স্বকৃত নোমান

বাংলাদেশে অবকাঠামোতে উন্নয়ন হচ্ছে, কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন আর হয়নি। নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করছে, ঢাকা শহরে নানা উড়ালসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে, সারা দেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়নে উন্নয়নে সত্যিকার অর্থেই দেশটার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে। চারদিকে উন্নয়নের ছাপ। মানুষের আয়-রোজগারও বেড়েছে।
বছরে মাথাপিছু আয় এখন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৭৩ টাকা। বিদ্যুৎ–সংকট ছিল অন্যতম প্রধান সংকট। সেই সংকটও কেটেছে। আগের মতো দেশে এখন লোডশেডিংও নেই। বিদ্যুৎ যায় না বললেই চলে। সুতরাং উন্নয়নের ব্যাপারে সরকারের প্রশংসা করা যায়। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে কি সভ্য নাগরিক গড়ে তোলা যায়? একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিই কি সব? এ উন্নতি সাধিত হলেই কি দেশ সভ্যতার উচ্চতর মার্গে পৌঁছাতে পারে? না, শুধু অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমে কোনোভাবেই সভ্য দেশ গড়ে তোলা যায় না। সভ্য নাগরিক গড়ে না তুললে যেকোনো মুহূর্তে দেশ রসাতলের দিকে ধাবিত হতে পারে। জনগণের মনন গঠনের জন্য, সভ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন শিল্প–সাহিত্য–সংস্কৃতি-জ্ঞান-বিজ্ঞান ও রাজনীতির সম-উন্নয়ন। বাংলাদেশে এখন রাজনীতির চর্চা কতটা আছে, তা রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই জানেন। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি আর জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশও স্তিমিত। নাগরিকদের সভ্য হয়ে ওঠার কোনো মাধ্যমের সচলতা দেখা যাচ্ছে না। ফলে জনগণের মনন ধাবিত হচ্ছে মধ্যযুগের দিকে, যখন রক্তপাতই ছিল একমাত্র সমাধান, যখন মানবতা ছিল অধরা। অথচ মানুষের ইতিহাস প্রগতির ইতিহাস, এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস।
বাংলাদেশের মানুষের মনন যে ক্রমেই অধঃগতির দিকে যাচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মনন যে এভাবে অধঃগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে, তার লাগাম টেনে ধরার উপায় কী? উপায় আমরা খুঁজে নিতে পারি ইউরোপীয় রেনেসাঁস থেকে। চতুর্দশ শতকে রেনেসাঁসের সূচনালগ্নে ইতালি ছিল বেশ কিছু নগর-রাষ্ট্রে বিভক্ত। এমন অনেক অঞ্চল ছিল, যেগুলো তখন বৃহত্তর কোনো নগর কর্তৃক শাসিত হচ্ছিল। সব নগর-রাষ্ট্রেরই একটি করে নিজস্ব সরকারব্যবস্থা ছিল। মিলান, ভেনিস, ফেরেরার পাশাপাশি এমনই একটি বড় নগর-রাষ্ট্র হলো ফ্লোরেন্স। ফ্লোরেন্সে প্রচলিত ছিল প্রজাতন্ত্রী সরকার ব্যবস্থা, ঠিক প্রাচীন রোমের মতো। অর্থাৎ নাগরিকেরা নিজেরাই তাদের নেতা নির্বাচন করার সুযোগ পেত।
চতুর্দশ শতকের শেষ দিকে ফ্লোরেন্স পরিণত হয় একটি ধনী নগরীতে। ধনবান বণিকদের যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ ছিল শিল্প ও শিল্পীদের পেছনে খরচ করার জন্য। যার ফলে তখনকার শিল্পী ও চিন্তাবিদদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়। শিল্প ক্রমেই উন্নত থেকে উন্নততর হতে থাকে, আর নতুন নতুন যুগান্তকারী সব চিন্তাভাবনা ও ধারণার উন্মেষ ঘটতে থাকে। তারা গ্রিক ও রোমানদের রেখে যাওয়া কাজ ও নিদর্শন নিয়ে গভীর মনোযোগের সঙ্গে অধ্যয়ন করতে গিয়ে উপলব্ধি করে যে, জীবন মানেই কেবল যুদ্ধ-বিগ্রহ নয়, জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যেরও উপস্থিতি থাকতে পারে এবং জীবনটাকে মানুষ চাইলে নিজেদের মতো করে উপভোগও করতে পারে। জীবনে অন্য কিছু নয়, মনুষ্যত্বকেই দিতে হবে সর্বাধিক প্রাধান্য। এই ভাবনা থেকে মানুষের মনে এক নতুন ধারণার উন্মেষ ঘটে যে, তাদের শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। শিল্প, সংগীত, বিজ্ঞান প্রভৃতি সব মানুষের জীবনেই এক ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
পঞ্চদশ শতকে ফ্লোরেন্সের ক্ষমতায় আসে মেডিসি পরিবার। তারা ছিল প্রচুর ধনসম্পদের মালিক। বিভিন্ন শিল্পী-সাহিত্যিককে নিজস্ব তহবিল থেকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে তারা শিল্প-সাহিত্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে থাকে। এভাবে মানবতাবাদী আন্দোলনও বেগবান হয়। আন্দোলনটি প্রথমে ফ্লোরেন্স নগরীর গণ্ডি পেরিয়ে ইতালির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নগর-রাষ্ট্র যেমন ভেনিস, মিলান, বলগনা, ফেরেরা ও রোমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ইতালি থেকে ফ্রান্স পর্যন্তও পৌঁছে যায়। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে সমগ্র পশ্চিম ও উত্তর ইউরোপে মানবতাবাদী আন্দোলন বিস্তার লাভ করে। যদিও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে রেনেসাঁসের অভিজ্ঞতা এসেছিল ইতালির অনেক পরে, কিন্তু তবু এর প্রভাব ছিল সমান বৈপ্লবিক। এর মধ্য দিয়ে মধ্যযুগের অবসান ঘটে শিল্প–সংস্কৃতি রাজনীতি ও অর্থনীতি এক নবজন্ম লাভ করে। এ সময়ই সৃষ্টি হয় অসংখ্য ধ্রুপদি দর্শন, সাহিত্য ও শিল্প, যার মাধ্যমে মানবসভ্যতা পৌঁছে যায় এক নতুন উচ্চতায়। ইউরোপীয় রেনেসাঁসের মাধ্যমে মানবতাবাদের বিকাশ এমনি এমনি ঘটেনি, তার পেছনে ছিল জ্ঞানমার্গ তথা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগীত-দর্শনসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখার বিকাশ।
এই বিকাশ সাধনের পেছনে ছিল শাসক ও ধনিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা। বাংলাদেশের জনসাধারণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, তাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির রুচি উন্নয়নের জন্য, তাদের মধ্যে মানবিক বোধ প্রতিষ্ঠা ও প্রগতিবোধ জাগ্রত করার জন্য প্রয়োজন জ্ঞানমার্গের বিকাশ। আর এই বিকাশ ততক্ষণ সাধিত হবে না, যতক্ষণ না শাসক ও ধনিকশ্রেণি এর পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসবে। জ্ঞানমার্গের বিকাশ যে শাসক ও ধনিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতায় হয়, তার প্রমাণ নেওয়ার জন্য ইউরোপে যাওয়ার দরকার নেই, ভারতবর্ষ থেকেও নেওয়া যায়। মগধে গুপ্তদের শাসনামলে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের যে চর্চা শুরু হয়, পাল ও সেন আমলে সেই ধারা অব্যাহত ছিল। বাংলায় পালদের আমলে দেশীয় ভাষা হিসেবে প্রথম বাংলা চর্চা শুরু হয়। বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্যের উদ্ভব ও প্রসার ঘটে বৌদ্ধ আমলে, বিশেষ করে স্বাধীন পাল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায়। সেন আমলে বাংলা ভাষার চর্চা না হলেও এর নিজস্ব সত্তা লোপ পায়নি। পরবর্তী সময়ে হুসেন শাহ, গৌড়ের সামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ এবং অপরাপর মুসলিম শাসকেরা বাংলায় ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করে সাহিত্যে এক নতুন যুগ সৃষ্টি করেছিলেন। সাহিত্যচর্চায় সুলতানরা বাংলার সব ধর্মের মানুষকে সমানভাবে উদ্বুদ্ধ ও পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।
ওদিকে আরাকান রাজসভার অমাত্যবর্গ কবি-সাহিত্যিকদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সমৃদ্ধ করেছিলেন বাংলা সাহিত্যকে। খ্রিষ্টীয় সতেরো শ শতকে আরাকান রাজসভার কবিদের হাতেই বাংলা সাহিত্য পরিপুষ্ট হয়েছিল, যার ফলাফল হয়েছিল বহুমুখী ও দীর্ঘস্থায়ী। আরাকান অমাত্যসভার পৃষ্ঠপোষকতায় যেসব কবি-সাহিত্যিক সাহিত্য চর্চা করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কবি দৌলত কাজী, কোরেশী মাগন ঠাকুর, আলাওল, মরদন, আবদুল করিম খোন্দকার, আবদুল করিম, আবুল হোসেন, কাজী আবদুল করিম, ইসমাইল সাকেব, কাজী মোহাম্মদ হোসেন, নসরুল্লাহ খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
শাসক ও ধনিকশ্রেণির সেই পৃষ্ঠপোষকতা কি এখন আছে? নেই। রাজনীতিকেরা এখন সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য প্রার্থনাগৃহ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কেউ কখনো একটি পাঠাগার নির্মাণ করেন না, নাটক–থিয়েটার–সাহিত্য–সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞের পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন মনে করেন না। জনগণের মেধার বিকাশ, আত্ম–উন্নয়ন ও প্রগতির দিকে ধাবিত করার কোনো প্রয়োজন তাঁরা অনুভব করেন না।
গণমাধ্যমও জনগণকে প্রগতির দিকে ধাবিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের গণমাধ্যমের যেটুকু বিকাশ, তার পেছনে ধনিকশ্রেণি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু তারা গণমাধ্যমের মধ্য দিয়ে সমাজ-প্রগতির চেয়ে নিজস্ব সম্পদের পাহারাদার হিসেবে গণমাধ্যমকে অধিকতর ব্যবহার করছে এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান বিকাশের ক্ষেত্রে শাসকদের মতো তারাও কোনো ভূমিকা রাখতে অনাগ্রহী।
আমাদের পুঁজিপতিরা চাইলেই পারেন প্রতিটি জেলায় একটি করে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করতে। তাঁরা চাইলেই পারেন, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক দর্শন-জ্ঞান-বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতা করতে। এক শ ধনবান যদি পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসতেন, তাতে নিঃসন্দেহে আমাদের জ্ঞানমার্গ উৎকর্ষ লাভ করত, যেমন লাভ করেছিল ইউরোপীয় রেনেসাঁসে বণিকশ্রেণি ও মেডিসি পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায়, যেমন লাভ করেছিল সুলতানদের এবং আরাকান রাজসভার অমাত্যবর্গের পৃষ্ঠপোষকতায়।
বাংলাদেশ যে সাংস্কৃতিক দিক থেকে একটি ভয়াবহ সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে, এটা বুঝতে পারছে না ক্ষমতাসীন দল, বুঝতে পারছে না বুদ্ধিজীবী শ্রেণিও। শাসকশ্রেণি তো কথায় কথায় উন্নয়ন আর উন্নয়ন ছাড়া কিছুই বলতে পারে না। বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ কার্যত নিশ্চুপ। তারা বুঝতে পারছে না অর্থনীতির এই বিকাশ যেকোনো মুহূর্তে যে রুদ্ধ হয়ে যেতে পারে, দেশ পড়ে যেতে পারে ঘোর সংকটে। যে সংকটে পড়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক ও সিরিয়া।
যতই উন্নয়নের কথা বলা হোক না কেন, যতই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা বলা হোক না কেন, বাংলাদেশ ভালো নেই। এক ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত বাংলাদেশ। এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। এ সংকটের কারণ চিহ্নিত করা না গেলে, এ সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের না করলে, ক্ষমতাসীন দল সতর্ক না হলে বাংলাদেশ যে খাদে পতিত হবে, তা থেকে ওঠা সহজ হবে না।
স্বকৃত নোমান, কথাসাহিত্যিক

বাংলাদেশে অবকাঠামোতে উন্নয়ন হচ্ছে, কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন আর হয়নি। নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করছে, ঢাকা শহরে নানা উড়ালসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে, সারা দেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়নে উন্নয়নে সত্যিকার অর্থেই দেশটার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে। চারদিকে উন্নয়নের ছাপ। মানুষের আয়-রোজগারও বেড়েছে।
বছরে মাথাপিছু আয় এখন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৭৩ টাকা। বিদ্যুৎ–সংকট ছিল অন্যতম প্রধান সংকট। সেই সংকটও কেটেছে। আগের মতো দেশে এখন লোডশেডিংও নেই। বিদ্যুৎ যায় না বললেই চলে। সুতরাং উন্নয়নের ব্যাপারে সরকারের প্রশংসা করা যায়। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে কি সভ্য নাগরিক গড়ে তোলা যায়? একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিই কি সব? এ উন্নতি সাধিত হলেই কি দেশ সভ্যতার উচ্চতর মার্গে পৌঁছাতে পারে? না, শুধু অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমে কোনোভাবেই সভ্য দেশ গড়ে তোলা যায় না। সভ্য নাগরিক গড়ে না তুললে যেকোনো মুহূর্তে দেশ রসাতলের দিকে ধাবিত হতে পারে। জনগণের মনন গঠনের জন্য, সভ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন শিল্প–সাহিত্য–সংস্কৃতি-জ্ঞান-বিজ্ঞান ও রাজনীতির সম-উন্নয়ন। বাংলাদেশে এখন রাজনীতির চর্চা কতটা আছে, তা রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই জানেন। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি আর জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশও স্তিমিত। নাগরিকদের সভ্য হয়ে ওঠার কোনো মাধ্যমের সচলতা দেখা যাচ্ছে না। ফলে জনগণের মনন ধাবিত হচ্ছে মধ্যযুগের দিকে, যখন রক্তপাতই ছিল একমাত্র সমাধান, যখন মানবতা ছিল অধরা। অথচ মানুষের ইতিহাস প্রগতির ইতিহাস, এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস।
বাংলাদেশের মানুষের মনন যে ক্রমেই অধঃগতির দিকে যাচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মনন যে এভাবে অধঃগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে, তার লাগাম টেনে ধরার উপায় কী? উপায় আমরা খুঁজে নিতে পারি ইউরোপীয় রেনেসাঁস থেকে। চতুর্দশ শতকে রেনেসাঁসের সূচনালগ্নে ইতালি ছিল বেশ কিছু নগর-রাষ্ট্রে বিভক্ত। এমন অনেক অঞ্চল ছিল, যেগুলো তখন বৃহত্তর কোনো নগর কর্তৃক শাসিত হচ্ছিল। সব নগর-রাষ্ট্রেরই একটি করে নিজস্ব সরকারব্যবস্থা ছিল। মিলান, ভেনিস, ফেরেরার পাশাপাশি এমনই একটি বড় নগর-রাষ্ট্র হলো ফ্লোরেন্স। ফ্লোরেন্সে প্রচলিত ছিল প্রজাতন্ত্রী সরকার ব্যবস্থা, ঠিক প্রাচীন রোমের মতো। অর্থাৎ নাগরিকেরা নিজেরাই তাদের নেতা নির্বাচন করার সুযোগ পেত।
চতুর্দশ শতকের শেষ দিকে ফ্লোরেন্স পরিণত হয় একটি ধনী নগরীতে। ধনবান বণিকদের যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ ছিল শিল্প ও শিল্পীদের পেছনে খরচ করার জন্য। যার ফলে তখনকার শিল্পী ও চিন্তাবিদদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়। শিল্প ক্রমেই উন্নত থেকে উন্নততর হতে থাকে, আর নতুন নতুন যুগান্তকারী সব চিন্তাভাবনা ও ধারণার উন্মেষ ঘটতে থাকে। তারা গ্রিক ও রোমানদের রেখে যাওয়া কাজ ও নিদর্শন নিয়ে গভীর মনোযোগের সঙ্গে অধ্যয়ন করতে গিয়ে উপলব্ধি করে যে, জীবন মানেই কেবল যুদ্ধ-বিগ্রহ নয়, জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যেরও উপস্থিতি থাকতে পারে এবং জীবনটাকে মানুষ চাইলে নিজেদের মতো করে উপভোগও করতে পারে। জীবনে অন্য কিছু নয়, মনুষ্যত্বকেই দিতে হবে সর্বাধিক প্রাধান্য। এই ভাবনা থেকে মানুষের মনে এক নতুন ধারণার উন্মেষ ঘটে যে, তাদের শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। শিল্প, সংগীত, বিজ্ঞান প্রভৃতি সব মানুষের জীবনেই এক ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
পঞ্চদশ শতকে ফ্লোরেন্সের ক্ষমতায় আসে মেডিসি পরিবার। তারা ছিল প্রচুর ধনসম্পদের মালিক। বিভিন্ন শিল্পী-সাহিত্যিককে নিজস্ব তহবিল থেকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে তারা শিল্প-সাহিত্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে থাকে। এভাবে মানবতাবাদী আন্দোলনও বেগবান হয়। আন্দোলনটি প্রথমে ফ্লোরেন্স নগরীর গণ্ডি পেরিয়ে ইতালির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নগর-রাষ্ট্র যেমন ভেনিস, মিলান, বলগনা, ফেরেরা ও রোমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ইতালি থেকে ফ্রান্স পর্যন্তও পৌঁছে যায়। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে সমগ্র পশ্চিম ও উত্তর ইউরোপে মানবতাবাদী আন্দোলন বিস্তার লাভ করে। যদিও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে রেনেসাঁসের অভিজ্ঞতা এসেছিল ইতালির অনেক পরে, কিন্তু তবু এর প্রভাব ছিল সমান বৈপ্লবিক। এর মধ্য দিয়ে মধ্যযুগের অবসান ঘটে শিল্প–সংস্কৃতি রাজনীতি ও অর্থনীতি এক নবজন্ম লাভ করে। এ সময়ই সৃষ্টি হয় অসংখ্য ধ্রুপদি দর্শন, সাহিত্য ও শিল্প, যার মাধ্যমে মানবসভ্যতা পৌঁছে যায় এক নতুন উচ্চতায়। ইউরোপীয় রেনেসাঁসের মাধ্যমে মানবতাবাদের বিকাশ এমনি এমনি ঘটেনি, তার পেছনে ছিল জ্ঞানমার্গ তথা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগীত-দর্শনসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখার বিকাশ।
এই বিকাশ সাধনের পেছনে ছিল শাসক ও ধনিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা। বাংলাদেশের জনসাধারণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, তাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির রুচি উন্নয়নের জন্য, তাদের মধ্যে মানবিক বোধ প্রতিষ্ঠা ও প্রগতিবোধ জাগ্রত করার জন্য প্রয়োজন জ্ঞানমার্গের বিকাশ। আর এই বিকাশ ততক্ষণ সাধিত হবে না, যতক্ষণ না শাসক ও ধনিকশ্রেণি এর পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসবে। জ্ঞানমার্গের বিকাশ যে শাসক ও ধনিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতায় হয়, তার প্রমাণ নেওয়ার জন্য ইউরোপে যাওয়ার দরকার নেই, ভারতবর্ষ থেকেও নেওয়া যায়। মগধে গুপ্তদের শাসনামলে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের যে চর্চা শুরু হয়, পাল ও সেন আমলে সেই ধারা অব্যাহত ছিল। বাংলায় পালদের আমলে দেশীয় ভাষা হিসেবে প্রথম বাংলা চর্চা শুরু হয়। বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্যের উদ্ভব ও প্রসার ঘটে বৌদ্ধ আমলে, বিশেষ করে স্বাধীন পাল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায়। সেন আমলে বাংলা ভাষার চর্চা না হলেও এর নিজস্ব সত্তা লোপ পায়নি। পরবর্তী সময়ে হুসেন শাহ, গৌড়ের সামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ এবং অপরাপর মুসলিম শাসকেরা বাংলায় ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করে সাহিত্যে এক নতুন যুগ সৃষ্টি করেছিলেন। সাহিত্যচর্চায় সুলতানরা বাংলার সব ধর্মের মানুষকে সমানভাবে উদ্বুদ্ধ ও পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।
ওদিকে আরাকান রাজসভার অমাত্যবর্গ কবি-সাহিত্যিকদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সমৃদ্ধ করেছিলেন বাংলা সাহিত্যকে। খ্রিষ্টীয় সতেরো শ শতকে আরাকান রাজসভার কবিদের হাতেই বাংলা সাহিত্য পরিপুষ্ট হয়েছিল, যার ফলাফল হয়েছিল বহুমুখী ও দীর্ঘস্থায়ী। আরাকান অমাত্যসভার পৃষ্ঠপোষকতায় যেসব কবি-সাহিত্যিক সাহিত্য চর্চা করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কবি দৌলত কাজী, কোরেশী মাগন ঠাকুর, আলাওল, মরদন, আবদুল করিম খোন্দকার, আবদুল করিম, আবুল হোসেন, কাজী আবদুল করিম, ইসমাইল সাকেব, কাজী মোহাম্মদ হোসেন, নসরুল্লাহ খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
শাসক ও ধনিকশ্রেণির সেই পৃষ্ঠপোষকতা কি এখন আছে? নেই। রাজনীতিকেরা এখন সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য প্রার্থনাগৃহ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কেউ কখনো একটি পাঠাগার নির্মাণ করেন না, নাটক–থিয়েটার–সাহিত্য–সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞের পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন মনে করেন না। জনগণের মেধার বিকাশ, আত্ম–উন্নয়ন ও প্রগতির দিকে ধাবিত করার কোনো প্রয়োজন তাঁরা অনুভব করেন না।
গণমাধ্যমও জনগণকে প্রগতির দিকে ধাবিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের গণমাধ্যমের যেটুকু বিকাশ, তার পেছনে ধনিকশ্রেণি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু তারা গণমাধ্যমের মধ্য দিয়ে সমাজ-প্রগতির চেয়ে নিজস্ব সম্পদের পাহারাদার হিসেবে গণমাধ্যমকে অধিকতর ব্যবহার করছে এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান বিকাশের ক্ষেত্রে শাসকদের মতো তারাও কোনো ভূমিকা রাখতে অনাগ্রহী।
আমাদের পুঁজিপতিরা চাইলেই পারেন প্রতিটি জেলায় একটি করে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করতে। তাঁরা চাইলেই পারেন, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক দর্শন-জ্ঞান-বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতা করতে। এক শ ধনবান যদি পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসতেন, তাতে নিঃসন্দেহে আমাদের জ্ঞানমার্গ উৎকর্ষ লাভ করত, যেমন লাভ করেছিল ইউরোপীয় রেনেসাঁসে বণিকশ্রেণি ও মেডিসি পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায়, যেমন লাভ করেছিল সুলতানদের এবং আরাকান রাজসভার অমাত্যবর্গের পৃষ্ঠপোষকতায়।
বাংলাদেশ যে সাংস্কৃতিক দিক থেকে একটি ভয়াবহ সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে, এটা বুঝতে পারছে না ক্ষমতাসীন দল, বুঝতে পারছে না বুদ্ধিজীবী শ্রেণিও। শাসকশ্রেণি তো কথায় কথায় উন্নয়ন আর উন্নয়ন ছাড়া কিছুই বলতে পারে না। বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ কার্যত নিশ্চুপ। তারা বুঝতে পারছে না অর্থনীতির এই বিকাশ যেকোনো মুহূর্তে যে রুদ্ধ হয়ে যেতে পারে, দেশ পড়ে যেতে পারে ঘোর সংকটে। যে সংকটে পড়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক ও সিরিয়া।
যতই উন্নয়নের কথা বলা হোক না কেন, যতই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা বলা হোক না কেন, বাংলাদেশ ভালো নেই। এক ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত বাংলাদেশ। এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। এ সংকটের কারণ চিহ্নিত করা না গেলে, এ সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের না করলে, ক্ষমতাসীন দল সতর্ক না হলে বাংলাদেশ যে খাদে পতিত হবে, তা থেকে ওঠা সহজ হবে না।
স্বকৃত নোমান, কথাসাহিত্যিক
স্বকৃত নোমান

বাংলাদেশে অবকাঠামোতে উন্নয়ন হচ্ছে, কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন আর হয়নি। নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করছে, ঢাকা শহরে নানা উড়ালসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে, সারা দেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়নে উন্নয়নে সত্যিকার অর্থেই দেশটার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে। চারদিকে উন্নয়নের ছাপ। মানুষের আয়-রোজগারও বেড়েছে।
বছরে মাথাপিছু আয় এখন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৭৩ টাকা। বিদ্যুৎ–সংকট ছিল অন্যতম প্রধান সংকট। সেই সংকটও কেটেছে। আগের মতো দেশে এখন লোডশেডিংও নেই। বিদ্যুৎ যায় না বললেই চলে। সুতরাং উন্নয়নের ব্যাপারে সরকারের প্রশংসা করা যায়। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে কি সভ্য নাগরিক গড়ে তোলা যায়? একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিই কি সব? এ উন্নতি সাধিত হলেই কি দেশ সভ্যতার উচ্চতর মার্গে পৌঁছাতে পারে? না, শুধু অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমে কোনোভাবেই সভ্য দেশ গড়ে তোলা যায় না। সভ্য নাগরিক গড়ে না তুললে যেকোনো মুহূর্তে দেশ রসাতলের দিকে ধাবিত হতে পারে। জনগণের মনন গঠনের জন্য, সভ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন শিল্প–সাহিত্য–সংস্কৃতি-জ্ঞান-বিজ্ঞান ও রাজনীতির সম-উন্নয়ন। বাংলাদেশে এখন রাজনীতির চর্চা কতটা আছে, তা রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই জানেন। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি আর জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশও স্তিমিত। নাগরিকদের সভ্য হয়ে ওঠার কোনো মাধ্যমের সচলতা দেখা যাচ্ছে না। ফলে জনগণের মনন ধাবিত হচ্ছে মধ্যযুগের দিকে, যখন রক্তপাতই ছিল একমাত্র সমাধান, যখন মানবতা ছিল অধরা। অথচ মানুষের ইতিহাস প্রগতির ইতিহাস, এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস।
বাংলাদেশের মানুষের মনন যে ক্রমেই অধঃগতির দিকে যাচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মনন যে এভাবে অধঃগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে, তার লাগাম টেনে ধরার উপায় কী? উপায় আমরা খুঁজে নিতে পারি ইউরোপীয় রেনেসাঁস থেকে। চতুর্দশ শতকে রেনেসাঁসের সূচনালগ্নে ইতালি ছিল বেশ কিছু নগর-রাষ্ট্রে বিভক্ত। এমন অনেক অঞ্চল ছিল, যেগুলো তখন বৃহত্তর কোনো নগর কর্তৃক শাসিত হচ্ছিল। সব নগর-রাষ্ট্রেরই একটি করে নিজস্ব সরকারব্যবস্থা ছিল। মিলান, ভেনিস, ফেরেরার পাশাপাশি এমনই একটি বড় নগর-রাষ্ট্র হলো ফ্লোরেন্স। ফ্লোরেন্সে প্রচলিত ছিল প্রজাতন্ত্রী সরকার ব্যবস্থা, ঠিক প্রাচীন রোমের মতো। অর্থাৎ নাগরিকেরা নিজেরাই তাদের নেতা নির্বাচন করার সুযোগ পেত।
চতুর্দশ শতকের শেষ দিকে ফ্লোরেন্স পরিণত হয় একটি ধনী নগরীতে। ধনবান বণিকদের যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ ছিল শিল্প ও শিল্পীদের পেছনে খরচ করার জন্য। যার ফলে তখনকার শিল্পী ও চিন্তাবিদদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়। শিল্প ক্রমেই উন্নত থেকে উন্নততর হতে থাকে, আর নতুন নতুন যুগান্তকারী সব চিন্তাভাবনা ও ধারণার উন্মেষ ঘটতে থাকে। তারা গ্রিক ও রোমানদের রেখে যাওয়া কাজ ও নিদর্শন নিয়ে গভীর মনোযোগের সঙ্গে অধ্যয়ন করতে গিয়ে উপলব্ধি করে যে, জীবন মানেই কেবল যুদ্ধ-বিগ্রহ নয়, জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যেরও উপস্থিতি থাকতে পারে এবং জীবনটাকে মানুষ চাইলে নিজেদের মতো করে উপভোগও করতে পারে। জীবনে অন্য কিছু নয়, মনুষ্যত্বকেই দিতে হবে সর্বাধিক প্রাধান্য। এই ভাবনা থেকে মানুষের মনে এক নতুন ধারণার উন্মেষ ঘটে যে, তাদের শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। শিল্প, সংগীত, বিজ্ঞান প্রভৃতি সব মানুষের জীবনেই এক ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
পঞ্চদশ শতকে ফ্লোরেন্সের ক্ষমতায় আসে মেডিসি পরিবার। তারা ছিল প্রচুর ধনসম্পদের মালিক। বিভিন্ন শিল্পী-সাহিত্যিককে নিজস্ব তহবিল থেকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে তারা শিল্প-সাহিত্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে থাকে। এভাবে মানবতাবাদী আন্দোলনও বেগবান হয়। আন্দোলনটি প্রথমে ফ্লোরেন্স নগরীর গণ্ডি পেরিয়ে ইতালির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নগর-রাষ্ট্র যেমন ভেনিস, মিলান, বলগনা, ফেরেরা ও রোমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ইতালি থেকে ফ্রান্স পর্যন্তও পৌঁছে যায়। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে সমগ্র পশ্চিম ও উত্তর ইউরোপে মানবতাবাদী আন্দোলন বিস্তার লাভ করে। যদিও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে রেনেসাঁসের অভিজ্ঞতা এসেছিল ইতালির অনেক পরে, কিন্তু তবু এর প্রভাব ছিল সমান বৈপ্লবিক। এর মধ্য দিয়ে মধ্যযুগের অবসান ঘটে শিল্প–সংস্কৃতি রাজনীতি ও অর্থনীতি এক নবজন্ম লাভ করে। এ সময়ই সৃষ্টি হয় অসংখ্য ধ্রুপদি দর্শন, সাহিত্য ও শিল্প, যার মাধ্যমে মানবসভ্যতা পৌঁছে যায় এক নতুন উচ্চতায়। ইউরোপীয় রেনেসাঁসের মাধ্যমে মানবতাবাদের বিকাশ এমনি এমনি ঘটেনি, তার পেছনে ছিল জ্ঞানমার্গ তথা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগীত-দর্শনসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখার বিকাশ।
এই বিকাশ সাধনের পেছনে ছিল শাসক ও ধনিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা। বাংলাদেশের জনসাধারণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, তাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির রুচি উন্নয়নের জন্য, তাদের মধ্যে মানবিক বোধ প্রতিষ্ঠা ও প্রগতিবোধ জাগ্রত করার জন্য প্রয়োজন জ্ঞানমার্গের বিকাশ। আর এই বিকাশ ততক্ষণ সাধিত হবে না, যতক্ষণ না শাসক ও ধনিকশ্রেণি এর পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসবে। জ্ঞানমার্গের বিকাশ যে শাসক ও ধনিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতায় হয়, তার প্রমাণ নেওয়ার জন্য ইউরোপে যাওয়ার দরকার নেই, ভারতবর্ষ থেকেও নেওয়া যায়। মগধে গুপ্তদের শাসনামলে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের যে চর্চা শুরু হয়, পাল ও সেন আমলে সেই ধারা অব্যাহত ছিল। বাংলায় পালদের আমলে দেশীয় ভাষা হিসেবে প্রথম বাংলা চর্চা শুরু হয়। বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্যের উদ্ভব ও প্রসার ঘটে বৌদ্ধ আমলে, বিশেষ করে স্বাধীন পাল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায়। সেন আমলে বাংলা ভাষার চর্চা না হলেও এর নিজস্ব সত্তা লোপ পায়নি। পরবর্তী সময়ে হুসেন শাহ, গৌড়ের সামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ এবং অপরাপর মুসলিম শাসকেরা বাংলায় ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করে সাহিত্যে এক নতুন যুগ সৃষ্টি করেছিলেন। সাহিত্যচর্চায় সুলতানরা বাংলার সব ধর্মের মানুষকে সমানভাবে উদ্বুদ্ধ ও পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।
ওদিকে আরাকান রাজসভার অমাত্যবর্গ কবি-সাহিত্যিকদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সমৃদ্ধ করেছিলেন বাংলা সাহিত্যকে। খ্রিষ্টীয় সতেরো শ শতকে আরাকান রাজসভার কবিদের হাতেই বাংলা সাহিত্য পরিপুষ্ট হয়েছিল, যার ফলাফল হয়েছিল বহুমুখী ও দীর্ঘস্থায়ী। আরাকান অমাত্যসভার পৃষ্ঠপোষকতায় যেসব কবি-সাহিত্যিক সাহিত্য চর্চা করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কবি দৌলত কাজী, কোরেশী মাগন ঠাকুর, আলাওল, মরদন, আবদুল করিম খোন্দকার, আবদুল করিম, আবুল হোসেন, কাজী আবদুল করিম, ইসমাইল সাকেব, কাজী মোহাম্মদ হোসেন, নসরুল্লাহ খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
শাসক ও ধনিকশ্রেণির সেই পৃষ্ঠপোষকতা কি এখন আছে? নেই। রাজনীতিকেরা এখন সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য প্রার্থনাগৃহ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কেউ কখনো একটি পাঠাগার নির্মাণ করেন না, নাটক–থিয়েটার–সাহিত্য–সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞের পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন মনে করেন না। জনগণের মেধার বিকাশ, আত্ম–উন্নয়ন ও প্রগতির দিকে ধাবিত করার কোনো প্রয়োজন তাঁরা অনুভব করেন না।
গণমাধ্যমও জনগণকে প্রগতির দিকে ধাবিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের গণমাধ্যমের যেটুকু বিকাশ, তার পেছনে ধনিকশ্রেণি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু তারা গণমাধ্যমের মধ্য দিয়ে সমাজ-প্রগতির চেয়ে নিজস্ব সম্পদের পাহারাদার হিসেবে গণমাধ্যমকে অধিকতর ব্যবহার করছে এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান বিকাশের ক্ষেত্রে শাসকদের মতো তারাও কোনো ভূমিকা রাখতে অনাগ্রহী।
আমাদের পুঁজিপতিরা চাইলেই পারেন প্রতিটি জেলায় একটি করে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করতে। তাঁরা চাইলেই পারেন, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক দর্শন-জ্ঞান-বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতা করতে। এক শ ধনবান যদি পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসতেন, তাতে নিঃসন্দেহে আমাদের জ্ঞানমার্গ উৎকর্ষ লাভ করত, যেমন লাভ করেছিল ইউরোপীয় রেনেসাঁসে বণিকশ্রেণি ও মেডিসি পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায়, যেমন লাভ করেছিল সুলতানদের এবং আরাকান রাজসভার অমাত্যবর্গের পৃষ্ঠপোষকতায়।
বাংলাদেশ যে সাংস্কৃতিক দিক থেকে একটি ভয়াবহ সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে, এটা বুঝতে পারছে না ক্ষমতাসীন দল, বুঝতে পারছে না বুদ্ধিজীবী শ্রেণিও। শাসকশ্রেণি তো কথায় কথায় উন্নয়ন আর উন্নয়ন ছাড়া কিছুই বলতে পারে না। বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ কার্যত নিশ্চুপ। তারা বুঝতে পারছে না অর্থনীতির এই বিকাশ যেকোনো মুহূর্তে যে রুদ্ধ হয়ে যেতে পারে, দেশ পড়ে যেতে পারে ঘোর সংকটে। যে সংকটে পড়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক ও সিরিয়া।
যতই উন্নয়নের কথা বলা হোক না কেন, যতই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা বলা হোক না কেন, বাংলাদেশ ভালো নেই। এক ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত বাংলাদেশ। এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। এ সংকটের কারণ চিহ্নিত করা না গেলে, এ সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের না করলে, ক্ষমতাসীন দল সতর্ক না হলে বাংলাদেশ যে খাদে পতিত হবে, তা থেকে ওঠা সহজ হবে না।
স্বকৃত নোমান, কথাসাহিত্যিক

বাংলাদেশে অবকাঠামোতে উন্নয়ন হচ্ছে, কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন আর হয়নি। নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করছে, ঢাকা শহরে নানা উড়ালসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে, সারা দেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়নে উন্নয়নে সত্যিকার অর্থেই দেশটার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে। চারদিকে উন্নয়নের ছাপ। মানুষের আয়-রোজগারও বেড়েছে।
বছরে মাথাপিছু আয় এখন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৭৩ টাকা। বিদ্যুৎ–সংকট ছিল অন্যতম প্রধান সংকট। সেই সংকটও কেটেছে। আগের মতো দেশে এখন লোডশেডিংও নেই। বিদ্যুৎ যায় না বললেই চলে। সুতরাং উন্নয়নের ব্যাপারে সরকারের প্রশংসা করা যায়। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে কি সভ্য নাগরিক গড়ে তোলা যায়? একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিই কি সব? এ উন্নতি সাধিত হলেই কি দেশ সভ্যতার উচ্চতর মার্গে পৌঁছাতে পারে? না, শুধু অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমে কোনোভাবেই সভ্য দেশ গড়ে তোলা যায় না। সভ্য নাগরিক গড়ে না তুললে যেকোনো মুহূর্তে দেশ রসাতলের দিকে ধাবিত হতে পারে। জনগণের মনন গঠনের জন্য, সভ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন শিল্প–সাহিত্য–সংস্কৃতি-জ্ঞান-বিজ্ঞান ও রাজনীতির সম-উন্নয়ন। বাংলাদেশে এখন রাজনীতির চর্চা কতটা আছে, তা রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই জানেন। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি আর জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশও স্তিমিত। নাগরিকদের সভ্য হয়ে ওঠার কোনো মাধ্যমের সচলতা দেখা যাচ্ছে না। ফলে জনগণের মনন ধাবিত হচ্ছে মধ্যযুগের দিকে, যখন রক্তপাতই ছিল একমাত্র সমাধান, যখন মানবতা ছিল অধরা। অথচ মানুষের ইতিহাস প্রগতির ইতিহাস, এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস।
বাংলাদেশের মানুষের মনন যে ক্রমেই অধঃগতির দিকে যাচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মনন যে এভাবে অধঃগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে, তার লাগাম টেনে ধরার উপায় কী? উপায় আমরা খুঁজে নিতে পারি ইউরোপীয় রেনেসাঁস থেকে। চতুর্দশ শতকে রেনেসাঁসের সূচনালগ্নে ইতালি ছিল বেশ কিছু নগর-রাষ্ট্রে বিভক্ত। এমন অনেক অঞ্চল ছিল, যেগুলো তখন বৃহত্তর কোনো নগর কর্তৃক শাসিত হচ্ছিল। সব নগর-রাষ্ট্রেরই একটি করে নিজস্ব সরকারব্যবস্থা ছিল। মিলান, ভেনিস, ফেরেরার পাশাপাশি এমনই একটি বড় নগর-রাষ্ট্র হলো ফ্লোরেন্স। ফ্লোরেন্সে প্রচলিত ছিল প্রজাতন্ত্রী সরকার ব্যবস্থা, ঠিক প্রাচীন রোমের মতো। অর্থাৎ নাগরিকেরা নিজেরাই তাদের নেতা নির্বাচন করার সুযোগ পেত।
চতুর্দশ শতকের শেষ দিকে ফ্লোরেন্স পরিণত হয় একটি ধনী নগরীতে। ধনবান বণিকদের যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ ছিল শিল্প ও শিল্পীদের পেছনে খরচ করার জন্য। যার ফলে তখনকার শিল্পী ও চিন্তাবিদদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়। শিল্প ক্রমেই উন্নত থেকে উন্নততর হতে থাকে, আর নতুন নতুন যুগান্তকারী সব চিন্তাভাবনা ও ধারণার উন্মেষ ঘটতে থাকে। তারা গ্রিক ও রোমানদের রেখে যাওয়া কাজ ও নিদর্শন নিয়ে গভীর মনোযোগের সঙ্গে অধ্যয়ন করতে গিয়ে উপলব্ধি করে যে, জীবন মানেই কেবল যুদ্ধ-বিগ্রহ নয়, জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যেরও উপস্থিতি থাকতে পারে এবং জীবনটাকে মানুষ চাইলে নিজেদের মতো করে উপভোগও করতে পারে। জীবনে অন্য কিছু নয়, মনুষ্যত্বকেই দিতে হবে সর্বাধিক প্রাধান্য। এই ভাবনা থেকে মানুষের মনে এক নতুন ধারণার উন্মেষ ঘটে যে, তাদের শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। শিল্প, সংগীত, বিজ্ঞান প্রভৃতি সব মানুষের জীবনেই এক ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
পঞ্চদশ শতকে ফ্লোরেন্সের ক্ষমতায় আসে মেডিসি পরিবার। তারা ছিল প্রচুর ধনসম্পদের মালিক। বিভিন্ন শিল্পী-সাহিত্যিককে নিজস্ব তহবিল থেকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে তারা শিল্প-সাহিত্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে থাকে। এভাবে মানবতাবাদী আন্দোলনও বেগবান হয়। আন্দোলনটি প্রথমে ফ্লোরেন্স নগরীর গণ্ডি পেরিয়ে ইতালির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নগর-রাষ্ট্র যেমন ভেনিস, মিলান, বলগনা, ফেরেরা ও রোমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ইতালি থেকে ফ্রান্স পর্যন্তও পৌঁছে যায়। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে সমগ্র পশ্চিম ও উত্তর ইউরোপে মানবতাবাদী আন্দোলন বিস্তার লাভ করে। যদিও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে রেনেসাঁসের অভিজ্ঞতা এসেছিল ইতালির অনেক পরে, কিন্তু তবু এর প্রভাব ছিল সমান বৈপ্লবিক। এর মধ্য দিয়ে মধ্যযুগের অবসান ঘটে শিল্প–সংস্কৃতি রাজনীতি ও অর্থনীতি এক নবজন্ম লাভ করে। এ সময়ই সৃষ্টি হয় অসংখ্য ধ্রুপদি দর্শন, সাহিত্য ও শিল্প, যার মাধ্যমে মানবসভ্যতা পৌঁছে যায় এক নতুন উচ্চতায়। ইউরোপীয় রেনেসাঁসের মাধ্যমে মানবতাবাদের বিকাশ এমনি এমনি ঘটেনি, তার পেছনে ছিল জ্ঞানমার্গ তথা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগীত-দর্শনসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখার বিকাশ।
এই বিকাশ সাধনের পেছনে ছিল শাসক ও ধনিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা। বাংলাদেশের জনসাধারণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, তাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির রুচি উন্নয়নের জন্য, তাদের মধ্যে মানবিক বোধ প্রতিষ্ঠা ও প্রগতিবোধ জাগ্রত করার জন্য প্রয়োজন জ্ঞানমার্গের বিকাশ। আর এই বিকাশ ততক্ষণ সাধিত হবে না, যতক্ষণ না শাসক ও ধনিকশ্রেণি এর পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসবে। জ্ঞানমার্গের বিকাশ যে শাসক ও ধনিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতায় হয়, তার প্রমাণ নেওয়ার জন্য ইউরোপে যাওয়ার দরকার নেই, ভারতবর্ষ থেকেও নেওয়া যায়। মগধে গুপ্তদের শাসনামলে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের যে চর্চা শুরু হয়, পাল ও সেন আমলে সেই ধারা অব্যাহত ছিল। বাংলায় পালদের আমলে দেশীয় ভাষা হিসেবে প্রথম বাংলা চর্চা শুরু হয়। বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্যের উদ্ভব ও প্রসার ঘটে বৌদ্ধ আমলে, বিশেষ করে স্বাধীন পাল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায়। সেন আমলে বাংলা ভাষার চর্চা না হলেও এর নিজস্ব সত্তা লোপ পায়নি। পরবর্তী সময়ে হুসেন শাহ, গৌড়ের সামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ এবং অপরাপর মুসলিম শাসকেরা বাংলায় ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করে সাহিত্যে এক নতুন যুগ সৃষ্টি করেছিলেন। সাহিত্যচর্চায় সুলতানরা বাংলার সব ধর্মের মানুষকে সমানভাবে উদ্বুদ্ধ ও পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।
ওদিকে আরাকান রাজসভার অমাত্যবর্গ কবি-সাহিত্যিকদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সমৃদ্ধ করেছিলেন বাংলা সাহিত্যকে। খ্রিষ্টীয় সতেরো শ শতকে আরাকান রাজসভার কবিদের হাতেই বাংলা সাহিত্য পরিপুষ্ট হয়েছিল, যার ফলাফল হয়েছিল বহুমুখী ও দীর্ঘস্থায়ী। আরাকান অমাত্যসভার পৃষ্ঠপোষকতায় যেসব কবি-সাহিত্যিক সাহিত্য চর্চা করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কবি দৌলত কাজী, কোরেশী মাগন ঠাকুর, আলাওল, মরদন, আবদুল করিম খোন্দকার, আবদুল করিম, আবুল হোসেন, কাজী আবদুল করিম, ইসমাইল সাকেব, কাজী মোহাম্মদ হোসেন, নসরুল্লাহ খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
শাসক ও ধনিকশ্রেণির সেই পৃষ্ঠপোষকতা কি এখন আছে? নেই। রাজনীতিকেরা এখন সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য প্রার্থনাগৃহ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কেউ কখনো একটি পাঠাগার নির্মাণ করেন না, নাটক–থিয়েটার–সাহিত্য–সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞের পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন মনে করেন না। জনগণের মেধার বিকাশ, আত্ম–উন্নয়ন ও প্রগতির দিকে ধাবিত করার কোনো প্রয়োজন তাঁরা অনুভব করেন না।
গণমাধ্যমও জনগণকে প্রগতির দিকে ধাবিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের গণমাধ্যমের যেটুকু বিকাশ, তার পেছনে ধনিকশ্রেণি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু তারা গণমাধ্যমের মধ্য দিয়ে সমাজ-প্রগতির চেয়ে নিজস্ব সম্পদের পাহারাদার হিসেবে গণমাধ্যমকে অধিকতর ব্যবহার করছে এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান বিকাশের ক্ষেত্রে শাসকদের মতো তারাও কোনো ভূমিকা রাখতে অনাগ্রহী।
আমাদের পুঁজিপতিরা চাইলেই পারেন প্রতিটি জেলায় একটি করে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করতে। তাঁরা চাইলেই পারেন, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক দর্শন-জ্ঞান-বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতা করতে। এক শ ধনবান যদি পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসতেন, তাতে নিঃসন্দেহে আমাদের জ্ঞানমার্গ উৎকর্ষ লাভ করত, যেমন লাভ করেছিল ইউরোপীয় রেনেসাঁসে বণিকশ্রেণি ও মেডিসি পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায়, যেমন লাভ করেছিল সুলতানদের এবং আরাকান রাজসভার অমাত্যবর্গের পৃষ্ঠপোষকতায়।
বাংলাদেশ যে সাংস্কৃতিক দিক থেকে একটি ভয়াবহ সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে, এটা বুঝতে পারছে না ক্ষমতাসীন দল, বুঝতে পারছে না বুদ্ধিজীবী শ্রেণিও। শাসকশ্রেণি তো কথায় কথায় উন্নয়ন আর উন্নয়ন ছাড়া কিছুই বলতে পারে না। বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ কার্যত নিশ্চুপ। তারা বুঝতে পারছে না অর্থনীতির এই বিকাশ যেকোনো মুহূর্তে যে রুদ্ধ হয়ে যেতে পারে, দেশ পড়ে যেতে পারে ঘোর সংকটে। যে সংকটে পড়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক ও সিরিয়া।
যতই উন্নয়নের কথা বলা হোক না কেন, যতই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা বলা হোক না কেন, বাংলাদেশ ভালো নেই। এক ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত বাংলাদেশ। এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। এ সংকটের কারণ চিহ্নিত করা না গেলে, এ সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের না করলে, ক্ষমতাসীন দল সতর্ক না হলে বাংলাদেশ যে খাদে পতিত হবে, তা থেকে ওঠা সহজ হবে না।
স্বকৃত নোমান, কথাসাহিত্যিক

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে অবকাঠামোতে উন্নয়ন হচ্ছে, কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন আর হয়নি। নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করছে, ঢাকা শহরে নানা উড়ালসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে, সারা দেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়নে উন্নয়নে সত্যিকার অর্থেই দেশটার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে।
২৮ জুন ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে অবকাঠামোতে উন্নয়ন হচ্ছে, কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন আর হয়নি। নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করছে, ঢাকা শহরে নানা উড়ালসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে, সারা দেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়নে উন্নয়নে সত্যিকার অর্থেই দেশটার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে।
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে অবকাঠামোতে উন্নয়ন হচ্ছে, কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন আর হয়নি। নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করছে, ঢাকা শহরে নানা উড়ালসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে, সারা দেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়নে উন্নয়নে সত্যিকার অর্থেই দেশটার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে।
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে অবকাঠামোতে উন্নয়ন হচ্ছে, কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন আর হয়নি। নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করছে, ঢাকা শহরে নানা উড়ালসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে, সারা দেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়নে উন্নয়নে সত্যিকার অর্থেই দেশটার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে।
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫