্য অনুসারে তাদের ৫০০ এমএল বোতল পানির উৎপাদন খরচ ৯ দশমিক ৫৩ টাকা। গত বুধবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে প্রাণ, শান্তি ও জীবন ছাড়া বাকি সব ব্র্যান্ডের পানির খুচরা মূল্য ২০ টাকা দেখা গেছে। এদিকে বাজারের বড় দোকানগুলোর কর্মীরা বলছেন, শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর পানি পুরো এক কেস (২৪ বোতল) কিনলে তাঁরা ৩৫০-৩৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন। সে অনুযায়ী প্রতি ৫০০ এমএল বোতল ১৪ দশমিক ৬০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করলেও খুচরা বিক্রেতাদের কিছু মুনাফা থাকে।
বাজারে কোন ব্র্যান্ডের কী অবস্থা
সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাবে দেশে বোতলের পানি উৎপাদন ও বাজারজাতকারী নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩২। এগুলোর মধ্যে শীর্ষ ৭ কোম্পানির দখলেই বাজারের ৯৭ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী শীর্ষ ৭ ব্র্যান্ড ছিল ফ্রেশ (২৪ দশমিক ১৭ শতাংশ), প্রাণ (১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ) অ্যাকুয়াফিনা (১৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ) মাম (১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ), স্পা (১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ), কিনলে (৪ দশমিক ১৬ শতাংশ) ও জীবন (৪ শতাংশ)। ১ শতাংশের কিছু কম করে ব্যবসার ভাগ রয়েছে মুক্তা, সেনা, মুসকান ও শান্তি—এই চারটির।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত আধিপত্য ধরে রাখতেই খুচরা বিক্রেতাদের মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে শীর্ষ কোম্পানিগুলো। দাম বাড়ার আগে আকিজের আধা লিটার পানি বিক্রি করেই খুচরা বিক্রেতা লাভ পেতেন ৫ দশমিক ৬২ টাকা। দাম বাড়ার পর তা হয়েছে ৯ টাকা। কিনলের সমান পরিমাণ পানির বোতল ১৫ টাকায় বিক্রি করে খুচরা বিক্রেতা আগে ৬ দশমিক ৬৭ টাকা মুনাফা করতেন, দাম বাড়ানোর পর তা থেকে মুনাফা করছেন ৮ দশমিক ৪৭ টাকা।
কোম্পানিগুলো যা বলছে
পারটেক্স গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. নাহিদ ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের আগে আরও দু-একটি কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে। তাই বাজারকে ফলো করে আমরাও মাম পানির দাম বাড়িয়েছি।’
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের উপব্যবস্থাপক তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘সবাই দাম যখন বাড়িয়েছিল, আমরাও বাড়িয়েছিলাম। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এবং সরকারের নির্দেশনা মেনে আবার কমিয়েছি। এখন আমরা আগের দাম আধা লিটার ১৫ টাকা ও ১ লিটার ২৫ টাকায় বিক্রি করছি। যদিও এ কারণে বাজারে প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়েছি। কারণ, খুচরা বিক্রেতা যেটা বিক্রি করে লাভ বেশি পাবে, সেটাই দোকানে রাখবে।’
মেঘনা গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘দাম তো সবাই বাড়িয়েছে। সবাই বাড়ালে আমাদেরও বাড়াতে হয়।’
প্রতিযোগিতা কমিশন পুনর্গঠনের তাগিদ
ভোক্তাস্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনসাস কনজ্যুমারস সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব বিষয় দেখার সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রতিযোগিতা কমিশনের। এ কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতার কারণে কোম্পানিগুলো এভাবে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানোর সাহস পায়। তাই কমিশনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এ জন্য দক্ষ লোকদের দিয়ে কমিশন পুনর্গঠন করা দরকার।’

দেশে পোশাকশিল্প এখনো রপ্তানি আয়ের প্রধান ভিত্তি; অথচ সেই শিল্পের কাঁচামাল তুলার প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদিত হয় দেশে। বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলার চাহিদা থাকলেও উৎপাদিত হয় মাত্র ২ লাখ বেল, ফলে বাকি চাহিদা আমদানির ওপরই নির্ভরশীল।
৭ ঘণ্টা আগে
বিনিয়োগকারী ও বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, উদ্যোক্তা, পরিচালকেরা তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে নানা সুবিধা ভোগ করেন। গৃহস্থালি খরচ, বাজার, কর্মচারী বা বুয়ার বেতনসহ বিভিন্ন ব্যয় প্রতিষ্ঠান বহন করে থাকে। ফলে লভ্যাংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের জন্য বড় ত্যাগ নয়; অন্য সুবিধা থেকেই তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।
১৩ ঘণ্টা আগে
এই উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৈঠকের পর আমাদের আইপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মোট ৫০ জন আমদানিকারককে আইপি দেওয়া হবে। প্রতিজন ৩০ টন করে আমদানি করতে পারবে। সাধারণত আমদানি করতে তিন মাস সময় পাওয়া যায়।’
১৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। এই মুদ্রামান আরও নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বছর ধরেই রুপির দরপতন অব্যাহত ছিল। এখন এর মান কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। যা এই মুদ্রাকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত করেছে।
১৮ ঘণ্টা আগেজাহিদ হাসান, যশোর

দেশে পোশাকশিল্প এখনো রপ্তানি আয়ের প্রধান ভিত্তি; অথচ সেই শিল্পের কাঁচামাল তুলার প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদিত হয় দেশে। বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলার চাহিদা থাকলেও উৎপাদিত হয় মাত্র ২ লাখ বেল, ফলে বাকি চাহিদা আমদানির ওপরই নির্ভরশীল। এই আমদানি চাপ কমাতে এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে সরকার তুলা উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সারা দেশে ১৩টি জোনে চাষ সম্প্রসারণ, আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ, কৃষকের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রণোদনা নিশ্চিত করার কার্যক্রম জোরদার করেছে। কৃষিজমি কমলেও তুলা চাষের জমি, উৎপাদন ও চাষির সংখ্যা যে বাড়ছে, তা এসব উদ্যোগের বাস্তব অগ্রগতি ফুটিয়ে তোলে।
কৃষকেরা বলছেন, তুলা চাষ এখন অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে লাভজনক। প্রতি বিঘায় খরচ পড়ে ১৪ থেকে ১৮ হাজার টাকা, কিন্তু লাভ হয় তিন-চার গুণ। বড় সুবিধা হলো, তুলা খেতেই বিক্রি হয়ে যায়। পাশাপাশি তুলার সঙ্গে আন্তফসল হিসেবে বেগুন, মুলা, হলুদসহ নানা শাকসবজি চাষ করে মৌসুমে অতিরিক্ত আয় করা যায়। এসব ফসল সারির ফাঁকে বেড়ে ওঠায় আলাদা জমি বা অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রয়োজন হয় না, বরং এক মৌসুমে দ্বিগুণ আয়ের সুযোগ তৈরি হয়। ফলে তুলা চাষে কৃষকের আগ্রহ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বাড়ছে।
বর্তমানে দেশে চর কটন, হিল কটন, আপল্যান্ড কটন এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে উপযোগী ড্রাউট কটন—এই চার ধরনের তুলার চাষ হচ্ছে। প্রতিটি অঞ্চলের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী জাত উন্নয়ন, প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তুলা উন্নয়ন বোর্ড। তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত না করে ২০৪০ সালের মধ্যে তুলা চাষের পরিমাণ ২ লাখ হেক্টরে উন্নীত করা, চাষির সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখে তোলা এবং বছরে ১৫ লাখ ৮০ হাজার বেল উৎপাদন অর্জন করা।
এই জাতীয় পরিকল্পনার সবচেয়ে শক্তিশালী কেন্দ্র যশোর জোন; যেখানে যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা মিলিয়ে এই মৌসুমে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়েছে। শুধু এ জোনেই ১৩ হাজার কৃষক তুলা চাষে যুক্ত, আর ২ হাজার ৬০০ কৃষকের কাছে পৌঁছেছে প্রণোদনার বীজ, সার, কীটনাশক ও প্রশিক্ষণ। চলতি মৌসুমে সারা দেশে ১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা বিতরণ করা হচ্ছে। তবে সরকারনির্ধারিত মণপ্রতি চার হাজার টাকা দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ঝিকরগাছার তুলাচাষি শহিদুল ইসলাম মনে করেন, দীর্ঘ চাষচক্র বিবেচনায় দাম আরও বাড়ানো দরকার।
যশোর জোনের তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, এই অঞ্চলে চাষির সংখ্যা ১৫ হাজারে নেওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে এবং ফলনও দ্রুত বাড়ছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল আমীন বলেন, সারা দেশে বর্তমানে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হচ্ছে। এতে যুক্ত আছেন ৭৪ হাজার কৃষক, আর প্রণোদনা পেয়েছেন ২১ হাজার। উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার বেল; পরের মৌসুমে তা ৫০ হাজার হেক্টরে আড়াই লাখ বেলে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তুলাবীজ থেকে ভোজ্যতেল এবং অয়েল কেক উৎপাদনের মাধ্যমে শিল্প খাতেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক এ এস এম গোলাম হাফিজ মনে করেন, তুলা চাষের জন্য আলাদা ঋণব্যবস্থা চালু হলে উৎপাদন ও আবাদ—দুটোই দ্রুত বাড়বে। সরকারের বর্তমান উদ্যোগ এবং কৃষকের বাড়তি আগ্রহ ভবিষ্যতে দেশের তুলা উৎপাদনকে আমদানিনির্ভরতা কমানোর বাস্তব সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।

দেশে পোশাকশিল্প এখনো রপ্তানি আয়ের প্রধান ভিত্তি; অথচ সেই শিল্পের কাঁচামাল তুলার প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদিত হয় দেশে। বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলার চাহিদা থাকলেও উৎপাদিত হয় মাত্র ২ লাখ বেল, ফলে বাকি চাহিদা আমদানির ওপরই নির্ভরশীল। এই আমদানি চাপ কমাতে এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে সরকার তুলা উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সারা দেশে ১৩টি জোনে চাষ সম্প্রসারণ, আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ, কৃষকের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রণোদনা নিশ্চিত করার কার্যক্রম জোরদার করেছে। কৃষিজমি কমলেও তুলা চাষের জমি, উৎপাদন ও চাষির সংখ্যা যে বাড়ছে, তা এসব উদ্যোগের বাস্তব অগ্রগতি ফুটিয়ে তোলে।
কৃষকেরা বলছেন, তুলা চাষ এখন অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে লাভজনক। প্রতি বিঘায় খরচ পড়ে ১৪ থেকে ১৮ হাজার টাকা, কিন্তু লাভ হয় তিন-চার গুণ। বড় সুবিধা হলো, তুলা খেতেই বিক্রি হয়ে যায়। পাশাপাশি তুলার সঙ্গে আন্তফসল হিসেবে বেগুন, মুলা, হলুদসহ নানা শাকসবজি চাষ করে মৌসুমে অতিরিক্ত আয় করা যায়। এসব ফসল সারির ফাঁকে বেড়ে ওঠায় আলাদা জমি বা অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রয়োজন হয় না, বরং এক মৌসুমে দ্বিগুণ আয়ের সুযোগ তৈরি হয়। ফলে তুলা চাষে কৃষকের আগ্রহ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বাড়ছে।
বর্তমানে দেশে চর কটন, হিল কটন, আপল্যান্ড কটন এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে উপযোগী ড্রাউট কটন—এই চার ধরনের তুলার চাষ হচ্ছে। প্রতিটি অঞ্চলের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী জাত উন্নয়ন, প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তুলা উন্নয়ন বোর্ড। তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত না করে ২০৪০ সালের মধ্যে তুলা চাষের পরিমাণ ২ লাখ হেক্টরে উন্নীত করা, চাষির সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখে তোলা এবং বছরে ১৫ লাখ ৮০ হাজার বেল উৎপাদন অর্জন করা।
এই জাতীয় পরিকল্পনার সবচেয়ে শক্তিশালী কেন্দ্র যশোর জোন; যেখানে যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা মিলিয়ে এই মৌসুমে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়েছে। শুধু এ জোনেই ১৩ হাজার কৃষক তুলা চাষে যুক্ত, আর ২ হাজার ৬০০ কৃষকের কাছে পৌঁছেছে প্রণোদনার বীজ, সার, কীটনাশক ও প্রশিক্ষণ। চলতি মৌসুমে সারা দেশে ১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা বিতরণ করা হচ্ছে। তবে সরকারনির্ধারিত মণপ্রতি চার হাজার টাকা দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ঝিকরগাছার তুলাচাষি শহিদুল ইসলাম মনে করেন, দীর্ঘ চাষচক্র বিবেচনায় দাম আরও বাড়ানো দরকার।
যশোর জোনের তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, এই অঞ্চলে চাষির সংখ্যা ১৫ হাজারে নেওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে এবং ফলনও দ্রুত বাড়ছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল আমীন বলেন, সারা দেশে বর্তমানে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হচ্ছে। এতে যুক্ত আছেন ৭৪ হাজার কৃষক, আর প্রণোদনা পেয়েছেন ২১ হাজার। উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার বেল; পরের মৌসুমে তা ৫০ হাজার হেক্টরে আড়াই লাখ বেলে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তুলাবীজ থেকে ভোজ্যতেল এবং অয়েল কেক উৎপাদনের মাধ্যমে শিল্প খাতেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক এ এস এম গোলাম হাফিজ মনে করেন, তুলা চাষের জন্য আলাদা ঋণব্যবস্থা চালু হলে উৎপাদন ও আবাদ—দুটোই দ্রুত বাড়বে। সরকারের বর্তমান উদ্যোগ এবং কৃষকের বাড়তি আগ্রহ ভবিষ্যতে দেশের তুলা উৎপাদনকে আমদানিনির্ভরতা কমানোর বাস্তব সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।

বোতলের পানি এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের ভরসা। বাড়িতে পরিবারের জন্য ব্যবহার ছাড়াও হোটেল-রেস্তোরাঁ, উৎসব, সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান—সর্বত্র ব্যবহৃত হয় বোতলের পানি। দিনে দিনে এই পানি হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
১০ নভেম্বর ২০২৪
বিনিয়োগকারী ও বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, উদ্যোক্তা, পরিচালকেরা তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে নানা সুবিধা ভোগ করেন। গৃহস্থালি খরচ, বাজার, কর্মচারী বা বুয়ার বেতনসহ বিভিন্ন ব্যয় প্রতিষ্ঠান বহন করে থাকে। ফলে লভ্যাংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের জন্য বড় ত্যাগ নয়; অন্য সুবিধা থেকেই তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।
১৩ ঘণ্টা আগে
এই উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৈঠকের পর আমাদের আইপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মোট ৫০ জন আমদানিকারককে আইপি দেওয়া হবে। প্রতিজন ৩০ টন করে আমদানি করতে পারবে। সাধারণত আমদানি করতে তিন মাস সময় পাওয়া যায়।’
১৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। এই মুদ্রামান আরও নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বছর ধরেই রুপির দরপতন অব্যাহত ছিল। এখন এর মান কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। যা এই মুদ্রাকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত করেছে।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

২০২৪-২৫ অর্থবছরে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৯টি কোম্পানি শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে উদ্যোক্তা, পরিচালকদের বড় বিনিয়োগ থাকলেও এবারের লভ্যাংশ থেকে তাঁরা নিজেদের অংশ নেবেন না।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও বাজারে আস্থা ধরে রাখতে উদ্যোক্তাদের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক।
তবে অনেকেই মনে করেন, কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও পরিচালকেরা লভ্যাংশ না নেওয়ার পেছনে অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি জড়িত থাকতে পারে।
বিনিয়োগকারী ও বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, উদ্যোক্তা, পরিচালকেরা তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে নানা সুবিধা ভোগ করেন। গৃহস্থালি খরচ, বাজার, কর্মচারী বা বুয়ার বেতনসহ বিভিন্ন ব্যয় প্রতিষ্ঠান বহন করে থাকে। ফলে লভ্যাংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের জন্য বড় ত্যাগ নয়; অন্য সুবিধা থেকেই তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।
ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বাধ্যবাধকতা না থাকলে অনেক কোম্পানি হয়তো নগদ লভ্যাংশই দিত না। শুধু বোনাস দিয়ে ক্যাটাগরি বজায় রাখার চেষ্টা করত।
বর্তমানে লভ্যাংশ ঘোষণায় নগদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি রয়েছে। কৃত্রিমভাবে মুনাফা বাড়িয়ে বোনাস শেয়ার দেওয়া গেলেও নগদ দেওয়ার সুযোগ কম। এ কারণে সক্ষমতার অভাব থাকা অনেক প্রতিষ্ঠান শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
এক কোম্পানির সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক কোম্পানির মালিকপক্ষ নিজেরাই শেয়ারের ব্যবসা করেন। বাস্তবে মুনাফা কম হলেও আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুতের সময় তা বেশি দেখান। ফলে হিসাব অনুযায়ী লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা দেখা গেলেও বাস্তবে তা থাকে না। তাই উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বাদ দিয়ে শুধু সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়।
শীর্ষ পাঁচের কে কত লভ্যাংশ দেবে
সবচেয়ে বেশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ওরিয়ন ইনফিউশন। ১ টাকা ৭১ পয়সা ইপিএসের বিপরীতে কোম্পানি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেবে ২০ শতাংশ বা ২ টাকা। অর্থাৎ ইপিএসের চেয়ে বেশি লভ্যাংশ দেবে। বাকি টাকা রিজার্ভ থেকে দেওয়া হবে।
সোনালি লাইফের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৭৩ পয়সা। কোম্পানি লভ্যাংশ দেবে ১৫ শতাংশ বা ১ টাকা ৫০ পয়সা।
নাভানা ফার্মা মুনাফার বড় একটা অংশ কোম্পানিতে রেখে দিতে চায়। কোম্পানির ইপিএস হয়েছে সাড়ে ৪ টাকা; কিন্তু লভ্যাংশ দেবে ১৪ শতাংশ বা ১ টাকা ৪০ পয়সা করে।
ফাইন ফুডসও মুনাফার বড় একটা অংশ রিজার্ভে রাখতে চায়। ৪ টাকা ১৮ পয়সা ইপিএসের বিপরীতে লভ্যাংশ দেবে ১৪ শতাংশ বা ১ টাকা ৪০ পয়সা।
এমকে ফুটওয়্যার ১ টাকা ৮৩ পয়সার বিপরীতে ১২ শতাংশ বা ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ দেবে। এ ছাড়া ৩৪টি কোম্পানি কেবল শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, লভ্যাংশ ঘোষণার এখতিয়ার কোম্পানির নিজের। আইনের বরখেলাপ না হলে এবং বিনিয়োগকারীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৯টি কোম্পানি শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে উদ্যোক্তা, পরিচালকদের বড় বিনিয়োগ থাকলেও এবারের লভ্যাংশ থেকে তাঁরা নিজেদের অংশ নেবেন না।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও বাজারে আস্থা ধরে রাখতে উদ্যোক্তাদের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক।
তবে অনেকেই মনে করেন, কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও পরিচালকেরা লভ্যাংশ না নেওয়ার পেছনে অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি জড়িত থাকতে পারে।
বিনিয়োগকারী ও বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, উদ্যোক্তা, পরিচালকেরা তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে নানা সুবিধা ভোগ করেন। গৃহস্থালি খরচ, বাজার, কর্মচারী বা বুয়ার বেতনসহ বিভিন্ন ব্যয় প্রতিষ্ঠান বহন করে থাকে। ফলে লভ্যাংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের জন্য বড় ত্যাগ নয়; অন্য সুবিধা থেকেই তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।
ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বাধ্যবাধকতা না থাকলে অনেক কোম্পানি হয়তো নগদ লভ্যাংশই দিত না। শুধু বোনাস দিয়ে ক্যাটাগরি বজায় রাখার চেষ্টা করত।
বর্তমানে লভ্যাংশ ঘোষণায় নগদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি রয়েছে। কৃত্রিমভাবে মুনাফা বাড়িয়ে বোনাস শেয়ার দেওয়া গেলেও নগদ দেওয়ার সুযোগ কম। এ কারণে সক্ষমতার অভাব থাকা অনেক প্রতিষ্ঠান শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
এক কোম্পানির সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক কোম্পানির মালিকপক্ষ নিজেরাই শেয়ারের ব্যবসা করেন। বাস্তবে মুনাফা কম হলেও আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুতের সময় তা বেশি দেখান। ফলে হিসাব অনুযায়ী লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা দেখা গেলেও বাস্তবে তা থাকে না। তাই উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বাদ দিয়ে শুধু সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়।
শীর্ষ পাঁচের কে কত লভ্যাংশ দেবে
সবচেয়ে বেশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ওরিয়ন ইনফিউশন। ১ টাকা ৭১ পয়সা ইপিএসের বিপরীতে কোম্পানি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেবে ২০ শতাংশ বা ২ টাকা। অর্থাৎ ইপিএসের চেয়ে বেশি লভ্যাংশ দেবে। বাকি টাকা রিজার্ভ থেকে দেওয়া হবে।
সোনালি লাইফের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৭৩ পয়সা। কোম্পানি লভ্যাংশ দেবে ১৫ শতাংশ বা ১ টাকা ৫০ পয়সা।
নাভানা ফার্মা মুনাফার বড় একটা অংশ কোম্পানিতে রেখে দিতে চায়। কোম্পানির ইপিএস হয়েছে সাড়ে ৪ টাকা; কিন্তু লভ্যাংশ দেবে ১৪ শতাংশ বা ১ টাকা ৪০ পয়সা করে।
ফাইন ফুডসও মুনাফার বড় একটা অংশ রিজার্ভে রাখতে চায়। ৪ টাকা ১৮ পয়সা ইপিএসের বিপরীতে লভ্যাংশ দেবে ১৪ শতাংশ বা ১ টাকা ৪০ পয়সা।
এমকে ফুটওয়্যার ১ টাকা ৮৩ পয়সার বিপরীতে ১২ শতাংশ বা ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ দেবে। এ ছাড়া ৩৪টি কোম্পানি কেবল শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, লভ্যাংশ ঘোষণার এখতিয়ার কোম্পানির নিজের। আইনের বরখেলাপ না হলে এবং বিনিয়োগকারীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।

বোতলের পানি এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের ভরসা। বাড়িতে পরিবারের জন্য ব্যবহার ছাড়াও হোটেল-রেস্তোরাঁ, উৎসব, সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান—সর্বত্র ব্যবহৃত হয় বোতলের পানি। দিনে দিনে এই পানি হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
১০ নভেম্বর ২০২৪
দেশে পোশাকশিল্প এখনো রপ্তানি আয়ের প্রধান ভিত্তি; অথচ সেই শিল্পের কাঁচামাল তুলার প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদিত হয় দেশে। বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলার চাহিদা থাকলেও উৎপাদিত হয় মাত্র ২ লাখ বেল, ফলে বাকি চাহিদা আমদানির ওপরই নির্ভরশীল।
৭ ঘণ্টা আগে
এই উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৈঠকের পর আমাদের আইপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মোট ৫০ জন আমদানিকারককে আইপি দেওয়া হবে। প্রতিজন ৩০ টন করে আমদানি করতে পারবে। সাধারণত আমদানি করতে তিন মাস সময় পাওয়া যায়।’
১৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। এই মুদ্রামান আরও নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বছর ধরেই রুপির দরপতন অব্যাহত ছিল। এখন এর মান কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। যা এই মুদ্রাকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত করেছে।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামীকাল রোববার থেকে আমদানিকারকেরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) নিতে পারবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত তিন দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে খুচরা ও পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২৫-৩০ টাকা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ শনিবার অনলাইনে এক জরুরি বৈঠক করে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে দুই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে কৃষিসচিব কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংকে আইপি দেওয়ার নির্দেশনা দেয়।
এই উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৈঠকের পর আমাদের আইপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মোট ৫০ জন আমদানিকারককে আইপি দেওয়া হবে। প্রতিজন ৩০ টন করে আমদানি করতে পারবে। সাধারণত আমদানি করতে তিন মাস সময় পাওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রোববার সকাল ১০টায় সার্ভার খুলে দেব। তারপর ৫০ জন হলে আবার সার্ভার বন্ধ করে দেব। অনেকটা ট্রেনের টিকিটের মতো। আমাদের কাছে সাড়ে তিন হাজার আবেদন ছিল। যা আমরা ফেরত দিয়েছিলাম। মূলত তাদের মধ্য থেকেই এই আবেদন নেওয়া হবে।’
গত নভেম্বরের শুরুতে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়ে। ওই সময় এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ৮০-৯০ টাকার পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকায় ওঠে।
তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানি করার কথা জানিয়েছিল। এরপর কিছুটা কমে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কৃষি মন্ত্রণালয়ের আপত্তির মুখে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়নি।

পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামীকাল রোববার থেকে আমদানিকারকেরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) নিতে পারবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত তিন দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে খুচরা ও পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২৫-৩০ টাকা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ শনিবার অনলাইনে এক জরুরি বৈঠক করে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে দুই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে কৃষিসচিব কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংকে আইপি দেওয়ার নির্দেশনা দেয়।
এই উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৈঠকের পর আমাদের আইপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মোট ৫০ জন আমদানিকারককে আইপি দেওয়া হবে। প্রতিজন ৩০ টন করে আমদানি করতে পারবে। সাধারণত আমদানি করতে তিন মাস সময় পাওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রোববার সকাল ১০টায় সার্ভার খুলে দেব। তারপর ৫০ জন হলে আবার সার্ভার বন্ধ করে দেব। অনেকটা ট্রেনের টিকিটের মতো। আমাদের কাছে সাড়ে তিন হাজার আবেদন ছিল। যা আমরা ফেরত দিয়েছিলাম। মূলত তাদের মধ্য থেকেই এই আবেদন নেওয়া হবে।’
গত নভেম্বরের শুরুতে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়ে। ওই সময় এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ৮০-৯০ টাকার পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকায় ওঠে।
তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানি করার কথা জানিয়েছিল। এরপর কিছুটা কমে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কৃষি মন্ত্রণালয়ের আপত্তির মুখে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়নি।

বোতলের পানি এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের ভরসা। বাড়িতে পরিবারের জন্য ব্যবহার ছাড়াও হোটেল-রেস্তোরাঁ, উৎসব, সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান—সর্বত্র ব্যবহৃত হয় বোতলের পানি। দিনে দিনে এই পানি হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
১০ নভেম্বর ২০২৪
দেশে পোশাকশিল্প এখনো রপ্তানি আয়ের প্রধান ভিত্তি; অথচ সেই শিল্পের কাঁচামাল তুলার প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদিত হয় দেশে। বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলার চাহিদা থাকলেও উৎপাদিত হয় মাত্র ২ লাখ বেল, ফলে বাকি চাহিদা আমদানির ওপরই নির্ভরশীল।
৭ ঘণ্টা আগে
বিনিয়োগকারী ও বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, উদ্যোক্তা, পরিচালকেরা তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে নানা সুবিধা ভোগ করেন। গৃহস্থালি খরচ, বাজার, কর্মচারী বা বুয়ার বেতনসহ বিভিন্ন ব্যয় প্রতিষ্ঠান বহন করে থাকে। ফলে লভ্যাংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের জন্য বড় ত্যাগ নয়; অন্য সুবিধা থেকেই তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।
১৩ ঘণ্টা আগে
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। এই মুদ্রামান আরও নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বছর ধরেই রুপির দরপতন অব্যাহত ছিল। এখন এর মান কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। যা এই মুদ্রাকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত করেছে।
১৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। এই মুদ্রামান আরও নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বছর ধরেই রুপির দরপতন অব্যাহত ছিল। এখন এর মান কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। যা এই মুদ্রাকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত করেছে।
আর রুপির দরপতনে সবচেয়ে বড় আঘাতটি এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হলে রুপির এই পতন ঠেকানোর একটি সম্ভাবনা ছিল কিন্তু সেই চুক্তিও অধরা রয়ে গেছে।
তবে এর প্রধান কারণ হলো ভারতের শেয়ারবাজার। ১৯৯৩ সালের পর থেকে ইন্ডিয়ান স্টক মার্কেট অন্যান্য বাজারগুলোর তুলনায় সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে রয়েছে। এই বছর এমএসসিআই ইন্ডিয়া সূচকের ডলার রিটার্ন ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ, যেখানে বৃহত্তর উদীয়মান বাজার ইনডেক্সের রিটার্ন দাঁড়িয়েছে ২৭.৭ শতাংশে।
এই ব্যবধানের ফলে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা দেশের বাজার থেকে তুলে নিয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর সেগুলো বিনিয়োগ করেছে ভালো পারফর্ম করা বাজারগুলোতে।
রুপির নিম্নমুখী অবস্থানে যারা কিছুটা হলেও লাভবান হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন রপ্তানিকারকেরা। মার্কিন চড়া শুল্কের কারণে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। রুপির দরপতন তাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।
ভারতের প্রযুক্তিখাতের শেয়ার কয়েকটি ত্রৈমাসিক ধরে একটি সীমিত পরিসরে আটকে ছিল। তা এই সপ্তাহে সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এছাড়া আর কোনো ইতিবাচক দিক চোখে পড়ে না।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ভারতের চলতি হিসাবের ঘাটতি কিছুটা কমলেও পণ্য বাণিজ্যের ঘাটতি অক্টোবর মাসে দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৪১.৭ বিলিয়ন ডলারে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রুপি আরও নিচে নামতে থাকায় জ্বালানি আমদানি ব্যয় বাড়বে; পাশাপাশি বাড়বে বিদেশি ঋণের খরচও। আর এর প্রভাব পড়বে বিমান, ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইলের মতো বিভিন্ন খাতের উৎপাদন ব্যয়ে।
এ অবস্থায় বিদেশ ভ্রমণ ও বিদেশে শিক্ষার খরচও ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি আনন্দ নাগেশ্বরন বলেন, রুপির দরপতন নিয়ে তিনি ‘নিদ্রাহীন রাত’ কাটাচ্ছেন না। স্বল্প মুদ্রাস্ফীতি ও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি তাঁকে চিন্তামুক্ত রাখছে। রুপির দুর্বলতা ছিল নরেন্দ্র মোদির প্রথমবারের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থিতার সময় বড় প্রচারণা–ইস্যুগুলোর একটি। ২০১৩ সালে মোদি যখন প্রচার চালাচ্ছিলেন, তখন রুপির বিনিময়মূল্য ছিল ডলারের বিপরীতে ৬০.৫; আর তিনি দায়িত্ব গ্রহণের বছর তা ছিল ৬১। তবে ক্ষমতায় আসার পর মুদ্রার অবমূল্যায়নের অর্থনৈতিক প্রভাবকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি মোদি সরকার।

মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। এই মুদ্রামান আরও নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বছর ধরেই রুপির দরপতন অব্যাহত ছিল। এখন এর মান কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। যা এই মুদ্রাকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত করেছে।
আর রুপির দরপতনে সবচেয়ে বড় আঘাতটি এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হলে রুপির এই পতন ঠেকানোর একটি সম্ভাবনা ছিল কিন্তু সেই চুক্তিও অধরা রয়ে গেছে।
তবে এর প্রধান কারণ হলো ভারতের শেয়ারবাজার। ১৯৯৩ সালের পর থেকে ইন্ডিয়ান স্টক মার্কেট অন্যান্য বাজারগুলোর তুলনায় সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে রয়েছে। এই বছর এমএসসিআই ইন্ডিয়া সূচকের ডলার রিটার্ন ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ, যেখানে বৃহত্তর উদীয়মান বাজার ইনডেক্সের রিটার্ন দাঁড়িয়েছে ২৭.৭ শতাংশে।
এই ব্যবধানের ফলে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা দেশের বাজার থেকে তুলে নিয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর সেগুলো বিনিয়োগ করেছে ভালো পারফর্ম করা বাজারগুলোতে।
রুপির নিম্নমুখী অবস্থানে যারা কিছুটা হলেও লাভবান হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন রপ্তানিকারকেরা। মার্কিন চড়া শুল্কের কারণে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। রুপির দরপতন তাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।
ভারতের প্রযুক্তিখাতের শেয়ার কয়েকটি ত্রৈমাসিক ধরে একটি সীমিত পরিসরে আটকে ছিল। তা এই সপ্তাহে সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এছাড়া আর কোনো ইতিবাচক দিক চোখে পড়ে না।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ভারতের চলতি হিসাবের ঘাটতি কিছুটা কমলেও পণ্য বাণিজ্যের ঘাটতি অক্টোবর মাসে দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৪১.৭ বিলিয়ন ডলারে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রুপি আরও নিচে নামতে থাকায় জ্বালানি আমদানি ব্যয় বাড়বে; পাশাপাশি বাড়বে বিদেশি ঋণের খরচও। আর এর প্রভাব পড়বে বিমান, ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইলের মতো বিভিন্ন খাতের উৎপাদন ব্যয়ে।
এ অবস্থায় বিদেশ ভ্রমণ ও বিদেশে শিক্ষার খরচও ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি আনন্দ নাগেশ্বরন বলেন, রুপির দরপতন নিয়ে তিনি ‘নিদ্রাহীন রাত’ কাটাচ্ছেন না। স্বল্প মুদ্রাস্ফীতি ও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি তাঁকে চিন্তামুক্ত রাখছে। রুপির দুর্বলতা ছিল নরেন্দ্র মোদির প্রথমবারের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থিতার সময় বড় প্রচারণা–ইস্যুগুলোর একটি। ২০১৩ সালে মোদি যখন প্রচার চালাচ্ছিলেন, তখন রুপির বিনিময়মূল্য ছিল ডলারের বিপরীতে ৬০.৫; আর তিনি দায়িত্ব গ্রহণের বছর তা ছিল ৬১। তবে ক্ষমতায় আসার পর মুদ্রার অবমূল্যায়নের অর্থনৈতিক প্রভাবকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি মোদি সরকার।

বোতলের পানি এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের ভরসা। বাড়িতে পরিবারের জন্য ব্যবহার ছাড়াও হোটেল-রেস্তোরাঁ, উৎসব, সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান—সর্বত্র ব্যবহৃত হয় বোতলের পানি। দিনে দিনে এই পানি হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
১০ নভেম্বর ২০২৪
দেশে পোশাকশিল্প এখনো রপ্তানি আয়ের প্রধান ভিত্তি; অথচ সেই শিল্পের কাঁচামাল তুলার প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদিত হয় দেশে। বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলার চাহিদা থাকলেও উৎপাদিত হয় মাত্র ২ লাখ বেল, ফলে বাকি চাহিদা আমদানির ওপরই নির্ভরশীল।
৭ ঘণ্টা আগে
বিনিয়োগকারী ও বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, উদ্যোক্তা, পরিচালকেরা তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে নানা সুবিধা ভোগ করেন। গৃহস্থালি খরচ, বাজার, কর্মচারী বা বুয়ার বেতনসহ বিভিন্ন ব্যয় প্রতিষ্ঠান বহন করে থাকে। ফলে লভ্যাংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের জন্য বড় ত্যাগ নয়; অন্য সুবিধা থেকেই তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।
১৩ ঘণ্টা আগে
এই উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৈঠকের পর আমাদের আইপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মোট ৫০ জন আমদানিকারককে আইপি দেওয়া হবে। প্রতিজন ৩০ টন করে আমদানি করতে পারবে। সাধারণত আমদানি করতে তিন মাস সময় পাওয়া যায়।’
১৪ ঘণ্টা আগে