Ajker Patrika

রাবির হল খোলা রাখার দাবিতে অবস্থান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের ধস্তাধস্তি

রাবি প্রতিনিধি  
রাবির প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাবির প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি উপলক্ষে ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো এক সপ্তাহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন আহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষক কোয়ার্টার খোলা রেখে হল বন্ধ কেন?’, ‘আবাসিক হল বন্ধ করা চলবে না’, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কি বন্ধ’ প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ১০টা থেকে কর্মসূচি পালন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে কর্মসূচি চালিয়ে যান। এতে ভবনের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, উপ-উপাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে বেলা দেড়টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন এবং ভবনের তালা খোলার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি হয়। পরে তালা খুলে অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের অবমুক্ত করেন তিনি। মুক্ত হয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর উচ্চবাচ্য শুরু করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তবে এ ঘটনার পরেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া হল বন্ধের সিদ্ধান্ত, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ভ্রুক্ষেপ না করা, প্রক্টরের হামলা ও হল বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকা ফ্যাসিবাদী আচরণেরই অন্তর্ভুক্ত। হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তাঁরা।

অন্যদিকে প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা করতে ও তাঁদের সংকট নিরসনে কাজ করছে প্রশাসন। তবে প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে এ ধরনের কর্মসূচি সে কাজকে ব্যাহত করে।

কর্মসূচির বিষয়ে শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা তৃতীয় দিনের মতো কর্মসূচি পালন করছিলাম। এটা ছিল প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি। আমরা ভবনের ফটকে কর্মসূচিতে বসলে উপাচার্য স্যার ভবনের ভেতরে আমাদের শরীর ডিঙিয়ে যাচ্ছিলেন। তবুও তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। আমরা সহযোগিতামূলক আচরণ করলেও তাঁরা আমাদের কোনো সহযোগিতা করেননি। এতে আমরা তালা মারতে বাধ্য হই। দেড়টার দিকে প্রশাসন এসে আমাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে তালা ভাঙতে যায়। এতে আমাদের একজন সহযোদ্ধা আহত হয় এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন প্রক্টর। তবুও আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।’

শিক্ষার্থীরা হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষার্থীরা হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য মূলত প্রশাসন হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এটা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মূলত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের এ সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের বারবার বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা বিষয়টি বুঝতে পারছে না বলেই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।’

কর্মসূচি পালনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের পৃথক পৃথক সমস্যা থাকে। সে সংকট নিরসনে হল প্রাধ্যক্ষরা হলে থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি জানার চেষ্টা করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একটি সভা করতে প্রশাসনিক ভবনের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু একদল আন্দোলনকারী ভবনে তালা দিয়ে আমাদের কাজ ব্যাহত করেছে। এ সময় আমি তালা খুলতে অনুরোধ করলেও তারা যখন খোলেনি, তখন তাদের কাছে থেকে চাবি ছিনিয়ে নিতে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে যেকোনো দাবিতে প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে কাজ ব্যাহত করলে এটা বিশ্ববিদ্যালয়েরই ক্ষতি। যেসব দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক রমজানের বন্ধের ভেতরেও দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁদের ভোগান্তির কথাটাও চিন্তা করতে হবে। এ ঘটনায় আমি প্রক্টর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাব।’

এ ঘটনায় আহত বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ‘আমরা সকাল ১০টা থেকে কর্মসূচি শুরু করলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেউ আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেনি। পরে উপাচার্য স্যার এসেও আমাদের দিকে ভ্রুক্ষেপ না দিয়ে চলে গেছেন। ফলে আমরা ভবনে তালা দিতে বাধ্য হই। পরে প্রক্টর এসে আমাদের ওপর উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তি করলেন। এমনকি তিনি মামলা করার হুঁশিয়ারিও দিয়ে গেলেন। এটাও ফ্যাসিজমের পূর্ব লক্ষণ। তবে আমরা এখানে দমে যাচ্ছি না। আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি প্রশাসন ভবনে প্রবেশের সময়েই তাদের আলোচনার জন্য আহ্বান করি। কিন্তু তারা আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

হল বন্ধের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও যদি বিপদে পড়ে, তাদের পাশে থাকা আমাদের দায়িত্ব। আমি শিক্ষার্থীদের বিষয়টা সমাধানের জন্য প্রাধ্যক্ষ পরিষদকে পরামর্শ দিয়েছি। আশা করছি, দ্রুতই সংকটের সুষ্ঠু সমাধান হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কিছু রাজনৈতিক দল বুলেট বিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছে: হাসনাত

ফেনী প্রতিনিধি
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ আজ বুধবার ফেনীতে ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে শোক ও সংহতি সমাবেশে বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ আজ বুধবার ফেনীতে ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে শোক ও সংহতি সমাবেশে বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘কতিপয় রাজনৈতিক দল মিলে তাদের মার্কাগুলো (প্রতীক) বিলুপ্ত করে দিয়ে আবার একটি দলে একীভূত হচ্ছে। একটি আসনের জন্য যাঁরা নিজের দলকে বিলুপ্ত করে দিচ্ছেন, আপনারা নিজেদের দলের প্রতি অন্যায় করছেন। আমরা চেয়েছিলাম এটি ব্যালট বিপ্লব, কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল এখন বুলেট বিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ জন্য সবাইকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ইনসাফের পক্ষে লড়ে যেতে হবে।’

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ফেনী জেলা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট আয়োজিত ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে শোক ও সংহতি সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাসনাত এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত দেড় বছর চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজরা ট্রেলার দেখিয়েছে, পিকচার আভি বাকি হ্যায়। পিকচার দেখবেন নির্বাচনের পর। আগামীর ভোট হোক সংস্কারের পক্ষে, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ও ন্যায়ের পক্ষে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অধিকাংশই পরবর্তীতে কে বা কারা ক্ষমতায় আসতে পারে, সেই দলগুলোর পা চাটার জন্য আবার গুলশান-পল্টনে লাইন দেওয়া শুরু করেছে। দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত আগামীর নির্বাচন ঘিরে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারতে বসে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হচ্ছে। নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আম্পায়ারের ভূমিকা রাখে প্রশাসন ও পুলিশ। কিন্তু আমরা দেখেছি, গত তিনটি নির্বাচনে প্রশাসন ও পুলিশ আম্পায়ার বা রেফারি না নিয়ে তারা নিজেরাই খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। যেটির খেসারত জাতিকে দিতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দিতে হবে।’

হাসনাত আরও বলেন, ‘দলের প্রতি বায়াসড পুলিশ দিয়ে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। যারা এ কাজ করবে তাদের পরিণতি বেনজির, ওসি প্রদীপের মতো হবে। আমরা গুলির মুখ থেকে ফিরে আসা, আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আপনারা যারা নির্বাচন ম্যানিপুলেট করার চিন্তা করছেন, কোনো কারণে এমনটি হলে এ তরুণ প্রজন্ম বসে থাকবে না।’

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান ও ফেনী-২ আসনে দলীয় প্রার্থী মজিবুর রহমান মঞ্জু। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, এবি পার্টির সহসাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শাহ আলম বাদল, এনসিপির জেলা কমিটির আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম সৈকত। এবি পার্টি ফেনী জেলা কমিটির আহ্বায়ক মাস্টার আহছান উল্ল্যাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে সঞ্চালনা করেন এনসিপির জেলা কমিটির সদস্যসচিব শাহ ওয়ালী উল্লাহ মানিক ও এবি পার্টির সদস্যসচিব অধ্যাপক ফজলুল হক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: গ্রেপ্তার আরও ৩, ডিআরইউর মানববন্ধন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৭
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চালানো হয়। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চালানো হয়। ছবি: সংগৃহীত

দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

ডিএমপির হাতে সবশেষ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মো. জাকির হোসেন শান্ত (২৯), মো. স্বপন মন্ডল (৩০) ও নিয়াজ মাহমুদ ফারহান (২১)।

আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ডিএমপি।

এদিকে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা এবং একই সময় নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তার ঘটনায় জড়িত সবাইকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। সংগঠনটির নেতারা আজ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি জানান।

মানববন্ধনে ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ‘প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে যারা হামলা করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল, সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকদের পুড়িয়ে হত্যা করা। শহীদ হাদির (ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র) হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার দৃঢ়সংকল্প ছিল তাদের।’

গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে।

পরে হামলাকারীরা ফার্মগেটে গিয়ে ডেইলি স্টার ভবন ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা করা হয়।

এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩৫০ থেকে ৪৫০ জনকে আসামি করে গত রোববার মামলা করেন প্রথম আলোর হেড অব সিকিউরিটি মেজর অবসরপ্রাপ্ত মো. সাজ্জাদুল কবির। পরদিন পত্রিকাটির হেড অব অপারেশন মিজানুর রহমানও বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন।

দুই মামলায় অভিযোগ করা হয়, হামলাকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করে।

এতে প্রথম আলোর ৩২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। ডেইলি স্টারের ক্ষতির পরিমাণ ৪০ কোটি টাকা।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ধারা ছাড়াও উভয় মামলায় দণ্ডবিধি, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারাও যোগ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে আটক ব্যক্তিকে ছিনতাই, আহত ২

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আজ বুধবার হামলা চালিয়ে আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আজ বুধবার হামলা চালিয়ে আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে বেতনা নদীর খনন করা মাটি লুটের ঘটনায় আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর নাম কেসমত আলী। এ ঘটনায় পুলিশ ফাঁড়ির দুই সদস্য আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় আটজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা হয়েছে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক মাহাবুর রহমান ও কনস্টেবল মেহেদী হাসান।

ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সোহরাব হোসেন বলেন, বেতনা নদীর খনন করা মাটি নেহালপুর ও পাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে লুটপাট করে আসছিল একটি মহল। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সাতক্ষীরা শহরের এক ঠিকাদার নেহালপুর এলাকার বেতনা নদীর ওই মাটি কিনেছেন বলে পুলিশ জানতে পারে। বুধবার ভোরে পুলিশ মাটি কাটতে বাধা দেয়। এ সময় এসআই সোহরাবের ওপর চড়াও হন কেসমত ও তার সহযোগীরা।

একপর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে তিনি ট্রলিভর্তি মাটিসহ কেসমতকে ধরে ফাঁড়িতে আটকে রাখেন। ফাঁড়িতে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে কেসমতের ভাই রহমত, স্ত্রী শাহানারা ও ভাতিজা বাবুরালীসহ ৩০-৩৫ জন ফাঁড়িতে হামলা চালান। তারা কেসমতকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সহকারী উপপরিদর্শক মাহাবুর রহমান ও সিপাহী মেহেদী হাসান বাধা দেন। হামলাকারীরা তাঁদের পিটিয়ে জখম করে কেসমতকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আহত দুই পুলিশ সদস্যকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে কেসমত হোসেন স্বীকার করেন পুলিশের নিষেধ অমান্য করে তিনি সকালে বেতনার মাটি কাটছিলেন। কেসমত বলেন, আমাকে ধরে আনার পর আর কখনো মাটি কাটবেন না বলার পরও ফাঁড়ির কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সোহরাব হোসেন আমাকে মারধর করেছেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় কেসমতসহ আটজনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন মামলা করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক এমপি সারোয়ারের জামিন নামঞ্জুর

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
শাহ্ শহীদ সারোয়ার। ছবি: সংগৃহীত
শাহ্ শহীদ সারোয়ার। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শাহ শহীদ সারোয়ারের (৬৫) অন্তবর্তীকালীন জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ জামিন শুনানির জন‍্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।

দলীয় সূত্র জানা গেছে, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের ডামি নির্বাচনে ঈগল প্রতীকে অংশ নিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হন।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিটর (পিপি) অ‍্যাডভোকেট আনোয়ারুল আজিজ টুটুল এতথ‍্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিজ্ঞ আদালত আসামির অন্তবর্তীকালীন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন‍্য ২৮ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছে।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও গুলি বর্ষণের অভিযোগে মো. আমীর হোসেন নামের এক ব‍্যক্তি গত ১৫ এপ্রিল ময়মনসিংহের চিফ জুডিশিয়াল ম‍্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এরপর চলতি বছরের ২৩ জুন আদালতের নির্দেশে ফুলপুর থানা পুলিশ মামলাটি এফআইআরভুক্ত করেন। এ ঘটনার পর থেকে মামলার আসামিরা পলাতক ছিলেন।

মামলার এজাহারে বাদী দাবি করেন- ঘটনার দিন ফুলপুর পৌর এলাকায় শাহ শহীদ সারোয়ারের নেতৃত্বে মামলার আসামিরা বিস্ফোরণ দ্রব‍্যাদি এবং আগ্নেয়াস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে। এতে আমি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত