অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান

বাজেটের আলোচনায় যদিও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ, রাজস্ব ও উন্নয়ন ব্যয়, ঘাটতি অর্থায়ন, বাজেট বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব সংস্কার—এসব বিষয়ের ওপরই মূলত নিবদ্ধ থাকে, আমাদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে সরকারি ব্যয় ও বাজেট প্রণয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক ভিত্তি আছে। সেটা হলো অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের মানুষর সপক্ষে এসবের মাধ্যমে আয়, ভোগ ও সম্পদের পুনর্বণ্টন। স্মর্তব্য যে বাংলাদেশের সংবিধানে ও বর্তমান সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিলে কেবল প্রবৃদ্ধি নয়, একটি জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার, রূপকল্প ২০৪১ ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এ আকারের প্রতিফলন রয়েছে।
কর-ন্যায্যতা ও বণ্টন-ন্যায্যতার নিরিখে বাজেট ২০২১-২২-এর প্রস্তাবসমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে প্রবৃদ্ধি ও ব্যবসা, বিনিয়োগ ও উদ্যোক্তা-প্রণোদনায় যে প্রচেষ্টা আছে, কোভিডকালের চাহিদার পিরেপ্রেক্ষিতে নিম্নবিত্ত, কর্মচ্যুত, বেকার, উপান্তিক ও প্রান্তিক মানুষদের প্রকৃত আয় বৃদ্ধি; কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষা ও আয়বৈষম্য হ্রাসের নিরিখে ব্যয়ের প্রস্তাব ও পদক্ষেপসমূহ সে তুলনায় অনেক দুর্বল।
এ কথা জানা যে কোভিডের আক্রমণের আগেই আয়, ভোগ ও সম্পদবৈষম্য বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়ের পরিসংখ্যান এবং বিভিন্ন আর্থসামাজিক সূচকের অগ্রগতি নিঃসন্দেহে আমাদের গৌরব ও গর্বের বিষয়। কিন্তু বিভাজিত তথ্য থেকে দেখা যায় যে এসব সূচকের গড় মান পিছিয়ে পড়া মানুষদের বণ্টনের ন্যায্যতার বিষয়টিকে অনেক ক্ষেত্রেই আড়াল করে রেখেছে। ২০১০ ও ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত খানা-জরিপের হিসাবমতে, বাংলাদেশে আয়ের বিচারে সবচেয়ে ওপরের মানুষদের সঙ্গে সবচেয়ে কম আয়ের মানুষের পার্থক্য বিভিন্ন সূচকে ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং আয়ের বৈষম্য পরিমাপক জিনি-সহগেও তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছিল। ২০২০ সালে কোভিড অতিমারির আক্রমণ–পরবর্তী সময়ে এ বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। কর্মহীনতা, আয় হ্রাস, সেবা খাত থেকে অনিয়মিত ও স্বল্প আয়ের কৃষিকর্মে স্থানান্তর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আয়-বিনিয়োগে ক্ষতি, নিঃশেষিত সঞ্চয় ও ঋণের ফাঁদে আটকে পড়া—এসব কারণে কোভিডকালীন স্বল্প আয় ও উপান্তিক-প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমানের যে ক্ষয় হয়েছে, বাজেট ও সরকারি ব্যয়ের মাধ্যমে তার প্রতিকূলতা সহনীয় মাত্রায় রাখা ও ঝুঁকি প্রশমন অন্যতম লক্ষ্য হিসেবে দেখার প্রয়োজন ছিল। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের প্রস্তাবিত রাজস্বকাঠামো, কর প্রস্তাব ও উন্নয়ন বরাদ্দের বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। কোভিড অতিমারির চলমান দ্বিতীয় আঘাত মোকাবিলায় চাহিদার বিবেচনায় এ ঘাটতি আরও বেশি দৃশ্যমান।
পুনর্বণ্টনের নিরিখে একটা বড় বিবেচ্য বিষয় হলো বাজেটের আকার। অনেক সময়ই আমরা বলে থাকি ‘বড় অঙ্কের বাজেট’। কথাটার পেছনে একটা কারণ হলো, যে বাজেট গৃহীত হয়, তা বাস্তবায়িত হয় না। বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে তা পরবর্তী সময়ে সংশোধন করতে হয়; অর্থাৎ কাটছাঁট করা হয়। আবার পরবর্তী সময়ে বছর শেষের উপাত্ত থেকে দেখা যায়, সংশোধিত আয় ও বরাদ্দের তুলনায়ও প্রকৃত আয় ও ব্যয় আরও কম। গত কয়েক অর্থবছরে প্রকৃত বাস্তবায়ন প্রস্তাবিত বাজেটের ৮০-৮৫ শতাংশ অতিক্রম করতে পারেনি। এ জন্য প্রায়শই বলা হয়, বাস্তবায়ন করতে সক্ষম না হলে বাজেট বাড়িয়ে লাভ কী? সে কারণে বাজেটের আকার বৃদ্ধি করা হলেই বলা হয় ‘বড় অঙ্কের বাজেট’। অথচ আমাদের যে কথাটার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত তা হলো, কেন আমরা বাস্তবায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে ‘বড় বাজেট’ প্রণয়ন করতে পারছি না? এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় ও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ও সুশাসন নিশ্চিতে বিনিয়োগ করছি না? স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করছি না? মনে রাখা ভালো যে বাংলাদেশে সরকারি ব্যয়, যা বছরে মাথাপিছু ৪০ হাজার টাকার কম, তা জিডিপির অংশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের গড়ের চেয়ে অনেক কম। বস্তুত, বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রণীত বাংলাদেশের প্রথম বাজেট, যার আকার ছিল জিডিপির প্রায় ১৫ শতাংশ, সে তুলনায় বর্তমান বাজেট জিডিপির অংশ হিসেবে তেমন বড় নয়—২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জিডিপর ১৭ দশমিক ৫ শতাংশের সমপরিমাণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে এটা ছিল ২৬ দশমিক ১ শতাংশ, নেপালে ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ, মালদ্বীপে ৩১ দশমিক শূন্য শতাংশ, ভিয়েতনামে ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ। সুতরাং বাজেটের মাধ্যমে যে আয় ও সম্পদের পুনর্বণ্টন, তার সুযোগই অনেকাংশে সীমিত হয়ে যায়, যখন তার আকারই হয় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক ছোট। বাস্তবায়ন সক্ষমতার সঙ্গে অন্যতম আরেকটি কারণ হলো, কর ও কর-বহির্ভূত রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করে ব্যয়যোগ্য সম্পদ আহরণ করার জন্য যে উদ্যোগ-উদ্যম প্রয়োজন, সে জায়গায়ই রয়ে গেছে সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। জানা কথা, বাংলাদেশে রাজস্ব-জিডিপির হার, যা বর্তমানে ৯ দশমিক শূন্য শতাংশ, তা দক্ষিণ এশিয়া ও উন্নয়নশীল বিশ্বে সর্বনিম্ন। আর যেটা আদায় হয় তার দুই-তৃতীয়াংশ অপ্রত্যক্ষ কর এবং মাত্র এক-তৃতীয়াংশ প্রত্যক্ষ কর থেকে। অনেক দেশেই এই অনুপাত বিপরীত। প্রত্যক্ষ করারোপের মাধ্যমে আহরিত অর্থই পুনর্বণ্টনের সুযোগ বেশি সৃষ্টি করে; অপ্রত্যক্ষ করের অভিঘাত এসে পড়ে মূলত সাধারণ মানুষ ও ভোক্তার ওপর। তাই রাজস্ব আয়কাঠামো এবং সরকারি ব্যয়ের আকার ও পরিধি—এ দুই দিক থেকেই পুনর্বণ্টনের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ছে।
২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যয়কাঠামোতে সামাজিক সুরক্ষা, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্য খাতে চলমান অতিমারির প্রেক্ষাপটে আরও অনেক বেশি বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল। অতিমারির পূর্বে যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল, অতিমারির সময়ে তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘নতুন দরিদ্র’রা। কর্মসুযোগ যাঁরা হারিয়েছিলেন, তাঁরা কাজ ফিরে পেলেও অনেকেরই আয় কমে গেছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেমন ছোট ব্যবসায়ী, দোকানের মালিক ও তাঁদের কর্মচারী, ক্ষুদ্র বিক্রেতা, পরিবহনশ্রমিক, পর্যটনশিল্পে নিয়োজিতরাসহ অনেকেই হয় কাজ হারিয়েছেন বা তাঁদের আয় হ্রাস পেয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে এদের সবাইকে সাহায্য প্রদান করা সম্ভব হবে না। আর করতে গেলে তার পরিমাণ হবে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করে এবং তার বাস্তবায়নের গুণগত মান নিশ্চিত করে পুরোনো ও নতুন দরিদ্রসহ সব প্রান্তজনকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা আজ জরুরি হয়ে পড়েছে।
একই সঙ্গে সরকারি ব্যয়ে বাস্তবায়িত প্রকল্পের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী ও সময়মাফিক বাস্তবায়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করা পুনর্বণ্টনের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দুই কারণে—প্রথমত, সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় মূলত জনগণেরই করের টাকায় অথবা অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের টাকায়, যার সুদাসলসহ ঋণ পরিষেবা করতে হয় জনগণের করের টাকায়। তাই এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে যখন বিলম্ব, দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে ব্যয় বৃদ্ধি হয়, তার দায়ভার শেষ বিচারে করদাতাদের ওপরই বর্তায়। দ্বিতীয়ত, ব্যয় বৃদ্ধি পেলে সরকারি পরিষেবার মূল্য বৃদ্ধি পায়। যেমন—সেতুর টোলের হার, বিদ্যুতের মূল্য, গ্যাসের বিল বাড়িয়ে তার খেসারত দিতে হয়। সেই মূল্যবৃদ্ধির ভার বহন করতে হয় জনগণকেই। তাই বাজেট সাশ্রয়ীভাবে, সময়মাফিক ও সুশাসনের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তা জাতীয় আয়ের পুনর্বণ্টনের নিরিখে আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক।
আয়ের পুনর্বণ্টনের সঙ্গে শোভন কর্মসংস্থানের সম্পর্ক নিবিড় ও সরাসরি। ২০২১-২২ বাজেটে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি অনেকাংশে নির্ভর করবে ব্যক্তি খাতকে যেসব প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, তা কীভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে তার ওপর। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অংশ হিসেবে ২৪-২৫ শতাংশে স্থবির হয়ে আছে কোভিড-পূর্ববর্তী সময় থেকেই। অতিমারির অভিঘাত স্থবির বিনিয়োগে বর্তমানে ক্রমবর্ধমানভাবে দৃশ্যমান। এর প্রতিফলন দেখা যায় ২০২০-২১ অর্থবছরে টার্ম লোনের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে (চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ), ব্যক্তি খাতের ঋণের শ্লথ প্রবৃদ্ধিতে (অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত ১৫ শতাংশের বিপরীতে এখন পর্যন্ত ৯ শতাংশ) এবং মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানিতে (প্রথম ১০ মাসে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি) নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে।
ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে চাঞ্চল্য আনার ক্ষেত্রে বাজেটে প্রস্তাবিত করপোরেট কর হ্রাস, করছাড় এবং আমদানি প্রতিস্থাপক ও রপ্তানিমুখী শিল্পে বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ ইতিবাচক। এটা প্রয়োজনীয় কিন্তু যথেষ্ট নয়। একই সঙ্গে ব্যবসা-পরিবেশ ও প্রতিযোগিতা–পরিবেশের উন্নতি ও সহজীকরণ, ওয়ান স্টপ সার্ভিস অ্যাক্ট দ্রুত বাস্তবায়ন, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগকে আকর্ষণ করবে সে ধরনের সরকারি বিনিয়োগ বাস্তবায়নের দ্রুততর অগ্রগতি এবং একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল দ্রুততম সময়ে প্রতিষ্ঠার ওপর ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ নির্ভর করবে অনেকাংশেই।
প্রযুক্তি ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা, ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবনির্ভর ‘নতুন অর্থনীতি’কে উৎসাহিত করতে প্রযুক্তি ফান্ড গঠন, গবেষণা সহায়তা—এসবের জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে সমান্তরালভাবে। তাহলেই প্রস্তাবিত রাজস্ব প্রণোদনা ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে চাঞ্চল্য এনে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখবে। ভুলে গেলে চলবে না, আয় পুনর্বণ্টনের শ্রেষ্ঠ উপায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি ও দক্ষতানির্ভর শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, যা শ্রমিকদের মানসম্পন্ন জীবনযাত্রা নিশ্চিত করবে এবং জিডিপিতে মজুরির অংশ বৃদ্ধি করবে। বিগত সময়ে জাতীয় আয়ে মজুরির অংশের হ্রাস আয়বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
অতিমারির সময়ে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের জীবনে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তাদের সহায়তায় বেশ কিছু পদক্ষেপ ২০২০-২১ বাজেটে নেওয়া হয়েছিল, যা ২০২১-২২ বাজেটেও অব্যাহত আছে। এটা ইতিবাচক। এই সময়ে তাঁদের জন্য বিদেশযাত্রা সহায়তায় ভবিষ্যৎ আয়ের বিপরীতে শূন্য সুদে ঋণ প্রদান জরুরি; যাঁরা ফেরত এসেছেন তাঁদের জন্য ঋণসুবিধাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ আরও শক্তিশালী করা এবং সহায়তার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রয়োজন অভিবাসন ব্যয় হ্রাস, যা গড়ে শ্রমিকপ্রতি বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী চার লাখ টাকারও বেশি, যা একজন অভিবাসী শ্রমিকের ১৮ মাসের আয়ের সমপরিমাণ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকালে গড়ে বছরে সাত লাখেরও বেশি শ্রমিক দেশের বাইরে গেছেন। এ সংখ্যা প্রতিবছর যেসংখ্যক শ্রমিক শ্রম বাজারে যোগ দেন তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশের সমান। অতিমারির কারণে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যার চাপ পড়বে অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারের ওপর। অর্থনীতিতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি তাই এখন আরও জরুরি হয়ে পড়েছে। এবং এটা অনেকাংশেই নির্ভর করবে বাজেটের পূর্ণ ও গুণমানসম্পন্ন বাস্তবায়ন ও ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের তাৎপর্যপূর্ণ বৃদ্ধির ওপর।
পুনর্বণ্টনের দিক থেকে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজস্ব সংস্কারের উদ্যোগ অনেক ক্ষেত্রেই অবহেলিত রয়ে গেছে। ব্যাংকিং কমিশন গঠনের দাবি অনেক দিনের এবং এ প্রসঙ্গ জাতীয় সংসদের বাজেট-পরবর্তী আলোচনায়ও উল্লেখিত হয়েছে। কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি। সর্বজনীন পেনশন স্কিম, সামাজিক নিরাপত্তা জাল থেকে সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তায় উত্তরণ, স্বাস্থ্যবিমার প্রচলন—এসব কথা সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী দলিলে অনেকবারই বলা হয়েছে। এসবের পূর্ণ বাস্তবায়নে সময় প্রয়োজন, কিন্তু কাজটা শুরু করার এখনই সময়। শিক্ষায় যখন বরাদ্দ অপর্যাপ্ত থাকে, তখন আন্তপ্রজন্ম দারিদ্র্য ও বৈষম্যের ওপরও তার নেতিবাচক অভিঘাত পড়ে। কোভিডকালে যখন অনলাইন শিক্ষা শহর-গ্রাম এবং ধনী ও নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশুদের মধ্যে পার্থক্য বাড়িয়ে দিচ্ছে, তখন এ কথাটা বিবেচনায় রাখা আরও জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসবের মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উৎকর্ষতা নিশ্চিত করা গেলে এবং সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা গেলে বাংলাদেশ হবে সত্যিকার অর্থে একটি মানবকল্যাণধর্মী রাষ্ট্র এবং এসব পদক্ষেপ হবে সাধারণ মানুষের পক্ষে আয়, ভোগ ও সম্পদ পুনর্বণ্টনের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
কোভিড অতিমারি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে আজকাল প্রায়শই শোনা যায় ‘বিল্ড ব্যাক বেটার’ কথাটি। অর্থাৎ, আমরা অতিমারি থেকে উত্তরণ করব এমনভাবে, যেন অতিমারি-পরবর্তী অর্থনীতি ও জীবনমান–পূর্ববর্তী সময়ের থেকে ভিন্নতর ও শ্রেয়তর হয়। এ ধরনের কাঙ্ক্ষিত উত্তরণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক উত্তরণ, যেখানে বরাদ্দ বৃদ্ধি, মানসম্পন্ন বাস্তবায়ন ও বণ্টনের ন্যায্যতা বিধানের মাধ্যমে উপান্তিক-প্রান্তিক মানুষ যাঁরা কোভিডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হন। প্রস্তাবিত বাজেট ২০২১-২২–এ প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে তা করার সুযোগ এখনো আছে।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান
বিশেষ ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)

বাজেটের আলোচনায় যদিও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ, রাজস্ব ও উন্নয়ন ব্যয়, ঘাটতি অর্থায়ন, বাজেট বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব সংস্কার—এসব বিষয়ের ওপরই মূলত নিবদ্ধ থাকে, আমাদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে সরকারি ব্যয় ও বাজেট প্রণয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক ভিত্তি আছে। সেটা হলো অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের মানুষর সপক্ষে এসবের মাধ্যমে আয়, ভোগ ও সম্পদের পুনর্বণ্টন। স্মর্তব্য যে বাংলাদেশের সংবিধানে ও বর্তমান সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিলে কেবল প্রবৃদ্ধি নয়, একটি জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার, রূপকল্প ২০৪১ ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এ আকারের প্রতিফলন রয়েছে।
কর-ন্যায্যতা ও বণ্টন-ন্যায্যতার নিরিখে বাজেট ২০২১-২২-এর প্রস্তাবসমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে প্রবৃদ্ধি ও ব্যবসা, বিনিয়োগ ও উদ্যোক্তা-প্রণোদনায় যে প্রচেষ্টা আছে, কোভিডকালের চাহিদার পিরেপ্রেক্ষিতে নিম্নবিত্ত, কর্মচ্যুত, বেকার, উপান্তিক ও প্রান্তিক মানুষদের প্রকৃত আয় বৃদ্ধি; কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষা ও আয়বৈষম্য হ্রাসের নিরিখে ব্যয়ের প্রস্তাব ও পদক্ষেপসমূহ সে তুলনায় অনেক দুর্বল।
এ কথা জানা যে কোভিডের আক্রমণের আগেই আয়, ভোগ ও সম্পদবৈষম্য বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়ের পরিসংখ্যান এবং বিভিন্ন আর্থসামাজিক সূচকের অগ্রগতি নিঃসন্দেহে আমাদের গৌরব ও গর্বের বিষয়। কিন্তু বিভাজিত তথ্য থেকে দেখা যায় যে এসব সূচকের গড় মান পিছিয়ে পড়া মানুষদের বণ্টনের ন্যায্যতার বিষয়টিকে অনেক ক্ষেত্রেই আড়াল করে রেখেছে। ২০১০ ও ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত খানা-জরিপের হিসাবমতে, বাংলাদেশে আয়ের বিচারে সবচেয়ে ওপরের মানুষদের সঙ্গে সবচেয়ে কম আয়ের মানুষের পার্থক্য বিভিন্ন সূচকে ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং আয়ের বৈষম্য পরিমাপক জিনি-সহগেও তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছিল। ২০২০ সালে কোভিড অতিমারির আক্রমণ–পরবর্তী সময়ে এ বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। কর্মহীনতা, আয় হ্রাস, সেবা খাত থেকে অনিয়মিত ও স্বল্প আয়ের কৃষিকর্মে স্থানান্তর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আয়-বিনিয়োগে ক্ষতি, নিঃশেষিত সঞ্চয় ও ঋণের ফাঁদে আটকে পড়া—এসব কারণে কোভিডকালীন স্বল্প আয় ও উপান্তিক-প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমানের যে ক্ষয় হয়েছে, বাজেট ও সরকারি ব্যয়ের মাধ্যমে তার প্রতিকূলতা সহনীয় মাত্রায় রাখা ও ঝুঁকি প্রশমন অন্যতম লক্ষ্য হিসেবে দেখার প্রয়োজন ছিল। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের প্রস্তাবিত রাজস্বকাঠামো, কর প্রস্তাব ও উন্নয়ন বরাদ্দের বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। কোভিড অতিমারির চলমান দ্বিতীয় আঘাত মোকাবিলায় চাহিদার বিবেচনায় এ ঘাটতি আরও বেশি দৃশ্যমান।
পুনর্বণ্টনের নিরিখে একটা বড় বিবেচ্য বিষয় হলো বাজেটের আকার। অনেক সময়ই আমরা বলে থাকি ‘বড় অঙ্কের বাজেট’। কথাটার পেছনে একটা কারণ হলো, যে বাজেট গৃহীত হয়, তা বাস্তবায়িত হয় না। বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে তা পরবর্তী সময়ে সংশোধন করতে হয়; অর্থাৎ কাটছাঁট করা হয়। আবার পরবর্তী সময়ে বছর শেষের উপাত্ত থেকে দেখা যায়, সংশোধিত আয় ও বরাদ্দের তুলনায়ও প্রকৃত আয় ও ব্যয় আরও কম। গত কয়েক অর্থবছরে প্রকৃত বাস্তবায়ন প্রস্তাবিত বাজেটের ৮০-৮৫ শতাংশ অতিক্রম করতে পারেনি। এ জন্য প্রায়শই বলা হয়, বাস্তবায়ন করতে সক্ষম না হলে বাজেট বাড়িয়ে লাভ কী? সে কারণে বাজেটের আকার বৃদ্ধি করা হলেই বলা হয় ‘বড় অঙ্কের বাজেট’। অথচ আমাদের যে কথাটার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত তা হলো, কেন আমরা বাস্তবায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে ‘বড় বাজেট’ প্রণয়ন করতে পারছি না? এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় ও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ও সুশাসন নিশ্চিতে বিনিয়োগ করছি না? স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করছি না? মনে রাখা ভালো যে বাংলাদেশে সরকারি ব্যয়, যা বছরে মাথাপিছু ৪০ হাজার টাকার কম, তা জিডিপির অংশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের গড়ের চেয়ে অনেক কম। বস্তুত, বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রণীত বাংলাদেশের প্রথম বাজেট, যার আকার ছিল জিডিপির প্রায় ১৫ শতাংশ, সে তুলনায় বর্তমান বাজেট জিডিপির অংশ হিসেবে তেমন বড় নয়—২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জিডিপর ১৭ দশমিক ৫ শতাংশের সমপরিমাণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে এটা ছিল ২৬ দশমিক ১ শতাংশ, নেপালে ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ, মালদ্বীপে ৩১ দশমিক শূন্য শতাংশ, ভিয়েতনামে ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ। সুতরাং বাজেটের মাধ্যমে যে আয় ও সম্পদের পুনর্বণ্টন, তার সুযোগই অনেকাংশে সীমিত হয়ে যায়, যখন তার আকারই হয় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক ছোট। বাস্তবায়ন সক্ষমতার সঙ্গে অন্যতম আরেকটি কারণ হলো, কর ও কর-বহির্ভূত রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করে ব্যয়যোগ্য সম্পদ আহরণ করার জন্য যে উদ্যোগ-উদ্যম প্রয়োজন, সে জায়গায়ই রয়ে গেছে সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। জানা কথা, বাংলাদেশে রাজস্ব-জিডিপির হার, যা বর্তমানে ৯ দশমিক শূন্য শতাংশ, তা দক্ষিণ এশিয়া ও উন্নয়নশীল বিশ্বে সর্বনিম্ন। আর যেটা আদায় হয় তার দুই-তৃতীয়াংশ অপ্রত্যক্ষ কর এবং মাত্র এক-তৃতীয়াংশ প্রত্যক্ষ কর থেকে। অনেক দেশেই এই অনুপাত বিপরীত। প্রত্যক্ষ করারোপের মাধ্যমে আহরিত অর্থই পুনর্বণ্টনের সুযোগ বেশি সৃষ্টি করে; অপ্রত্যক্ষ করের অভিঘাত এসে পড়ে মূলত সাধারণ মানুষ ও ভোক্তার ওপর। তাই রাজস্ব আয়কাঠামো এবং সরকারি ব্যয়ের আকার ও পরিধি—এ দুই দিক থেকেই পুনর্বণ্টনের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ছে।
২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যয়কাঠামোতে সামাজিক সুরক্ষা, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্য খাতে চলমান অতিমারির প্রেক্ষাপটে আরও অনেক বেশি বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল। অতিমারির পূর্বে যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল, অতিমারির সময়ে তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘নতুন দরিদ্র’রা। কর্মসুযোগ যাঁরা হারিয়েছিলেন, তাঁরা কাজ ফিরে পেলেও অনেকেরই আয় কমে গেছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেমন ছোট ব্যবসায়ী, দোকানের মালিক ও তাঁদের কর্মচারী, ক্ষুদ্র বিক্রেতা, পরিবহনশ্রমিক, পর্যটনশিল্পে নিয়োজিতরাসহ অনেকেই হয় কাজ হারিয়েছেন বা তাঁদের আয় হ্রাস পেয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে এদের সবাইকে সাহায্য প্রদান করা সম্ভব হবে না। আর করতে গেলে তার পরিমাণ হবে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করে এবং তার বাস্তবায়নের গুণগত মান নিশ্চিত করে পুরোনো ও নতুন দরিদ্রসহ সব প্রান্তজনকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা আজ জরুরি হয়ে পড়েছে।
একই সঙ্গে সরকারি ব্যয়ে বাস্তবায়িত প্রকল্পের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী ও সময়মাফিক বাস্তবায়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করা পুনর্বণ্টনের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দুই কারণে—প্রথমত, সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় মূলত জনগণেরই করের টাকায় অথবা অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের টাকায়, যার সুদাসলসহ ঋণ পরিষেবা করতে হয় জনগণের করের টাকায়। তাই এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে যখন বিলম্ব, দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে ব্যয় বৃদ্ধি হয়, তার দায়ভার শেষ বিচারে করদাতাদের ওপরই বর্তায়। দ্বিতীয়ত, ব্যয় বৃদ্ধি পেলে সরকারি পরিষেবার মূল্য বৃদ্ধি পায়। যেমন—সেতুর টোলের হার, বিদ্যুতের মূল্য, গ্যাসের বিল বাড়িয়ে তার খেসারত দিতে হয়। সেই মূল্যবৃদ্ধির ভার বহন করতে হয় জনগণকেই। তাই বাজেট সাশ্রয়ীভাবে, সময়মাফিক ও সুশাসনের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তা জাতীয় আয়ের পুনর্বণ্টনের নিরিখে আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক।
আয়ের পুনর্বণ্টনের সঙ্গে শোভন কর্মসংস্থানের সম্পর্ক নিবিড় ও সরাসরি। ২০২১-২২ বাজেটে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি অনেকাংশে নির্ভর করবে ব্যক্তি খাতকে যেসব প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, তা কীভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে তার ওপর। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অংশ হিসেবে ২৪-২৫ শতাংশে স্থবির হয়ে আছে কোভিড-পূর্ববর্তী সময় থেকেই। অতিমারির অভিঘাত স্থবির বিনিয়োগে বর্তমানে ক্রমবর্ধমানভাবে দৃশ্যমান। এর প্রতিফলন দেখা যায় ২০২০-২১ অর্থবছরে টার্ম লোনের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে (চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ), ব্যক্তি খাতের ঋণের শ্লথ প্রবৃদ্ধিতে (অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত ১৫ শতাংশের বিপরীতে এখন পর্যন্ত ৯ শতাংশ) এবং মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানিতে (প্রথম ১০ মাসে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি) নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে।
ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে চাঞ্চল্য আনার ক্ষেত্রে বাজেটে প্রস্তাবিত করপোরেট কর হ্রাস, করছাড় এবং আমদানি প্রতিস্থাপক ও রপ্তানিমুখী শিল্পে বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ ইতিবাচক। এটা প্রয়োজনীয় কিন্তু যথেষ্ট নয়। একই সঙ্গে ব্যবসা-পরিবেশ ও প্রতিযোগিতা–পরিবেশের উন্নতি ও সহজীকরণ, ওয়ান স্টপ সার্ভিস অ্যাক্ট দ্রুত বাস্তবায়ন, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগকে আকর্ষণ করবে সে ধরনের সরকারি বিনিয়োগ বাস্তবায়নের দ্রুততর অগ্রগতি এবং একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল দ্রুততম সময়ে প্রতিষ্ঠার ওপর ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ নির্ভর করবে অনেকাংশেই।
প্রযুক্তি ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা, ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবনির্ভর ‘নতুন অর্থনীতি’কে উৎসাহিত করতে প্রযুক্তি ফান্ড গঠন, গবেষণা সহায়তা—এসবের জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে সমান্তরালভাবে। তাহলেই প্রস্তাবিত রাজস্ব প্রণোদনা ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে চাঞ্চল্য এনে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখবে। ভুলে গেলে চলবে না, আয় পুনর্বণ্টনের শ্রেষ্ঠ উপায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি ও দক্ষতানির্ভর শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, যা শ্রমিকদের মানসম্পন্ন জীবনযাত্রা নিশ্চিত করবে এবং জিডিপিতে মজুরির অংশ বৃদ্ধি করবে। বিগত সময়ে জাতীয় আয়ে মজুরির অংশের হ্রাস আয়বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
অতিমারির সময়ে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের জীবনে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তাদের সহায়তায় বেশ কিছু পদক্ষেপ ২০২০-২১ বাজেটে নেওয়া হয়েছিল, যা ২০২১-২২ বাজেটেও অব্যাহত আছে। এটা ইতিবাচক। এই সময়ে তাঁদের জন্য বিদেশযাত্রা সহায়তায় ভবিষ্যৎ আয়ের বিপরীতে শূন্য সুদে ঋণ প্রদান জরুরি; যাঁরা ফেরত এসেছেন তাঁদের জন্য ঋণসুবিধাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ আরও শক্তিশালী করা এবং সহায়তার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রয়োজন অভিবাসন ব্যয় হ্রাস, যা গড়ে শ্রমিকপ্রতি বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী চার লাখ টাকারও বেশি, যা একজন অভিবাসী শ্রমিকের ১৮ মাসের আয়ের সমপরিমাণ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকালে গড়ে বছরে সাত লাখেরও বেশি শ্রমিক দেশের বাইরে গেছেন। এ সংখ্যা প্রতিবছর যেসংখ্যক শ্রমিক শ্রম বাজারে যোগ দেন তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশের সমান। অতিমারির কারণে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যার চাপ পড়বে অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারের ওপর। অর্থনীতিতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি তাই এখন আরও জরুরি হয়ে পড়েছে। এবং এটা অনেকাংশেই নির্ভর করবে বাজেটের পূর্ণ ও গুণমানসম্পন্ন বাস্তবায়ন ও ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের তাৎপর্যপূর্ণ বৃদ্ধির ওপর।
পুনর্বণ্টনের দিক থেকে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজস্ব সংস্কারের উদ্যোগ অনেক ক্ষেত্রেই অবহেলিত রয়ে গেছে। ব্যাংকিং কমিশন গঠনের দাবি অনেক দিনের এবং এ প্রসঙ্গ জাতীয় সংসদের বাজেট-পরবর্তী আলোচনায়ও উল্লেখিত হয়েছে। কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি। সর্বজনীন পেনশন স্কিম, সামাজিক নিরাপত্তা জাল থেকে সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তায় উত্তরণ, স্বাস্থ্যবিমার প্রচলন—এসব কথা সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী দলিলে অনেকবারই বলা হয়েছে। এসবের পূর্ণ বাস্তবায়নে সময় প্রয়োজন, কিন্তু কাজটা শুরু করার এখনই সময়। শিক্ষায় যখন বরাদ্দ অপর্যাপ্ত থাকে, তখন আন্তপ্রজন্ম দারিদ্র্য ও বৈষম্যের ওপরও তার নেতিবাচক অভিঘাত পড়ে। কোভিডকালে যখন অনলাইন শিক্ষা শহর-গ্রাম এবং ধনী ও নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশুদের মধ্যে পার্থক্য বাড়িয়ে দিচ্ছে, তখন এ কথাটা বিবেচনায় রাখা আরও জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসবের মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উৎকর্ষতা নিশ্চিত করা গেলে এবং সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা গেলে বাংলাদেশ হবে সত্যিকার অর্থে একটি মানবকল্যাণধর্মী রাষ্ট্র এবং এসব পদক্ষেপ হবে সাধারণ মানুষের পক্ষে আয়, ভোগ ও সম্পদ পুনর্বণ্টনের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
কোভিড অতিমারি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে আজকাল প্রায়শই শোনা যায় ‘বিল্ড ব্যাক বেটার’ কথাটি। অর্থাৎ, আমরা অতিমারি থেকে উত্তরণ করব এমনভাবে, যেন অতিমারি-পরবর্তী অর্থনীতি ও জীবনমান–পূর্ববর্তী সময়ের থেকে ভিন্নতর ও শ্রেয়তর হয়। এ ধরনের কাঙ্ক্ষিত উত্তরণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক উত্তরণ, যেখানে বরাদ্দ বৃদ্ধি, মানসম্পন্ন বাস্তবায়ন ও বণ্টনের ন্যায্যতা বিধানের মাধ্যমে উপান্তিক-প্রান্তিক মানুষ যাঁরা কোভিডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হন। প্রস্তাবিত বাজেট ২০২১-২২–এ প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে তা করার সুযোগ এখনো আছে।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান
বিশেষ ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

বাজেটের আলোচনায় যদিও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ, রাজস্ব ও উন্নয়ন ব্যয়, ঘাটতি অর্থায়ন, বাজেট বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব সংস্কার—এসব বিষয়ের ওপরই মূলত নিবদ্ধ থাকে, আমাদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে সরকারি ব্যয় ও বাজেট প্রণয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক ভিত্তি আছে। সেটা হলো অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের মানুষর সপক্ষে এস
৩০ জুন ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

বাজেটের আলোচনায় যদিও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ, রাজস্ব ও উন্নয়ন ব্যয়, ঘাটতি অর্থায়ন, বাজেট বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব সংস্কার—এসব বিষয়ের ওপরই মূলত নিবদ্ধ থাকে, আমাদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে সরকারি ব্যয় ও বাজেট প্রণয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক ভিত্তি আছে। সেটা হলো অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের মানুষর সপক্ষে এস
৩০ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

বাজেটের আলোচনায় যদিও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ, রাজস্ব ও উন্নয়ন ব্যয়, ঘাটতি অর্থায়ন, বাজেট বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব সংস্কার—এসব বিষয়ের ওপরই মূলত নিবদ্ধ থাকে, আমাদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে সরকারি ব্যয় ও বাজেট প্রণয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক ভিত্তি আছে। সেটা হলো অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের মানুষর সপক্ষে এস
৩০ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

বাজেটের আলোচনায় যদিও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ, রাজস্ব ও উন্নয়ন ব্যয়, ঘাটতি অর্থায়ন, বাজেট বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব সংস্কার—এসব বিষয়ের ওপরই মূলত নিবদ্ধ থাকে, আমাদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে সরকারি ব্যয় ও বাজেট প্রণয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক ভিত্তি আছে। সেটা হলো অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের মানুষর সপক্ষে এস
৩০ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫