Ajker Patrika

ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন মণিপুরি তাঁতশিল্পীরা

বিকুল চক্রবর্তী, মৌলভীবাজার
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১১: ১৬
ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন মণিপুরি তাঁতশিল্পীরা

ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌলভীবাজারের মণিপুরি তাঁতশিল্পীরা। জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার মণিপুরি এলাকায় ঘরে ঘরে নারীরা হাতে বুনছেন শাড়ি। 

জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা মণিপুরি তাঁতশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ। প্রতিদিন এখানে বেড়াতে আসা শত শত পর্যটকের কাছে আকর্ষণীয় মণিপুরি তাঁতের শাড়ি, থ্রিপিস, চাঁদর, পাঞ্জাবিসহ রকমারি পোশাক। 

শুধু তাই নয়, অনলাইনে ব্যবসায়ীরাও এখান থেকেই তা সংগ্রহ করেন। বিশেষ করে ঈদ ও পূজা-পার্বণে এসব পোশাকের চাহিদা বেড়ে যায়। কিছুদিন পরেই আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে মণিপুরি তাঁতপল্লির বুননশিল্পীদের। 

মণিপুরি একেকটা ঘর মানেই একেকটি তাঁতশিল্পের কারখানা। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন জেলার দুই উপজেলার কয়েক হাজার মণিপুরি সম্প্রদায়ের লোক। বিশেষ করে মণিপুরি নারীরা কাপড় বোনেন এবং পুরুষেরা বিপণন ও কাঁচামালের জোগাড় করেন। 

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের রামনগর মণিপুরিপাড়া, টিকরিয়া মণিপুরিপাড়া, কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর, আদমপুর, তেতইগাঁও, ঘোড়ামারা, তিলকপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে মণিপুরি সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস। এসব এলাকায় একসময় শতকরা ৯০ শতাংশ পরিবারেই মণিপুরি তাঁত ছিল। বর্তমানে বিকল্প জীবিকা ও পুঁজির অভাবে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পরিবার এই পেশা থেকে সরে এসেছে। 

শ্রীমঙ্গলের রামনগর মণিপুরিপাড়ার তাঁতশিল্পী সবিতা সিনহা বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর আমাদের ব্যবসা হয়নি। শাড়ি তৈরি করলেও ক্রেতা আসেননি। ঘরে দুই-তিনটি তৈরি শাড়ি রেখে অনেকের নতুন করে আর শাড়ি বোনা হয়নি। এক কথায় বলা চলে, আমাদের এ পেশায় একটা ধস নামে। 

ঈদকে সামনে রেখে পোশাক তৈরি করছেন মণিপুরি তাঁত শিল্পীরা। মণিপুরি কাপড় ব্যবসায়ী বিপুল সিংহ বলেন, করোনা মহামারির সময় সরকার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে প্রণোদনা দিয়েছে, কিন্তু আমাদের ভাগ্যে এসব জোটেনি। এদিকে বর্তমানে কাপড় বুনতে গিয়ে সুতা, রংসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

মণিপুরি কমিউনিটির নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিংহ বলেন, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন মণিপুরি তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত কমিউনিটির উদ্যোক্তারা। বিশেষ করে বিগত দুটি বছর ধরে করোনার কারণে অনেকটা হুমকির মুখে থেকেও যে এখনো এই শিল্প টিকে আছে তা তাঁদেরই অবদান। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, ললিতকলা একাডেমির ট্রেনিং সেন্টারগুলো বন্ধ রয়েছে। এগুলো আবার চালু করা প্রয়োজন। তা ছাড়া মাধপুরে নির্মিত আধুনিক ট্রেনিং সেন্টারে এখনো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়নি। বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক ডিজাইনের সন্নিবেশে কাপড় তৈরি করলে এর চাহিদা বাড়বে। বিশেষ করে মণিপুরি জামদানি শাড়ি তৈরিতে আরও উদ্যোগী হওয়া যাবে। 

উদ্যোক্তা ভুবন সিংহ বলেন, এখন সরকারিভাবে বিনা সুদে প্রণোদনা কিংবা আর্থিক সহযোগিতা জরুরি। তা না হলে নিজস্ব উদ্যোগে তাঁতশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। 

মণিপুরি কমিউনিটির নারী নেত্রী জয়া শর্মা বলেন, একটু সহযোগিতা পেলেই এই শিল্প দিয়েই এখানকার মানুষগুলো বেঁচে থাকতে পারবে। তেমনি সরকারও পাবে রাজস্ব। 

জয়া শর্মা আরও বলেন, একটি সাধারণ শাড়ির কাঁচামাল সংগ্রহে খরচ পড়ে ১ হাজার টাকা। আর উন্নত সুতা দিয়ে তৈরি করলে সেই খরচ পড়বে ২ হাজার টাকারও অধিক। আর মণিপুরি জামদানি তৈরি করলে তার খরচ পড়ে প্রায় ৪ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলে মণিপুরি তাঁতশিল্পের ব্যাপক প্রসার রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এর চাহিদা রয়েছে। এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে কমলগঞ্জে প্রশিক্ষণ সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনিস আলমগীর ও শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
(বাঁ থেকে) সাংবাদিক আনিস আলমগীর, মেহের আফরোজ শাওন ও মারিয়া কিসপট্টা। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) সাংবাদিক আনিস আলমগীর, মেহের আফরোজ শাওন ও মারিয়া কিসপট্টা। ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক আনিস আলমগীর এবং অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ এই অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন মারিয়া কিসপট্টা ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ।

থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্যেও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে দেশে অবস্থান করে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অভিযুক্তরা এসব কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছেন।

এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্তদের এসব বক্তব্য ও অনলাইন কার্যক্রমের কারণে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উসকানি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সহিংসতা এবং অবকাঠামো ধ্বংসের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, এটি সাইবার-সম্পর্কিত একটি ইস্যু। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।’

জানা গেছে, এই অভিযোগ দায়েরের পরপরই সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়। রাত ৮টার দিকে ধানমন্ডির একটি জিম থেকে তাঁকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন আনিস আলমগীর।

তবে ওই জিমের ম্যানেজার আরেফিন গণমাধ্যমকে বলেন, সন্ধ্যা নাগাদ আনিস আলমগীর জিমে আসেন এবং রাত ৮টার দিকে ব্যায়াম শেষে চলে যান। তিনি জিমের ভেতরে কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখেননি।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবির প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, রাতে তীব্র শীত—দিনে ঝলমলে রোদ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
পঞ্চগড় সদর উপজেলা তালমা এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পঞ্চগড় সদর উপজেলা তালমা এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ে টানা পাঁচ দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাতের কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়লেও দিনে ঝলমলে রোদে স্বস্তি পাচ্ছেন মানুষ। তবে ভোর ও রাতে শীতের দাপটে জনজীবন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯ থেকে ১০ কিলোমিটার, যা শীতের অনুভূতিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশাহীন ভোরে সূর্যের ঝলমলে আলোয় প্রকৃতি স্নিগ্ধ হয়ে উঠেছে। রোদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্যও লক্ষ্য করা গেছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের তথ্যে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রায় ওঠানামা দেখা গেছে। আজ সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে রোববার ও শনিবার ৯ দশমিক ৩, শুক্রবার ৯ দশমিক ৫, বৃহস্পতিবার ৮ দশমিক ৯, বুধবার ও মঙ্গলবার ১০ দশমিক ৭ এবং আগের সোমবার ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। গতকাল রোববার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংজ্ঞা অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মাঝারি এবং ৬ ডিগ্রির নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। সে হিসেবে বর্তমানে তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, কয়েক দিনে জেলার তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হচ্ছে। পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন স্থায়ী হতে পারে। রাত ও ভোরে তাপমাত্রা আরও কমে শীতের দাপট বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুদানে শান্তিরক্ষী মিশনে হামলায় আহত লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান, উদ্বেগে পরিবার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আহত লে. কর্নেল খালেকুজ্জামানের বাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত লে. কর্নেল খালেকুজ্জামানের বাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সন্ত্রাসী হামলায় আহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল খালেকুজ্জামানের পরিবার দিন কাটাচ্ছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায়। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের ঈদগাহ পাড়ায়।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তিনি সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দেন। এর আগে তিনি বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার (সিও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) ছবি প্রকাশের পর বিষয়টি জানতে পারে পরিবার। এর পর থেকেই স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে।

আহত সেনা কর্মকর্তার বড় বোন শামীমা আক্তার মোবাইল ফোনে জানান, সন্ত্রাসী হামলায় স্প্লিন্টারের আঘাতে খালেকুজ্জামানের বাঁ হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তাঁর অবস্থা গুরুতর নয়। ঘটনার পরপরই হেলিকপ্টারে করে তাঁকে আবি শহরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। পরিবারের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাঁর বাবা খন্দকার আক্তারুজ্জামান (মৃত)। পরিবারের সদস্যরা বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বসবাস করেন।

রোববার বিকেল ৪টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের ঈদগাহ পাড়ায় খালেকুজ্জামানের বাড়িতে গিয়ে মূল ফটকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। এ সময় পাশের বাড়িতে বসবাসরত তাঁর চাচা ও খালাতো বোনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, খালেকুজ্জামানের মা বর্তমানে শহরের গোশালা রোড এলাকায় থাকেন। তবে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। মোবাইল ফোনে শুধু জানান, ছেলের আহত হওয়ার খবর তিনি পেয়েছেন।

খালেকুজ্জামানের খালাতো বোন গুলশান আরা হাসান বলেন, ‘খালেকুজ্জামান আমাদের সামনে মানুষ হয়েছে। খুব ভালো ছেলে। শুনেছি শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। দোয়া করি, সে যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।’

চাচা খন্দকার আসাদুজ্জামান খোকন অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, ‘খালেকুজ্জামান আমার মেজো ভাইয়ের ছেলে। শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে। সেখানে তার কয়েকজন সহকর্মী নিহত হয়েছেন বলে শুনেছি। সে নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, খালেকুজ্জামান বিবাহিত এবং তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি

আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সিরাজগঞ্জ
যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে অন্যের দেওয়া এই ডেরাঘরে আশ্রয় নিয়েছেন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে অন্যের দেওয়া এই ডেরাঘরে আশ্রয় নিয়েছেন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাদা দাড়িতে অর্ধেক মেহেদি, কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ। ডান পায়ে ফোঁড়ার// কারণে বাঁধা ব্যান্ডেজ। কাঠের টুলে বসে থাকা মানুষটির দিকে তাকালে বোঝার উপায় নেই—মাত্র এক বছর আগেও তিনি ছিলেন সাড়ে চার বিঘা আবাদি জমির মালিক।

৬৬ বছর বয়সী এই বৃদ্ধের নাম আব্দুল রাজ্জাক। স্ত্রী মর্জিনা বেগমের বয়স ৫৫। চার ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে একসময় ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার। জমিতে বছরে বিভিন্ন সময়ে গম, ভুট্টা, খেসারি, কালাই ও বাদামের চাষ হতো। পরিশ্রম করেই চলত জীবন। তবে হঠাৎ করেই সবকিছু বদলে দেয় যমুনা নদীর ভাঙন।

ভিটেবাড়ি ও ফসলি জমি একে একে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় এখন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি কার্যত আশ্রয়হীন। একসময় যাঁর নিজের জমি ছিল, আজ তিনি অন্যের দেওয়া সামান্য জমিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছেন। বন, বস্তার চাটাই আর পলিথিনে মোড়ানো ছোট একটি ঘরই তাঁদের বর্তমান ঠিকানা। আব্দুল রাজ্জাক সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াখোলা ইউনিয়নের দোরতা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই এলাকার মৃত রহিজ তালুকদারের ছেলে।

শনিবার দুপুর গড়িয়ে বিকেলে সিরাজগঞ্জ ক্রসবার এলাকায় প্লাস্টিকের টুলে বসে কথা বলছিলেন আব্দুল রাজ্জাক। তিনি জানান, তাঁর দাদার প্রায় ২৪ বিঘা জমি ছিল। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি পান সাড়ে চার বিঘা। গত বছরেও সেই জমিতে গম, ভুট্টা, কালাইসহ নানা ফসল আবাদ করেছিলেন। ‘বুড়া-বুড়ির ভালোই চলছিল,’ বলেন তিনি।

সন্তানদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কিছুক্ষণ নীরব থাকেন আব্দুল রাজ্জাক। এরপর ধীর কণ্ঠে বলেন, ‘ওদের নিজেদেরই খুব কষ্ট। আমাদের দেখবে কীভাবে?’

বর্তমানে ফুফাতো ভাইয়ের জমির ওপর কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। শীত এলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। আয়ের একমাত্র সম্বল পাঁচটি গরু। তবে বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে এখন বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারেন না তিনি।

আব্দুল রাজ্জাক বলেন, ‘তোমার চাচি যমুনার চরে গিয়ে গরুর জন্য ঘাস কেটে আনে। আর অন্যদের সামান্য সহযোগিতা আর মেয়েরা মাঝে মাঝে যা দেয়, তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চলে।’

কথার একপর্যায়ে তাঁর কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে। শেষবারের মতো বলেন, ‘আমাকে যদি কেউ একটা ঘর আর মাসে মাসে একটু খাবার বা কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে সারা জীবন দোয়া করতাম।’

যমুনার ভাঙনে হারিয়ে যাওয়া অসংখ্য জীবনের ভিড়ে আব্দুল রাজ্জাক ও মর্জিনা বেগমের গল্পটি শুধু একটি উদাহরণ—নদীভাঙনে সর্বস্ব হারানো মানুষের নীরব দীর্ঘশ্বাসের গল্প।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত