Ajker Patrika

অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে ঝরে গেল যে তরুণের প্রাণ  

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১২: ৪৯
অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে ঝরে গেল যে তরুণের প্রাণ  

স্বার্থপরতা, নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার এই সমাজে জোবায়ের রহমান নাজিউল (১৮) একেবারেই ব্যতিক্রম। তাই তো জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও বাঁচাতে গিয়েছিলেন শিশুসহ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিতে যাওয়া নারীকে। শেষ পর্যন্ত ওই নারীর সঙ্গে মারা যান জোবায়েরও। বেঁচে যায় শিশুটি। তবে এমন মর্মান্তিক মৃত্যু হলেও মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন এই তরুণ। 

ঘটনাটি ঘটছে গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিক গাইবান্ধা শহরের আদর্শ কলেজসংলগ্ন মাঝিপাড়া এলাকায় রেললাইনে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সান্তাহার থেকে পার্বতীপুরগামী পদ্মরাগ ট্রেন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাঝিপাড়া অতিক্রম করছিল। এ সময় শহরের কলেজপাড়ার গৃহবধূ রাজিয়া বেগম তাঁর দেড় বছরের শিশু আবিতকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিচ্ছিলেন। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে ওই গৃহবধূর সঙ্গে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যান কলেজ শিক্ষার্থী জোবায়েরও। 

জোবায়েরের এমন মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ এলাকাবাসী শোকে কাতর। নাজিউলের বাড়ি অর্থাৎ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী গ্রামে রাতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে চৌকির ওপর পড়ে আছে জোবায়েরের নিথর দেহ। সবাই তাঁর বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীসহ উপস্থিত সবার চোখে পানি। 

জোবায়েরের মায়ের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, ‘আমার কলজার ধনকে আনে দেও। আমার ধনকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখতাম। আহা রে ধনটা কই গেল। ভালো করে লেখাপড়া করবে, সেজন্য শহরে ভালো স্কুলে ভর্তি করালাম। মাসে মাসে এখন আমি কাক টাকা পাঠাব। কে আমাকে বলবে, মা আমার মেসের খাবার ভালো লাগছে না। এখন আমি কাক নিয়ে বেঁচে থাকব। বাবারে, তুই ক্যামনে কবরে একাই থাকবু। আমাক একা করে এভাবে চলে যাবি।’ 

ভরতখালী গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলামের ছেলে জোবায়ের রহমান। জাহিদুল ইসলামের দুই ছেলে-মেয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। নাজিউল গাইবান্ধা শহরের এস কে এস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।  

এদিকে নিহত গৃহবধূ রাজিয়া বেগমের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গাইবান্ধা শহরে গোবিন্দপুর মাঝিপাড়ায়। চার বছরের প্রেমের সম্পর্কে তিন বছর আগে এই গ্রামের রবিয়ার রহমানের ছেলে আনোয়ার হোসেনের (২৫) সঙ্গে বিয়ে হয় সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাগলির বাজার গ্রামের বাবরের মেয়ে রাজিয়া (২৩)। দেড় বছর আগে তাঁদের আবিত নামের একটি ছেলেসন্তান হয়। সেই সন্তানকে কোলে নিয়ে আত্মহত্যা করতে রেললাইনে যান রাজিয়া বেগম। 

প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে প্রাইভেট পড়ার জন্য মেস থেকে বের হয়েছিলেন জোবায়ের। রেললাইনের পূর্ব পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সিজার নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী মর্মান্তিক ঘটনাটির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, একটি ছেলে কাঁধে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে রেললাইন পার হচ্ছিল। হঠাৎ দেখতে পায়, সান্তাহার থেকে ছেড়ে আসা পদ্মারাগ ট্রেনটি টানা হুইসেল দিচ্ছে আদর্শ কলেজসংলগ্ন মাঝিপাড়া এলাকায় আর এক নারী কোলে থাকা শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে লাফ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ছেলেটি দৌড়ে তাঁদের কাছে যায়। এরই মধ্যে ট্রেনটি সেখানে পৌঁছে গেলে ছেলেটি কোলের সন্তানসহ নারীকে সরানোর জন্য টানাটানি শুরু করে। তার পরই জোবায়ের ও রাজিয়াকে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি। তারা দুজন গুরুতর আহত হলেও শিশুটি তেমন আঘাত পায়নি। 

স্থানীয়রা তিনজনকেই গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জোবায়ের ও রাজিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। আর শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরিবারের কাছে দিয়ে দেন। 

গোবিন্দপুরের মাঝিপাড়ায় রাতে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটি খেলা করছে তার দাদি মঞ্জুরি রানীর কোলে। নিহতের বড় জা মনি আকতার বলেন, গত রোববার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। রাজিয়া একপর্যায়ে তাঁর নিজের ঘর থেকে বের হয়ে এসে বাড়ির আঙিনায় দাঁড়িয়ে থাকে। তাঁদের ঘরে ছোট আবিতকে মারধর নিয়েই মূলত এই কলহ। এর আগেই রাজিয়া দুই-তিনবার রেললাইনে মাথা দিয়ে মারা যাওয়া জন্য গিয়েছিলেন।

রাজিয়ার স্বামী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ছেলেকে আমার স্ত্রী মারে সব সময়। গত রাতে এর জেরে স্ত্রীকে মারধর ও গালি দিই। এরপর রাতেই ঘর থেকে আমার স্ত্রী বের হয়ে যায়। পরে আমার ছেলেসহ অন্য রুমে ঘুমায়। সকালে আমি কাজে যাই। পরে সাড়ে ১১টার দিকে শুনতে পাই আমার স্ত্রী ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা গেছে। আমি এই ছোট শিশুকে নিয়ে তার মা ছাড়া কীভাবে বেঁচে থাকব! আমার শিশুকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখছেন, নাজিউর রহমান নামে ছেলেটি বাঁচলে তার বাবা-মায়ের কোল খালি হতো না।’ 

এদিক জোবায়ের এমন মৃত্যুর মাধ্যমে শিশুকে বাঁচানোর বিষয়টি নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে মৃত্যুঞ্জয়ী আখ্যা দিচ্ছেন। 

কবি ও সাংবাদিক রজতকান্তি বর্মণ তাঁর ফেসবুকের স্ট্যাটাসে লিখছেন, জোবায়েরের জন্য আমরা গর্বিত। ওর বাবা-মাকে কোনোভাবেই সান্ত্বনা দেওয়া যাবে না। প্রিয় সন্তান জোবায়েরকে হারানোর অভাব কেউ কোনো দিনই ওর বাবা-মাকে পূরণ করে দিতে পারবে না। কিন্তু জোবায়েরকে নিয়ে আমরা গর্ব করতেই পারি। সেটি হলো, আমাদের কিশোর, তরুণ সমাজ এখনো পুরোপুরি নষ্ট হয়ে, পচে-গলে দুর্গন্ধ ছড়ায়নি। আমরা আশান্বিত হতেই পারি, সমাজে এখনো জোবায়েরের মতো কিশোররা আছে, যারা নিজের সমূহ সর্বনাশ হতে পারে জেনেও মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ে। 

জোবায়ের রহমানের বন্ধু মাশনুন স্নিগ্ধ লিখেছেন, ‘আহ জীবন! আমার সহপাঠী, এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শুরু থেকে যার সাথে ওঠাবসা, ওরে আজ হারাইলাম; অন্যকে বাঁচাইতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় সে নিজে চলে গেল না ফেরার দেশে। এই তো আজকে সকাল ৯টা ১৫ পর্যন্ত একসাথে ছিলাম ভাই। কত গল্প করলাম, কেমিস্ট্রি প্রাইভেট পড়লাম একসাথে, বাসায় আসতে না আসতেই এই খবর! আমি বাকরুদ্ধ। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তোমাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক, ভাই।’ 

এভাবেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোবায়ের রহমান নাজিউলের মহত্ত্ব নিয়ে লিখছেন অনেকেই। 

ছোট আবিত তার মায়ের ভালোবাসা, আদর-স্নেহ ছাড়াই বেড়ে উঠবে, সমাজে হয়তো একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। হয়তো সেভাবে উপলব্ধিও করতে পারবে না নাজিউল নামের এক তরুণের জন্যই বেঁচে গিয়েছিল সে। কিন্তু নাজিউলের মা-বাবা কখনো ভুলতে পারবেন না ছেলের এভাবে চলে যাওয়া। 

তবে মহাকাল সবকিছুকে ধ্বংস করে দিলেও কিছু কর্ম, ত্যাগ, সৃষ্টি কখনো বিলীন হয় না। তেমনি মহৎ কোনো কাজের মাধ্যমে মৃত্যুর পরও অন্যদের মনে অমর হয়ে থাকেন কিছু কিছু মানুষ। জোবায়ের রহমান নাজিউলও এমনই একজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটের মাঠে যারা বাধা হবে, তাদের অস্তিত্ব থাকবে না: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোটের মাঠে যারা বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তাদের অস্তিত্ব থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ সোমবার চট্টগ্রাম-১১ আসনে (বন্দর-পতেঙ্গা) ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নগরীর লাভলেইনে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমাদান শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যে ত্যাগের বিনিময়ে আমরা নির্বাচনী ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি, গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যাচ্ছে; যে ত্যাগের বিনিময়ে এসব অর্জন হয়েছে, সেখানে কোনো ষড়যন্ত্র নির্বাচনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।

‘গণতান্ত্রিক ভোট, সংসদ ও সরকার—এটা এখন বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা। এই আকাঙ্ক্ষার মাঝে যারা আসবে, তাদের অস্তিত্ব থাকবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ নেতা বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের জন্য একটা আনন্দের দিন। বিগত ১৫, ১৬, ১৭ বছর ধরে মানুষ যে ত্যাগ স্বীকার করেছে; তারা জীবন দিয়েছে, গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছে, চাকরি হারিয়েছে, ব্যবসা হারিয়েছে, নিঃস্ব হয়ে গেছে।

‘আজ বহু বছর পর বহু ত্যাগের বিনিময়ে আমরা ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছি। অনেক ত্যাগ ও কষ্টের বিনিময়ে অধিকার পেয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা ফিরে পেয়েছে, এটা আজ আনন্দের দিন। আমরা আজ গণতন্ত্রের দিকে যাচ্ছি, গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে পাওয়ার দিকে যাচ্ছি। এই দিনটা সকলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

আমীর খসরু আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদ করবে, নির্বাচিত সরকার গঠন করবে। যে সরকার জনগণের কাছে, যে সংসদ জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সবাইকে জনগণের ওপর আস্থা রেখে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এর বাইরে অন্য কোনো পথ নেই। পথ একটাই, জনগণের ওপর আস্থা রাখতে হবে, নাগরিকের ওপর আস্থা রাখতে হবে এবং তাদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে আগামীর বাংলাদেশে চলতে হবে।

‘এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র, এটা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। একে অপরের প্রতি সহনশীল হতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলে দিতে হবে। অপরের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেও আমাদের তার মতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে, সম্মান জানাতে হবে। একটা সহনশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমাদের চালু করতে হবে।’

প্রতিটি দলের নির্বাচনী কৌশলকে বিএনপি সম্মান করে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘সবার অধিকারকে আমরা স্বাগত জানাই। বাংলাদেশের মানুষ দিন শেষে সিদ্ধান্ত নেবে। কাদের মাধ্যমে এ দেশে গণতন্ত্র আগে ফিরে এসেছিল, বিগত দিনে একদলীয় শাসনের পরে, এরশাদের সময় এবং বিগত এক-এগারোর পরে দীর্ঘ সময় আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কাদের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে তো অজানা নেই।

‘আজ বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা হচ্ছে, গণতন্ত্র ফিরে পাওয়া। সুতরাং, কোন দলের মাধ্যমে বারবার গণতন্ত্র ফিরে এসেছে, কারা গণতন্ত্রের চর্চা ব্যাহত করেছে আর কারা গণতন্ত্রের জন্য সবকিছু বিসর্জন দিতে রাজি আছে—বাংলাদেশের মানুষের কিছুই অজানা নেই।’

জানা গেছে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে গতকাল রোববার চট্টগ্রাম-১১ আসনে বিএনপি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

এর আগে তাঁকে চট্টগ্রাম-১০ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরে সেটি পরিবর্তন করে ওই আসনে দলটির প্রয়াত নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে গ্রেপ্তার রাজুর স্বীকারোক্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অটোরিকশায় থাকা হাদিকে মোটরসাইকেল থেকে গুলি করা হয়। ফাইল ছবি
অটোরিকশায় থাকা হাদিকে মোটরসাইকেল থেকে গুলি করা হয়। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলায় আরেক আসামি আমিনুল ইসলাম রাজু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের খাস কামরায় তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সালকে সীমান্ত এলাকায় আত্মগোপনে সহায়তার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

আদালতের পল্টন থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই রুকনুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদকে পালাতে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন বলে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন আমিনুল ইসলাম রাজু। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।

পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আবিদুল ইসলাম রাজুকে আদালতে হাজির করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তাঁর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আমিনুল ইসলাম রাজু স্বেচ্ছায় আদালতে জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক বিধায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাঁর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন।

২৪ ডিসেম্বর আমিনুল ইসলাম রাজুকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ওই দিন দুপুরে আমিনুল ইসলাম রাজুকে রাজধানীর মিরপুর-১১ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে প্রত্যেককে বিভিন্ন তারিখে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ফয়সালকে সীমান্তে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম, রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, ফয়সালের সহযোগী মো. কবিরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিভিন্ন তারিখে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শরিফ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তিনি প্রচার চালাচ্ছিলেন। ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের কিছু পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেল থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তাঁকে মাথায় গুলি করার পর আততায়ীরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর মারা যান তিনি।

১৪ ডিসেম্বর রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদি মৃত্যুবরণ করার পর মামলাটি পরে হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ২০
শেরপুর-২ (নকলা­-নালিতাবাড়ী) আসনে আজ সোমবার বিকেলে সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে ইউএনওর কার্যালয়ে কাঁদেন এবি পার্টির মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ বাদশা। ছবি: সংগৃহীত
শেরপুর-২ (নকলা­-নালিতাবাড়ী) আসনে আজ সোমবার বিকেলে সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে ইউএনওর কার্যালয়ে কাঁদেন এবি পার্টির মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ বাদশা। ছবি: সংগৃহীত

নির্ধারিত সময়ের ৮ মিনিট দেরি করায় শেরপুর-২ (নকলা­-নালিতাবাড়ী) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ বাদশা। মনোনয়নপত্র দাখিল করতে না পেরে তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে অঝোরে কাঁদেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল।

জানা গেছে, আব্দুল্লাহ বাদশা বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নালিতাবাড়ীর ইউএনও রেজওয়ানা আফরীনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার অনুরোধ করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত না হওয়ায় ইউএনও তাঁর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় আব্দুল্লাহ বাদশা ইউএনওকে দেরির কারণ ব্যাখ্যা করে মনোনয়নপত্র গ্রহণের অনুরোধ জানান। একপর্যায়ে ইউএনওর কক্ষেই তিনি কাঁদতে থাকেন।

আজ সোমবার নির্ধারিত সময়ের পর শেরপুর-২ (নকলা­-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে ইউএনওর কার্যালয়ে যান এবি পার্টির মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ বাদশা। ছবি: সংগৃহীত
আজ সোমবার নির্ধারিত সময়ের পর শেরপুর-২ (নকলা­-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে ইউএনওর কার্যালয়ে যান এবি পার্টির মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ বাদশা। ছবি: সংগৃহীত

একপর্যায়ে আব্দুল্লাহ বাদশা ইউএনওকে অনুনয় করে বলেন, ‘আমি ৫টার মধ্যেই (ইউএনওর কার্যালয়) আসছিলাম। রাস্তায় গাড়ির একটু সমস্যা হয়েছিল, তাই বারবার ফোনও দিয়েছি। আমাকে একটু দয়া করুন।’

এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘প্রার্থীর চোখের পানি আমি বুঝতে পারছি। তবে জাতীয় নির্বাচনে আইনগতভাবে আমার কিছু দায়িত্ব আছে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো এখতিয়ার আমার নেই। বিকেল ৫টার পর কোনোভাবেই মনোনয়নপত্র গ্রহণের সুযোগ নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে ভোটে থাকবে না জাপা: শামীম হায়দার

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি 
সুন্দরগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা শেষে জাপা মহাসচিব। ছবি: আজকের পত্রিকা
সুন্দরগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা শেষে জাপা মহাসচিব। ছবি: আজকের পত্রিকা

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে জাতীয় পার্টি ভোটের মাঠে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই নির্বাচনের পথে এসেছি। তবে নির্বাচনে যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হয়, তাহলে জাতীয় পার্টি ভোটের মাঠে থাকার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবে।’

আজ সোমবার গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখবে, এমন প্রত্যাশা করছি। আমরা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সব কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘জাতীয় পার্টির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছেন। তাঁদের সেই আগ্রহ ও প্রত্যাশার কথা বিবেচনা করেই আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জাতীয় পার্টি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই নির্বাচনের পথে এসেছি।’ ‎

শামীম হায়দার পাটোয়ারী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির তিনজন প্রার্থী এখনো রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে আছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য তাঁদের জামিনের বিষয়ে সরকার বিবেচনা করবে বলে আশা করছি। সেই সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমেই দেশের গণতান্ত্রিক ধারা সুদৃঢ় হবে।’

এ সময় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহসভাপতি মো. আনছার আলী সরদার, মাওলানা আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান মণ্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ টি এম এনামুল হক মন্টু, বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন সভাপতি মো. রেজাউল হক রেজা, সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন মুক্তি, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, মোসলেম আলী, মহাসচিবের বিশেষ সহকারী নুর মোহাম্মদ রাফি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত