Ajker Patrika

১৬ বছরেও চালু হয়নি ৬২ কোটির ৩২ বাজার

  • ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত জেলায় ৩২টি কৃষিবাজার নির্মাণ।
  • তদারকি ও ব্যবস্থাপনার অভাব, কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষকেরা।
  • দখল করে ব্যবহার, পরিত্যক্ত বাজারে বসে জুয়া ও মাদকের আসর।
শিপুল ইসলাম, রংপুর
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭: ৩৬
ইকরচালী কৃষিবাজার দখল করে গরু-ছাগল বেঁধে রাখা হয়। পরিত্যক্ত মার্কেটটিতে বসে জুয়া ও মাদকের আসর। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইকরচালী কৃষিবাজার দখল করে গরু-ছাগল বেঁধে রাখা হয়। পরিত্যক্ত মার্কেটটিতে বসে জুয়া ও মাদকের আসর। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের তারাগঞ্জের প্রামাণিকপাড়া গ্রামের সবজিচাষি আশরাফুল আলম। প্রতিদিন খেত থেকে সবজি তুলে হাটে নিয়ে যান বিক্রির জন্য। কিন্তু হাটে তাঁর জন্য কোনো নির্ধারিত জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে সড়কের ওপর বসে বিক্রি করেন নিজের উৎপাদিত শাকসবজি। অথচ হাটের ৫০ গজ দূরে কৃষকদের জন্য ২ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ‘ইকরচালী কৃষিবাজার’। কিন্তু সেখানে নেই কোনো কৃষক বা ক্রেতা-বিক্রেতা। দেড় যুগেও চালু না হওয়ায় সেটি এখন জুয়া-মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

আশরাফুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘কষ্ট করে শাক-সবজি ফলাই। পাইকারকে দিলে তো উৎপাদন খরচই ওঠে না। নিজে বেচি দুই টাকা লাভের আশায়। কিন্তু হাটে আসি জায়গা পাই না। রাস্তায় বসি, পথচারীদের গালমন্দ খাই। আমার মতো প্রতিদিন শতাধিক কৃষক রাস্তায় বসে সবজি বেচি। কিন্তু বাজারের পাশে একটা কৃষি মার্কেট বানাইছে, ওটা ১৬ বছর থাকি বন্ধ। হামরা সবজি বেচার পাই না, ওইটা মানুষ জুয়া খেলায় নেশা করে।’

এই আক্ষেপ শুধু ইকরচালীর কৃষক আশরাফুল ইসলামের নয়; রংপুর বিভাগের হাজারো কৃষকের। যাঁরা জায়গার অভাবে কষ্টে উপার্জিত ফসল বিক্রির জন্য হাটে জায়গা না পেয়ে বাধ্য হন ফড়িয়াদের হাতে তুলে দিতে। সরকারিভাবে কোটি টাকা ব্যয় কৃষকদের জন্য কৃষিবাজার গড়ে তোলা হলেও তদারকি ও ব্যবস্থাপনার অভাবে সেগুলোর কোনোটি কসাইখানা, কোনোটিতে জুয়া মাদকের আসর, আবার কোনোটি কমিউনিটি সেন্টার, ব্যায়ামাগার হিসেবে গড়ে উঠেছে।

রংপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়া সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে এনসিডিপি প্রকল্পের আওতায় ২০০৭-৮ অর্থবছরে রংপুরে ৬টি, দিনাজপুরে ৮টি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৬টি, পঞ্চগড়ে ৩টি, কুড়িগ্রামে একটি, নীলফামারীতে ৫টি, লালমনিরহাটে ৩টিসহ মোট ৩২টি কৃষিবাজার নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি কৃষিবাজার তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ২ কোটি টাকা করে। নির্মাণের পর কৃষিবাজারগুলো কৃষি বিপণন অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়। তবে ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এসব কৃষিবাজার থেকে কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষকেরা।

জানা গেছে, রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ কৃষিবাজার ও ট্রাক টার্মিনাল কৃষিবাজার দুটি রংপুর সিটি করপোরেশনের দখলে। মাহিগঞ্জ কৃষিবাজার নিয়ন্ত্রণ করে ওই এলাকার প্রভাবশালী দেলোয়ার হোসেন। এটিতে এখন কমিউনিটি সেন্টার ও ব্যায়ামাগার বানানো হয়েছে। ট্রাক টার্মিনালের বাজারে প্রতিদিন ১০-১২টি গরু জবাই করা হয়; যার ভাড়া খাস হিসেবে সিটি করপোরেশন নিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, ‘মার্কেট দুটি কৃষি বিপণনের। সিটি করপোরেশন এগুলো থেকে ভাড়া পায় কি না জানি না।’

তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক (উপসচিব) এন এম আলমগীর বাদশা বলেন, ‘মাহিগঞ্জ ও ট্রাক টার্মিনালের মার্কেটগুলো সিটি করপোরেশন দখল করে নিয়েছে। আমাদের কন্ট্রোলে নেই। অনেক চেষ্টার পরও ওই দুটি মার্কেট উদ্ধার করা যাচ্ছে না।’

রংপুর কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে কৃষকের জন্য বাজার তৈরি করলেও, বাস্তবে সেগুলো এখন প্রভাবশালীদের দখলে। কৃষকেরা রোদে-পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তার ধারে বসে থাকেন আর ওই ‘কৃষক বাজারে’ চলে জুয়া আর মাদক, কমিউনিটি সেন্টার। এটি শুধু অব্যবস্থাপনা নয়, বরং কৃষকের সঙ্গে অবিচার। কৃষকের পণ্য যেন সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে পারে, সেই ব্যবস্থা এখনই নিতে হবে।

একই চিত্র দেখা গেছে বদরগঞ্জের কৃষিবাজার ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের চিকলী কৃষিবাজারের। এসব দেখভালের দায়িত্ব কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, রংপুর বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) এন এম আলমগীর বাদশার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মার্কেটগুলো কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ একটি প্রকল্পের মাধ্যমে করেছিল। প্রজেক্ট শেষ হওয়ার পর কৃষি বিপণনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়। আমরা যেটা দেখছি, মার্কেটের লোকেশনগুলো খুব খারাপ, যেখানে কোনো কাজ চলে না। যে উদ্দেশ্যে এগুলো করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন হয়নি। সেগুলো দখল হয়ে গেছে। রাজনৈতিক প্রভাব তো আছেই। মার্কেটগুলোর জরাজীর্ণ অবস্থা। আমরা একটা প্রজেক্ট নিয়েছি, মেরামত করে চালু করা হবে।’

এ বিষয়ে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘নীতিমালাগত সীমাবদ্ধতা ও স্থানীয় পর্যায়ের সমন্বয় জটিলতায় কৃষকের বাজার বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যৌনকর্মীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ, কুয়াকাটায় জামায়াত নেতা বহিষ্কার

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
বহিষ্কার করা জামায়াত নেতা আ. হালিম। ছবি: সংগৃহীত
বহিষ্কার করা জামায়াত নেতা আ. হালিম। ছবি: সংগৃহীত

নিজের বাড়িতে যৌনকর্মীদের (পতিতা) আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে কুয়াকাটা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি আ. হালিমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন কুয়াকাটা পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা মো. শহীদুল ইসলাম।

জামায়াত নেতারা বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বিশেষ রোকন বৈঠক আহ্বান করা হয়। বৈঠকে উত্থাপিত অভিযোগ ও প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিষয়টি জামায়াতে ইসলামীর নীতিমালা ও আদর্শ পরিপন্থী। তাই সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আ. হালিমকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কুয়াকাটা পৌর জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা মোহাম্মদ মাঈনুল ইসলাম মন্নান, লতাচাপলী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির রাসেল মুসুল্লি, পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আল আমিন মৃধা, যুব জামায়াতের সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন সিকদার এবং জামায়াতের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সেক্রেটারি শাহাবুদ্দিন ফরাজি।

কুয়াকাটা পৌর জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা মোহাম্মদ মাঈনুল ইসলাম মন্নান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শভিত্তিক সংগঠন। এখানে ব্যক্তির চেয়ে সংগঠনের আদর্শ ও নৈতিকতা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো নেতার বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠলে তা দলীয়ভাবে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। সংগঠনের সুনাম ও আদর্শ রক্ষার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

কলাপাড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘একটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ রোকন বৈঠক ডেকে কুয়াকাটা পৌর ৫ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী করতে হলে অবশ্যই সাংগঠনিক নিয়মকানুন ও দলীয় নীতিমালা মেনে চলতে হয়।’

তবে অভিযুক্ত মো. আ. হালিম তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বাসায় ছয়টি পরিবার ভাড়া থাকে। এর মধ্যে একটি বাসা মা-মেয়ে পরিচয়ে চারজন নারী দুই মাস আগে ভাড়া নেন। তাঁরা কোথায় কী কাজ করেন, তা আমার জানার বিষয় নয়। আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি শিগগির সংবাদ সম্মেলন করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দলবদলেও রক্ষা পেলেন না ছাত্রলীগ নেতা, ডিবির হাতে আটক

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০১
মোহাম্মদ শাহীন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ শাহীন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপিতে যোগদানের এক দিন পার না হতেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কুমিল্লা উত্তর জেলার সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ শাহীন মিয়াকে (৩৪) আটক করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলার ১ নম্বর বড়শালঘর ইউনিয়নের সৈয়দপুর বাজারে তাঁর নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘শাহীন ফার্মেসি’ থেকে ডিবি ও থানা-পুলিশের যৌথ অভিযানে তাঁকে আটক করা হয়।

মোহাম্মদ শাহীন মিয়া বড়শালঘর গ্রামের মৃত শহিদ মেম্বারের ছেলে। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এবং কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের আস্থাভাজন ছিলেন।

এর আগে গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে দেবিদ্বার পৌর এলাকার গুনাইঘরে ‘শহীদ জিয়া মিলনায়তনে’ আনুষ্ঠানিকভাবে শালঘর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী বিএনপিতে যোগদান করেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, টানা চারবারের সাবেক এমপি ও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সির হাতে তাঁরা বিএনপির পতাকা তুলে দেন। যোগদানকারীদের মধ্যে মোহাম্মদ শাহীন মিয়াও ছিলেন।

ওই যোগদান কার্যক্রম সম্পন্ন হয় আওয়ামী লীগের বড়শালঘর ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলাম জারু চেয়ারম্যানের নির্দেশে এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য আলম হাজারীর নেতৃত্বে। যোগদানকারীরা সবাই সাবেক আওয়ামী লীগ এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের সমর্থক ছিলেন।

এ বিষয়ে সদ্য বিএনপিতে যোগদানকারী ইউপি সদস্য আলম হাজারী বলেন, ‘শাহীনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। কেন তাঁকে আটক করা হলো, সেটিও আমরা জানি না।’

কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রেজভিউল আহসান মুন্সি বলেন, ‘মোহাম্মদ শাহীন মিয়া আমাদের পুরোনো কর্মী। বিগত সরকারের আমলে নিরাপত্তার কারণে তিনি ভিন্নভাবে চলাফেরা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।’

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার শাহীন মিয়াকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন। অভিযানে থাকা ওসি (তদন্ত) মঈনুদ্দিনের কাছ থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।

মঈনুদ্দিন বলেন, ‘শাহীনকে ডিবি পুলিশ আটক করেছে। কোন মামলায় তাঁকে আটক দেখানো হয়েছে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানানো হবে।’

এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. শামসুল আলম শাহ বলেন, গ্রেপ্তারের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎আরমানিটোলায় বহুতল ভবনে আগুন‎, ৪০ মিনিট পর নিয়ন্ত্রণে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৯
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস

‎রাজধানীর আরমানিটোলার বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠতলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে আজ সকালে খুদে বার্তায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানানো হয়।

‎‎ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়া যায়। খবর পাওয়ার মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে, অর্থাৎ সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস

হাজী টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সদরঘাট ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি, সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন থেকে ৫টি এবং সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশন থেকে ২টিসহ মোট ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করে। পরে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।‎

তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্দোষ আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করার দাবি বিএনপি নেতার

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪১
গতকাল দুপুরে নেছারাবাদে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল দুপুরে নেছারাবাদে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেছারাবাদে নির্দোষ ও নিরপরাধ আওয়ামী লীগ সমর্থকসহ সাধারণ জনগণকে হয়রানি না করার জন্য পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। গতকাল সোমবার দুপুরে নেছারাবাদ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই দাবি জানান। জেলা প্রশাসকের সফর উপলক্ষে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ হলরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. আবু সাঈদ। সভাপতিত্ব করেন নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত দত্ত। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নেছারাবাদ-কাউখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাবিহা মেহবুবা, নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান।

সভায় স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল হাসান বলেন, ‘নেছারাবাদ উপজেলায় যেন কোনো নির্দোষ ও নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা না হয়। গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন বা হয়রানি বন্ধ করতে হবে।’ প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমনও ইতিপূর্বে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে একই ধরনের অনুরোধ জানিয়েছেন।’ পাশাপাশি ধর্মকে অপব্যবহার করে নেছারাবাদে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি যেন না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে একই সভায় বক্তব্য দেন জামায়াত নেতা মো. গোলাম আযম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অতীতে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে নির্দোষ কিছু মানুষকে ধরে গ্রেপ্তার-বাণিজ্য করা হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান তিনি।

নেছারাবাদ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রায়হান মাহমুদের সঞ্চালনায় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন, নেছারাবাদ সেনাক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন আল আরাফ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন জয় প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত