Ajker Patrika

ট্রাকচালকের পায়ে গুলি, সিরাজগঞ্জের ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম ও মো. এনামুল হক। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম ও মো. এনামুল হক। ছবি: সংগৃহীত

ট্রাকচালককে পায়ে গুলি করার অভিযোগে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও সলঙ্গা থানার সাবেক ওসিসহ ৬ পুলিশ কর্মকর্তার নামে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৯-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সলঙ্গা আমলি আদালতের পেশকার আল-আমিন মামলা করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মামলাটি এফআইআর (রুজু) করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার সকালে বিষয়টি জানতে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারকে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে মামলার প্রধান আসামি উল্লাপাড়া মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মুহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাকচালক যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ট্রাকচালক আন্তজেলা ডাকাত দলের সর্দার। তাঁর বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।’

জানা গেছে, ভুক্তভোগী ট্রাকচালক রোকন মোল্লা (৩৬) পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার নেছড়াপাড়া গ্রামের রহমত মোল্লার ছেলে রোকন মোল্লার ছেলে। ৫ জানুয়ারি তিনি বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা আমলি আদালতে মামলাটি করেন। আদালত মামলার শুনানি শেষে মেডিকেল সনদ দাখিলের জন্য সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের পরিচালককে নির্দেশ দেন। পরে ২৭ জানুয়ারি আদালতে মেডিকেল সনদ দাখিল করলে বিচারক কে এম শাহরিয়ার মামলাটি নথিভুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।

মামলার আসামিরা হলেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মডেল থানার সাবেক ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম, সলঙ্গা থানার সাবেক ওসি মো. এনামুল হক, সলঙ্গা থানার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা শেখ তাজ উদ্দিন আহমেদ, উল্লাপাড়া মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর আব্দুস ছালাম, সলঙ্গা থানার সাব ইন্সপেক্টর মুনছুর রহমান ও সলঙ্গা থানার এএসআই (উপপরিদর্শক) মো. কুদ্দুস।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৩১ মে বাদী ট্রাকের মালামাল পৌঁছে দিয়ে নিজের বাড়ি পাবনায় ফিরছিলেন। ট্রাকটি নিয়ে তিনি ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের উল্লাপাড়া উপজেলার কাওয়াক মোড়ে যখন পৌঁছান, তখন বৃষ্টির কারণে মহাসড়ক পিচ্ছিল থাকায় উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসি আসিফ মোহাম্মদের ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে তাঁর গাড়ির ধাক্কা লাগে। এ সময় ওসি তাঁর কোমরে থাকা রিভলবার বের করে গুলি করার জন্য ট্রাকচালকের দিকে তাক করেন। ট্রাকচালক ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালান। ওসিও ফোর্স নিয়ে তাঁর পেছনে ধাওয়া করেন।

এ পর্যায়ে ট্রাকচালক সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় উল্লাপাড়া থানার ওসির নির্দেশে সলঙ্গা থানার ওসি ও ফোর্স ট্রাকচালককে ধাওয়া করে। পরে সলঙ্গা থানার হরিণ চড়া এলাকায় ট্রাকচালককে আটক করে। এরপর রাস্তার পাশে পুকুরের পানিতে তাঁকে ডুবানো হয়। পুকুর থেকে ট্রাকচালককে তুলে নিয়ে এলে সলঙ্গা থানার ওসি উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসিকে বলেন, স্যার শুট করেন। তখন উল্লাপাড়া থানার ওসি তাঁর রিভলবার দিয়ে ট্রাকচালকের ডান পায়ে গুলি করেন। তিনি চিৎকার করলে সলঙ্গা থানার সাব ইন্সপেক্টর মুনছুর রহমান গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলেন। পরে সলঙ্গা থানায় নিয়ে ট্রাকচালককে মারপিট ও নির্যাতন করা হয়।

পরবর্তী সময়ে ট্রাকচালকের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও ট্রাকচালকের অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হাসপাতালে তাঁর গুলিবিদ্ধ পা কেটে ফেলা হয়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশের নির্যাতনের সময় ট্রাকচালক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ সময় পুলিশ নিজেদের রক্ষায় অস্ত্র, ডাকাতি ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে তিনটি মামলা করেন। ওই তিন মামলায় ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীকালে ৫ মাস ১২ দিন পর উল্লাপাড়া মডেল থানার একটি মামলায় ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কারাবাসের পর গত ১৯ ডিসেম্বর তিনি মুক্তি পান। যে কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে।

ট্রাকচালক রোকন মোল্লা বলেন, ‘উল্লাপাড়া থানার ওসির নির্দেশে আমার পায়ে গুলি করা হয়। এ কারণে আমার একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আমাকে পুকুরের পানিতে চুবিয়ে মুখ বেঁধে থানায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। পুলিশের তিনটি মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলাম। ডিসেম্বর মাসে কারাগার থেকে আমি মুক্তি পেয়ে মামলা করেছি। আমার ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজির সময় গণপিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান নিহত

রাজবাড়ী প্রতি‌নি‌ধি
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর পাংশায় চাঁদাবা‌জি করার সময় জনগ‌ণের পিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট নিহত হ‌য়েছেন। এ সময় দু‌টি অস্ত্রসহ তাঁর সহ‌যো‌গী সে‌লিম শেখ‌কে আটক ক‌রে পু‌লি‌শে দি‌য়েছে জনতা। বুধবার দিবাগত রাত পৌ‌নে ১১টার দি‌কে উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গা গ্রা‌মে এই ঘটনা ঘ‌টে। নিহত সম্রাট উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গার অক্ষয় মন্ড‌লের ছে‌লে। আটক সে‌লিম একই ইউনিয়‌নের বসাকু‌ষ্টিয়া গ্রা‌মের ইসলাম শে‌খের ছে‌লে।

সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরা‌ত দিয়ে পাংশা ম‌ডেল থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, সম্রাট নিজের না‌মেই এক‌টি বা‌হিনী গড়ে তু‌লে মানুষ‌কে ভয়ভী‌তি দে‌খি‌য়ে চাঁদাবা‌জি কর‌তেন। দীর্ঘদিন ভার‌তে পা‌লি‌য়ে থাকার পর সম্প্রতি এলাকায়‌ ফি‌রে এসে এক‌টি বাড়িতে চাঁদা দা‌বি ক‌রেন। কিন্তু তারা চাঁদার টাকা দি‌তে অস্বীকৃতি জানা‌য়। গত রা‌তে সম্রাট তাঁর বা‌হিনীর সদস‌্যদের নি‌য়ে ওই বাড়িতে চাঁদার টাকা আন‌তে যান। এ সময় ওই বাড়ির লোকজন ডাকাত ডাকাত ব‌লে চিৎকার দি‌লে আশপা‌শের লোকজন এসে ধ‌রে তাঁকে গণ‌পিটু‌নি দেয়। এতে ঘটনাস্থ‌লেই তাঁর মৃত‌্যু হয়। এ সময় তাঁর অন‌্য সহ‌যো‌গীরা পালি‌য়ে গে‌লেও অস্ত্রসহ ধরা প‌ড়েন সে‌লিম না‌মের একজন।

ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম আরও জানান, সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সে‌লিম‌ের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করা হয়ে‌ছে। নিহত সম্রা‌টের না‌মে হত‌্যা, চাঁদাবা‌জিসহ একা‌ধিক মামলা র‌য়ে‌ছে। সম্রা‌টের মর‌দেহ ময়ন‌াতদন্তের জন‌্য ম‌র্গে পাঠা‌নোর প্রস্তু‌তি চল‌ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী। ছবি: আজকের পত্রিকা
টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী। ছবি: আজকের পত্রিকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার, সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা জান্নাত সুরভীকে (২৫)। ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় তাঁর নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। পরে তাঁকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়।

‎জানা যায়, গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমান সরকার, সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করে আসছিলেন। তাঁর এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

‎আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে আগে থেকেই ওয়ারেন্ট জারি ছিল। একই সঙ্গে তাঁর অনলাইন কর্মকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।‎

‎টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়াকৈর থানা-পুলিশের কাছে তাহরিমাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
ঘন কুয়াশার কারণে ভোরে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চলছে। পঞ্চগড়ের তেলিপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘন কুয়াশার কারণে ভোরে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চলছে। পঞ্চগড়ের তেলিপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। ভোর থেকেই জেলার সড়ক ও জনপথ ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে। কনকনে ঠান্ডা আর কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এর প্রভাব পড়েছে কর্মজীবী মানুষ থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলোতে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। ঘন কুয়াশার কারণে ভোর থেকেই যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। ভোরে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। শীত নিবারণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

নাইট কোচের চালকেরা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় কিছুই দেখা যায় না। রফিকুল আলী নামের এক চালক বলেন, ‘এত কুয়াশায় সাবধানে গাড়ি চালিয়ে আসতে হয়েছে। শীত এলেই আমাদের এই সমস্যায় পড়তে হয়। কুয়াশায় সামনে কিছুই বোঝা যায় না।’

আরেকজন চালক জানান, কুয়াশার কারণে গতি কমিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

শীতের প্রভাবে জেলার হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর ভিড়। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি এ সময় গরম কাপড় ব্যবহার, উষ্ণ খাবার গ্রহণ এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেন।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। গত শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে তা আবার কমে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী সাইমুজ্জামান জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। প্রাপ্ত শীতবস্ত্রগুলো প্রতিটি উপজেলায় সমানভাবে ভাগ করে শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
মাহমুদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
মাহমুদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন। মোবাইলে আলাপকালে মাহমুদ হোসেন নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মাহমুদ হোসেন ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি এবং প্রখ্যাত সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ভাতিজা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুর-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে এই আসনে বিএনপির একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বলয় গড়ে উঠেছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা যায়।

উল্লেখ্য, পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন আহমদ সোহেল মঞ্জুর সুমন। গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই মাহমুদ হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এ বিষয়ে মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেও ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চেতনাকে ধারণ করে সব সময় দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’

মাহমুদ হোসেন আরও বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনের সাধারণ মানুষ আমাকে এই আসনে নেতৃত্বে দেখতে চান। জনগণের সেই প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিয়েই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিএনপি একটি গণমানুষের দল। সেই গণমানুষের চাওয়াকেই গুরুত্ব দিয়ে সামনে এগোতে চাই।’

মাহমুদ হোসেন জানান, শিগগির তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত