Ajker Patrika

টাঙ্গাইলে সুরক্ষার অভাবে ছড়াচ্ছে এইডস

আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে সুরক্ষার অভাবে ছড়াচ্ছে এইডস

২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে এইচআইভি/এইডসমুক্ত ঘোষণা করার কথা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই টাঙ্গাইলে নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে এই ঘাতক ব্যাধি। ইতিমধ্যে জেলায় তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) চারজনসহ পাঁচজনের শরীরে এইডস শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এইডস প্রতিরোধ, প্রতিকার ও রোগ শনাক্তের ব্যবস্থা না থাকা এবং অনিয়ন্ত্রিত যৌনাচারের কারণে রোগটি বিস্তার ঘটাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এতে জনমনে বাড়ছে উদ্বেগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্র বেবিস্ট্যান্ড এলাকার কান্দারপাড়ায় রয়েছে ২০০ বছরের পুরোনো যৌনপল্লি। ৩০২ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত ৫৯টি বাড়িতে রয়েছে ছয় শতাধিক যৌনকর্মী। এদিকে আবাসিক হোটেল, বাসাবাড়ি ও ভাসমান সহস্রাধিক যৌনকর্মীর পাশাপাশি রয়েছে ১ হাজার ২০০ জন হিজড়া। প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার যৌনকর্মীর সঙ্গে কয়েক হাজার পুরুষ অবাধ মেলামেশা করে থাকেন। তাঁদের অধিকাংশই স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াই যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়ায় নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন যৌনকর্মী বলেন, ‘আমরা খদ্দেরের কাছে ভোগ্যপণ্য হিসেবে গণ্য হই। তাঁদের ইচ্ছামতো মনোতৃপ্তি দিতে হয় আমাদের। আমরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে শুধু জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিটাই রাখতে পারি, এর চেয়ে বেশি কিছু না। ফলে আমাদের জীবন সম্পূর্ণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যেকোনো সময় ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা অনেক বেশি। আর আমরা আক্রান্ত হলে খদ্দেরদের মধ্যেও রোগ ছড়িয়ে পড়াটা স্বাভাবিক।’

এ দিকে, টাঙ্গাইলে যৌনকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো কার্যক্রম নেই। এমনকি ঘাতক ব্যাধি এইচআইভি/এইডস সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও নেই। নেই রোগ শনাক্তের ব্যবস্থাও।

 টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবজেল হক বলেন, ‘এইডস রোগীর সংখ্যা শনাক্তের জন্য মাঠকর্মী নিয়োগ করে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা ছাড়া বিকল্প নেই। আমাদের কার্যক্রম এইড দিবস পালনে সীমাবদ্ধ। তবে কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের অধীনে ড্রপ ইন সেন্টার ও লাইট হাউস এবং নারীমুক্তি সংঘ যৌনকর্মীদের নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে চিকিৎসাসেবা, অ্যাডভোকেসি সভা এবং নিরাপদ যৌনাচারের উপকরণ বিতরণ করে থাকে। নারীমুক্তি সংঘ সরাসরি পতিতাপল্লিতে কাজ করে। এ ছাড়া লাইট হাউস আবাসিক হোটেল, বাসাবাড়ি ও ভাসমান যৌনকর্মী এবং আহছানিয়া মিশনের ড্রপ ইন সেন্টার হিজড়াদের নিয়ে কাজ করে।

লাইট হাউসের সমন্বয়ক রাবিদ খান জানান, টাঙ্গাইলের আবাসিক হোটেল, বাসাবাড়ি ও ভাসমান যৌনকর্মীর সংখ্যা ১ হাজারের বেশি। এর মধ্যে আবাসিক হোটেলগুলোতে চার শতাধিক, বাসাবাড়িতে প্রায় ৩০০ আর ভাসমান যৌনকর্মীর সংখ্যা তিন শতাধিক। লাইট হাউসের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেসি সভা ও বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়ে থাকে।

আহছানিয়া মিশনের ড্রপ ইন সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. আবু হানিফ জানান, টাঙ্গাইলে ১ হাজার ২০০ জন হিজড়া রয়েছেন। তাঁদের জন্য চিকিৎসাসেবা, কাউন্সেলিং ও উপকরণ বিতরণ করা হয় ড্রপ ইন সেন্টার থেকে। আহছানিয়া মিশনের ড্রপ ইন সেন্টার থেকে গত আগস্ট মাসে যৌনকর্মীদের মধ্যে ২৬ হাজার ৪৭৬টি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। ৯০ জন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। ১২২ জনের এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে এসব পরীক্ষায় কতজনের শরীরে এইডস শনাক্ত হয়েছে, সেই তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন আবু হানিফ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ২০০৯ সালে টাঙ্গাইলের যৌনপল্লিতে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হয়। এ ছাড়া কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। টাঙ্গাইলে বর্তমানে চারজন হিজড়া এইডস রোগী রয়েছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন রোগীর এইডস ধরা পড়ে। ঘাটাইলের ওই রোগী স্ত্রীর মাধ্যমে এইডসে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। পরে তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘ওই রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কোনো চিকিৎসাতেই তাঁর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় এইচআইভি পরীক্ষা করানো হয় ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে তাঁর এইচআইভি শনাক্ত হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে এইচআইভি/এইডস রোগ নিরূপণের ব্যবস্থা নেই। তবে শিগগিরই এইডস রোগী শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন মিনহাজ উদ্দিন বলেন, এইড রোগের কোনো প্রতিষেধক বের হয়নি। তাই সচেতনতাই হলো এইডস থেকে মুক্ত থাকার অন্যতম উপায়। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে এই রোগ থেকে মুক্ত থাকা সহজ। যাঁরা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করেন, অনৈতিকতায় জড়িয়ে পড়েন, তাঁদের অবশ্যই স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু এইডস একবার হলে আর সারে না, তাই আক্রান্তের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাটা বাড়ানোর জন্য এন্টিরেক প্রো ভাইরাল থেরাপি দিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে রোগীকে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাহাড়ে ভুট্টা চাষে ভালো ফলন পেলেন কৃষক জয়নাল

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ( রাঙামাটি)
৩৩ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক জয়নাল আবেদীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
৩৩ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক জয়নাল আবেদীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভুট্টা চাষ করেছেন তিনি।

উপজেলার ১ নম্বর চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রেশম বাগান ব্লকের বারঘোনিয়া তঞ্চঙ্গাপাড়ায় জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছেন কৃষক জয়নাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, ৩৩ শতক কৃষি জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। চলতি বছরের বোরো মৌসুমে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টার বীজ, সার ও সাইনবোর্ড পেয়েছেন। এ ছাড়াও একই জমিতে সাথি ফসল হিসেবে লালশাক, ফরাস শিম ও টমেটো চাষ করেছেন। বর্তমানে জমিতে ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ভুট্টা বিক্রির আশা করছেন তিনি।

এদিন কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবীব রেশমবাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় কৃষক জয়নাল আবেদীনের ভুট্টা চাষ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে ভুট্টা চাষ কম হলেও রেশম বাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই উপজেলায় চারটি ভুট্টা প্রদর্শনীর মধ্যে একটি কৃষক জয়নাল আবেদীনকে দিয়েছিলাম। ভুট্টা চাষে উনার ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। আশা করছি, উনি ভালো লাভ করতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত