Ajker Patrika

জনশক্তি রপ্তানি কমছে, বিদেশে ছোট হচ্ছে বাংলাদেশের শ্রমবাজার

মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ১৪ জুন ২০২৪, ১২: ৪০
জনশক্তি রপ্তানি কমছে, বিদেশে ছোট হচ্ছে বাংলাদেশের শ্রমবাজার

কমছে জনশক্তি রপ্তানি। একই সঙ্গে কমছে বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে রেমিট্যান্সে (প্রবাসী আয়)। জনশক্তি রপ্তানি খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনই নতুন শ্রমবাজার ধরতে না পারলে এ খাত বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ২০১৮ সালে নতুন ৫৩টি দেশে কর্মী পাঠানোর সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করলেও উল্লেখযোগ্য কোনো শ্রমবাজার এখনো তৈরি হয়নি।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাহিদার দ্বিগুণ কর্মী পাঠানো, ভিসার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন কারণে কয়েকটি শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে। বেশি কর্মী পাঠানোর দায় জনশক্তি রপ্তানিকারকদেরও আছে। সরকারকে বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রমবাজার দ্রুত চালু ও নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে।

জানতে চাইলে বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (কর্মসংস্থান) শাহ্ আবদুল তারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, অদক্ষ কর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থান কঠিন হচ্ছে।

কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে। তাই দক্ষ কর্মীর বাজার ধরতে কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। জনশক্তি রপ্তানি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় বিদেশি কর্মী বেশি হওয়ার কারণ দেখিয়ে ওমান ও মালয়েশিয়া শ্রমবাজার সাময়িক বন্ধ রেখেছে। প্রচলিত শ্রমবাজারের পাশাপাশি নতুন বাজারে কর্মী পাঠাতে সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের তালিকায় ১৬৮টি দেশের নাম থাকলেও বাংলাদেশ থেকে কর্মীরা মূলত যান মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে। অর্থাৎ শ্রমবাজার সীমাবদ্ধ নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশে। সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব। দ্বিতীয় মালয়েশিয়া ও তৃতীয় ওমান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কর্মীদের ৯৫ শতাংশই গেছেন সৌদি আরব, ওমান, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, কাতার, কুয়েত ও জর্ডানে। এর মধ্যে কর্মী ভিসায় গত তিন বছরে বিদেশে পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের অর্ধেকের বেশি গেছেন সৌদি আরবে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে মূলত ইতালি ও রোমানিয়ায় গত দুই বছরে কিছু কর্মী পাঠানো গেছে।

সৌদি আরবে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি কর্মী আছেন। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) দেশটিতে গেছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৭ জন। ২০২৩ সালে যান ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৪ জন এবং এর আগের বছর গেছেন ৬ লাখ ১২ হাজার ৪১৮ জন। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৫৭ হাজার ২২৭ জন এবং ২০২০ সালে ছিল ১ লাখ ৬১ হাজার ৭২৬ জন। দেশটি থেকে প্রবাসী আয় পাঠানো কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৬ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসেছিল ৩৭৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৫৪ কোটি ১৯ লাখ ডলার এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৭২ কোটি ১৪ লাখ ডলার।

সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স কমার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটিতে গত কয়েক বছরে যাওয়া কর্মীদের একটি বড় অংশই গেছেন ফ্রি ভিসায়। অর্থাৎ কাজ ঠিক না করেই। ফলে তাঁরা যেসব কাজ খুঁজে নিয়েছেন, তাতে প্রত্যাশা অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। আবার যাঁরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিতে কাজ করছেন, তাঁরাও কম বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। ফলে দেশে বেশি অর্থ পাঠাতে পারছেন না।

একই অবস্থা প্রবাসী আয় আসার অন্যতম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতেও। দেশটির শ্রমবাজার বন্ধ থাকায় কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশি কর্মীরা সেখানে যাচ্ছেন ভ্রমণ ভিসায়। বিএমইটির তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে গেছেন ২৬ হাজার ১৯২ জন। গত বছর যান ৯৬ হাজার ৪২২ জন এবং ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৭৭৫ জন। কর্মী ভিসায় না যাওয়ায় তাঁদের কাজের নিশ্চয়তা নেই।

বন্ধ হচ্ছে একের পর এক শ্রমবাজার 
গত কয়েক বছরে কয়েকটি দেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে। প্রবাসী আয় আসার অন্যতম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশি কর্মী নেওয়া বন্ধ করেছে ২০১২ সালের আগস্টে। এখনো ওই বাজার চালু হয়নি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশি মুয়াজ্জিনের হাতে বাইরাইনের নাগরিক ইমাম খুনের পর দেশটি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এর আগে ২০১৭ সালে ১৯ হাজার ৩১৮ জন এবং ২০১৬ সালে ৭২ হাজার ১৬৭ কর্মী যান। গত তিন বছরে গেছেন মাত্র ১১ জন। 
বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার ওমান ভিসার অপব্যবহার ও চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণ কর্মী থাকার অভিযোগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করে। বিএমইটি সূত্র বলছে, এর আগে ভিসা পাওয়া ৩০২ কর্মী গত জানুয়ারিতে ওমান যান। ২০২৩ সালে সেখানে গেছেন নতুন ১ লাখ ২৭ হাজার ৮৮৩ কর্মী। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬১২ জন। তবে গত বুধবার ঢাকার ওমান দূতাবাস এক বিবৃতিতে পেশাগত ১০ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ার কথা জানায়। শ্রমিক ভিসা বন্ধই রেখেছে।

জনশক্তি রপ্তানিতে আরেক দুঃসংবাদ এনেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। গত ৩১ মের পর দেশটি বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের কর্মী প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী থাকা মালয়েশিয়ায় গত বছর গেছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন। এ বছর এপ্রিল পর্যন্ত গেছেন ৪৪ হাজার ৭২৭ জন। চার বছর পর ২০২২ সালে দেশটির শ্রমবাজার খোলার পর ওই বছর গিয়েছিলেন ৫০ হাজার ৯০ জন। আবার অনির্দিষ্টকালের জন্য বাজারটি বন্ধ হলো।

সার্কভুক্ত দেশ মালদ্বীপেও বাংলাদেশি কর্মী রপ্তানি বন্ধ হয়েছে মে মাসে। সিঙ্গাপুরেও কর্মী যাওয়া কমেছে। দেশটিতে ২০২২ সালে ৬৩ হাজার ৩৮৩ জন ও ২০২৩ সালে ৫৩ হাজার ২৬৫ জন গেলেও চলতি বছর গেছেন ১৪ হাজার ৯৬৪ জন।

এ প্রসঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজের কো-অর্ডিনেটর ড. মো. জালাল উদ্দিন শিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট গঠন করা হয়েছে। এতে অভিবাসীরা শোষণের শিকার হন। ভুয়া কাগজপত্র দাখিল, নিয়োগে অনিয়ম, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়সহ নানা কারণে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ স্থগিত করেছে। আবার যেসব দেশে খোলা আছে, সেগুলোরও কোনো কোনোটিতে রপ্তানি কমছে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও কাতার সফর করেন। তিনি ওই সফর নিয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমিরাত নতুন করে ১১টি ক্যাটাগরিতে দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদার কথা জানিয়েছে। প্রথম দফায় ডেলিভারি কাজে তিন হাজার কর্মী নেবে। এর মধ্যে ট্যাক্সিচালক ৪০০ ও মোটরসাইকেলচালক ৫০০ জন। ৪০০ কর্মী ইতিমধ্যে চলে গেছেন। আরও ৫০০ কর্মী যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন।

ওমানও দক্ষ কর্মী নিতে চায় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দক্ষ কর্মী যাওয়া শুরু করলে অদক্ষ কর্মীও যাওয়া শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে সে ব্যবস্থা হবে।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সৌদি আরবে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কর্মী পাঠানো হচ্ছে। গত কয়েক বছরে প্রায় ১৭ লাখ কর্মী দেশটিতে গেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই কম বেতনে কাজ করছেন; যার প্রভাব রেমিট্যান্সে পড়েছে। বাহরাইন, মালয়েশিয়া, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বন্ধ শ্রমবাজার আবার চালুর জন্য সরকারি পর্যায়ে তৎপরতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে নতুন দেশের বিষয়ে উদ্যোগ বাড়াতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সারা দেশের সাত হাজার ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ৭০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা নগদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘নগদ ফিল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫’ নামের এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ বোনাসের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জনের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায় এই অর্থ।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া, খাওয়া, হোটেলে অবস্থানসহ অন্য সব খরচ নগদের পক্ষ থেকে বহন করা হয়।

সেরা পারফর্মারদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের মাঝেও বাজারে নগদ একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের আরও প্রসার ঘটাতে নগদ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা রয়েছে। সুতরাং, যত অপপ্রচারই নগদকে নিয়ে হোক না কেন, সেসবে কান না দিয়ে নগদের সাফল্যের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

নগদের সেবার প্রসার ঘটাতে এ সময় মোতাছিম বিল্লাহ ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের কাছ থেকে নগদ বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ জানতে চান। তাঁদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নগদ প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ের ভেতরই সেবার কলেবর আরও বাড়বে নগদে। ফলে লেনদেনের অঙ্ক যেমন অনেক গুণ বাড়বে, একই সঙ্গে গ্রাহকেরাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, ডাক বিভাগনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. আবু তালেব, নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, আগামী বছরে বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স, বাংলা কিউআর, সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য আন্তসংযোগ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে নগদ। ফলে ২০২৬ সাল নগদের সেরা সাফল্যের বছর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসেবা আরও সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ইনফরমেশন হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদান আরও সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারী ও অন্য অংশীজনদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও গ্রাহকবান্ধব ও স্বচ্ছ হবে।

ডিএসইর এমডি আশা প্রকাশ করেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্যের জন্য +৮৮-০২-৪১০৪০১৮৯, ০৯৬৬৬৭০২০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

দেশের অন্যতম ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড (BTTHA) ২০২৫’-এর লিড স্পনসর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি গ্রুপ।

একই সঙ্গে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা এই আয়োজনের হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দেশের ভ্রমণ, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে একমাত্র স্বীকৃত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। গ্যালাক্সি গ্রুপের পক্ষে লিড স্পনসর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ। অন্যদিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার পক্ষে হসপিটালিটি পার্টনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, গ্যালাক্সি ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সম্পৃক্ততায় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের মর্যাদা ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ ও আতিথেয়তা শিল্পে উৎকর্ষতা অর্জন এবং উত্তম চর্চা উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে উদ্ভাবন, সেবার মান এবং টেকসই উন্নয়নকে স্বীকৃতি প্রদানকারী একটি মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা গর্বিত।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন বিশ্বমানের আতিথেয়তা প্রদানের পাশাপাশি অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

চলতি বছর ২৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। শুধু আবেদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিচারক প্যানেল বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন এবং পাবলিক ভোটিংয়ের ভিত্তিতে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করবেন।

এবার নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে দুটি বিশেষ ক্যাটাগরি—সর্বাধিক পর্যটনবান্ধব বিদেশি গন্তব্য, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এই দুটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সরাসরি পাবলিক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মনিটর ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের প্রবর্তন করে।

প্রথম আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃশ্যমানতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামে নতুন একটি সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে প্রতিটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ, অবস্থানকাল এবং খালি ট্রাকের ফেরত-সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রাথমিকভাবে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই সাব-মডিউলের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাক প্রবেশ ও বহির্গমনের তথ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এতে ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ধারণ, সীমান্ত এলাকায় ট্রাক চলাচল কার্যকরভাবে মনিটরিং এবং রিয়েল-টাইম রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, রাজস্বহানি রোধে সহায়ক হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় এই ডিজিটাল উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রাক চলাচলের নির্ভুল তথ্য থাকায় শুল্ক ও কর ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার হবে, একই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাও বাড়বে।

খুব শিগগির দেশের সব স্থলবন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলটি লাইভ অপারেশনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এতে স্থলবন্দরভিত্তিক আমদানি কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আধুনিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত