Ajker Patrika

২১ লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসক ১০ জন

  • সাত উপজেলা কমপ্লেক্সের পাঁচটিই চলছে একজন করে মেডিকেল অফিসার দিয়ে
  • অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অস্ত্রোপচার বন্ধ বেশির ভাগ হাসপাতালে
  • জনবলসংকটে এক্সরে, ইসিজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষাও বন্ধ
মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, ০৮: ১৩
চিকিৎসকের অপেক্ষায় রোগীরা। সম্প্রতি কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিকিৎসকের অপেক্ষায় রোগীরা। সম্প্রতি কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতটি উপজেলা নিয়ে সীমান্তবর্তী জেলা মৌলভীবাজার। এ জেলায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। এই বিশালসংখ্যক মানুষের জন্য সরকারি চিকিৎসাসেবা পাওয়া এখন সোনার হরিণের মতো। জেলার সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমপক্ষে ১০০ চিকিৎসা কর্মকর্তা (মেডিকেল অফিসার) থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ১০ জন। অর্থাৎ প্রায় প্রতি ২ লাখ ১০ হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক রয়েছেন। তা-ও আবার সাত উপজেলা কমপ্লেক্সের পাঁচটিই চলছে মাত্র একজন করে চিকিৎসক দিয়ে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল ও রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে বিভিন্ন সময়ে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ হাসপাতালে ৩১ শয্যারও জনবল নেই। হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসক-সংকটের কারণে জরুরি বিভাগ চালু রাখাই দুরূহ হয়ে পড়েছে। শ্রীমঙ্গল ও বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়া বাকি হাসপাতালগুলোয় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা এখন বন্ধ।

সরেজমিনে কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিটি হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৪০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নেয়। চিকিৎসক-সংকটে কুলাউড়া, রাজনগর, জুড়ী ও কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি ও শিশু বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। বেশির ভাগ রোগীকেই ছুটতে হয় জেলা শহরের হাসপাতালে। বিশেষ করে বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়া থেকে রোগীদের ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে যেতে হয়। এ ছাড়া অধিকাংশ হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, ওটি (অপারেশন থিয়েটার), ডেন্টাল চেয়ার, অ্যানেসথেসিয়া মেশিন ও অ্যাম্বুলেন্স অচল পড়ে আছে। কোথাও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সচল থাকলেও টেকনোলজিস্টের অভাবে সেবা বন্ধ।

হালনাগাদ তথ্যমতে, জেলায় চিকিৎসা কর্মকর্তা ১৪ জনের জায়গায় শূন্যপদ রয়েছে ৯টি। মেডিকেল অফিসার/সহকারী সার্জন ৭ জনের জায়গায় শূন্য পদ ৬টি।

আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পাঁচটি পদের চারটিই শূন্য। জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদে ৩৯ জনের জায়গায় শূন্য ১৮টি। স্বাস্থ্য পরিদর্শক থাকার কথা ২০ জন, আছেন ছয়জন। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ৪১টি পদের ১৮টি শূন্য। সিনিয়র স্টাফ নার্স থাকার কথা ১৬২ জন। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ৫৩টি।

এ ছাড়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার ২৬ জনের জায়গায় শূন্য রয়েছে ১৮টি পদ। সহকারী সার্জন থাকার কথা ৪২ জন, আছেন আটজন। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার থাকার কথা ৬৫ জন, শূন্য রয়েছে ৩৬টি পদ। সব মিলিয়ে জেলায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ৩৯০টি পদ শূন্য।

রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র বলেছে, ১০ চিকিৎসা কর্মকর্তার জায়গায় আছেন মাত্র দুজন। এর মধ্যে একজন আগামী মাসে চলে যাবেন। এ ছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদও শূন্য এখানে। এক্স-রে টেকনিশিয়ানের পদ অনেক দিন ধরেই শূন্য। ফলে এক্স-রে হয় না। ল্যাব টেকনোলজিস্টের দুটি পদই শূন্য। হাসপাতালে কোনো ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের অস্ত্রোপচার।

কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র বলেছে, হাসপাতালে চিকিৎসক আছেন মাত্র একজন। স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে নিতে দুজন চিকিৎসক প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছেন। জুনিয়র কনসালট্যান্ট এবং অ্যানেসথেসিয়া পদসহ বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ শূন্য। বন্ধ রয়েছে অন্তঃসত্ত্বা নারীর অস্ত্রোপচার। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও ইসিজি মেশিনগুলো টেকনিশিয়ান না থাকায় সেবা বন্ধ।

বড়লেখা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও চলছে মাত্র তিন চিকিৎসা কর্মকর্তা দিয়ে। অথচ থাকার কথা ১৪ চিকিৎসক। যে তিনজন রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আবার দুই চিকিৎসক প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছেন। সিনিয়র স্টাফ নার্সের ২৫টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১১ জন। জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও চলছে একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা দিয়ে। একজন চিকিৎসক সপ্তাহে এক দিন আসেন। অথচ প্রয়োজন ১৫ চিকিৎসা কর্মকর্তার। সিনিয়র স্টাফ নার্সের ২৫টি পদের মধ্যে কর্মরত মাত্র সাতজন। বন্ধ রয়েছে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অস্ত্রোপচার।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। এখানে ১০ চিকিৎসা কর্মকর্তার জায়গায় আছেন মাত্র একজন। এই একজন আবার প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘদিন ধরে এখানে অস্ত্রোপচার বন্ধ। প্রায় দুই দশক এক্স-রে টেকনোলজিস্টের পদ শূন্য। হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি চালু থাকলেও অপরটি চালকের অভাবে পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট হয়ে গেছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ অন্যান্য পদে সংকট আরও প্রকট। শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও চলছে মাত্র একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা দিয়ে। মোটের ওপর এখানে চিকিৎসক থাকার কথা ২৩ জন। আছেন ১০ জন। অকেজো পড়ে আছে এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাফি ও ইসিজি মেশিন। মৌলভীবাজার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো শয্যা নেই। তবে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিতে দুজন চিকিৎসা কর্মকর্তা (মেডিকেল অফিসার) রয়েছেন।

বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা বলেন, এসব হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য এলেও জেলা শহরের হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলা হয়।

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ, রাজনগর, জুড়ী, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারা আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনোভাবেই এত কম জনবল দিয়ে হাসপাতাল চালানো সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জনবলসংকট ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বরাবর আমাদের অধিদপ্তরকে বলে আসছি জনবলসংকটের কথা। সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিকিৎসক সংকট মনে হয় সিলেট বিভাগে। আমাদের বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে। একইভাবে নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্টের সংকট রয়েছে। সব বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো আছে। শুনেছি, নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। হয়তো এরপর কিছুটা সংকট কাটবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় টোব্যাকোসহ ২ প্রতিষ্ঠানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, নগদ টাকা ও অস্ত্র-গুলি লুট

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় টোব্যাকোসহ ২ প্রতিষ্ঠানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, নগদ টাকা ও অস্ত্র-গুলি লুট

বগুড়ায় ব্রিটিশ আমেরিকা টোব্যাকোসহ দুটি প্রতিষ্ঠানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের হাত-পা বেঁধে নিরাপত্তাকর্মীদের অস্ত্র-গুলি, নগদ টাকা ও কয়েকটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ পিছু ধাওয়া করে কয়েকটি গুলি ছুড়লেও ডাকাতেরা পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়ে পিকআপ রেখে পালিয়ে যায়।

ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে গতকাল মঙ্গলবার রাতে শহরতলির বারোপুর ফ্লাইওভারের পাশে এমআর ব্রাদার্স সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও একই মালিকের ব্রিটিশ আমেরিকা টোব্যাকো কোম্পানির ডিসট্রিবিউশন কেন্দ্রে।

বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান ডাকাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিষ্ঠানের মালিক মাহমুদুর রহমান শিপন ও ভুক্তভোগীরা জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ১০-১২ জনের মুখোশ পরা ডাকাত দল হলুদ রঙের একটি পিক-আপ ভ্যান নিয়ে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে প্রবেশ করে। এ সময় কর্মচারীরা এগিয়ে গেলে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাঁদের হাত-পা বেঁধে ফেলে।

এরপর ক্যাশ কাউন্টার থেকে ৪৩ হাজার ৩৮২ টাকা ৮টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ডাকাত দল ওই প্রতিষ্ঠানের পেছনে একই মালিকের ব্রিটিশ টোব্যাকো কোম্পানির ডিসট্রিবিউশন কেন্দ্রে প্রবেশ করে।

তারা প্রথমেই প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মী রেজাউল করিমের ওপর চড়াও হয়ে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং তার কাছে থাকা ১০টি গুলিসহ শটগান ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর ভেতরে প্রবেশ করে মালামাল তছনছ করে পিকআপ নিয়ে বনানীর দিকে পালিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, ভোররাত ৪টার দিকে টহল পুলিশ মহাসড়কে পিকআপটিকে সন্দেহ করে থামানোর সংকেত দিলে দ্রুত গতিতে সেটি চলে যায়। পরে বেতার বার্তায় সংবাদ পেয়ে পুলিশ বনানী, শাকপালাসহ বিভিন্নস্থানে চেকপোস্ট বসায়।

অপরদিকে সদর থানা-পুলিশের একটি দল পিকআপটিকে পিছু ধাওয়া করলে ডাকাত দল নাটোর রোডে যাওয়ার চেষ্টা করলে শাকপালা মোড় থেকে ঘুরিয়ে আবারও বারোপুরের দিকে যেতে থাকে। ইতিমধ্যে পুলিশের একাধিক টিম পিকআপটির পিছু ধাওয়া করলে ডাকাত দল পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।

এ সময় পুলিশ ডাকাত দলকে লক্ষ্য করে চারটি রাবার বুলেট ছোড়ে। একপর্যায় ডাকাত দল গোকুল এলাকায় একটি ফিডার রোডে পিকআপটি রেখে অন্ধকারে গ্রামের রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিত্যক্ত পিকআপটি জব্দ করে এবং ট্রাকে পড়ে থাকা চারটি গুলি উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজার রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডাকাত দলের ফেলে যাওয়া পিকআপটির সূত্র ধরে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় শ্রমিক শক্তির নেতাকে গুলি: যুবশক্তির সেই নেত্রী কারাগারে

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫৫
তনিমা তন্বী। ছবি: আজকের পত্রিকা
তনিমা তন্বী। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের নেতা মোতালেব শিকদারকে (৪০) গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার তানিয়া তন্বীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার আসামি তানিয়াকে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১-এর মো. আসাদুর জামানের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার তানিয়া তন্বী এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির খুলনা জেলার যুগ্ম সদস্যসচিব।

এদিকে গ্রেপ্তার তানিয়া দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করেছেন। তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির ওসি তৈয়মুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ’মামলার নথি এলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গ্রেপ্তার হওয়া তানিয়া তন্বী অন্তঃসত্ত্বা কি না, বিষয়টি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।’

এর আগে সোমবার নগরীর সোনাডাঙ্গা আল আকসা মসজিদ সরণির ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউসের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে মোতালেব শিকদারকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রীর করা মামলায় তন্বীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা থেকে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার মোতালেব শিকদারের স্ত্রী ফাহিমা আক্তার বাদী হয়ে ছয়-সাতজন অজ্ঞাতনামা আসামির নামে মামলা করেছেন। এই মামলায় আটক তানিয়া তন্বীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া তানিয়া অন্তঃসত্ত্বা থাকার কথা বলেছেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সব রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে, তিনি অন্তঃসত্ত্বা কি না।

মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিন ওই ফ্ল্যাটে এবং আশপাশে মোতালেব শিকদার, তানিয়া তন্বী, তাঁর স্বামী তানভীর শেখসহ ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একটি শীর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের উপস্থিত থাকার বিষয়ে তথ্য পাচ্ছি।

চাঁদাবাজি, মাদক (ইয়াবা) ভাগ-বাঁটোয়ারার বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। মোতালেব শিকদার, তানিয়া তন্বী এবং তাঁর স্বামী তানভীর শেখ নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। মোতালেব শিকদারের ব্যাপারেও আলাদা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

গুলিবিদ্ধ মোতালেব শিকদার প্রসঙ্গে কেএমপির এই উপপুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আহত মোতালেব শিকদারের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সোমবার আহত হওয়ার পর সে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু এখন সে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ভান করছে। সে পুলিশ দেখলেই বোবা হয়ে যাচ্ছে।

ইশারা ও অঙ্গভঙ্গি দিয়ে কথা বলছে। কোনো কথা জিজ্ঞেস করলে কলম দিয়ে আঁকাবাঁকা কী সব খাতায় লিখে দিচ্ছে, আমরা বুঝতে পারছি না। সে সুস্থ হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে তন্বীর স্বামী তানভীর শেখ পলাতক রয়েছেন। তানভীরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিরোজপুরে সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে তরুণীর মৃত্যু

পিরোজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৩৯
আটক অমিত হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক অমিত হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎পিরোজপুরে সুমনা আক্তার নামের এক তরুণী তাঁর সাবেক স্বামী অমিত হাসানের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার ঝাটকাঠি এলাকায় ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। পরে রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে সুমনা মারা যান। পিরোজপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ‎

‎নিহত সুমনা আক্তার (১৮) পিরোজপুর সদর উপজেলার ঝাটকাঠি এলাকায় ফারুক শিকদারের মেয়ে। অভিযুক্ত অমিত হাসান (২৫) একই উপজেলার মধ্য রাস্তা এলাকার বাসিন্দা।‎

‎পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাবেক স্বামী অমিত হাসান সুমনা আক্তারকে ঝাটকাঠিতে বাবার বাড়িতে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করেন। পরে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন তাঁকে উদ্ধার করে ওই রাত ১০টার দিকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমনা মারা যান। বর্তমানে তাঁর মরদেহ পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা রয়েছে।‎

‎পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) নিজাম উদ্দিন বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।‎

পিরোজপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম বলেন, নিহতের পিতা বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে ৩০০ ফুটে নেতা-কর্মীদের ভিড়

নুরুল আমিন হাসান, ৩০০ ফুট থেকে
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৩৭
৩০০ ফুট সড়কের তারেক রহমানের জন্য তৈরি করা মঞ্চের সামনে আজ বুধবার দুপুর থেকে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
৩০০ ফুট সড়কের তারেক রহমানের জন্য তৈরি করা মঞ্চের সামনে আজ বুধবার দুপুর থেকে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ৩০০ ফুট সড়কে বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়ো হওয়া শুরু করেছেন। এতে ৩০০ ফুট সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

৩০০ ফুট সড়কে তারেক রহমানের জন্য তৈরি করা মঞ্চের সামনে আজ বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এমন দৃশ্য দেখা যায়।

এদিকে তারেক রহমানের নিরাপত্তার জন্য ৩০০ ফুট সড়কসহ আশপাশ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ডগ স্কোয়াড টিম দিয়ে মঞ্চ এবং এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা তল্লাশি করা হয়েছে।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের দলে দলে বিভিন্ন মিছিল ও স্লোগান নিয়ে আসতে দেখা যায়।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ মঞ্চ থেকে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বারবার অনুরোধ করে বলতে দেখা যায়, ‘আপনারা মঞ্চের বাঁশ-খুঁটিতে নাড়াচাড়া করবেন না। এতে মঞ্চটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আপনারা সবাই মঞ্চের সামনে থেকে সরে যান। এখানে নিরাপত্তা তল্লাশি করা হবে। নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য ডগ স্কোয়াডের টিম রয়েছে। আমাদের নেতার নিরাপত্তার জন্য আপনাদের সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আপনারা সবাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন।’

উল্লেখ্য, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ১৭ বছর পর লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফেরার কথা রয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। সে জন্যই রাজধানীর ৩০০ ফুট সড়কে করা হয়েছে একটি বিশাল মঞ্চ। জানা গেছে, দেশে ফিরেই তিনি এই মঞ্চ থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত