Ajker Patrika

সিলেটে ১৯ আসনের ৮টিতে নৌকার নতুন মুখ, বাদ পড়লেন ৫ এমপি 

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ২২: ৩৪
সিলেটে ১৯ আসনের ৮টিতে নৌকার নতুন মুখ, বাদ পড়লেন ৫ এমপি 

সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ১৯টি মধ্যে ৫টি আসনে গত নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত এমপিদের বাদ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি-অনিয়মসহ নানাভাবে সমালোচিত হওয়ায় তাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আসনের দলীয় নেতা-কর্মীরা। আর নতুন মুখ হিসেবে ৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে মনোনয়ন চাননি সিলেট-৫ আসনের বর্তমান এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার। বাকি তিনটিতে আছেন অন্য দলের এমপিরা। তবে দলীয় সুত্রে জানা গেছে, ১৯টি আসনে দুই এমপিসহ ২২ জন স্বতন্ত্রপ্রার্থী হতে পারেন। এরই মধ্যে অনেকেই প্রার্থীতা ঘোষণাও দিয়েছেন।

সুনামগঞ্জ: জেলার ৫টি আসনের মধ্যে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা বাদ পড়েছেন। তাঁরা দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

২০০৮ সালের নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এমপি হওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রতন। জমিদখল ছাড়াও অর্থ আত্মসাৎ, নানা প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতির পাশাপাশি ক্যাসিনো কাণ্ডেও নাম জড়ায় তাঁর। এসব অভিযোগ নিয়ে তদন্তে নামে দুদক। তাঁকে দেওয়া হয় বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা। এ ছাড়া কিছুদিন আগে যাদুকাটায় রতনের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসলে সংকটে পড়েন। অন্যদিকে সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা বাদ পড়ার বিষয়টিকে বার্ধক্যজনিত কারণেই মনে করছেন স্থানীয় ও দলীয় নেতা-কর্মীরা।

মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতুষ সরকার বলেন, ‘এমপি রতন বিভিন্ন দুর্নীতি ও ক্যাসিনো কাণ্ডে আলোচনায় ছিলেন, সব মিলিয়ে একজন বির্তর্কিত এমপি ছিলেন তিনি। তাই দলের এই নতুন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই।’

এই আসনে নতুন মুখ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার। সুনামগঞ্জ-২ আসনে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের ছোট ভাই, ও শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল-আমিন চৌধুরী) মনোনয়ন পেয়েছেন।

সুনামগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নতুন মুখ পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ও কবি ড. মুহাম্মদ সাদিক। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, ‘দল আমাদের সুনামগঞ্জের ৫টি আসনের প্রার্থীতা সিলেকশন করে দিয়েছেন, আমরা সেই মোতাবেক কাজ করব। তবে দলে কোনো বির্তর্কিত কিছু থাকুক সেটা নেত্রী চাননি বিধায় কেউ কেউ দলীয় টিকিট পাননি।’

সিলেট: ৬টি আসনের মধ্যে একটিতে প্রার্থী বদল হয়েছে। আসনটির বর্তমান এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার বয়সের কারণে এবার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। এই আসনে (সিলেট-৫) নতুন মুখ হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ।

সিলেট-২ আসনে বর্তমান এমপি গণফোরামের মোকাব্বির খান। এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এমপি ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। তিনি এর আগে গত দুই নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তবে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থীর জন্য আসনটি ছেড়ে দিতে হয়।

মৌলভীবাজার: ৪টি আসনের দুটিতে নতুন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। মৌলভীবাজার-৩ আসনের বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদের বদলে নতুন মুখ এসেছেন শিল্পপতি জিল্লুর রহমান। সম্প্রতি নেছারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় জেলাজুড়ে। এমন কী সাংবাদিকের জমি দখলেরও অভিযোগ উঠে তাঁর স্বজনদের প্রতি।

মৌলভীবাজার-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মুহাম্মদ মনসুর বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি ধানের শীষ নিয়ে গত নির্বাচনে জয়ী হন। এবার তিনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ‘গ্রিন সিগন্যাল’ না পাওয়ায় মনোনয়ন চাননি। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। এই আসনে আওয়ামী লীগের গ্রুপিং তুঙ্গে, যা নাদেলের পথ সহজ করে দিয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। 

জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি এখনই কোনো মন্তব্য করব না। আমরা বসে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাব।’ 

হবিগঞ্জ: ৪ টির মধ্যে দুটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। হবিগঞ্জ-১ আসনে বর্তমান সাংসদ শাহনওয়াজ মোহাম্মদ মিলাদ গাজীর বদলে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে নতুন মুখ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে। হবিগঞ্জ-২ আসনে টানা তিনবারের এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের বদলে বেছে নেওয়া হয়েছে তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েলকে। আর এই পরিবর্তনের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকাকেই কারণ হিসেবে দেখছেন দুটি আসনের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। 

নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রিজভী আহমেদ খালেদ বলেন, ‘বর্তমানে মিলাদ গাজীর নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার জনসাধারণের সঙ্গে তেমন একটা সম্পৃক্ততা নেই। এ ছাড়া দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একেবারে যোগাযোগ ছিল না বললেই চলে। তাঁর পছন্দের নেতা-কর্মীদের বাইরে আর কারও সঙ্গেই সম্পর্ক ছিল না। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলোও তাঁর পছন্দের লোকদের নিয়েই করেছেন। দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এসব নিয়ে তিনি কখনো কোনো আলোচনা করেননি।’

বানিয়াচং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন খান বলেন, ‘এমপি মজিদ খানের সঙ্গে দলীয় নেতা-র্মীদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। এ বিষয়টি সভানেত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত অবগত। গত ১১ নভেম্বর বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নে বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলা দুটির আওয়ামী নেতা-কর্মীরা ‘মজিদ খান হটাও’ শীর্ষক একটি সমাবেশও করেন। এসব কারণে তাঁকে বাদ দিয়েছেন।’

এদিকে, এরই মধ্যে দুজন এমপিসহ ২২ জন স্বতন্ত্রপ্রার্থী হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে অনেকেই প্রার্থীতা ঘোষণাও দিয়েছেন। তাঁরা হলেন—সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম আহমদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব বিনয় ভুষণ তালুকদার, সুনামগঞ্জ-২ আসনে সাবেক যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমান ও সাবেক শাল্লা উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অবনী মোহন দাস, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন, সুনামগঞ্জ-৫ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম চৌধুরী, সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরী ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান, সিলেট-৩ আসনে বিএমএ’র মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক, সাবেক সংসদ সদস্য পীর হবিবুর রহমানের ছোট ছেলে ওলিউর রহমান, সিলেট-৫ আসনে ড. আহমদ আল কবীর, সিলেট-৬ আসনে কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন, মৌলভীবাজার-২ আসনে কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান সলমান আহমদ, মৌলভীবাজার-৩ আসনে মোলভীবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালিক তরফদার সুয়েব, হবিগঞ্জ-১ আসনে নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক তফাজ্জুল হোসেন চৌধুরী, হবিগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান এমপি আব্দুল মজিদ খান, হবিগঞ্জ-৪ আসনে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও মাধবপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরী অসিম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভ্যানচালক ফারুক হত্যা মামলার ৬ আসামি পালানোর সময় গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় মধ্যযুগীয় কায়দায় ভ্যানচালক ওমর ফারুক (৩৮) হত্যা মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নাটোর সদর উপজেলার বনবেলঘড়িয়া পশ্চিম বাইপাস রোডে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা বাসে চড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন বাগমারার ভবানীগঞ্জ সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি উপজেলার দেউলিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম (৪৭), সাধারণ সম্পাদক মাকিগ্রামের আব্দুল মতিন (৪০), সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক দরগামাড়িয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক (৪০), হেজাতিপাড়া গ্রামের আসাদুল ইসলাম (৩৬), দেউলিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান (৫৫) ও আব্দুল হান্নান (৩৮)।

র‍্যাব-৫-এর সদর কোম্পানি ও নাটোরের সিপিসি-২-এর যৌথ দল চেকপোস্ট বসিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। আজ বুধবার সকালে র‍্যাব-৫-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নিহত ভ্যানচালক ওমর ফারুকের বাড়ি চাঁনপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মোসলেম সরদার। ছেলে হত্যার ঘটনায় তিনিই মামলা করেছিলেন।

র‍্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভবানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডে নিজের ব্যবহৃত ভ্যানগাড়ি রেখে প্রস্রাব করতে যান ওমর ফারুক। কিছুক্ষণ পর ফিরে এলে সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে সেখানে উপস্থিত অন্য আসামিরা তাঁকে চোর সন্দেহে আটক করেন। এরপর ২০ থেকে ২৫ জন সংঘবদ্ধভাবে ওমর ফারুককে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নির্মমভাবে মারধর করেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে তাঁকে উলঙ্গ করে দেয়ালের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে তাঁর দুই হাত ও দুই পায়ে প্রায় দুই ইঞ্চি লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মারধরের সময় ওমর ফারুক বারবার পানি চাইলে তাঁকে পানি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

অত্যাচারে ফারুকের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে আসামিরা ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁকে মিথ্যা মাদক সেবনকারী হিসেবে উপস্থাপন করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ফারুককে নিতে অস্বীকৃতি জানালে সেখানে উপস্থিত হন বাগমারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম ভুঞা। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এক পুরিয়া গাঁজা রাখার অভিযোগে ওমর ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন।

পরে আহত অবস্থায় ওমর ফারুককে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গুরুতর আহত অবস্থায়ই তাঁকে কারাগারে গ্রহণ করেন। পরদিন ১৮ ডিসেম্বর তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ ডিসেম্বর ফারুকের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। এরপরই ফারুক হত্যার ঘটনায় মামলা নেয় বাগমারা থানা-পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে ৯২৩ ভোটকেন্দ্রের ১৭৮টি ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ জেলায় ছয়টি আসনে ৯২৩টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ১৭৮টি কেন্দ্রকে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’, ২৮১টিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ও ৪৬৪টিকে ‘সাধারণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলো জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের ছবি পুলিশ প্রশাসনের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।

জেলায় মোট ভোটারসংখ্যা ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৮ জন। জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে (শাহজাদপুর উপজেলা)। এই আসনে ভোটার ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪১২ জন ও নারী ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৭২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের তিনজন।

সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছেন সিরাজগঞ্জ-১ আসনে (কাজীপুর ও সদর উপজেলার একাংশ)। এখানে ভোটারসংখ্যা ৩ লাখ ৮৫ হাজার ২৪ জন। এখানে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৬ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের রয়েছেন চারজন।

সিরাজগঞ্জ সদর ও কামারখন্দ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-২ আসনে ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৮৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৪৮ ও নারী ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬২৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের চারজন।

রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ও নারী ২ লাখ ২১ হাজার ৬৮৩ এবং তৃতীয় লিঙ্গের সাতজন।

উল্লাপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮০ ও নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ১২৫ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১৬ জন।

বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ২৬ হাজার ৩২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৬৪ ও নারী ২ লাখ ৭ হাজার ৬৫৫ এবং তৃতীয় লিঙ্গের দুজন।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সানতু আজ বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন্দ্রগুলো আমরা পরিদর্শন করছি। সব কেন্দ্র পরিদর্শন শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।’

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে কী ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে—এ প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, এ বিষয়েও পরে জানানো হবে।

সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, ‘জেলার ছয়টি আসনে মোট ভোটার ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৮ জন। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা আমরা করি না। এটা করে পুলিশের ডিএসবি শাখা। তবে আমাদের কাছে সব কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইটভাটায় ডেকে নিয়ে হত্যা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
আবু তাহের। ছবি: সংগৃহীত
আবু তাহের। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে জাসাস নেতা ফরিদ সরকারকে ইটভাটায় ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে শ্রীপুর থানা-পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

নিহত মো. ফরিদ সরকার (৩৫) উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের মো. জামাল উদ্দিন সরকারের ছেলে। তিনি গোসিঙ্গা ইউনিয়ন জাসাসের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

গ্রেপ্তার আবু তাহের ওরফে তারা ডাকাত (৪০) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সূর্য নারায়ণপুর গ্রামের মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মতিউর রহমান বলেন, ২৩ ডিসেম্বর রাতে খুনিরা ফরিদ সরকারকে মোবাইল ফোনে লতিফপুর গ্রামের কেবিএম ইটভাটায় ডেকে নেন। ডেকে নিয়ে গভীর রাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে-পিটিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে ফেলে যান।

এ ঘটনায় নিহত ফরিদের বড় ভাই ফারুক হোসেন বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আজ বুধবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দীপু দাস হত্যা: নিথর দেহ গাছে ঝোলানোর ‘মূল হোতা’ গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার নিবির ইসলাম অনিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার নিবির ইসলাম অনিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় চাঞ্চল্যকর পোশাকশ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস হত্যায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পশ্চিম থানার চেরাগআলী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার যুবক হলেন নিবির ইসলাম অনিক (২০)। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা (মধ্য ভাটিবাড়ি) গ্রামের মো. কালিমুল্লাহর ছেলে।

তিনি ভালুকার একটি ফ্যাক্টরিতে নিটিং অপারেটর হিসেবে কাজ করেন।

১৮ ডিসেম্বর দীপুকে হত্যার পর রশি দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ভয়াবহ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

জানা গেছে, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ দেখতে পায়, সাদা শার্ট পরিহিত এক যুবক দীপুর নিথর দেহ রশি দিয়ে টেনে গাছের ওপর তুলছেন। প্রযুক্তির সহায়তায় সেই যুবককে অনিক হিসেবে শনাক্ত করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে অনিক পলাতক ছিলেন। তাঁকে ধরতে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। সর্বশেষ ঢাকার বনানী ও গাজীপুরের চেরাগআলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে তদন্তকারী দল।

ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অনিক যে ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন, ঘটনার পর থেকে তিনি সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে পাঁচজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত