Ajker Patrika

রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন থাকতেও অস্ত্র নিয়ে রোগী দেখতেন রায়হান

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪, ১৪: ৩০
রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন থাকতেও অস্ত্র নিয়ে রোগী দেখতেন রায়হান

শ্রেণিকক্ষে ছাত্রকে গুলি করার ঘটনায় গ্রেপ্তার সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক)। তিনি ছিলেন রামেক শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তিনি রামেক হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করেছেন। এ ছাড়া পরে কিছুদিন গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিলেন। এসব হাসপাতালে তিনি অস্ত্র নিয়েই রোগী দেখতেন। অস্ত্র দেখিয়ে অনেককে ভয়ভীতিও দেখিয়েছেন। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে তিনি রামেক হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করেন। ওই সময়ই তাঁর হাতে একাধিকবার আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। একাধিকবার তিনি অস্ত্র উঁচিয়েছেন রোগীর স্বজনদের দিকে। তবে কথায় কথায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট কর্মসূচির কারণে জিম্মি হাসপাতাল কিংবা কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। যদিও রায়হান শরীফের কারণে রামেক হাসপাতাল উত্তপ্ত হয়েছে বারবার। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬ সালে রামেক ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন শফিকুল ইসলাম অপু। আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন কামাল হোসেন। তাদের কমিটিরই সহসভাপতি ছিলেন রায়হান শরীফ। রায়হান শরীফ সভাপতি শফিকুল ইসলামের অনুসারী ছিলেন। সে সময় রামেক হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ছিল ছাত্রলীগের হাতে। ছাত্রলীগ আর ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ এক হয়ে হাসপাতালে কথায় কথায় রোগীর স্বজনদের পেটাত। ওই সময় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের মুখপাত্রও ছিলেন ডা. রায়হান শরীফ। 

অস্ত্রবাজ রায়হান ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রামেক হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। সেদিন ওই ওয়ার্ডে জয় (১৮) নামের এক রোগী মারা যান। তখন রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করেন, জয়কে হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বারবার ডাকা হলেও কেউ যাননি। 

বিনা চিকিৎসায় জয়ের মৃত্যুর পর স্বজনেরা ইন্টার্ন চিকিৎসক ও রামেক ছাত্রলীগের সহসভাপতি রায়হান শরীফের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি তাঁদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে অস্ত্র বের করেন। এরই মধ্যে ছাত্রলীগের আরও ১০-১২ জন নেতা-কর্মী চলে আসেন। তাঁরা রোগীর স্বজনদের জিম্মি করেন। 

এর এক সপ্তাহ পর ১৩ নভেম্বর হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মহসিন আলী (৭৫) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে বিনা চিকিৎসায়। এই ওয়ার্ডে দায়িত্বে ছিলেন রামেক ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপু। মহসিনের মৃত্যুর পর তাঁর দুই ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০) ও আনারুল ইসলাম (৩০) হাসপাতালে আহাজারির সঙ্গে চিকিৎসকদের অভিশাপ দেন। 

এ সময় শফিকুল ইসলাম অপু এই রায়হান শরীফসহ আরও ১০-১২ জন ইন্টার্ন চিকিৎসককে ফোন করে ডাকেন। রায়হান শরীফ সেদিনও দুই ভাইয়ের দিকে অস্ত্র তাক করেন। এ সময় তাঁদের মা রহিমা বিবি (৬৫) দুই ছেলের মাঝে দাঁড়িয়ে যান। পরে দুই ভাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সেদিন পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

পরে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে রহিমা বিবি বলেছিলেন, ‘একজন ইন্টার্নির হাতে পিস্তল ছিল। সে আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তখন ছেলেরা বলছে, ‘মারেন, বাপরে মারলেন, আমরাকেও মারেন।’ ’ পরে গুলি না করে আমার ছেলেদের পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাদের পুলিশে দেওয়া হয়। তাদের বাবার লাশ মর্গে পড়ে থাকে।’ 

এ ঘটনার দুই দিন পর ১৫ নভেম্বর হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে নাহিদ হোসেন (২৬) ও সাদ্দাম হোসেন (৩০) নামে রোগীর দুই স্বজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখমের পর পুলিশের হাতে তুলে দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। ভর্তির এক দিন পরও রোগী জয়নাল হোসেনের (৭০) চিকিৎসা হচ্ছিল না বলে সেদিন ওই দুজন ওয়ার্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও ছাত্রলীগের কর্মী কে এম সালাউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন। এ সময় তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে তাঁদের মারধর করা হয়। সেদিনও সালাউদ্দিনের পক্ষে ওয়ার্ডে গিয়ে দুজনকে মারধর করেন রায়হান শরীফ। 

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘রায়হান শরীফ ছাত্রজীবনেই একটা মেশিন (অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র) সংগ্রহ করে কাছে রাখত। ওই সময় শিবির দমনে তার অবদান ছিল। সে কারণে ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতাদের সুনজরে থাকত। রায়হানের সাহসে সে সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও খুব বেপরোয়া ছিল। কয়েক দিন পরপরই রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ঝামেলা হতো। রায়হান অস্ত্র দেখিয়ে বেড়াত। কলেজেও তখন শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং ছিল। ছাত্রলীগের এই গ্রুপটা প্রভাবশালী এক চিকিৎসক ও শিক্ষককে সমর্থন দিত। তাই হাসপাতালে যত ঝামেলা হতো ওই শিক্ষকই সব ম্যানেজ করতেন।’ 

রামেক ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন এখন সরকারি চাকরিজীবী। গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রজীবনে রায়হানের অবৈধ অস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রায়হান ভাই আমার এক ব্যাচ সিনিয়র ছিলেন। তাই আমি বেশি কিছু জানি না। তবে সংগঠন করতে গেলে অনেক কিছুই রাখা লাগে। তিনি একটু পাগলাটে-রগচটা টাইপের মানুষ ছিলেন। পার্টি টাইমে মজা-মাস্তি করতেন। পরে বিসিএস দিয়ে তো স্বাভাবিক হচ্ছিলেন। হঠাৎ কাল নিউজে দেখলাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রকে গুলি করার ঘটনা।’ 

রামেক ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপু বলেন, ‘রায়হান শরীফ ছাত্রলীগের জন্য নিবেদিত ছিলেন। ছাত্রজীবনে সবারই কিছু না কিছু ঘটনা থাকে। পরে তো রায়হান বিসিএস ক্যাডার হলেন। বিয়েও করেছিলেন। পরে বিয়েটা ডিভোর্স হয়ে যায়। অনেক দিন তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই। এখন তাঁকে নিয়ে সারা দেশে আলোচনা হচ্ছে দেখছি।’ 

রায়হান শরীফ ২০২১ সালে বিশেষ বিসিএস দিয়ে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক হন। সেখানে শুরু থেকেই তিনি অস্ত্র দেখিয়ে বেড়াতেন। প্রকাশ্যেই চলাফেরা করতেন অস্ত্র নিয়ে। গত সোমবার শ্রেণিকক্ষে তিনি আরাফাত আমিন তমাল (২২) নামের এক ছাত্রকে গুলি করেন। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। 

এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম তাঁর অস্ত্রটি লাইসেন্স করা। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করার প্রয়োজন মনে করিনি। ছাত্রকে গুলির ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর এখন শুনছি তার অস্ত্র অবৈধ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত