Ajker Patrika

বিএনপিকর্মীর বিরুদ্ধে মাদ্রাসার মালিকানাধীন বাড়ি দখল চেষ্টার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
বিএনপিকর্মীর বিরুদ্ধে মাদ্রাসার মালিকানাধীন বাড়ি দখল চেষ্টার অভিযোগ

রাজশাহীতে এক বিএনপিকর্মীর বিরুদ্ধে মাদ্রাসার মালিকানাধীন একটি বাড়ি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে ওই বাড়ির একটি ঘর দখল করে নিয়েছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের চণ্ডীপুর এলাকার জামিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করে। তবে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি দাবি করেছেন এই জমির মালিকানা তাঁদেরই।

আজ দুপুরে নগরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি আবু তাহের। তিনি দাবি করেন, দানসূত্রে পাওয়া এ বাড়ি দখলের চেষ্টা চলছিল আগে থেকেই। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২২ আগস্ট বিএনপিকর্মী বাড়ির একটি ঘর দখল করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৯৭ সালে কুলসুম খাতুন নামের এক নারী ৭৯ নম্বর সপুরা মৌজার আরএস ৪৪২২ ও ৪৪২৩ নম্বর দাগের ০.০৩৯৭ একর জমি মুহতামিম জামিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসাকে দান করেন। এর দলিল নম্বর-৩০৪২। জমিটি দান করার সময় সেখানে দুটি ঘর ছিল। পরবর্তী সময়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আরও দুটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করে। এই বাড়ির হোল্ডিং নম্বর-১৫। ঘরগুলো ভাড়া দিয়ে যে টাকা পাওয়া যায়, তা মাদ্রাসার এতিম ও দুস্থ ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হয়।

গত ২২ আগস্ট দুপুরে সপুরা গোরস্থানপাড়া এলাকার সাইদুল ইসলাম কটা (৭০) ও তাঁর ছেলে বিএনপিকর্মী শাওনসহ (২৫) অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন ব্যক্তি বাড়ির সামনে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের টাঙানো সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেন। তাঁরা বাড়ির ভাড়াটিয়াকে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেন। এরপর তাঁরা একটি ঘর খালি করে নিজেদের কিছু মালপত্র রেখে ঘরটি দখল করেন। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া থানা ও জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসার বাড়ি দখলমুক্ত করতে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

অধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন, ‘সাইদুল ইসলাম কটা দীর্ঘদিন ধরেই মাদ্রাসার এই বাড়িটি দখল করার চেষ্টা করছেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে যে নারী জমি দান করেছেন, তাঁর ওই জমিতে কোনো স্বত্ব নেই। অথচ এটি বারবার আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও বারবার আপিল করেছেন সাইদুল ইসলাম। এখনো তার একটি আপিল মামলা চলমান। এটি নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই বাড়ি দখল করা হয়েছে। অধ্যক্ষ জানান, সাইদুল ২০০৫ সালের দিকে নিজের নামে এ জমির একটি দলিল তৈরি করেন। পরে তিনি অবৈধভাবে নামজারিও করে নেন ভূমি অফিস থেকে। বিষয়টি জানতে পেরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওই নামজারি বাতিলের জন্য বোয়ালিয়া ভূমি অফিসে আবেদন করে। ২০১৩ সালের ১৫ মে বোয়ালিয়া ভূমি অফিসের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফাজ উদ্দিন আবেদনের আদেশ দেন। তাতে তিনি সাইদুলের নামজারি বাতিল করেন। ফলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ওই বাড়ির স্বত্ব বহাল থাকে।

এর আগে ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের এক রায়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকেই জায়গার দখলকার ঘোষণা করা হয় এবং সাইদুল ইসলামকে ওই জায়গায় যেতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে সাইদুল ইসলাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ ও বিশেষ জেলা জজ প্রথম আদালতে আপিল করেন। ২০১৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আদালতের বিচারক শাহীদুল ইসলাম আজামী উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আপিল আবেদন নামঞ্জুর করেন। আদালতের এ আদেশও মাদ্রাসার পক্ষে যায়।

এরপর গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সাইদুল ইসলাম আবারও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নামজারি বাতিলের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতে আপিল করেন। তিনি এবার দাবি করেন, ওই সম্পত্তিতে সাইদুল ইসলামেরই বাড়ি আছে। এরপর আদালত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জবাব দেওয়ার জন্য নোটিশ দেয়। আইনজীবীর মাধ্যমে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জবাবও দিয়েছে। এই আপিল এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২২ আগস্ট সাইদুল ইসলাম ও তাঁর বিএনপিকর্মীর ছেলে ওই বাড়িতে গিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের টাঙানো সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে এবং একটি ঘর দখল করে।

আবু তাহের আরও বলেন, ‘সাইদুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে শাওন আমাদের বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছেন। ওই বাড়িতে গেলে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন। তাতে আমরা আতঙ্কিত। ভয়ে ওই বাড়িতে যেতে পারছি না। দানসূত্রে পাওয়া মাদ্রাসার মতো একটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাড়ি দখল হয়ে যেতে বসেছে। বাড়িটি দখল হয়ে গেলে মাদ্রাসার অপূরণীয় ক্ষতি হবে। মাদ্রাসার এতিম ও দুস্থ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তাই তিনি মাদ্রাসার বাড়ি রক্ষায় পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

বাড়ি দখলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইদুল ইসলাম কটার ছেলে শাওন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই জমি আমাদের। আমাদের কাগজ আছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে ১৫ বছর ধরে জমি দখলে রেখেছিল। আমরা ইতিমধ্যে এ নিয়ে বসেছিলাম। সেখানে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কাগজ দেখাতে পারেনি। এরপরও তারা কেন সংবাদ সম্মেলন করল সেটা আমি বুঝলাম না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝালকাঠিতে ট্রলির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঝালকাঠির নলছিটিতে ট্রলির ধাক্কায় লিমা আক্তার (৩০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তা৭র স্বামী মোটরসাইকেলচালক আহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের লক্ষণকাঠি এলাকায় বরিশাল-ঝালকাঠি মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম।

নিহত লিমা আক্তার ইশ্বরকাঠি এলাকার ব্যবসায়ী রাজু মল্লিকের স্ত্রী। তাঁদের পাঁচ বছর ও দুই বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে।

নিহত লিমার ভাশুর ও স্থানীয় ইউপি সদস্য পারভেজ মল্লিক জানান, বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে ঝালকাঠি আসার পথে পেছন দিক থেকে একটি ট্রলি তাঁদের ধাক্কা দেয়। এ সময় ট্রলিটি একটি নৌবাহিনীর গাড়িকেও ধাক্কা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় লিমাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক আনিস আলমগীর এখনো ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে সেখানে ডেকে নেওয়া হয়।

আজ সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আনিস আলমগীরের ডিবি কার্যালয়ে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিবি সদস্যরা তাঁকে সেখানে নিয়ে যান। রাজধানীর ধানমন্ডির একটি জিম থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন আনিস আলমগীর।

ডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়েই রয়েছেন। তাঁর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা এখনো জানানো হয়নি।

এদিকে সাংবাদিক আনিস আলমগীর এবং অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ এই অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন মারিয়া কিসপট্টা ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ।

থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্যেও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে দেশে অবস্থান করে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অভিযুক্তরা এসব কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছেন।

এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্তদের এসব বক্তব্য ও অনলাইন কার্যক্রমের কারণে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উসকানি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সহিংসতা এবং অবকাঠামো ধ্বংসের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, এটি সাইবার-সম্পর্কিত একটি ইস্যু। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এখন ঢাকায়

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৩
ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে ঢাকায় পৌঁছেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। ছবি: ফ্লাইটর‍্যাডার২৪
ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে ঢাকায় পৌঁছেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। ছবি: ফ্লাইটর‍্যাডার২৪

রাজধানীর এয়ারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার জন্য ঢাকায় এসেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুর থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন রাগিব সামাদ আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ বেলা ১১টা ২২ মিনিটে বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সড়কপথে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে বিমানবন্দরে নেওয়া হবে এবং সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হবে।

ওসমান হাদির বড় দুই ভাই—ওমর ফারুক এবং আবু বকর সিদ্দিক—তাঁর সঙ্গে বিদেশ যাওয়ার কথা রয়েছে। দুপুরের মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার দিকে হাদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

এরপর গতকাল রোববার ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ (গতকাল রোববার) এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।

আগামীকাল (আজ সোমবার) দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মেডিকেল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল এবং ভ্রমণসংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাক্সিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

ওসমান হাদির চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঠাকুরগাঁওয়ে অবৈধভাবে সার মজুত: ব্যবসায়ীকে ৭ দিনের কারাদণ্ড, ৭৬৬ বস্তা জব্দ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সার মজুত রাখার অভিযোগে এক কীটনাশক ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। একই সঙ্গে দুটি গুদাম থেকে ৭৬৬ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে এবং গুদাম দুটি সিলগালা করা হয়েছে।

রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বড় খোঁচাবাড়ি বাজারের পেছনে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খাইরুল ইসলাম। অভিযানে আব্দুল্লাহ নামের ওই কীটনাশক ব্যবসায়ীর দুটি গুদামে অবৈধভাবে মজুত রাখা বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সার পাওয়া যায়।

সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আব্দুল্লাহকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দ করা ৭৬৬ বস্তা সার গুদামে রেখে সিলগালা করা হয়েছে।

ইউএনও মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। জব্দকৃত সার কিছুদিন পর কৃষি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ন্যায্যমূল্যে উন্মুক্ত বাজারে বিক্রি করা হবে। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত