রিমন রহমান, রাজশাহী

একটি হামলার পর রাজশাহীর একটি সাঁওতালপাড়া মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াটিতে ১২টি বাড়ি রয়েছে। আজ সোমবার পাড়ায় গিয়ে শুধু একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধাকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জিনিসপত্র।
এই সাঁওতালপাড়া রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামে। বারনই নদীর তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পুলের ওপর প্রায় পাঁচ বছর আগে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই ১২ পরিবার বাড়ি করে। এর মধ্যে সাতটি পরিবার সাঁওতাল, চারটি ধাঙ্গড় (ওরাঁও) ও একটি রবিদাস সম্প্রদায়ের।
বাড়িগুলোর পাশ দিয়েই খালের মতো বয়ে গেছে বারনই নদী। নদীর পরে মো. বাবলু নামের এক বিএনপি কর্মীর জমি। তাঁর জমির সামনের দিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর বাড়ি করা নিয়ে আগে থেকে ক্ষুব্ধ ছিলেন বিএনপি কর্মী বাবলু। যদিও জায়গাগুলো পাউবোর। গত ৩০ জুলাই সকালে এই বাবলুর সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে সাঁওতালপাড়ার বাসিন্দাদের। এর জেরে দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফা হামলা হয় এ পাড়ায়।
পুলের পাশে সারি সারি ১২টি বাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের। আজ সকালে পাড়ায় ঢুকে প্রথম বাড়িটিতেই যাওয়া হয়। কিন্তু কথা বলার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি। পরের বাড়িটি হিমেন রবিদাসের। বাড়িতে ছিলেন তাঁর শাশুড়ি অমলা দাসী। তিনি জানালেন, তাঁর বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুরে। ১৫ দিন আগে তিনি চিকিৎসার জন্য এখানে এসেছেন। তিনি হাঁটতে পারেন না। এই বাড়িতে থেকে রাজশাহীতে চিকিৎসা করাচ্ছেন। অমলা বলেন, ‘কয়দিন আগে গন্ডগোল হয়েছে। তারপর তো কেউ নাই। আমি চলতে পারি না, আছি।’
হিমেনের পরের বাড়িটিতেও কেউ নেই। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বাড়ির জিনিসপত্র। ঘরের দেয়ালে টানানো রয়েছে বিদ্যুৎ বিলের বেশ কিছু কাগজ। একটি কাগজে দেখা যায়, বাড়িটির মালিক শ্যামল মুর্মু। তিনিই এই সাঁওতালপাড়ার সর্দার। শ্যামলের পরের বাড়িটিও একইভাবে তছনছ অবস্থায় দেখা যায়। এ বাড়ির দেয়ালেও বিদ্যুৎ বিলের কপিগুলো টানানো। একটি কপি নিয়ে দেখা যায়, এই বাড়ির মালিকের নাম বেরজন টুডু। বিলের কপিতে মোবাইল নম্বরও রয়েছে। সেই নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বেরজন টুডুর পরের বাড়িটির দরজা বন্ধ। কয়েকবার ডেকেও ভেতর থেকে কারও সাড়া পাওয়া গেল না। পরের বাড়ির ঘরের টিনে হামলার চিহ্ন স্পষ্ট। টিন ফুটো হয়ে গেছে। বাইরে থেকে ঘরের ভেতর দেখা যাচ্ছে। বিছানায় এখনো মশারি টানানো। ঘরে শুয়ে দুটি কুকুর। বাইরে থেকে টিনের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিতেই ঘেউ ঘেউ করে একটি কুকুর বাড়ির বাইরে এল।
পাড়ার ৭ ও ৮ নম্বর বাড়ির দরজা বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরি। তাতেই ছোট ছোট দুটি তালা লাগানো। পরের বাড়িটির ঘরের মাটির দেয়াল ভাঙা। বাইরে থেকে দেখা গেল, মেঝেতে পড়ে রয়েছে জিনিসপত্র। হাঁড়িতে ভাত ছিল। কয়েক দিন সে ভাত পচে গেছে। পাড়ার ১০ নম্বর বাড়িটিতে কোনো তালা নেই। ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, ঘরে তালা দেওয়া। বারান্দায় দড়িতে ঝুলছে কাপড়চোপড়। পাড়ার অন্য দুটি বাড়িতেও তালা লাগানো। কেউ নেই।
সুনসান এ এলাকার পুলের ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি জানালেন, তিনি ভ্যান চালান। এলাকায় থাকেন না। হামলার পর তিনি শুনেছেন। তিনি জানান, প্রথমে বাবলুর সঙ্গে সাঁওতালদের হাতাহাতি হয়। পরে দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফা হামলা হয়েছে। বিকেলের হামলায় দলের লোকজন ছিল। কোন দল, জানতে চাইলে তিনি তা বলতে চাননি।
কথা হয় আরও এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকালে পাড়ার কয়েকজন বাড়ির সামনে বসে দেশীয় মদ পান করছিলেন। পাশের জমির মালিক বাবলু সেদিক দিয়ে যাওয়ার পথে তাঁদের এভাবে প্রকাশ্যে মদ না খাওয়ার জন্য বলেন। তখন কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পাড়ার এক নারী বাবলুর শার্টের কলার ধরেন। এরপর পুরুষেরা তাঁকে মারধর করেন। পরে বাবলু আবার তাঁর লোকজন নিয়ে এসে দুই দফা এই পাড়ায় হামলা করেন।

পুলের ওপর দিয়ে জমিতে শ্রমিকদের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবলুর স্ত্রী ডলি বেগম। কথা হয় তাঁর সঙ্গেও। তিনি জানান, তাঁর স্বামী বাজারে গেছেন। তাই তিনি খাবার এনেছেন। সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডলি বলেন, ‘এরা আমাদের জমির সামনে বাড়ি করেছে। খুব অত্যাচার করে। জমির ফসল হতে দেয় না। কিছু বলাও যায় না।’
তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মদ খেতে নিষেধ করায় তারা আমার স্বামীকে মেরেছে। তখন আমার স্বামীও লোকজন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু কাউকে মারেনি। তারা ভয়ে পালিয়ে গেছে।’ বাড়িঘর ভাঙল কে, জানতে চাইলে ডলি জানান, তাঁরাই নিজেরা এসে পরে বাড়িঘর ভেঙে গেছেন।
ডলি বেগম বলেন, ‘ঘটনার পর পুলিশ এসেছিল। বলে গেছে যে সাঁওতালরা তাদের বাড়িতে থাকবে। কেউ যেন কিছু না বলে। এতই যখন দরদ, তাহলে তাদের নিয়ে গিয়ে জমি কিনে বাড়ি করে দিক। আপনি এসেছেন, আপনিও নিয়ে যান। নিয়ে গিয়ে এদের বাড়ি করে দেন। এখানে কেন থাকতে হবে।’ এই জায়গা তো পাউবোর—এ কথা বললে ডলি বলেন, ‘সরকারি হলেও তো আমাদের জমির সামনে। আমরা তো খুব অত্যাচারের মধ্যে আছি।’
বিদ্যুৎ বিলের কপিতে পাওয়া নম্বরে ফোন করে পাওয়া যায় এই সাঁওতালপাড়ার সর্দার শ্যামল মুর্মুকে। তিনি জানান, আগে তাঁদের বাড়ি ছিল গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি এলাকায়। সেই এলাকা থেকে তাঁরা এদিকে কৃষিকাজে আসতেন। দূর থেকে আসতেন বলে এলাকার তিনজন কাউন্সিলর পাঁচ বছর আগে তাঁদের এই পুলের ওপর বাড়ি করতে দিয়েছিলেন। সেই বাড়ি ছেড়ে তাঁরা যে যেদিকে পেরেছেন, চলে গেছেন। এখনো ভয়ের মধ্যে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সেদিন ময়লা ফেলাকে কেন্দ্র করে বাবলু পাড়ার এক মহিলাকে খিস্তি করছিল। এতে নিষেধ করলে সে রেগে যায় এবং মালতি মুর্মু নামের এক মহিলাকে মারে। তখন পাড়ার যুবক ছেলেরাও বাবলুকে একটু মারে। ঘটনার পর মালতিকেও হাসপাতালে ভর্তি করি।’
তিনি জানান, এই ঘটনার পর দুপুরে বাবলু কয়েকজনকে নিয়ে এসে হরি, তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বিকেলে পুলিশ আসে। তারা সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশনা দিয়ে যায়। স্থানীয় বিএনপি নেতা মোকছেদ আলীও পুলিশের সঙ্গে গিয়েছিলেন। তাঁরা চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যার আগে আবার দলবল নিয়ে গিয়ে পাড়ায় হামলা করেন বাবলু। তাঁদের কাছে হাঁসুয়া, বল্লম ও ছোরা ছিল। এ রকম আক্রমণ দেখে সাঁওতালপাড়ার সবাই পালিয়ে যান। শ্যামল অভিযোগ করেন, পালানোর সময় কেউ কিছু নিয়ে যেতে পারেননি। সব লুটপাট হয়ে গেছে। তাঁর নিজের বাড়িতে ১০ হাজার টাকা ছিল। সেগুলো লুট হয়েছে। ২৫টি কবুতর ছিল। খাঁচাসহ কবুতরগুলোও নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
শ্যামল বলেন, ‘হরি আর তার বাড়িওয়ালি জমিতে কাজ করে। ১২ হাজার টাকা ছিল। তারা কয়েকটা বস্তায় বাড়ির জিনিসপত্র আর টাকাটা নিয়ে যাচ্ছিল। বাগসারা মোড়ের ওপর গেলে তার কাছ থেকে বস্তাগুলোও কেড়ে নিয়েছে। কেউই কিচ্ছু নিয়ে যেতে পারেনি। সবাই এক কাপড়ে চলে গেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছি। দেখি কী ব্যবস্থা নেয়।’
আজ দুপুরে পবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ‘সাঁওতালদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ হলে বিষয়টি আমি গতকালই অবহিত হয়েছি। আমি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পবা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি।’
পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুপক্ষের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাঁওতালদের কয়েকজন আহত হয়েছিল। আমরা তাদের মামলা করার জন্য ডেকেছি। কিন্তু কেউ মামলা করতে আসেনি। এখন তারা মামলা না করলে তো আমার কিছু করার নেই।’

একটি হামলার পর রাজশাহীর একটি সাঁওতালপাড়া মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াটিতে ১২টি বাড়ি রয়েছে। আজ সোমবার পাড়ায় গিয়ে শুধু একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধাকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জিনিসপত্র।
এই সাঁওতালপাড়া রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামে। বারনই নদীর তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পুলের ওপর প্রায় পাঁচ বছর আগে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই ১২ পরিবার বাড়ি করে। এর মধ্যে সাতটি পরিবার সাঁওতাল, চারটি ধাঙ্গড় (ওরাঁও) ও একটি রবিদাস সম্প্রদায়ের।
বাড়িগুলোর পাশ দিয়েই খালের মতো বয়ে গেছে বারনই নদী। নদীর পরে মো. বাবলু নামের এক বিএনপি কর্মীর জমি। তাঁর জমির সামনের দিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর বাড়ি করা নিয়ে আগে থেকে ক্ষুব্ধ ছিলেন বিএনপি কর্মী বাবলু। যদিও জায়গাগুলো পাউবোর। গত ৩০ জুলাই সকালে এই বাবলুর সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে সাঁওতালপাড়ার বাসিন্দাদের। এর জেরে দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফা হামলা হয় এ পাড়ায়।
পুলের পাশে সারি সারি ১২টি বাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের। আজ সকালে পাড়ায় ঢুকে প্রথম বাড়িটিতেই যাওয়া হয়। কিন্তু কথা বলার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি। পরের বাড়িটি হিমেন রবিদাসের। বাড়িতে ছিলেন তাঁর শাশুড়ি অমলা দাসী। তিনি জানালেন, তাঁর বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুরে। ১৫ দিন আগে তিনি চিকিৎসার জন্য এখানে এসেছেন। তিনি হাঁটতে পারেন না। এই বাড়িতে থেকে রাজশাহীতে চিকিৎসা করাচ্ছেন। অমলা বলেন, ‘কয়দিন আগে গন্ডগোল হয়েছে। তারপর তো কেউ নাই। আমি চলতে পারি না, আছি।’
হিমেনের পরের বাড়িটিতেও কেউ নেই। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বাড়ির জিনিসপত্র। ঘরের দেয়ালে টানানো রয়েছে বিদ্যুৎ বিলের বেশ কিছু কাগজ। একটি কাগজে দেখা যায়, বাড়িটির মালিক শ্যামল মুর্মু। তিনিই এই সাঁওতালপাড়ার সর্দার। শ্যামলের পরের বাড়িটিও একইভাবে তছনছ অবস্থায় দেখা যায়। এ বাড়ির দেয়ালেও বিদ্যুৎ বিলের কপিগুলো টানানো। একটি কপি নিয়ে দেখা যায়, এই বাড়ির মালিকের নাম বেরজন টুডু। বিলের কপিতে মোবাইল নম্বরও রয়েছে। সেই নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বেরজন টুডুর পরের বাড়িটির দরজা বন্ধ। কয়েকবার ডেকেও ভেতর থেকে কারও সাড়া পাওয়া গেল না। পরের বাড়ির ঘরের টিনে হামলার চিহ্ন স্পষ্ট। টিন ফুটো হয়ে গেছে। বাইরে থেকে ঘরের ভেতর দেখা যাচ্ছে। বিছানায় এখনো মশারি টানানো। ঘরে শুয়ে দুটি কুকুর। বাইরে থেকে টিনের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিতেই ঘেউ ঘেউ করে একটি কুকুর বাড়ির বাইরে এল।
পাড়ার ৭ ও ৮ নম্বর বাড়ির দরজা বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরি। তাতেই ছোট ছোট দুটি তালা লাগানো। পরের বাড়িটির ঘরের মাটির দেয়াল ভাঙা। বাইরে থেকে দেখা গেল, মেঝেতে পড়ে রয়েছে জিনিসপত্র। হাঁড়িতে ভাত ছিল। কয়েক দিন সে ভাত পচে গেছে। পাড়ার ১০ নম্বর বাড়িটিতে কোনো তালা নেই। ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, ঘরে তালা দেওয়া। বারান্দায় দড়িতে ঝুলছে কাপড়চোপড়। পাড়ার অন্য দুটি বাড়িতেও তালা লাগানো। কেউ নেই।
সুনসান এ এলাকার পুলের ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি জানালেন, তিনি ভ্যান চালান। এলাকায় থাকেন না। হামলার পর তিনি শুনেছেন। তিনি জানান, প্রথমে বাবলুর সঙ্গে সাঁওতালদের হাতাহাতি হয়। পরে দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফা হামলা হয়েছে। বিকেলের হামলায় দলের লোকজন ছিল। কোন দল, জানতে চাইলে তিনি তা বলতে চাননি।
কথা হয় আরও এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকালে পাড়ার কয়েকজন বাড়ির সামনে বসে দেশীয় মদ পান করছিলেন। পাশের জমির মালিক বাবলু সেদিক দিয়ে যাওয়ার পথে তাঁদের এভাবে প্রকাশ্যে মদ না খাওয়ার জন্য বলেন। তখন কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পাড়ার এক নারী বাবলুর শার্টের কলার ধরেন। এরপর পুরুষেরা তাঁকে মারধর করেন। পরে বাবলু আবার তাঁর লোকজন নিয়ে এসে দুই দফা এই পাড়ায় হামলা করেন।

পুলের ওপর দিয়ে জমিতে শ্রমিকদের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবলুর স্ত্রী ডলি বেগম। কথা হয় তাঁর সঙ্গেও। তিনি জানান, তাঁর স্বামী বাজারে গেছেন। তাই তিনি খাবার এনেছেন। সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডলি বলেন, ‘এরা আমাদের জমির সামনে বাড়ি করেছে। খুব অত্যাচার করে। জমির ফসল হতে দেয় না। কিছু বলাও যায় না।’
তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মদ খেতে নিষেধ করায় তারা আমার স্বামীকে মেরেছে। তখন আমার স্বামীও লোকজন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু কাউকে মারেনি। তারা ভয়ে পালিয়ে গেছে।’ বাড়িঘর ভাঙল কে, জানতে চাইলে ডলি জানান, তাঁরাই নিজেরা এসে পরে বাড়িঘর ভেঙে গেছেন।
ডলি বেগম বলেন, ‘ঘটনার পর পুলিশ এসেছিল। বলে গেছে যে সাঁওতালরা তাদের বাড়িতে থাকবে। কেউ যেন কিছু না বলে। এতই যখন দরদ, তাহলে তাদের নিয়ে গিয়ে জমি কিনে বাড়ি করে দিক। আপনি এসেছেন, আপনিও নিয়ে যান। নিয়ে গিয়ে এদের বাড়ি করে দেন। এখানে কেন থাকতে হবে।’ এই জায়গা তো পাউবোর—এ কথা বললে ডলি বলেন, ‘সরকারি হলেও তো আমাদের জমির সামনে। আমরা তো খুব অত্যাচারের মধ্যে আছি।’
বিদ্যুৎ বিলের কপিতে পাওয়া নম্বরে ফোন করে পাওয়া যায় এই সাঁওতালপাড়ার সর্দার শ্যামল মুর্মুকে। তিনি জানান, আগে তাঁদের বাড়ি ছিল গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি এলাকায়। সেই এলাকা থেকে তাঁরা এদিকে কৃষিকাজে আসতেন। দূর থেকে আসতেন বলে এলাকার তিনজন কাউন্সিলর পাঁচ বছর আগে তাঁদের এই পুলের ওপর বাড়ি করতে দিয়েছিলেন। সেই বাড়ি ছেড়ে তাঁরা যে যেদিকে পেরেছেন, চলে গেছেন। এখনো ভয়ের মধ্যে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সেদিন ময়লা ফেলাকে কেন্দ্র করে বাবলু পাড়ার এক মহিলাকে খিস্তি করছিল। এতে নিষেধ করলে সে রেগে যায় এবং মালতি মুর্মু নামের এক মহিলাকে মারে। তখন পাড়ার যুবক ছেলেরাও বাবলুকে একটু মারে। ঘটনার পর মালতিকেও হাসপাতালে ভর্তি করি।’
তিনি জানান, এই ঘটনার পর দুপুরে বাবলু কয়েকজনকে নিয়ে এসে হরি, তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বিকেলে পুলিশ আসে। তারা সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশনা দিয়ে যায়। স্থানীয় বিএনপি নেতা মোকছেদ আলীও পুলিশের সঙ্গে গিয়েছিলেন। তাঁরা চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যার আগে আবার দলবল নিয়ে গিয়ে পাড়ায় হামলা করেন বাবলু। তাঁদের কাছে হাঁসুয়া, বল্লম ও ছোরা ছিল। এ রকম আক্রমণ দেখে সাঁওতালপাড়ার সবাই পালিয়ে যান। শ্যামল অভিযোগ করেন, পালানোর সময় কেউ কিছু নিয়ে যেতে পারেননি। সব লুটপাট হয়ে গেছে। তাঁর নিজের বাড়িতে ১০ হাজার টাকা ছিল। সেগুলো লুট হয়েছে। ২৫টি কবুতর ছিল। খাঁচাসহ কবুতরগুলোও নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
শ্যামল বলেন, ‘হরি আর তার বাড়িওয়ালি জমিতে কাজ করে। ১২ হাজার টাকা ছিল। তারা কয়েকটা বস্তায় বাড়ির জিনিসপত্র আর টাকাটা নিয়ে যাচ্ছিল। বাগসারা মোড়ের ওপর গেলে তার কাছ থেকে বস্তাগুলোও কেড়ে নিয়েছে। কেউই কিচ্ছু নিয়ে যেতে পারেনি। সবাই এক কাপড়ে চলে গেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছি। দেখি কী ব্যবস্থা নেয়।’
আজ দুপুরে পবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ‘সাঁওতালদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ হলে বিষয়টি আমি গতকালই অবহিত হয়েছি। আমি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পবা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি।’
পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুপক্ষের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাঁওতালদের কয়েকজন আহত হয়েছিল। আমরা তাদের মামলা করার জন্য ডেকেছি। কিন্তু কেউ মামলা করতে আসেনি। এখন তারা মামলা না করলে তো আমার কিছু করার নেই।’
রিমন রহমান, রাজশাহী

একটি হামলার পর রাজশাহীর একটি সাঁওতালপাড়া মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াটিতে ১২টি বাড়ি রয়েছে। আজ সোমবার পাড়ায় গিয়ে শুধু একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধাকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জিনিসপত্র।
এই সাঁওতালপাড়া রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামে। বারনই নদীর তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পুলের ওপর প্রায় পাঁচ বছর আগে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই ১২ পরিবার বাড়ি করে। এর মধ্যে সাতটি পরিবার সাঁওতাল, চারটি ধাঙ্গড় (ওরাঁও) ও একটি রবিদাস সম্প্রদায়ের।
বাড়িগুলোর পাশ দিয়েই খালের মতো বয়ে গেছে বারনই নদী। নদীর পরে মো. বাবলু নামের এক বিএনপি কর্মীর জমি। তাঁর জমির সামনের দিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর বাড়ি করা নিয়ে আগে থেকে ক্ষুব্ধ ছিলেন বিএনপি কর্মী বাবলু। যদিও জায়গাগুলো পাউবোর। গত ৩০ জুলাই সকালে এই বাবলুর সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে সাঁওতালপাড়ার বাসিন্দাদের। এর জেরে দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফা হামলা হয় এ পাড়ায়।
পুলের পাশে সারি সারি ১২টি বাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের। আজ সকালে পাড়ায় ঢুকে প্রথম বাড়িটিতেই যাওয়া হয়। কিন্তু কথা বলার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি। পরের বাড়িটি হিমেন রবিদাসের। বাড়িতে ছিলেন তাঁর শাশুড়ি অমলা দাসী। তিনি জানালেন, তাঁর বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুরে। ১৫ দিন আগে তিনি চিকিৎসার জন্য এখানে এসেছেন। তিনি হাঁটতে পারেন না। এই বাড়িতে থেকে রাজশাহীতে চিকিৎসা করাচ্ছেন। অমলা বলেন, ‘কয়দিন আগে গন্ডগোল হয়েছে। তারপর তো কেউ নাই। আমি চলতে পারি না, আছি।’
হিমেনের পরের বাড়িটিতেও কেউ নেই। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বাড়ির জিনিসপত্র। ঘরের দেয়ালে টানানো রয়েছে বিদ্যুৎ বিলের বেশ কিছু কাগজ। একটি কাগজে দেখা যায়, বাড়িটির মালিক শ্যামল মুর্মু। তিনিই এই সাঁওতালপাড়ার সর্দার। শ্যামলের পরের বাড়িটিও একইভাবে তছনছ অবস্থায় দেখা যায়। এ বাড়ির দেয়ালেও বিদ্যুৎ বিলের কপিগুলো টানানো। একটি কপি নিয়ে দেখা যায়, এই বাড়ির মালিকের নাম বেরজন টুডু। বিলের কপিতে মোবাইল নম্বরও রয়েছে। সেই নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বেরজন টুডুর পরের বাড়িটির দরজা বন্ধ। কয়েকবার ডেকেও ভেতর থেকে কারও সাড়া পাওয়া গেল না। পরের বাড়ির ঘরের টিনে হামলার চিহ্ন স্পষ্ট। টিন ফুটো হয়ে গেছে। বাইরে থেকে ঘরের ভেতর দেখা যাচ্ছে। বিছানায় এখনো মশারি টানানো। ঘরে শুয়ে দুটি কুকুর। বাইরে থেকে টিনের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিতেই ঘেউ ঘেউ করে একটি কুকুর বাড়ির বাইরে এল।
পাড়ার ৭ ও ৮ নম্বর বাড়ির দরজা বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরি। তাতেই ছোট ছোট দুটি তালা লাগানো। পরের বাড়িটির ঘরের মাটির দেয়াল ভাঙা। বাইরে থেকে দেখা গেল, মেঝেতে পড়ে রয়েছে জিনিসপত্র। হাঁড়িতে ভাত ছিল। কয়েক দিন সে ভাত পচে গেছে। পাড়ার ১০ নম্বর বাড়িটিতে কোনো তালা নেই। ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, ঘরে তালা দেওয়া। বারান্দায় দড়িতে ঝুলছে কাপড়চোপড়। পাড়ার অন্য দুটি বাড়িতেও তালা লাগানো। কেউ নেই।
সুনসান এ এলাকার পুলের ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি জানালেন, তিনি ভ্যান চালান। এলাকায় থাকেন না। হামলার পর তিনি শুনেছেন। তিনি জানান, প্রথমে বাবলুর সঙ্গে সাঁওতালদের হাতাহাতি হয়। পরে দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফা হামলা হয়েছে। বিকেলের হামলায় দলের লোকজন ছিল। কোন দল, জানতে চাইলে তিনি তা বলতে চাননি।
কথা হয় আরও এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকালে পাড়ার কয়েকজন বাড়ির সামনে বসে দেশীয় মদ পান করছিলেন। পাশের জমির মালিক বাবলু সেদিক দিয়ে যাওয়ার পথে তাঁদের এভাবে প্রকাশ্যে মদ না খাওয়ার জন্য বলেন। তখন কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পাড়ার এক নারী বাবলুর শার্টের কলার ধরেন। এরপর পুরুষেরা তাঁকে মারধর করেন। পরে বাবলু আবার তাঁর লোকজন নিয়ে এসে দুই দফা এই পাড়ায় হামলা করেন।

পুলের ওপর দিয়ে জমিতে শ্রমিকদের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবলুর স্ত্রী ডলি বেগম। কথা হয় তাঁর সঙ্গেও। তিনি জানান, তাঁর স্বামী বাজারে গেছেন। তাই তিনি খাবার এনেছেন। সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডলি বলেন, ‘এরা আমাদের জমির সামনে বাড়ি করেছে। খুব অত্যাচার করে। জমির ফসল হতে দেয় না। কিছু বলাও যায় না।’
তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মদ খেতে নিষেধ করায় তারা আমার স্বামীকে মেরেছে। তখন আমার স্বামীও লোকজন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু কাউকে মারেনি। তারা ভয়ে পালিয়ে গেছে।’ বাড়িঘর ভাঙল কে, জানতে চাইলে ডলি জানান, তাঁরাই নিজেরা এসে পরে বাড়িঘর ভেঙে গেছেন।
ডলি বেগম বলেন, ‘ঘটনার পর পুলিশ এসেছিল। বলে গেছে যে সাঁওতালরা তাদের বাড়িতে থাকবে। কেউ যেন কিছু না বলে। এতই যখন দরদ, তাহলে তাদের নিয়ে গিয়ে জমি কিনে বাড়ি করে দিক। আপনি এসেছেন, আপনিও নিয়ে যান। নিয়ে গিয়ে এদের বাড়ি করে দেন। এখানে কেন থাকতে হবে।’ এই জায়গা তো পাউবোর—এ কথা বললে ডলি বলেন, ‘সরকারি হলেও তো আমাদের জমির সামনে। আমরা তো খুব অত্যাচারের মধ্যে আছি।’
বিদ্যুৎ বিলের কপিতে পাওয়া নম্বরে ফোন করে পাওয়া যায় এই সাঁওতালপাড়ার সর্দার শ্যামল মুর্মুকে। তিনি জানান, আগে তাঁদের বাড়ি ছিল গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি এলাকায়। সেই এলাকা থেকে তাঁরা এদিকে কৃষিকাজে আসতেন। দূর থেকে আসতেন বলে এলাকার তিনজন কাউন্সিলর পাঁচ বছর আগে তাঁদের এই পুলের ওপর বাড়ি করতে দিয়েছিলেন। সেই বাড়ি ছেড়ে তাঁরা যে যেদিকে পেরেছেন, চলে গেছেন। এখনো ভয়ের মধ্যে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সেদিন ময়লা ফেলাকে কেন্দ্র করে বাবলু পাড়ার এক মহিলাকে খিস্তি করছিল। এতে নিষেধ করলে সে রেগে যায় এবং মালতি মুর্মু নামের এক মহিলাকে মারে। তখন পাড়ার যুবক ছেলেরাও বাবলুকে একটু মারে। ঘটনার পর মালতিকেও হাসপাতালে ভর্তি করি।’
তিনি জানান, এই ঘটনার পর দুপুরে বাবলু কয়েকজনকে নিয়ে এসে হরি, তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বিকেলে পুলিশ আসে। তারা সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশনা দিয়ে যায়। স্থানীয় বিএনপি নেতা মোকছেদ আলীও পুলিশের সঙ্গে গিয়েছিলেন। তাঁরা চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যার আগে আবার দলবল নিয়ে গিয়ে পাড়ায় হামলা করেন বাবলু। তাঁদের কাছে হাঁসুয়া, বল্লম ও ছোরা ছিল। এ রকম আক্রমণ দেখে সাঁওতালপাড়ার সবাই পালিয়ে যান। শ্যামল অভিযোগ করেন, পালানোর সময় কেউ কিছু নিয়ে যেতে পারেননি। সব লুটপাট হয়ে গেছে। তাঁর নিজের বাড়িতে ১০ হাজার টাকা ছিল। সেগুলো লুট হয়েছে। ২৫টি কবুতর ছিল। খাঁচাসহ কবুতরগুলোও নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
শ্যামল বলেন, ‘হরি আর তার বাড়িওয়ালি জমিতে কাজ করে। ১২ হাজার টাকা ছিল। তারা কয়েকটা বস্তায় বাড়ির জিনিসপত্র আর টাকাটা নিয়ে যাচ্ছিল। বাগসারা মোড়ের ওপর গেলে তার কাছ থেকে বস্তাগুলোও কেড়ে নিয়েছে। কেউই কিচ্ছু নিয়ে যেতে পারেনি। সবাই এক কাপড়ে চলে গেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছি। দেখি কী ব্যবস্থা নেয়।’
আজ দুপুরে পবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ‘সাঁওতালদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ হলে বিষয়টি আমি গতকালই অবহিত হয়েছি। আমি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পবা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি।’
পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুপক্ষের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাঁওতালদের কয়েকজন আহত হয়েছিল। আমরা তাদের মামলা করার জন্য ডেকেছি। কিন্তু কেউ মামলা করতে আসেনি। এখন তারা মামলা না করলে তো আমার কিছু করার নেই।’

একটি হামলার পর রাজশাহীর একটি সাঁওতালপাড়া মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াটিতে ১২টি বাড়ি রয়েছে। আজ সোমবার পাড়ায় গিয়ে শুধু একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধাকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জিনিসপত্র।
এই সাঁওতালপাড়া রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামে। বারনই নদীর তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পুলের ওপর প্রায় পাঁচ বছর আগে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই ১২ পরিবার বাড়ি করে। এর মধ্যে সাতটি পরিবার সাঁওতাল, চারটি ধাঙ্গড় (ওরাঁও) ও একটি রবিদাস সম্প্রদায়ের।
বাড়িগুলোর পাশ দিয়েই খালের মতো বয়ে গেছে বারনই নদী। নদীর পরে মো. বাবলু নামের এক বিএনপি কর্মীর জমি। তাঁর জমির সামনের দিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর বাড়ি করা নিয়ে আগে থেকে ক্ষুব্ধ ছিলেন বিএনপি কর্মী বাবলু। যদিও জায়গাগুলো পাউবোর। গত ৩০ জুলাই সকালে এই বাবলুর সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে সাঁওতালপাড়ার বাসিন্দাদের। এর জেরে দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফা হামলা হয় এ পাড়ায়।
পুলের পাশে সারি সারি ১২টি বাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের। আজ সকালে পাড়ায় ঢুকে প্রথম বাড়িটিতেই যাওয়া হয়। কিন্তু কথা বলার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি। পরের বাড়িটি হিমেন রবিদাসের। বাড়িতে ছিলেন তাঁর শাশুড়ি অমলা দাসী। তিনি জানালেন, তাঁর বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুরে। ১৫ দিন আগে তিনি চিকিৎসার জন্য এখানে এসেছেন। তিনি হাঁটতে পারেন না। এই বাড়িতে থেকে রাজশাহীতে চিকিৎসা করাচ্ছেন। অমলা বলেন, ‘কয়দিন আগে গন্ডগোল হয়েছে। তারপর তো কেউ নাই। আমি চলতে পারি না, আছি।’
হিমেনের পরের বাড়িটিতেও কেউ নেই। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বাড়ির জিনিসপত্র। ঘরের দেয়ালে টানানো রয়েছে বিদ্যুৎ বিলের বেশ কিছু কাগজ। একটি কাগজে দেখা যায়, বাড়িটির মালিক শ্যামল মুর্মু। তিনিই এই সাঁওতালপাড়ার সর্দার। শ্যামলের পরের বাড়িটিও একইভাবে তছনছ অবস্থায় দেখা যায়। এ বাড়ির দেয়ালেও বিদ্যুৎ বিলের কপিগুলো টানানো। একটি কপি নিয়ে দেখা যায়, এই বাড়ির মালিকের নাম বেরজন টুডু। বিলের কপিতে মোবাইল নম্বরও রয়েছে। সেই নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বেরজন টুডুর পরের বাড়িটির দরজা বন্ধ। কয়েকবার ডেকেও ভেতর থেকে কারও সাড়া পাওয়া গেল না। পরের বাড়ির ঘরের টিনে হামলার চিহ্ন স্পষ্ট। টিন ফুটো হয়ে গেছে। বাইরে থেকে ঘরের ভেতর দেখা যাচ্ছে। বিছানায় এখনো মশারি টানানো। ঘরে শুয়ে দুটি কুকুর। বাইরে থেকে টিনের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিতেই ঘেউ ঘেউ করে একটি কুকুর বাড়ির বাইরে এল।
পাড়ার ৭ ও ৮ নম্বর বাড়ির দরজা বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরি। তাতেই ছোট ছোট দুটি তালা লাগানো। পরের বাড়িটির ঘরের মাটির দেয়াল ভাঙা। বাইরে থেকে দেখা গেল, মেঝেতে পড়ে রয়েছে জিনিসপত্র। হাঁড়িতে ভাত ছিল। কয়েক দিন সে ভাত পচে গেছে। পাড়ার ১০ নম্বর বাড়িটিতে কোনো তালা নেই। ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, ঘরে তালা দেওয়া। বারান্দায় দড়িতে ঝুলছে কাপড়চোপড়। পাড়ার অন্য দুটি বাড়িতেও তালা লাগানো। কেউ নেই।
সুনসান এ এলাকার পুলের ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি জানালেন, তিনি ভ্যান চালান। এলাকায় থাকেন না। হামলার পর তিনি শুনেছেন। তিনি জানান, প্রথমে বাবলুর সঙ্গে সাঁওতালদের হাতাহাতি হয়। পরে দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফা হামলা হয়েছে। বিকেলের হামলায় দলের লোকজন ছিল। কোন দল, জানতে চাইলে তিনি তা বলতে চাননি।
কথা হয় আরও এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকালে পাড়ার কয়েকজন বাড়ির সামনে বসে দেশীয় মদ পান করছিলেন। পাশের জমির মালিক বাবলু সেদিক দিয়ে যাওয়ার পথে তাঁদের এভাবে প্রকাশ্যে মদ না খাওয়ার জন্য বলেন। তখন কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পাড়ার এক নারী বাবলুর শার্টের কলার ধরেন। এরপর পুরুষেরা তাঁকে মারধর করেন। পরে বাবলু আবার তাঁর লোকজন নিয়ে এসে দুই দফা এই পাড়ায় হামলা করেন।

পুলের ওপর দিয়ে জমিতে শ্রমিকদের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবলুর স্ত্রী ডলি বেগম। কথা হয় তাঁর সঙ্গেও। তিনি জানান, তাঁর স্বামী বাজারে গেছেন। তাই তিনি খাবার এনেছেন। সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডলি বলেন, ‘এরা আমাদের জমির সামনে বাড়ি করেছে। খুব অত্যাচার করে। জমির ফসল হতে দেয় না। কিছু বলাও যায় না।’
তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মদ খেতে নিষেধ করায় তারা আমার স্বামীকে মেরেছে। তখন আমার স্বামীও লোকজন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু কাউকে মারেনি। তারা ভয়ে পালিয়ে গেছে।’ বাড়িঘর ভাঙল কে, জানতে চাইলে ডলি জানান, তাঁরাই নিজেরা এসে পরে বাড়িঘর ভেঙে গেছেন।
ডলি বেগম বলেন, ‘ঘটনার পর পুলিশ এসেছিল। বলে গেছে যে সাঁওতালরা তাদের বাড়িতে থাকবে। কেউ যেন কিছু না বলে। এতই যখন দরদ, তাহলে তাদের নিয়ে গিয়ে জমি কিনে বাড়ি করে দিক। আপনি এসেছেন, আপনিও নিয়ে যান। নিয়ে গিয়ে এদের বাড়ি করে দেন। এখানে কেন থাকতে হবে।’ এই জায়গা তো পাউবোর—এ কথা বললে ডলি বলেন, ‘সরকারি হলেও তো আমাদের জমির সামনে। আমরা তো খুব অত্যাচারের মধ্যে আছি।’
বিদ্যুৎ বিলের কপিতে পাওয়া নম্বরে ফোন করে পাওয়া যায় এই সাঁওতালপাড়ার সর্দার শ্যামল মুর্মুকে। তিনি জানান, আগে তাঁদের বাড়ি ছিল গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি এলাকায়। সেই এলাকা থেকে তাঁরা এদিকে কৃষিকাজে আসতেন। দূর থেকে আসতেন বলে এলাকার তিনজন কাউন্সিলর পাঁচ বছর আগে তাঁদের এই পুলের ওপর বাড়ি করতে দিয়েছিলেন। সেই বাড়ি ছেড়ে তাঁরা যে যেদিকে পেরেছেন, চলে গেছেন। এখনো ভয়ের মধ্যে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সেদিন ময়লা ফেলাকে কেন্দ্র করে বাবলু পাড়ার এক মহিলাকে খিস্তি করছিল। এতে নিষেধ করলে সে রেগে যায় এবং মালতি মুর্মু নামের এক মহিলাকে মারে। তখন পাড়ার যুবক ছেলেরাও বাবলুকে একটু মারে। ঘটনার পর মালতিকেও হাসপাতালে ভর্তি করি।’
তিনি জানান, এই ঘটনার পর দুপুরে বাবলু কয়েকজনকে নিয়ে এসে হরি, তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বিকেলে পুলিশ আসে। তারা সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশনা দিয়ে যায়। স্থানীয় বিএনপি নেতা মোকছেদ আলীও পুলিশের সঙ্গে গিয়েছিলেন। তাঁরা চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যার আগে আবার দলবল নিয়ে গিয়ে পাড়ায় হামলা করেন বাবলু। তাঁদের কাছে হাঁসুয়া, বল্লম ও ছোরা ছিল। এ রকম আক্রমণ দেখে সাঁওতালপাড়ার সবাই পালিয়ে যান। শ্যামল অভিযোগ করেন, পালানোর সময় কেউ কিছু নিয়ে যেতে পারেননি। সব লুটপাট হয়ে গেছে। তাঁর নিজের বাড়িতে ১০ হাজার টাকা ছিল। সেগুলো লুট হয়েছে। ২৫টি কবুতর ছিল। খাঁচাসহ কবুতরগুলোও নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
শ্যামল বলেন, ‘হরি আর তার বাড়িওয়ালি জমিতে কাজ করে। ১২ হাজার টাকা ছিল। তারা কয়েকটা বস্তায় বাড়ির জিনিসপত্র আর টাকাটা নিয়ে যাচ্ছিল। বাগসারা মোড়ের ওপর গেলে তার কাছ থেকে বস্তাগুলোও কেড়ে নিয়েছে। কেউই কিচ্ছু নিয়ে যেতে পারেনি। সবাই এক কাপড়ে চলে গেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছি। দেখি কী ব্যবস্থা নেয়।’
আজ দুপুরে পবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ‘সাঁওতালদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ হলে বিষয়টি আমি গতকালই অবহিত হয়েছি। আমি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পবা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি।’
পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুপক্ষের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাঁওতালদের কয়েকজন আহত হয়েছিল। আমরা তাদের মামলা করার জন্য ডেকেছি। কিন্তু কেউ মামলা করতে আসেনি। এখন তারা মামলা না করলে তো আমার কিছু করার নেই।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, হাসিনার গুলিকে যারা ভয় পায়নি, তারা আর কাউকে বা কোনো শক্তিকেই ভয় পাবে না। ভয় পাবে তারা, যারা চাঁদাবাজি ও ধান্দাবাজিতে লিপ্ত।
২ মিনিট আগে
ঘটনার পর রক্তাক্ত ছেলের প্রাণ বাঁচাতে রিকশায় তুলে হাসপাতালে আনেন বৃদ্ধ বাবা বশির। কিন্তু তাঁর প্রাণপণ চেষ্টা বৃথা যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শহিদ বেঁচে নেই। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
৮ মিনিট আগে
খুলনার পাইকগাছায় রাশিদা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের এনামুল গাজীর স্ত্রী। এ ঘটনায় দেবর মফিজুল ইসলাম গাজী ওরফে মইদুলকে (৩৮) আটক করেছে পুলিশ।
১৬ মিনিট আগে
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
২৫ মিনিট আগেহাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, ‘হাসিনার গুলিকে যারা ভয় পায়নি, তারা আর কাউকে বা কোনো শক্তিকেই ভয় পাবে না। ভয় পাবে তারা, যারা চাঁদাবাজি ও ধান্দাবাজিতে লিপ্ত। আর আমরা আছি সেই সকল চাঁদাবাজ ও ধান্দাবাজদের প্রতিরোধ করার জন্য।’
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হাতিয়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলার জাতীয় যুবশক্তির নতুন আহ্বায়ক কমিটির পরিচিতি সভা হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনসিপি নেতা এসব কথা বলেন।
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে এনসিপির মনোনীত প্রার্থী হান্নান মাসউদ বলেন, যুবকদের ঐক্যের মাধ্যমেই নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করা সম্ভব। আগামী নির্বাচনে যে ভোটের বিপ্লব হবে, তা রক্ষার দায়িত্ব যুবকদের। মানুষের ভোটের আমানত রক্ষার দায়িত্ব যুবকদেরই নিতে হবে।
এনসিপি নেতা আরও বলেন, ‘যারা যুবশক্তির রাজনীতি করতে এসেছে, তারা সবাই নিজের পকেটের খরচে রাজনীতি করছে। নিজেদের মধ্যে পদের জন্য রাজনীতি করা যাবে না। যুবশক্তির পদ নিয়ে কোনো ধরনের ভুল-বোঝাবুঝি যেন না হয়। যুবলীগ-ছাত্রলীগের মতো রাজনীতি করলে চলবে না। সবাইকে মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে।’
এনসিপির হাতিয়া উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক শামছুল তিব্রিজের সভাপতিত্বে পরিচিতি সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় যুবশক্তির নোয়াখালী জেলা আহ্বায়ক নুরে আলম রিপন, হাতিয়া উপজেলা আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউসুফ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈকত হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট আকবর, সদস্যসচিব সাইফুল ইসলাম রাকিব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নুরুল আফছার নিরব ও সিনিয়র সংগঠক ফারদিন নিলয় প্রমুখ।

জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, ‘হাসিনার গুলিকে যারা ভয় পায়নি, তারা আর কাউকে বা কোনো শক্তিকেই ভয় পাবে না। ভয় পাবে তারা, যারা চাঁদাবাজি ও ধান্দাবাজিতে লিপ্ত। আর আমরা আছি সেই সকল চাঁদাবাজ ও ধান্দাবাজদের প্রতিরোধ করার জন্য।’
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হাতিয়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলার জাতীয় যুবশক্তির নতুন আহ্বায়ক কমিটির পরিচিতি সভা হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনসিপি নেতা এসব কথা বলেন।
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে এনসিপির মনোনীত প্রার্থী হান্নান মাসউদ বলেন, যুবকদের ঐক্যের মাধ্যমেই নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করা সম্ভব। আগামী নির্বাচনে যে ভোটের বিপ্লব হবে, তা রক্ষার দায়িত্ব যুবকদের। মানুষের ভোটের আমানত রক্ষার দায়িত্ব যুবকদেরই নিতে হবে।
এনসিপি নেতা আরও বলেন, ‘যারা যুবশক্তির রাজনীতি করতে এসেছে, তারা সবাই নিজের পকেটের খরচে রাজনীতি করছে। নিজেদের মধ্যে পদের জন্য রাজনীতি করা যাবে না। যুবশক্তির পদ নিয়ে কোনো ধরনের ভুল-বোঝাবুঝি যেন না হয়। যুবলীগ-ছাত্রলীগের মতো রাজনীতি করলে চলবে না। সবাইকে মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে।’
এনসিপির হাতিয়া উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক শামছুল তিব্রিজের সভাপতিত্বে পরিচিতি সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় যুবশক্তির নোয়াখালী জেলা আহ্বায়ক নুরে আলম রিপন, হাতিয়া উপজেলা আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউসুফ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈকত হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট আকবর, সদস্যসচিব সাইফুল ইসলাম রাকিব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নুরুল আফছার নিরব ও সিনিয়র সংগঠক ফারদিন নিলয় প্রমুখ।

একটি হামলার পর রাজশাহীর একটি সাঁওতালপাড়া মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াটিতে মোট ১২টি বাড়ি রয়েছে। আজ সোমবার পাড়ায় গিয়ে শুধু একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধাকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জিনিসপত্র। এই সাঁওতালপাড়া রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামে। বারনই নদীর তীরে পা
০৪ আগস্ট ২০২৫
ঘটনার পর রক্তাক্ত ছেলের প্রাণ বাঁচাতে রিকশায় তুলে হাসপাতালে আনেন বৃদ্ধ বাবা বশির। কিন্তু তাঁর প্রাণপণ চেষ্টা বৃথা যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শহিদ বেঁচে নেই। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
৮ মিনিট আগে
খুলনার পাইকগাছায় রাশিদা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের এনামুল গাজীর স্ত্রী। এ ঘটনায় দেবর মফিজুল ইসলাম গাজী ওরফে মইদুলকে (৩৮) আটক করেছে পুলিশ।
১৬ মিনিট আগে
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
২৫ মিনিট আগেযশোর প্রতিনিধি

যশোরে বৃদ্ধ বাবার সামনেই এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার পাগলাদাহ মালোপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুস শহিদ (৪৫)। পেশায় রিকশাচালক শহিদ পাগলাদাহ এলাকার বশির আহমেদের ছেলে।
ঘটনার পর রক্তাক্ত ছেলের প্রাণ বাঁচাতে রিকশায় তুলে হাসপাতালে আনেন বশির। কিন্তু তাঁর প্রাণপণ চেষ্টা বৃথা যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শহিদ বেঁচে নেই। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, শহিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মাদক-সংক্রান্ত পূর্ববিরোধের জের ধরে একই গ্রামের কয়েকজন যুবকের সঙ্গে শহিদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা শহিদকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের আটকে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেঝেতে শহিদের বাবা বশিরকে ঘিরে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে। তাঁর সমস্ত শরীর ছেলের রক্তে ভেজা। সবাই তাঁকে জড়িয়ে কান্না করলেও চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যু দেখে বাকরুদ্ধ বৃদ্ধ বশির।
কিছুক্ষণ পর বশির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার তিন ছেলে, তিন মেয়ে। শহিদ সবার বড়। সন্ধ্যার দিকে শহীদ রিকশা চালিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। মালোপাড়ার রহমানের দোকানের সামনে একই এলাকার জাহাঙ্গীরের চার ছেলে আসিফ, মিরাজ, আলিফ, রিয়াজ এবং মানিক মিয়ার ছেলে ইরানের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল। গন্ডগোল শুনে আমি বাড়ি থেকে বের হই। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আসিফ চাকু দিয়ে ছেলের বুকে, পিঠে আঘাত শুরু করে। আশপাশে নারী, পুরুষ তাকিয়ে দেখলেও দুর্বৃত্তদের হাতে চাকু থাকায় কেউ এগিয়ে আসেননি।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বশির বলেন, ‘আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেও কাউকে ঠেকাতে পারিনি। চাকু দিয়ে বুকে পিঠে-আঘাত করায় শহিদ মাটিতে পড়ে যায়। পরে হামলাকারীর চলে গেলে স্থানীয় একজন রিকশাচালককে সঙ্গে নিয়ে ছেলেকে হাসপাতালে আনি। কিন্তু বাঁচাতে পারলাম না।’
নিহতের বোন শাহিদা খাতুন জানান, গতকাল শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের কথা-কাটাকাটি হয়। তাঁরা তাঁর ভাইয়ের রিকশা কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন। আজ (শনিবার) বিকেলে ফের তাঁরা তাঁর ভাইয়ের রিকশা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন বাধা দিলে তাঁদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। তখনই ওই ব্যক্তিরা চাকু দিয়ে শহিদকে আঘাত করে হত্যা করেন।
শাহিদার ধারণা, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঘোরাফেরা করতেন শহিদ। তাঁদের মধ্যে আসিফ নামের একজন শহিদের কাছে কিছু টাকা পান। ওই টাকা নিয়েই বিরোধের সূত্র ধরে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্রা মল্লিক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই শহিদ মারা যান। তাঁর বুকের বাঁ পাশে ও ওপরে বড় দুটি জখমের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়।
যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক কাজী বাবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, শহিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, মাদক-সংক্রান্ত বিরোধ ও টাকার নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান শুরু করা হয়েছে। পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও তদন্ত শুরু করেছে।

যশোরে বৃদ্ধ বাবার সামনেই এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার পাগলাদাহ মালোপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুস শহিদ (৪৫)। পেশায় রিকশাচালক শহিদ পাগলাদাহ এলাকার বশির আহমেদের ছেলে।
ঘটনার পর রক্তাক্ত ছেলের প্রাণ বাঁচাতে রিকশায় তুলে হাসপাতালে আনেন বশির। কিন্তু তাঁর প্রাণপণ চেষ্টা বৃথা যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শহিদ বেঁচে নেই। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, শহিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মাদক-সংক্রান্ত পূর্ববিরোধের জের ধরে একই গ্রামের কয়েকজন যুবকের সঙ্গে শহিদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা শহিদকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের আটকে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেঝেতে শহিদের বাবা বশিরকে ঘিরে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে। তাঁর সমস্ত শরীর ছেলের রক্তে ভেজা। সবাই তাঁকে জড়িয়ে কান্না করলেও চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যু দেখে বাকরুদ্ধ বৃদ্ধ বশির।
কিছুক্ষণ পর বশির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার তিন ছেলে, তিন মেয়ে। শহিদ সবার বড়। সন্ধ্যার দিকে শহীদ রিকশা চালিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। মালোপাড়ার রহমানের দোকানের সামনে একই এলাকার জাহাঙ্গীরের চার ছেলে আসিফ, মিরাজ, আলিফ, রিয়াজ এবং মানিক মিয়ার ছেলে ইরানের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল। গন্ডগোল শুনে আমি বাড়ি থেকে বের হই। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আসিফ চাকু দিয়ে ছেলের বুকে, পিঠে আঘাত শুরু করে। আশপাশে নারী, পুরুষ তাকিয়ে দেখলেও দুর্বৃত্তদের হাতে চাকু থাকায় কেউ এগিয়ে আসেননি।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বশির বলেন, ‘আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেও কাউকে ঠেকাতে পারিনি। চাকু দিয়ে বুকে পিঠে-আঘাত করায় শহিদ মাটিতে পড়ে যায়। পরে হামলাকারীর চলে গেলে স্থানীয় একজন রিকশাচালককে সঙ্গে নিয়ে ছেলেকে হাসপাতালে আনি। কিন্তু বাঁচাতে পারলাম না।’
নিহতের বোন শাহিদা খাতুন জানান, গতকাল শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের কথা-কাটাকাটি হয়। তাঁরা তাঁর ভাইয়ের রিকশা কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন। আজ (শনিবার) বিকেলে ফের তাঁরা তাঁর ভাইয়ের রিকশা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন বাধা দিলে তাঁদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। তখনই ওই ব্যক্তিরা চাকু দিয়ে শহিদকে আঘাত করে হত্যা করেন।
শাহিদার ধারণা, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঘোরাফেরা করতেন শহিদ। তাঁদের মধ্যে আসিফ নামের একজন শহিদের কাছে কিছু টাকা পান। ওই টাকা নিয়েই বিরোধের সূত্র ধরে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্রা মল্লিক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই শহিদ মারা যান। তাঁর বুকের বাঁ পাশে ও ওপরে বড় দুটি জখমের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়।
যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক কাজী বাবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, শহিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, মাদক-সংক্রান্ত বিরোধ ও টাকার নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান শুরু করা হয়েছে। পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও তদন্ত শুরু করেছে।

একটি হামলার পর রাজশাহীর একটি সাঁওতালপাড়া মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াটিতে মোট ১২টি বাড়ি রয়েছে। আজ সোমবার পাড়ায় গিয়ে শুধু একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধাকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জিনিসপত্র। এই সাঁওতালপাড়া রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামে। বারনই নদীর তীরে পা
০৪ আগস্ট ২০২৫
জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, হাসিনার গুলিকে যারা ভয় পায়নি, তারা আর কাউকে বা কোনো শক্তিকেই ভয় পাবে না। ভয় পাবে তারা, যারা চাঁদাবাজি ও ধান্দাবাজিতে লিপ্ত।
২ মিনিট আগে
খুলনার পাইকগাছায় রাশিদা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের এনামুল গাজীর স্ত্রী। এ ঘটনায় দেবর মফিজুল ইসলাম গাজী ওরফে মইদুলকে (৩৮) আটক করেছে পুলিশ।
১৬ মিনিট আগে
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
২৫ মিনিট আগেখুলনা প্রতিনিধি

খুলনার পাইকগাছায় রাশিদা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের এনামুল গাজীর স্ত্রী। এ ঘটনায় দেবর মফিজুল ইসলাম গাজী ওরফে মইদুলকে (৩৮) আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার সকালে খবর পেয়ে কপিলমুনি ক্যাম্প ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লিচুগাছ থেকে রাশিদার লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, রাশিদার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। গোপনাঙ্গে ক্ষত করা হয়েছে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
স্থানীয়রা ধারণা করছেন, রাতের যেকোনো সময় রাশিদাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। পরে বাড়ির সামনের একটি লিচুগাছে ওড়না দিয়ে তাঁর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয়রা মফিজুল ইসলাম ওরফে মইদুলকে আটক করে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রাখে। পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
ঘটনার বিষয়ে নিহতের মেয়ে তাসমিরা খাতুন জানান, গভীর রাতে তাঁর মাকে তাঁরই চাচা মহিদুল জমির মিউটেশন করার কথা বলে ঘরের বাইরে ডেকে নেয়।
এ ব্যাপারে পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাশিদাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। যদিও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে বিষয়টি বিস্তারিত জানা যাবে। তবে সর্বশেষ এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া জানান, সুরতহাল রিপোর্টে নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা একজনকে আটক করে থানায় দিয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি সন্দেহজনক। এরপরও হত্যা নাকি আত্মহত্যা—তা মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে।

খুলনার পাইকগাছায় রাশিদা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের এনামুল গাজীর স্ত্রী। এ ঘটনায় দেবর মফিজুল ইসলাম গাজী ওরফে মইদুলকে (৩৮) আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার সকালে খবর পেয়ে কপিলমুনি ক্যাম্প ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লিচুগাছ থেকে রাশিদার লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, রাশিদার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। গোপনাঙ্গে ক্ষত করা হয়েছে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
স্থানীয়রা ধারণা করছেন, রাতের যেকোনো সময় রাশিদাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। পরে বাড়ির সামনের একটি লিচুগাছে ওড়না দিয়ে তাঁর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয়রা মফিজুল ইসলাম ওরফে মইদুলকে আটক করে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রাখে। পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
ঘটনার বিষয়ে নিহতের মেয়ে তাসমিরা খাতুন জানান, গভীর রাতে তাঁর মাকে তাঁরই চাচা মহিদুল জমির মিউটেশন করার কথা বলে ঘরের বাইরে ডেকে নেয়।
এ ব্যাপারে পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাশিদাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। যদিও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে বিষয়টি বিস্তারিত জানা যাবে। তবে সর্বশেষ এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া জানান, সুরতহাল রিপোর্টে নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা একজনকে আটক করে থানায় দিয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি সন্দেহজনক। এরপরও হত্যা নাকি আত্মহত্যা—তা মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে।

একটি হামলার পর রাজশাহীর একটি সাঁওতালপাড়া মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াটিতে মোট ১২টি বাড়ি রয়েছে। আজ সোমবার পাড়ায় গিয়ে শুধু একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধাকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জিনিসপত্র। এই সাঁওতালপাড়া রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামে। বারনই নদীর তীরে পা
০৪ আগস্ট ২০২৫
জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, হাসিনার গুলিকে যারা ভয় পায়নি, তারা আর কাউকে বা কোনো শক্তিকেই ভয় পাবে না। ভয় পাবে তারা, যারা চাঁদাবাজি ও ধান্দাবাজিতে লিপ্ত।
২ মিনিট আগে
ঘটনার পর রক্তাক্ত ছেলের প্রাণ বাঁচাতে রিকশায় তুলে হাসপাতালে আনেন বৃদ্ধ বাবা বশির। কিন্তু তাঁর প্রাণপণ চেষ্টা বৃথা যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শহিদ বেঁচে নেই। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
৮ মিনিট আগে
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
২৫ মিনিট আগেঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।
পরে তাঁরা রাস্তার দুপাশে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা মহাসড়কে টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী ও পথচারীরা।
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামালসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। যা খুবই লজ্জাজনক। যতক্ষণ পর্যন্ত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করে আইনের আওতায় আনা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে।’
উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার একই স্থানে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন।

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।
পরে তাঁরা রাস্তার দুপাশে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা মহাসড়কে টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী ও পথচারীরা।
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামালসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। যা খুবই লজ্জাজনক। যতক্ষণ পর্যন্ত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করে আইনের আওতায় আনা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে।’
উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার একই স্থানে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন।

একটি হামলার পর রাজশাহীর একটি সাঁওতালপাড়া মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াটিতে মোট ১২টি বাড়ি রয়েছে। আজ সোমবার পাড়ায় গিয়ে শুধু একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধাকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জিনিসপত্র। এই সাঁওতালপাড়া রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামে। বারনই নদীর তীরে পা
০৪ আগস্ট ২০২৫
জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, হাসিনার গুলিকে যারা ভয় পায়নি, তারা আর কাউকে বা কোনো শক্তিকেই ভয় পাবে না। ভয় পাবে তারা, যারা চাঁদাবাজি ও ধান্দাবাজিতে লিপ্ত।
২ মিনিট আগে
ঘটনার পর রক্তাক্ত ছেলের প্রাণ বাঁচাতে রিকশায় তুলে হাসপাতালে আনেন বৃদ্ধ বাবা বশির। কিন্তু তাঁর প্রাণপণ চেষ্টা বৃথা যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শহিদ বেঁচে নেই। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
৮ মিনিট আগে
খুলনার পাইকগাছায় রাশিদা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের এনামুল গাজীর স্ত্রী। এ ঘটনায় দেবর মফিজুল ইসলাম গাজী ওরফে মইদুলকে (৩৮) আটক করেছে পুলিশ।
১৬ মিনিট আগে