Ajker Patrika

পিছিয়ে থাকা পঞ্চগড় এখন উন্নয়নের মডেল

তানিম আহমেদ, পঞ্চগড় থেকে ফিরে
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৩, ১১: ০৬
পিছিয়ে থাকা পঞ্চগড় এখন উন্নয়নের মডেল

বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। পিছিয়ে পড়া এই জনপদেও পড়েছে সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়নের ছোঁয়া। শিল্প, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে কৃষিনির্ভর জনপদে এসেছে অভূতপূর্ব পরিবর্তন। পরিবর্তনের সুফল হিসেবে মানুষের জীবনমান হয়েছে উন্নত। পিছিয়ে পড়া এই জনপদটিই এখন উন্নয়নের রোল মডেল। সম্প্রতি পঞ্চগড় ঘুরে এই চিত্র জানা গেছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, পঞ্চগড় জেলায় ১২ লাখ মানুষের বাস। মাত্র দেড় দশকের ব্যবধানে শিক্ষার হার ৪৮ শতাংশ থেকে ৭৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ধান, আখ ও পাট উৎপাদনের পাশাপাশি বালু ও পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করত এখানকার বেশির ভাগ মানুষ। শিল্পকারখানা বলতে ছিল পঞ্চগড় চিনিকল। বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, কর্মসংস্থানে এসেছে আমূল পরিবর্তন।

বাংলাবান্ধার সুফল উত্তরবঙ্গে
 ১৯৯৭ সালে চালু হওয়া বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের মাধ্যমে নেপালের সঙ্গেই আমদানি-রপ্তানি হতো। কিন্তু ২০১১ সালে আমদানি-রপ্তানি নিয়ে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। একই সঙ্গে ২০১৭ সালে ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য হয় এই বন্দর ব্যবহার করে। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। ২০১৬ সালে এই বন্দরের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন চালু হওয়া কয়েকটি জেলার মানুষ চিকিৎসার জন্য সহজে ভারত যেতে পারছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মহসিন আলী বলেন, আমাদের অনেক দুঃখ ছিল, সেই সময়। আমাদের কাছেই ভারত, অথচ এখান দিয়ে আমরা যেতে পারব না। এখন আমরা যেতে পারছি।’ 

দিনাজপুরের বাসিন্দা এরশাদ হোসেন বলেন, ‘আমি চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলাম। সরকার বন্দরকে আধুনিক করায় আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। এতে আমাদের সময় সাশ্রয় হচ্ছে।’ 

পিছিয়ে পড়া এই জনপদেও পড়েছে সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়নের ছোঁয়াবাংলাবান্ধা বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে নেপালে ব্যাটারি, সিসা, পাট, ফলের রস, ওয়েস্ট কটন, কাপড়, কাঠ ও প্লাস্টিকের আসবাবপত্র রপ্তানি করা হয়। এ ছাড়া ভারত থেকে পাথর ও নেপাল থেকে ডাল আমদানি করা হয়। বর্তমানে এই বন্দরের কলেবর ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে আধুনিক বন্দরে রূপান্তরের জন্য মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছে, যার বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। 

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি বাংলাদেশের একমাত্র চতুর দেশীয় স্থলবন্দর। এই বন্দরের সঙ্গে ভারত, ভুটান, নেপাল সংযুক্ত হয়েছে। আমদানি-রপ্তানির কাজ থেকে শুরু করে ভারত, ভুটান, নেপালে যাচ্ছে মানুষ। বন্দরকেন্দ্রিক প্রায় ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। 

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত ১৪ বছরে এই বন্দরে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে প্রায় প্রতি দিন ৩৫০ থেকে ৪০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। 

চা চাষে কৃষকের ভাগ্য বদল 
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ৯২৫ একর জমিতে চা চাষ হতো। আর এখন চাষ হয় ১৭ হাজার ৭৯ একরে। এ জেলায় ৯টি বড় ও ৮ হাজার ৩৫৫টি ক্ষুদ্র চা-বাগান রয়েছে। বর্তমানে ১৫ হাজারের বেশি শ্রমিক এই শিল্পে যুক্ত আছেন। লাভ বেশি হওয়ায় এখন অনেকেই চা চাষে ঝুঁকেছেন। 

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ের সমতলের চা-শিল্পের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই এ জেলায় দেশের তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্র চালুর ঘোষণা দিয়েছেন, যা খুব শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে। 

সহজ যোগাযোগে বদলে গেছে গ্রামীণ চিত্র
ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। তিনি জানান, জেলার বেশির ভাগ গ্রামীণ সড়ক কাঁচা থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হতো সাধারণ মানুষকে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে মানুষের কষ্ট হতো দ্বিগুণ। কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হতো বলে জানান রবিউল। এতে গ্রামীণ কৃষক উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতেও ভোগান্তিতে পড়তে হতো। কিন্তু গত এক দশকে বেশির ভাগ গ্রামীণ সড়ক পাকা করায় কৃষকের ভাগ্য বদল হয়েছে বলেও জানান তিনি। 
 
রবিউল বলেন, একসময় বোদা থেকে পঞ্চগড় শহরে কৃষিপণ্য আনতে এক দিন সময় লাগত। এতে কৃষকের সময় ও অর্থের অপচয় হতো। কিন্তু এখন সরাসরি ঢাকায় পণ্য পাঠানো যায়, যা ১০-১৫ ঘণ্টায় পৌঁছায়। এতে কৃষক উপকৃত হচ্ছে। 

জেলা প্রশাসকের তথ্যমতে, ২০০৮ সাল পর্যন্ত এলজিইডির আওতায় পঞ্চগড়ের ৩০৫ সড়ক নির্মিত হয়। অন্যদিকে ২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ৭৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৬৯০টি সড়ক পাকা করা হয়। একই সঙ্গে উন্নত করা হয় ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কও। 

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি বাংলাদেশের একমাত্র চতুরদেশীয় স্থলবন্দররেলযোগাযোগে পঞ্চগড় দেশের পিছিয়ে পড়া একটি জনপদ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে সেই চিত্র আমূল পরিবর্তন হয়। বর্তমানে পঞ্চগড় থেকে ছয় জোড়া ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে পাঁচটিই আন্তনগর। ২০১৯ সালে পঞ্চগড় জেলায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের নামে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত দৃষ্টিনন্দন একটি রেলওয়ে স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া হয়ে আন্তরাষ্ট্রীয় রেলযোগাযোগের জন্য আধুনিক রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। 

ক্যাশলেস নাগরিক সুবিধা
চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদে ক্যাশ লেস সেবার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়, যা বর্তমানে জেলার পাঁচটি উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়নে চালু হয়। এতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নগদ অর্থ ছাড়া মুঠোফোনের মাধ্যমে নগদ ও বিকাশসহ অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্স, চারিত্রিক সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ভূমিহীন সনদ, উত্তরাধিকার সনদ, অবিবাহিত সনদসহ ১৯টি নাগরিক সেবা নেওয়া যায়। 

তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদে গত শনিবার কথা হয় জাহানারা বেগমের সঙ্গে। তিনি গত দুই বছর ধরেই মাতৃ ভাতা পাচ্ছেন। প্রথম ছয় মাস সরাসরি টাকা তাঁর নামে বরাদ্দ হতো। কাগজপত্র সই করে সেই টাকা সংগ্রহ করতেন তিনি। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে মাতৃ ভাতার টাকা জাহানারা বেগমের মোবাইল ফোনেই চলে আসে। তিনি তিন-চার মাস পরপর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে টাকা উত্তোলন করেন। 

গত ১৯ বছর ধরেই প্রতিবন্ধী জহুরুল ইসলাম। আগে ব্যাংক গিয়ে সিরিয়াল ধরে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে টাকা সংগ্রহ করতে হতো তাঁর। কিন্তু গত তিন বছর ধরেই জহুরুলের মোবাইল ফোনে চলে আসে ভাতার টাকা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি। তাঁর জন্য সব সময় দোয়া করি। আল্লাহ পাক যেন তাঁকে ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন। 

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম গত শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের ক্যাশলেস ইউপি সেবা সিস্টেম একটি অন্যতম উপাদান। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সময়, খরচ কমিয়ে মানুষ এখন ঘরে বসেই এই সেবা পাচ্ছে। দেশে কোনো জেলা হিসেবে পঞ্চগড়েই এটা প্রথম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

ভেসে আসা কোরালে ‘কপাল খুলল’ আনোয়ারের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর) 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় চার-পাঁচ দিন ধরে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তাতীরবর্তী এলাকার মানুষেরা। তবে শীত নিবারণের জন্য সরকারি সহায়তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। শীতার্ত মানুষের অভিযোগ, প্রয়োজনের সময় তারা কম্বল পাচ্ছে না। তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি, কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

গত বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কোলকোন্দ ইউনিয়নের বেদপাড়া এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা যায় সন্ধ্যা রানী (৫০) নামের এক নারীকে। শীতের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ঠান্ডায় হাত-পা কোঁকড়া হয়ে যাচ্ছে। আগুন পোহাইলেও ঠিকমতো কাজ হয় না। আগের বছর শীত আসার আগেই কম্বল পাইছিলাম। এবার শীত আইসা চলি যাচ্ছে, কেউ খোঁজও নিল না।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ‘এবার শীতে কি সরকার থাকি কোনো কম্বলের ব্যবস্থাই নাই, নাকি সবগুলা লোকজনে ভাগ করে খাইছে?’

এই অভিযোগ শুধু সন্ধ্যা রানীর নয়; কয়েক দিনে সরেজমিনে উপজেলার কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী ও আলমবিদিতর ইউনিয়নের তিস্তাতীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনমজুর, বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশুরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ শীত নিবারণে সরকারি সহায়তার কোনো দৃশ্যমান উপস্থিতি চোখে পড়েনি।

আলমবিদিতর ইউনিয়নের ডাঙ্গী পাইকান এলাকায় আলুখেতে কাজ করার সময় কথা হয় দিনমজুর নুর আমিনের (৫৪) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঠান্ডা বাড়ার কারণে কোমর আর ঘাড়ের ব্যথা এমন হইছে যে ঠিকমতো হাঁটতেও পারি না, ঘাড়ও সোজা করতে পারি না। তবুও কাজ করা লাগে। বসে থাকলে কি আর পেট চলবে?’

ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পর গত বুধবার গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, চলতি শীতে শীতার্ত মানুষের জন্য উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তবে নির্বাচনী কিছু জটিলতার কারণে ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনায় কম্বলগুলো উপজেলা পরিষদের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। পরে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানের বিষয়টি জানতে পেরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি করে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ১০০টি করে কম্বল সরবরাহ করা হয়।

জানতে চাইলে মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাঁদের ইউনিয়নের জন্য ১০০টি কম্বল দেওয়া হয়েছে। শনিবার (আজ) সেগুলো বিতরণ করা হবে।

কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম বলেন, সম্ভবত বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন সচিব পিআইও অফিস থেকে ১০০টি কম্বল এনেছেন। তবে সঠিক তথ্য খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সজীবুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাসিক সমন্বয় সভায় ওপর থেকে নির্দেশনা এসেছে, জরুরি অবস্থা ছাড়া কোনো কম্বল বিতরণ করা যাবে না। নির্বাচনী কিছু জটিলতাও রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, ‘কম্বলের বরাদ্দ ছিল। আমরা সেগুলো বিতরণ করে ফেলেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

ভেসে আসা কোরালে ‘কপাল খুলল’ আনোয়ারের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি

একসময়ের জ্ঞানের বাতিঘর আজ নিকষ কালো অন্ধকার

মেহেদী হাসান, (দিনাজপুর) ফুলবাড়ী
লতা-পাতা ও আগাছায় ভরা শতবর্ষী সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
লতা-পাতা ও আগাছায় ভরা শতবর্ষী সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দূর থেকে তাকালেই মনে হয়, কোনো পরিত্যক্ত ভুতুড়ে বাড়ি। লতা-পাতায় ঢাকা দেয়াল, আগাছায় ভরা চত্বর আর তালাবদ্ধ দরজার ভেতরে মাকড়সার জাল। অথচ একসময় এ জায়গাটিই ছিল পাঠকের ভিড়ে মুখর, জ্ঞানের আলোয় উজ্জ্বল এক প্রজন্মের আশ্রয়। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার সুজাপুর গ্রামে শতবর্ষী ‘সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি’ আজ নীরব অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছে—ইতিহাস, শিক্ষা ও সংস্কৃতির এক জীবন্ত সাক্ষী হয়ে।

জানা গেছে, ১৯১৬ সালে তৎকালীন জমিদার সুরেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর ছেলে ক্ষীতিশ চন্দ্র রায়ের উদ্যোগে ফুলবাড়ী দিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ে সুজাপুর গ্রামে যাত্রা শুরু করে এ পাবলিক লাইব্রেরিটি। সুজাপুর হাইস্কুল প্রতিষ্ঠার পর দরিদ্র ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের বইয়ের সংকট দূর করতে বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় পাঠাগারটি নির্মাণ করা হয়। বাবার স্মৃতি অমর করে রাখতে এর নামকরণ করা হয় ‘সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি’।

একসময় এ লাইব্রেরিতে ছিল বিপুল বই। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা গ্রন্থে ভরপুর ছিল তাকগুলো। পাঠকদের পদচারণে মুখর ছিল পুরো প্রাঙ্গণ। এ লাইব্রেরি থেকেই বহু মানুষ জ্ঞানের আলোয় পথচলা শুরু করেছিলেন। কালের বিবর্তনে যেমন ছোট যমুনা নদী আজ মরা নদীতে পরিণত হয়েছে, তেমনি এ লাইব্রেরিও ধীরে ধীরে হারিয়েছে তার প্রাণ। সবচেয়ে বড় আঘাত আসে ১৯৭১ সালে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী আগুনে পুড়িয়ে দেয় লাইব্রেরির অমূল্য বই ও আসবাবপত্র।

দীর্ঘ নীরবতার পর ২০১১ সালের ১৪ অক্টোবর লাইব্রেরি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুরোনো ভবনের পাশে ১২ শতাংশ জমিতে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০১২ সালে পুরোনো ভবন সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণের পাশাপাশি কেনা হয় ১ হাজার ১২০টি বই। ২০১৫ সালে আরও ২ লাখ টাকা অনুদানে নির্মিত হয় অতিরিক্ত একটি ঘর। ২০১৭ সালে সেখানে চালু হয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এলাকার শিক্ষিত যুবকেরা সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। পাঠকদের পদচারণে আবারও মুখর হয়ে ওঠে লাইব্রেরিটি। গঠিত হয় পরিচালনা কমিটি। মনে হয়েছিল, আবার বুঝি ফিরবে সেই দিন।

কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অর্থাভাব, লাইব্রেরিয়ানের বেতন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের চাপে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। কে নেবে এর দায়িত্ব—এ প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। এর মধ্যেই আঘাত হানে করোনা মহামারি। বন্ধ হয়ে যায় সব কার্যক্রম। ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি রাতের আঁধারে চুরি যায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ছয়টি কম্পিউটার। এভাবেই নতুন আশার শেষ আলোটুকুও যেন নিভে যায়।

এ বিষয়ে ইউএনও আহমেদ হাছান জানান, তিনি লাইব্রেরিটি পরিদর্শন করে পরিচালনা কমিটিকে আপাতত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে লাইব্রেরি খুলে বসার ব্যবস্থা করতে বলেছেন। পরবর্তী সময়ে জনবলসংকটসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

ভেসে আসা কোরালে ‘কপাল খুলল’ আনোয়ারের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ শুরু না হওয়ায় শঙ্কায় কৃষক

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনায় হাওরের ফসল রক্ষায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নির্ধারণ এবং ১৫ ডিসেম্বর নির্মাণ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ কৃষকরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নেত্রকোনায় হাওরের ফসল রক্ষায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নির্ধারণ এবং ১৫ ডিসেম্বর নির্মাণ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ কৃষকরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

হাওরে বছরে একটি ফসলই ফলে, আর তা হলো বোরো ধান। এ ফসলের ওপর নির্ভর করে চলে হাওরপাড়ের বাসিন্দাদের ঘর-গেরস্থালি। আগাম বন্যার হাত থেকে বোরো রক্ষায় প্রতিবছর দেওয়া হয় অস্থায়ী বাঁধ। সেই বাঁধের কাজ শুরু হয় ১৫ ডিসেম্বর। কিন্তু গতকাল বুধবার পর্যন্ত নেত্রকোনায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিই (পিআইসি) গঠন করা হয়নি। ফলে আগাম বন্যায় ফসল ভেসে যাওয়ার শঙ্কায় আছেন জেলার হাওরপাড়ের বাসিন্দারা।

নেত্রকোনায় হাওরের ফসল রক্ষায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নির্ধারণ, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন, ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের নির্মাণ শুরু ও ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত পিআইসি গঠন সম্পন্ন করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ফলে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

পাউবো ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৩৪টি হাওর রয়েছে। এসব হাওরে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। বোরো রক্ষায় গত বছর জেলার ৭ উপজেলায় ১৪৯ কিলোমিটার অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। এ জন্য ১৯১টি পিআইসি গঠন করা হয়। বরাদ্দ ছিল ২২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তবে এবার কত কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে হবে সেই জরিপই শেষ করতে পারেনি পাউবো। ফলে চূড়ান্ত হয়নি কতগুলো পিআইসি গঠন করা হবে। ফলে এর বরাদ্দের পরিমাণও জানাতে পারেনি পাউবো।

মোহনগঞ্জ উপজেলার বরান্তর গ্রামের একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা ঋণ করে বোরোর আবাদ করছেন। বাঁধের কাজ সময়মতো শুরু হয়নি। এ কারণে তাঁরা আতঙ্কে আছেন। আগাম বন্যায় ফসল নষ্ট হলে নিজেদের সংসারের খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাই এ বিষয়ে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ চান তাঁরা।

খালিয়াজুরী উপজেলার লেপসিয়া এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘একটিমাত্র বোরো ফসলের ওপরে আমাদের সারা বছরের খাওয়াদাওয়া, হাটবাজার ও পোলাপানের লেখাপড়ার খরচসহ যাবতীয় খরচ নির্ভর করে। এবার সময়মতো বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়নি, ফলে যথাসময়ে শেষ করতে পারবে না। আগাম বন্যা হলে আমাদের ফসল বাঁচানো যাবে না।’

পাউবো ও জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির কাজে সরাসরি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে যুক্ত করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নসহ তদারকিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও নেত্রকোনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে সদস্যসচিব করে জেলা কমিটি করা হয়। একইভাবে উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওকে সভাপতি ও পাউবোর একজন কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়। মূলত উপজেলা কমিটি প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠন করে জেলা কমিটিতে পাঠায়। পরে জেলা কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য প্রকৃত কৃষক ও স্থানীয় সুবিধাভোগীদের নিয়ে পাঁচ থেকে সাত সদস্যের পিআইসি থাকে।

প্রকল্পের সদস্যসচিব ও নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরিপ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী সপ্তাহে পিআইসি গঠন করার পাশাপাশি কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। জরিপের রিপোর্ট এখনো হাতে না পাওয়ায় এবার কতগুলো পিআইসি গঠন হবে আর বরাদ্দ কত হবে জানানো যাচ্ছে না।

কাজ শুরু করতে দেরি হলেও নির্ধারিত সময়েই শেষ করতে পারব। এ নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী।

এ বিষয়ে প্রকল্পের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান বলেন, চলতি সপ্তাহে পিআইসি কমিটি গঠন সম্পন্ন হবে। আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু করা হবে। স্থানীয় পর্যায়ে কিছু জটিলতা ছিল, পাশাপাশি হাওরের পানি নামতে দেরি হয়েছে। সব জটিলতা সমাধান করে পিআইসি গঠন শুরু হয়েছে। দেরিতে কাজ শুরু হলেও নির্ধারিত সময়েই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

ভেসে আসা কোরালে ‘কপাল খুলল’ আনোয়ারের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

  • বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জয় পান জাপার প্রার্থীরা
  • উঠান বৈঠক, সভা, সেমিনারসহ প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সবাই
  • ভোটারের কাছে আলোচনায় রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা
­­ জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

নীলফামারীর চারটি সংসদীয় আসনের দুটিতে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। একটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যটিও শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে ভোটের মাঠে সক্রিয় জামায়াতে ইসলামী। প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারে ব্যস্ত অন্য দলগুলোও। তবে নীলফামারীর আসনগুলোতে চমক দেখাতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সেই তালিকায় রয়েছেন সাবেক এমপি, বিএনপির নেতা ও ক্রীড়া সংগঠক।

বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) নীলফামারীর আসনগুলো থেকে জয় পেয়ে আসছে। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলায় দলটির রাজনৈতিক তৎপরতা তেমন নেই বললেই চলে। স্থানীয় জাপা নেতাদের মতে, ঢাকায় দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। সে হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণে তাঁদের প্রস্তুতিও রয়েছে।

নীলফামারী-১ (ডোমার ও ডিমলা)

সীমানাঘেঁষা ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-১ আসনে জাতীয় পার্টি অথবা আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পেয়েছিলেন। এবার তাঁদের অনুপস্থিতিতে আসনটি দখলে মরিয়া বিএনপি জোট ও জামায়াত। জয় নিশ্চিত করতে বিএনপি এ আসন জোট শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে ছেড়ে দিয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিন ইসলাম চৌধুরী নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। জোটকে ছেড়ে দেওয়ায় বিএনপির এই নেতা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এদিকে জামায়াতে ইসলামী এখানে দলটির জেলা শাখার আমির আবদুস সাত্তারকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বেশ আগেই নাম ঘোষণা করায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন তিনি।

নীলফামারী-২ (সদর)

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের জেলা সদস্যসচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ (রুবেল)। তিনি দিনরাত সমানতালে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। বসে নেই নারী কর্মীরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে যাচ্ছেন তাঁরা। তাঁর বিপরীতে জামায়াত জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও দলের জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি আল ফারুক আবদুল লতীফকে প্রার্থী করেছে। জামায়াতের এ নেতাকে দাঁড়িপাল্লার কান্ডারি করায় নেতা-কর্মীরা রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। তবে বিএনপি ও জামায়াতের দুই প্রার্থীই দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী এলাকায় সভা-সমাবেশসহ গণসংযোগ করায় ভোটারদের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। এনসিপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির জেলা সদস্যসচিব চিকিৎসক কামরুল ইসলাম দর্পণ। তিনিও প্রচার চালাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার প্রয়াস চালাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্রীড়া সংগঠক মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ।

নীলফামারী-৩ (জলঢাকা)

এ আসনে বিএনপি এখনো কারও নাম ঘোষণা করেনি। শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করার উদ্দেশ্যে এখনো ফাঁকা রাখা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে কাকে প্রার্থী করা হতে পারে, তা অনুমান করতে পারছে না কেউ, কারণ একাধিক জোট শরিককে বিকল্প ধরা হচ্ছে। তবুও মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন দলটির জেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি এবং দুইবারের নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী। ইতিমধ্যে তিনি কেন্দ্রের সবুজসংকেত পেয়েছেন বলে দাবি করে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তবে আসনটি জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তিনবার এই সংসদীয় আসন থেকে জিতেছেন জামায়াতের প্রার্থী। এবার দাঁড়িপাল্লার কান্ডারি করা হয়েছে জেলা জামায়াতের শুরা সদস্য ওবায়দুল্লাহ সালাফীকে। তিনি নেতা-কর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে দলের বাইরে থেকে মাঠ গোছাতে সব ইউনিয়নে উঠান বৈঠক, সভা, সেমিনারসহ বিভিন্ন কৌশলে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। এ আসনে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিওন দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে কোমর বেঁধে প্রচারণায় নেমেছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে মো. আমজাদ হোসেন মাঠে আছেন।

নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ)

এ আসনে কখনো জাতীয় পার্টি, কখনো আওয়ামী লীগ কিংবা কখনো বিএনপি জয় পেয়েছে। এবার সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। বিগত দেড় দশক নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলেন এই নেতা। আসনটিতে কখনো জয় পায়নি জামায়াত। এবার মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মুনতাকিম। অন্যদিকে সাবেক সংসদ সদস্য শিল্পপতি সিদ্দিকুল আলম ও বিএনপি নেতা রিয়াদ আরফান সরকার রানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। ভোটারের কাছে আলোচনায় রয়েছে এ দুটি মুখ। স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই পাল্টে দিতে পারে এ আসনের হিসাবনিকাশ। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থীরা প্রচার চালাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

ভেসে আসা কোরালে ‘কপাল খুলল’ আনোয়ারের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত