Ajker Patrika

কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে গেলেন প্রাথমিকের ৪ শিক্ষক

কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে গেলেন প্রাথমিকের ৪ শিক্ষক

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারজন সহকারী শিক্ষক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে গেছেন। দুই মাস থেকে ১১ মাস ধরে তাঁরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে বিদেশে থাকলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বিদেশে যাওয়া চার শিক্ষক হলেন উপজেলার পতনঊষা ইউনিয়নের মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ইসরাত জাহান, মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাবিবুর রহমান, বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মো. মোরশেদুল ইসলাম ও সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মুর্শেদা খাতুন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা।

চার শিক্ষকের মধ্যে তিনজন স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে গেছেন বলে তাঁদের পরিবার সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে অপরজনের বিষয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইসরাত জাহান গত সেপ্টেম্বর মাসে চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়ে ৩ অক্টোবর থেকে আর স্কুলে ফেরেননি। পরে জানা যায় তিনি যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন।

মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাবিবুর রহমান গত ২২ জানুয়ারি স্কুলে যোগদান করে মাত্র এক দিন ক্লাস করান। এরপর ২৩ জানুয়ারি থেকে আর স্কুলে যাননি।

বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মোরশেদুল ইসলাম ১০ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। পরে জানা যায়, তিনি যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন।

চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন ১২ অক্টোবরের ৫ দিন আগে চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়েছেন দুই মাস। এরপর আর বিদ্যালয়ে যোগদান করেননি। তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন জানতে পারলেও কোন দেশে আছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

শিক্ষক হাবিবুর রহমান ও ইসরাত জাহানের পরিবারের সদস্য শফিকুর রহমান বলেন, স্টুডেন্ট ভিসায় তাঁরা দুজন যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। আবার দেশে ফিরে শিক্ষকতায় যোগদান করবেন কিনা তিনি জানেন না।

মোরশেদুল ইসলাম স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আগে আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে মুর্শেদা খাতুনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস খান, মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন মিয়া, বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজিয়া বেগম ও চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, ‘তাঁরা কেউ আমাদের কিছু বলে যাননি। কেউ ছুটি কাটিয়ে আর আসেননি, আবার কেউ কিছু না বলেই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।

ওই প্রধান শিক্ষকেরা বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে লোকমুখে শুনেছি, তাঁরা বিদেশে চলে গেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চিঠি দিয়েছি। তাঁদের পরিবর্তে নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষক সংকট থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যাঁরা ছুটি কাটিয়ে বিদ্যালয়ে ফেরেননি বা না জানিয়ে কোথাও চলে গেছেন, তাঁদের আমরা নোটিশ পাঠিয়েছি। তাঁদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাঁরা এভাবে না বলে চলে গেছেন তাঁরা ঠিক করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নওগাঁয় বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

 নওগাঁ প্রতিনিধি
পোরশা থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পোরশা থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁর পোরশায় মজিবর রহমান (৫৬) নামে এক বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার মশিদপুর ইউনিয়নের গোরখাই গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

মজিবর রহমান গোরখাই গ্রামের মৃত ধলা মণ্ডলের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মজিবর রহমান গতকাল রোববার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। সন্ধ্যায় বাড়ি না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে আজ সকালে বাড়ির পাশে ঘোলাকুড়ি এলাকার একটি গাছের ডালে তাঁর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, গৃহকর্মী পলাতক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

‎‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বাসায় মা ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার সকালে পুলিশ খবর পেয়ে শাহজাহান রোডের ঘটনাস্থলে যায়।‎

‎পুলিশ জানায়, আজ সকালে দুই নারীর মরদেহের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বাসায় থাকতেন তাঁরা। গত তিন দিন আগে আয়েশা নামের এক গৃহকর্মী ওই বাসায় কাজে আসেন। ঘটনার পর সেই গৃহকর্মী পলাতক রয়েছে।

নিহত দুই নারী হলেন— লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)। লায়লার স্বামীর নাম এ জেড আজিজুল ইসলাম। মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের ৩২/২/এ নং বাসার ৭তম তলায় থাকেন।

পুলিশের প্রাথমিকভাবে ধারণা, এই হত্যার পেছনে গৃহকর্মী আয়েশার সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। তার খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চলছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মরদেহ দু’টির সুরতহাল করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের পর ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের পরিচয় পাওয়া পাওয়া যাবে বলেও জানায় পুলিশ।‎

‎তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। জড়িতদের দ্রুতই চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেগমগঞ্জে গণপিটুনিতে যুবক নিহত

 নোয়াখালী প্রতিনিধি
গণপিটুনিতে নিহতের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গণপিটুনিতে নিহতের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে উত্তেজিত জনতার গণপিটুনিতে ফখরুল ইসলাম মঞ্জু ওরফে বলি (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ সোমবার সকালে হাজীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মান্দার বাড়ির দরজায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে নিহতের পরিবার বলছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে বলিকে হত্যা করেছে।

নিহত বলি চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খালাসী বাড়ির বদিউজ্জামানের ছেলে। পুলিশ জানায়, নিহত যুবকের বিরুদ্ধে থানায় পাঁচ-ছয়টি মামলা রয়েছে। তিনি প্রশাসনের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী।

চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল মোতালেব জানান, আজ সকালে তাঁর ছেলে মিজানুর রহমান ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে চৌমুহনী বাজারের উদ্দেশে বের হয়। পথে উপজেলার মনতাজ স্যারের বাড়ির সামনে পৌঁছালে বলি ও তাঁর লোকজন মিজানকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নামিয়ে মারধর করে টাকাগুলো ছিনিয়ে নেন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে বলিকে আটক করে গণপিটুনি দিলে তিনি মারা যান। তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং নিহত বলির আড্ডাখানায় হামলা চালায়।

এদিকে নিহতের বড় বোন শাহনাজ আক্তার বলেন, আজ সোমবার সকাল ৬টার দিকে বলি তাঁর (শাহনাজ) মেয়েকে দেখতে তাঁদের বাড়িতে যান। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আবার নিজের বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মান্দার বাড়ির দরজায় পৌঁছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা ১৫-২০ জন কিশোর গ্যাং সদস্য তাঁকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নামিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। তিনি দাবি করেন, পূর্বশত্রুতার জেরে বলিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।  

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ বারী বলেন, অস্ত্র, বিস্ফোরকসহ নিহত বলির বিরুদ্ধে পাঁচ-ছয়টি মামলা রয়েছে। এলাকায় তাঁর বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে লোকজন তাঁকে গণপিটুনি দেয়। লাশ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাকরি দিতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
কুশলী খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন উচ্চবিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুশলী খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন উচ্চবিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক যুবকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শংকর সাহা নামে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যুবকের দাবি, চাকরিটি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে প্রধান শিক্ষক স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দিয়ে তাঁকে হেনস্তা করার ভয় দেখিয়েছেন।

অভিযুক্ত শংকর সাহা গোপালগঞ্জে জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

ভুক্তভোগী যুবক হলেন উপজেলার দক্ষিণ কুশলী গ্রামের ইয়ার আলী শেখের ছেলে আরিফুল শেখ (২৫)। গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে কুশলী খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরসহ কয়েকটি পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তখন চাকরির জন্য আরিফুল স্থানীয় কয়েকজন মুরব্বিকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক শংকর সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। এক দিন পর নগদ দুই লাখ টাকা দুজন সাক্ষীর মাধ্যমে গ্রহণ করেন প্রধান শিক্ষক। তারপর নিয়োগটি স্থগিত হয়ে যায়। এরপর আরিফুল টাকা ফেরত চাইলে তাঁকে নিয়োগের আশ্বাস দিতে থাকেন প্রধান শিক্ষক। কয়েক মাস পর প্রধান শিক্ষক শংকর সাহাকে টাকার জন্য চাপ দিলে তৎকালীন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ নাদির হোসেন লিপুকে দিয়ে হেনস্তা করানোর ভয় দেখান। আর এখন টাকা ফেরত চাইলে বর্তমান সভাপতি টুঙ্গিপাড়া সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দিয়ে হেনস্তা করানোর ভয় দেখান।

ভুক্তভোগী আরিফুল শেখ বলেন, ‘২০২৩ সালে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের জন্য প্রধান শিক্ষক শংকর সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তখন চাকরির জন্য পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ চান। পরে স্থানীয় দুজন সাক্ষীর মাধ্যমে দুই লাখ টাকা নেন শংকর সাহা। কিন্তু নিয়োগ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তৎকালীন সভাপতি শেখ নাদির হোসেন লিপুর ভয় দেখাত। আর এখন বর্তমান সভাপতি এসি ল্যান্ড স্যারের ভয় দেখায়। টাকা ফেরতসহ দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক শংকর কর সাহার অপসারণ দাবি করি।’

দুই লাখ টাকা দেওয়ার সাক্ষী স্থানীয় মুরব্বি ফেরদৌস আলম বলেন, ‘আরিফুলের চাকরির জন্য প্রধান শিক্ষক শংকর সাহার সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকার কথা হয়। তখন আরিফুলের পরিবার আমি ও আরেক মুরব্বি হাফিজ শিকদারের উপস্থিতিতে শংকর সাহাকে নগদ দুই লাখ টাকা দেয়। নিয়োগ স্থগিতের পর টাকা ফেরত চাইলে প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতে থাকেন আরিফুলকে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলেও প্রধান শিক্ষক তাতে সাড়া দেননি। আর তিনি টাকা নেওয়ার কথাও অস্বীকার করছেন। এখন টাকা ফেরত চাইলে প্রশাসন দিয়ে হেনস্তা করাসহ নানা রকম হুমকি দেয়।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুশলী খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর সাহা চাকরির জন্য ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আরিফুল আমার বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল, সেইভাবে ওকে চিনি। কিন্তু চাকরির কথা বলে ওর কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি সময় না দেওয়ায় তিনবার চেষ্টা করেও নিয়োগটি সম্পন্ন করতে পারিনি। আর কাউকে কোনো ভয় দেখাইনি।’

টুঙ্গিপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আল-আমিন হালদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। যদি প্রধান শিক্ষক কাউকে প্রশাসনিক ভয় দেখিয়ে থাকে, তাহলে সেটাও অপরাধ। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত