Ajker Patrika

রাবির হল খোলা রাখার দাবিতে অবস্থান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের ধস্তাধস্তি

রাবি প্রতিনিধি  
রাবির প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাবির প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি উপলক্ষে ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো এক সপ্তাহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন আহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষক কোয়ার্টার খোলা রেখে হল বন্ধ কেন?’, ‘আবাসিক হল বন্ধ করা চলবে না’, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কি বন্ধ’ প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ১০টা থেকে কর্মসূচি পালন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে কর্মসূচি চালিয়ে যান। এতে ভবনের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, উপ-উপাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে বেলা দেড়টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন এবং ভবনের তালা খোলার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি হয়। পরে তালা খুলে অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের অবমুক্ত করেন তিনি। মুক্ত হয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর উচ্চবাচ্য শুরু করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তবে এ ঘটনার পরেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া হল বন্ধের সিদ্ধান্ত, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ভ্রুক্ষেপ না করা, প্রক্টরের হামলা ও হল বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকা ফ্যাসিবাদী আচরণেরই অন্তর্ভুক্ত। হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তাঁরা।

অন্যদিকে প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা করতে ও তাঁদের সংকট নিরসনে কাজ করছে প্রশাসন। তবে প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে এ ধরনের কর্মসূচি সে কাজকে ব্যাহত করে।

কর্মসূচির বিষয়ে শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা তৃতীয় দিনের মতো কর্মসূচি পালন করছিলাম। এটা ছিল প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি। আমরা ভবনের ফটকে কর্মসূচিতে বসলে উপাচার্য স্যার ভবনের ভেতরে আমাদের শরীর ডিঙিয়ে যাচ্ছিলেন। তবুও তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। আমরা সহযোগিতামূলক আচরণ করলেও তাঁরা আমাদের কোনো সহযোগিতা করেননি। এতে আমরা তালা মারতে বাধ্য হই। দেড়টার দিকে প্রশাসন এসে আমাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে তালা ভাঙতে যায়। এতে আমাদের একজন সহযোদ্ধা আহত হয় এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন প্রক্টর। তবুও আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।’

শিক্ষার্থীরা হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষার্থীরা হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য মূলত প্রশাসন হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এটা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মূলত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের এ সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের বারবার বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা বিষয়টি বুঝতে পারছে না বলেই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।’

কর্মসূচি পালনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের পৃথক পৃথক সমস্যা থাকে। সে সংকট নিরসনে হল প্রাধ্যক্ষরা হলে থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি জানার চেষ্টা করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একটি সভা করতে প্রশাসনিক ভবনের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু একদল আন্দোলনকারী ভবনে তালা দিয়ে আমাদের কাজ ব্যাহত করেছে। এ সময় আমি তালা খুলতে অনুরোধ করলেও তারা যখন খোলেনি, তখন তাদের কাছে থেকে চাবি ছিনিয়ে নিতে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে যেকোনো দাবিতে প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে কাজ ব্যাহত করলে এটা বিশ্ববিদ্যালয়েরই ক্ষতি। যেসব দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক রমজানের বন্ধের ভেতরেও দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁদের ভোগান্তির কথাটাও চিন্তা করতে হবে। এ ঘটনায় আমি প্রক্টর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাব।’

এ ঘটনায় আহত বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ‘আমরা সকাল ১০টা থেকে কর্মসূচি শুরু করলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেউ আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেনি। পরে উপাচার্য স্যার এসেও আমাদের দিকে ভ্রুক্ষেপ না দিয়ে চলে গেছেন। ফলে আমরা ভবনে তালা দিতে বাধ্য হই। পরে প্রক্টর এসে আমাদের ওপর উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তি করলেন। এমনকি তিনি মামলা করার হুঁশিয়ারিও দিয়ে গেলেন। এটাও ফ্যাসিজমের পূর্ব লক্ষণ। তবে আমরা এখানে দমে যাচ্ছি না। আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি প্রশাসন ভবনে প্রবেশের সময়েই তাদের আলোচনার জন্য আহ্বান করি। কিন্তু তারা আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

হল বন্ধের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও যদি বিপদে পড়ে, তাদের পাশে থাকা আমাদের দায়িত্ব। আমি শিক্ষার্থীদের বিষয়টা সমাধানের জন্য প্রাধ্যক্ষ পরিষদকে পরামর্শ দিয়েছি। আশা করছি, দ্রুতই সংকটের সুষ্ঠু সমাধান হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত