Ajker Patrika

বিলুপ্তির পথে ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহাসিক টঙ্গনাথের রাজবাড়ি, সংরক্ষণের দাবি 

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৫০
বিলুপ্তির পথে ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহাসিক টঙ্গনাথের রাজবাড়ি, সংরক্ষণের দাবি 

সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে বিলুপ্তির পথে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার ঐতিহাসিক টঙ্গনাথের রাজবাড়ি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী এ রাজবাড়িটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ঝুঁকিপূর্ণ যেনেও ঐতিহাসিক এ রাজবাড়ি একনজর দেখতে অনেকে আসছেন। 

জানা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে নির্মিত এ রাজবাড়ি রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার নামক স্থানে যা বর্তমান কুলিক নদীর তীরে অবস্থিত। সেখানে গোয়ালা বংশের এক নিঃসন্তান জমিদার বসবাস করতেন। সেই জমিদারের শ্যামরাই মন্দিরে সেবায়েত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। নিঃসন্তান বৃদ্ধ গোয়ালা জমিদার ভারতের কাশীবাসে যজ্ঞে যাওয়ার সময় তাঁর সমস্ত জমিদারি সেবায়েতের তত্ত্বাবধানে রেখে যান। তাম্রপাতে দলিল করে যান যে তিনি কাশী থেকে ফিরে না এলে শ্যামরাই মন্দিরের সেবায়েত এই জমিদারির মালিক হবেন। পরে বৃদ্ধ জমিদার ফিরে না আসার কারণে বুদ্ধিনাথ চৌধুরী জমিদারি পেয়ে যান। 

রাজা টঙ্গনাথের পিতা বুদ্ধিনাথ চৌধুরী রাজবাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করলেও সমাপ্ত করেন তাঁর ছেলে। ব্রিটিশ সরকারের কাছে চৌধুরী ও দিনাজপুরের মহারাজা গিরিজনাথ রায়ের কাছ থেকে রাজা পদবি পান টঙ্কনাথ। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর টঙ্গনাথ সপরিবারে ভারতে চলে যায়। পরে রাজবাড়িকে সরকারি সম্পদ হিসেবে অধিগ্রহণ করে সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ। অপূর্ব নির্মাণশৈলী এ বাড়ির প্রতি বরাবরই দর্শনার্থীদের আকর্ষণ ছিল। বিশেষ করে বাড়িটির মার্বেল পাথর ও দারুণ কারুকার্য দৃষ্টি কাড়ত সবার। 

ধ্বংসের পথে রানীশংকৈল উপজেলার ঐতিহাসিক টঙ্গনাথের রাজবাড়ি, ঝুঁকিপূর্ণ যেনেও তা একনজর দেখতে অনেকে আসছেনবর্তমানে রাজবাড়ির অনেক অংশই নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ১০ একর জুড়ে নির্মিত এ প্রাসাদটি এখন পর্যন্ত সুরক্ষা বা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। রাজবাড়ির পূর্বদিকে দুটি পুকুর রয়েছে যা ময়লা-আবর্জনায় সয়লাব। পুকুরের ঘাটগুলো ভেঙে গেছে, সংস্কার করা হয়নি। 

দ্বিতল ভবন বিশিষ্ট এ রাজ প্রাসাদের ভেতরে রয়েছে ৮০ টির মতো ঘর। কিন্তু সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে ঘরগুলো এখন বিলীনের পথে। যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে এ রাজপ্রাসাদটি। এর মধ্যে প্রাসাদের ভেতরে দ্বিতল ভবনে ওঠা সিঁড়ির প্রায় ৪ ফিট ধসে পড়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে বাড়ির বেশ কিছু অংশ। চুরি হয়ে যাচ্ছে বাড়ির অবকাঠামো তৈরির লোহা, দরজা, জানালা ও বিভিন্ন জিনিস। হারিয়ে যেতে বসা এ রাজবাড়িটি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বারবার সংস্কার করে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন রানীশংকৈল উপজেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। 

রাজবাড়ি ঘুরতে আসা মরিয়ম নামে এক দর্শনার্থী বলেন, প্রায় সময় আগে ঘুরতে আসতাম এখানে। কিন্তু এখন সেই পরিবেশ আর নেই। 

ধ্বংসের পথে রানীশংকৈল উপজেলার ঐতিহাসিক টঙ্গনাথের রাজবাড়ি, ঝুঁকিপূর্ণ যেনেও তা একনজর দেখতে অনেকে আসছেনসামাজিক নিরাপত্তার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ভেতরের স্থাপনাগুলোতে লতাপাতা ও পরগাছায় ছেয়ে গেছে। এ সুযোগে মাদকসেবীরা সেখানে মাদক ও জুয়ার আসর বসিয়েছে। নিরাপত্তার কথা ভেবে আর সামনে যাইনি। 

পরিবার নিয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে ঘুরতে আসা রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, সরকার উদ্যোগ নিলে এখনো এই রাজবাড়িকে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় ও নিরাপদ করে তুলতে পারবেন। 

রাজবাড়িতে ঘুরতে আসা কলেজছাত্র লিমন বলেন, এই রাজবাড়িটি খুব সুন্দর। সে কারণেই এখানে বেশ কয়েকবার আসা হয়েছে। কিন্তু এখানে কোন ধরনের স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে নারীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে বেশি। 

ধ্বংসের পথে রানীশংকৈল উপজেলার ঐতিহাসিক টঙ্গনাথের রাজবাড়ি, ঝুঁকিপূর্ণ যেনেও তা একনজর দেখতে অনেকে আসছেনস্থানীয় বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন বলেন, বাড়িটি সংরক্ষণ করা গেলে ভবিষ্যতের প্রজন্ম এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে। না হলে এর স্থাপত্যগুলো অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে। 

একই উপজেলার জগদল বাজারের স্কুলশিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকা টঙ্গনাথের রাজবাড়িতে এখন সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় আপত্তিকর কার্যকলাপ। অবাধে বসছে মদ, জুয়া ও গাঁজার আসর। একইভাবে দিনের বেলায় থাকে গরু-ছাগলের দখলে। যেন রাজবাড়িটি গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেসব দেখার যেন কেউ নেই।

এ বিষয়ে রানীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, রাজা টঙ্গনাথ ভারতে চলে যাওয়ার পরে সরকার রাজবাড়িকে সরকারি সম্পদ হিসেবে অধিগ্রহণ করলেও এত দিন স্থানীয়রা দখল করে রেখেছিল। গেল দু-এক বছর আগে জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাড়িটি দখল মুক্ত হয়। কিন্তু দীর্ঘ এ সময়টাতে সরকারের তদারকির অভাবে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কবলে পড়ে রাজবাড়ির মূল্যবান সম্পদ চুরি ও লুট হয়ে যায়। দখলকারীরা অনেকে বাড়ির ইটসহ নানা স্থাপনা নিয়ে চলে গেছে। বাড়ির অবকাঠামো চুরি না হলে এ ভঙ্গুর দশা থেকে আরও ১০০ বছর পর্যন্ত বাড়িটি সগর্বে দাঁড়িয়ে থাকত। 

ধ্বংসের পথে রানীশংকৈল উপজেলার ঐতিহাসিক টঙ্গনাথের রাজবাড়ি, ঝুঁকিপূর্ণ যেনেও তা একনজর দেখতে অনেকে আসছেনঅধ্যাপক আরও বলেন, এরই মধ্যে এ উপজেলার ৪টি জমিদার বাড়ি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এর মধ্যে জগদল ধর্মগড় গ্রামে জমিদার ধীরন্দ্র নাথ রায় বাড়িটি অন্যতম। টঙ্গনাথের রাজবাড়িটি এখনকার পরিস্থিতি যা দেখা যায় তা দেখে মনে হচ্ছে এটাও জমিদার বাড়িটির মতই ধসের পথে। 

ঐতিহাসিক নিদর্শন রক্ষা করা সবার দায়িত্ব জানিয়ে অধ্যাপক বলেন, বাড়িটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কয়েক বছর আগে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর সুরক্ষা বা সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। এ ঐতিহাসিক স্থাপনাটির সংস্কার করা হলে এটিকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারত পর্যটনকেন্দ্র। এতে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বাড়বে ঠিক তেমনি ঐতিহাসিক এ রাজবাড়ি দর্শনার্থীদের মনের খোরাক জোগাবে। 

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান (ডিসি) আজকের পত্রিকাকে বলেন, রানীশংকৈলে টঙ্গনাথের রাজবাড়িকে সংরক্ষণ ও পর্যটনকেন্দ্রে হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে একটি এস্টিমেন্ট তৈরি করে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগে পাঠানো হবে।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে শরিফ ওসমান হাদির প্রতীকী কফিন নিয়ে বিক্ষোভ

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে হাদির গায়েবানা জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুরে হাদির গায়েবানা জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজা ও প্রতীকী কফিন নিয়ে মিছিল বের হয়েছে।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে হাজারো ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পুরো কলেজ এলাকা শোকাবহ পরিবেশে পরিণত হয়।

জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন চাঁদপুর শহর জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাডভোকেট মো. শাহাজান খান, এনসিপির জেলা সমন্বয়ক মো. মাহবুব আলম এবং গণঅধিকার পরিষদের চাঁদপুর জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন।

নেতারা বক্তব্যে শরিফ ওসমান হাদির ওপর সংঘটিত হামলা ও মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

একই সঙ্গে তাঁরা গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নিরাপদ রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

এ সময় ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জানাজার সময় শরিফ ওসমান হাদির প্রতীকী কফিন সামনে রেখে শপথবাক্য পাঠ করান ইনকিলাব মঞ্চের নেতা নিয়াজ মোর্শেদ। শপথে হাদির আদর্শ বাস্তবায়ন এবং ন্যায়ের পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

জানাজা শেষে সরকারি কলেজ মাঠ থেকে একটি কফিন মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। মিছিলটি কলেজ মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রেলওয়ে জামে মসজিদ চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।

কফিন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে হামলার প্রতিবাদ জানান এবং বিচার দাবি করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিপুকে চাকরি থেকে ইস্তফা নিতে বাধ্য করে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়: র‍্যাব

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস হত্যা ও লাশ পোড়ানোর মামলায় আসামি গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার ময়মনসিংহে র‍্যাব-১৪-এর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অধিনায়ক নয়মুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস হত্যা ও লাশ পোড়ানোর মামলায় আসামি গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার ময়মনসিংহে র‍্যাব-১৪-এর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অধিনায়ক নয়মুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে যুবক দিপু চন্দ্র দাস হত্যা ও লাশ পোড়ানোর মামলায় প্রধান অভিযুক্তসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এবং জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস হত্যা ও লাশ পোড়ানোর মামলায় র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস হত্যা ও লাশ পোড়ানোর মামলায় র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ শনিবার ময়মনসিংহ র‍্যাব-১৪-এর সদর সপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে সাতজনের গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়।

র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তারেক হোসেন (১৯), লিমন সরকার, মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিঝুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮) ও মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)। তাঁদের মধ্যে আলমগীর হোসেন পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কোম্পানির ফ্লোর ম্যানেজার এবং মিরাজ হোসেন আকন কোয়ালিটি ইনচার্জ।

ডিবির হাতে গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) ও মো. নাজমুল।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নয়মুল হাসান বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে শ্রমিকদের সঙ্গে দিপুর সঙ্গে কোম্পানির ভেতর বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। পরে কারখানার ফ্লোর ম্যানেজার আলমগীর তাঁকে চাকরি থেকে ইস্তফা নিতে বাধ্য করেন। বিষয়টি বাইরে ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে না জানিয়ে দিপুকে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। হত্যার পর গাছের ডালে বেঁধে লাশে আগুন দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। হত্যাকারীরা কেউ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। বাকি আসামিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকা উপজেলায় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে যুবক দিপু চন্দ্র দাসকে (২৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তাঁর লাশে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং অর্ধপোড়া লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ সুশীল সংবাদপত্র অবশ্যই বন্ধ করতে হবে: রাকসু ভিপি

রাবি প্রতিনিধি 
মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। ছবি: সংগৃহীত
মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। ছবি: সংগৃহীত

দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) ও শিবির নেতা মোস্তাকুর রহমান।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল–পরবর্তী সমাবেশে এমন কথা বলেন তিনি।

মোস্তাকুর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির সভাপতি পদেও আছেন। তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। এমন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি শিবির সভাপতি মোস্তাকুর রহমান বলেন, ‘আমরা আজকের এই প্রোগ্রাম থেকে ঘোষণা দিচ্ছি, প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ এসব সুশীল সংবাদ পত্রিকাকে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আমরা মনে করি, এই প্রোগ্রামে যদি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার পত্রিকার কোনো সাংবাদিক আসেন, তাহলে এখনই এখান থেকে চলে যাবেন।’

শিবির নেতা মোস্তাকুর এই বক্তব্য দেওয়ার কিছু সময় আগে ঢাকায় প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। একপর্যায়ে এই দুর্বৃত্তদের একটি অংশ ঢাকার কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা করে ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেখানে ডেইলি স্টারের বহু কর্মী আটকা পড়েন। কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাঁদের উদ্ধার করেন।

রাজশাহীতে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন উচ্ছেদ করে দিতে হবে উল্লেখ করে রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, ‘আমরা ঘোষণা দিচ্ছি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শিক্ষক ক্লাসে আসতে পারবে না। আমরা ঘোষণা দিচ্ছি, হাদি ভাইয়ের রক্ত থেকে লক্ষ হাদি জন্ম নিব, ইনশা আল্লাহ। ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশে মাত্র দুইটা। তার মধ্যে একটা রাজশাহীতে। আমরা বলব, রাজশাহীতে ভারতীয় হাইকমিশন উচ্ছেদ করে দিতে হবে।’

রাবি ভিপি ও শিবির নেতার এমন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে আজ শনিবার বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত শরিফ ওসমান বিন হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিক প্রথম আলো, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এর কার্যালয় এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ও উদীচীতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছে। এ সময় ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে।

বিজ্ঞপ্তিতে রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদের বক্তব্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) হাদি হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তিনি প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এসব পত্রিকার কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলে কর্মসূচি থেকে বের হয়ে যেতে। যা দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে দেওয়া এমন বক্তব্য অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং তা চলমান উগ্রতাকে আরও উসকে দেয়। তাঁরা ওই বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও দেশজুড়ে আওয়ামী নৈরাজ্য, মব সন্ত্রাস, উগ্রবাদ এবং জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর হত্যাকাণ্ড ও অরাজকতা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চরম ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে, যা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে বড় বাধা। সংশ্লিষ্ট সকল অপরাধীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম তুললেন দণ্ডিত আসামি, খুঁজে পায় না পুলিশ

 রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫০
বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে ইউএনও-এসি ল্যান্ডের মাঝে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে ইউএনও-এসি ল্যান্ডের মাঝে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় স্ত্রীর করা ভরণপোষণের মামলায় তিন মাসের কারাদণ্ড পেয়েছেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল হক জীবন। পুলিশের চোখে তিনি এখন পলাতক, তাঁকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন জীবন।

এমনকি বিএনপির একজন ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর পক্ষে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করেছেন। গত বুধবার অন্য নেতাদের সঙ্গে জীবনও সেখানে যান। তখনকার ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও জান্নাতুল ফেরদৌস এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাতুল করিম মিজানের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা জহরুল হক জীবন।

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির জেলা কমিটির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। তবে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলও। মনোনয়ন না পেলে হতে পারেন ‘বিদ্রোহী’। বুধবার তাঁর পক্ষেই সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন জীবন। তাঁর সঙ্গে বাঘা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও চারঘাট উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মুরাদ পাশাও উপস্থিত ছিলেন।

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার সময় তাঁরা সাজাপ্রাপ্ত আসামি জীবনের সঙ্গে ছবিও তুলেছেন। জীবন যখন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে যান, তখনো উপজেলা ক্যাম্পাসে পুলিশের একটি ভ্যান ছিল। সবার সামনে প্রকাশ্যেই ছিলেন জীবন। তবে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কী মন্তব্য করব? এটা যাদের কাজ (পুলিশ), তাদেরকেই জিজ্ঞেস করুন।’ সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে দিয়ে মনোনয়ন ফরম তোলার বিষয়ে কথা বলতে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলকে ফোন করা হয়। তবে ব্যস্ত আছেন জানিয়ে তিনি কথা বলতে চাননি।

কাগজপত্রে দেখা যায়, জহুরুল হক জীবনের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়া খাতুন তাঁর মোহরানা ও দুই সন্তানের ভরণপোষণের দাবিতে রাজশাহীর পারিবারিক আদালতে মামলা করেছিলেন। জীবন তা তোয়াক্কা না করে আদালতে হাজিরই হননি। এ অবস্থায় গত ৫ নভেম্বর একতরফা রায় দেন আদালত। রায়ে সোনিয়ার মোহরানা ও সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ ৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা দিতে জীবনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর দেড় মাস পার হলেও জীবন গ্রেপ্তার হননি।

স্থানীয়রা জানান, ইউএনও জান্নাতুল ফেরদৌসের স্বামী ইশতিয়াক আহমেদ শুভর সঙ্গে জহুরুল হক জীবনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ইউএনও জান্নাতুল ফেরদৌস চারঘাট পৌরসভার প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। জীবন বিভিন্ন লাইসেন্সে চারঘাট উপজেলা ও পৌরসভার ঠিকাদারি কাজ করছেন। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। সাজা পরোয়ানা মাথায় নিয়ে তিনি উপজেলা ও পৌরসভা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ইউএনওর কাছে কাজের বিল দাখিল করছেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করছে না।

মামলার বাদী সোনিয়া খাতুন বলেন, ‘আমি জীবনের দ্বিতীয় স্ত্রী। মামলা করার কারণে সে আমাকে অব্যাহতভাবে ফোনে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির প্রভাবের কারণে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না। আমার জীবনের এখন কোনো নিরাপত্তা নাই। যেকোনো সময় ক্ষতি হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘মামলার রায় হওয়ার পরও জীবন আমার বাড়িতে এসে আমাকে মারধর করে গেছে। থানা-পুলিশ-মামলা করে কোনো লাভ নাই বলে সে আমাকে জানিয়ে গেছে। বলে গেছে, থানায় সে ফ্যান-টিভি কিনে দিয়েছে। থানা তার কিছুই করবে না।’

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা জহুরুল হক জীবন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী গোপনে মামলা করে। নোটিশ চেপে রেখে একতরফা রায় নেয়। সাজার বিষয়ে আমি জানতে পেরে আদালতে টাকা জমা দিয়েছি। সামনের তারিখে হয়তো কাগজ পেয়ে যাব। তারপর সেটি থানায় এনে জমা দেব। এখন পর্যন্ত দিতে পারিনি, এটা আমারই ফল্ট।’ স্ত্রীর অভিযোগের সবই মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।

জীবনের সাজা পরোয়ানা এবং তাঁকে গ্রেপ্তার না করার ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন ফারুকীর কাছে জানতে চাওয়া হয়। তখন তিনি মামলা-সংক্রান্ত কাগজপত্র চান এবং সেটি দেখার পরে মন্তব্য করবেন বলে জানান। বৃহস্পতিবারই ওসির হোয়াটসঅ্যাপে জীবনের মামলা-সংক্রান্ত কাগজপত্র পাঠানো হয়। কিন্তু পরে আর ফোন ধরেননি ওসি। শুক্র ও শনিবারও তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারঘাট থানা থেকে বিষয়টি জানার জন্য কিছুক্ষণ সময় নেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাবিনা ইয়াসমিন। পরে তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, জহুরুল হক জীবনের বিরুদ্ধে থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। পুলিশ তাঁকে খুঁজে পায় না।

ইউএনওর কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়ন ফরম তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চারঘাট থানার ওসি তাঁকে জানিয়েছেন, তিনি থানায় নতুন এসেছেন। বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেননি। তবে আসামি যে-ই হোক না কেন, তাঁকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাবিনা ইয়াসমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত