Ajker Patrika

শেষ মুহূর্তেও ছোট-মাঝারি গরুতে টানাটানি, বড় গরুতে খামারিদের হতাশা

­­­নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর গরুর হাট। ছবি: আজকের পত্রিকা
নওগাঁর গরুর হাট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঈদুল আজহা সামনে রেখে নওগাঁর কোরবানির হাটগুলো শেষ মুহূর্তে আরও জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন হাটে বাড়ছে মানুষের ভিড়, আসছে নানা আকৃতির গবাদিপশু। তবে পশুর এই আধিক্যের ভিড়ে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে খামারিদের দুর্দশার চিত্র। বিশেষ করে, বড় গরু নিয়ে হাটে আসা খামারিরা পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। চাহিদা কম, দাম উঠছে না, অথচ খরচের পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার গদগদ চেহারার আড়ালে জমে উঠেছে ক্ষোভ আর হতাশা।

নওগাঁ জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ৩৮ হাজার ৫৭৩টি খামারে দেশি, ফ্রিজিয়ান ও অস্ট্রেলিয়ান জাতসহ প্রায় ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩২০টি গবাদিপশু প্রস্তুত হয়েছে। অথচ জেলার কোরবানির পশুর চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩৭টি। অর্থাৎ প্রায় ৪ লাখ পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। এই উদ্বৃত্তই এখন খামারিদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেলার সবচেয়ে বড় হাট ছাতরা, চৌবাড়িয়া, মাতাজিহাটসহ বিভিন্ন হাটে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর গড়াতেই ভিড় জমেছে ক্রেতা-বিক্রেতায়। সারা বছর লালন-পালন করা গরু নিয়ে হাজির হয়েছেন বিভিন্ন গ্রামের খামারি ও প্রান্তিক চাষিরা। তাঁদের মধ্যে অনেকে ছোট ও মাঝারি গরু তুলনামূলক ভালো দামে বিক্রি করতে পারলেও বড় গরু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। হাটে এবার বাইরের ব্যাপারীও কম। স্থানীয় লোকজনই বিকিকিনি করছেন বেশি।

চৌবাড়িয়া হাটে মৈনম থেকে আসা খামারি মো. আলমগীর বলেন, বড় গরু কিনতে কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছে না। অথচ গোখাদ্যের দাম বাড়ায় প্রতিটি গরুতে কমপক্ষে ১০-১৫ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। এখন হাটে দাম উঠছে না। বড় গরু কেনার ব্যাপারীও হাটে নেই।

একই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন গরু বিক্রেতা মোসলেম আলী। তাঁর ভাষায়, ‘চারটা গরু এনেছি। দুটা মাঝারি, দুটা বড়। মাঝারিগুলোর দিকে লোকজন তাকাচ্ছে, বড়গুলোয় কেউ দরদামই করছে না। বাজারে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার গরুর চাহিদাই বেশি। এর বেশি হলেই মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে ক্রেতা।’

ছাতরা হাটে আসা খামারি রায়হান আলম বলেন, ‘একটা গরুর দাম চেয়েছিলাম ১ লাখ ৪০ হাজার, কেউ ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি বলছে না। বাড়ি নিয়ে গেলে খরচ আরও বাড়বে, তাই বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করে দিলাম।’

মাতাজি হাটে পত্নীতলার খামারি আবদুস সাত্তার বললেন, ‘বড় গরু পালন করেছি বিদেশি জাতের সঙ্গে দেশি সংকরায়ণ করে। খাবার, টিকা, পরিচর্যা মিলিয়ে অনেক খরচ গেছে। কিন্তু হাটে এসে দেখি দামই উঠছে না।’

ধামইরহাটের প্রান্তিক খামারি ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ‘ধার-দেনা করে খরচ করেছি। এখন দাম না পেলে বিপদে পড়ে যাব। শেষ মুহূর্তে গরু বিক্রি করতে এসে দেখি লোকসান হচ্ছে ২০ হাজার টাকা। বাধ্য হয়ে ফেরত নিয়ে যাচ্ছি।’

ক্রেতারা অবশ্য বিষয়টি অন্যভাবে দেখছেন। রাজশাহী থেকে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন, হাটে দেশি গরু ভালোই উঠেছে। কিন্তু দাম একটু বেশি। গত বছরের তুলনায় ৮-১২ হাজার টাকা বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। যাঁরা বড় গরু কিনছেন, তাঁরা সুবিধা করতে পারছেন।

আকতার হোসেন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘আমরা শেষ দিকেই গরু কিনি। শেষ মুহূর্তের এই হাটগুলোতে দেখতেছি ছোট গরুগুলোর দাম তুলনামূলক একটু বেশি মনে হলেও বড় গরুর দাম কম। বড় গরু প্রয়োজন নেই—এ জন্য কিনতেও পারছি না। হাট ঘুরে দেখেশুনে কিনব।’

আরেক ক্রেতা তানভীর আহমেদ বলেন, ‘বিক্রেতারা বলছেন লোকসান, কিন্তু আমরা যারা কিনতে আসছি, তাদের কাছে মনে হচ্ছে দাম বেশি। দুই পক্ষই আসলে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মাহফুজার রহমান বলেন, ‘খামারিরা যাতে সঠিক দাম পান, সে জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তবে বাজারে চাহিদা ও জোগানের যে পার্থক্য তৈরি হয়েছে, তা বিবেচনায় নিলে বড় গরুর দাম কিছুটা কমে যাওয়া স্বাভাবিক।’

নওগাঁর জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘পশুর হাটগুলো সুশৃঙ্খল রাখতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। খামারিরা যেন ন্যায্য দাম পান, সে বিষয়েও আমরা সচেষ্ট। ভারতীয় গরু যাতে না ঢোকে, সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত