Ajker Patrika

বিতর্ক সৃষ্টির কাজে হাত দেবে না সরকার, জাতীয় সংগীত পরিবর্তন প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ৪০
বিতর্ক সৃষ্টির কাজে হাত দেবে না সরকার, জাতীয় সংগীত পরিবর্তন প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো জায়গায় হাত দেবে না সরকার। আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী ইসলামিক ফাউন্ডেশন চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘এগুলো বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস। আমাদের প্রধান উপদেষ্টাও বারবার বলেছেন, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো জায়গায় আমরা হাত দেব না। আমরা হলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশনকে রিস্টোর করা। পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি এনসিওর করা।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের ইকোনমিতে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ফরেন এক্সচেঞ্জ এসেছে। আরও আসছে। এটাকে যদি আমরা আরও বেশি বাড়াতে পারি, একটা কনজিনিয়াল অ্যাটমোস্ফিয়ার যদি তৈরি হয়, যখনই তৈরি হয়—আমরা নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা বিদায় নেব।’ 

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে যে বিজয় এসেছে, এরপরে বিদেশি মিডিয়াতে বলা হচ্ছে এখানে সনাতন ধর্ম, বৌদ্ধধর্ম—এসব ধর্মের মানুষের ঘরবাড়ি-উপাসনালয়ে হামলা হচ্ছে। হামলা যে একেবারে হয়নি, সেটা বলব না। তবে সেটা একেবারে বিক্ষিপ্ত। এটা খুব বেশি গুরুত্ব রাখে না।’ 

তিনি বলেন, ‘মসজিদ, মন্দির, মাজার ভাঙা গর্হিত কাজ। যারা এ সমস্ত কাজ করে, তারা মানবতার শত্রু। তারা ক্রিমিনাল। এদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের জানালে মুহূর্তের মধ্যে ব্যবস্থা নেব। আমরা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মাদ্রাসার ছাত্রদের পূজার সময় সম্পৃক্ত করা হলে তারা মন্দির পাহারা দেবে। দুর্গাপূজা আমরা প্রতিটি জায়গায় স্ট্রাইকিং ফোর্স দেব। পাশাপাশি স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করব। তাহলে আমার মনে হয় কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না।’ 

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমার চিফ অ্যাডভাইজারসহ আমরা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছি। একবার না, আমি দুবার গিয়েছি। মতিঝিলে সেনা কল্যাণ সংস্থার পাশে শ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ জিও মন্দির একটা দেবোত্তর সম্পত্তি ছিল। আমরা সেটা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উদ্ধার করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের দিয়েছি। স্পষ্ট বলছি, কোনো দেবোত্তর সম্পত্তি যদি কেউ দখল করে, সে যত শক্তিশালীই হোক, আমরা সেটা উদ্ধার করব। অতএব, হামলার ঘটনা সত্য নয়। বিক্ষিপ্ত ঘটনা হতে পারে।’ 

তিনি বলেন, ‘দিনাজপুরের কান্তজি মন্দির, ওখানে কিছু লোক মসজিদ করবে। আমি সকাল ১০টায় জানলাম ডিসির মাধ্যমে যে কিছু লোক ওখানে এসেছে মসজিদ করবে। আমি এক মিনিটের ভেতরে আমাদের অ্যাডভাইজার গ্রুপ আছে, আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। মুহূর্তের মধ্যে র‍্যাব গিয়ে ঘিরে ফেলেছে। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যুগ যুগ ধরে ধারণ করে আসছি, এটা অটুট থাকবে। আমি শুধু মুসলমানদের উপদেষ্টা নয়।’ 

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা হজের প্যাকেজ মূল্য কমানোর পরিকল্পনা আছে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘হজের সময় হাজিরা যে টাকা দেন, তার একটি পয়সাও আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে রাখি না। তাঁদের সঙ্গে আমরা ৮০ জন ডাক্তার, আরও ২০-৩০ জন নার্স সঙ্গে রাখি। ফাস্ট এইড চিকিৎসা দিই। সৌদিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। এই খরচগুলো আমরা হাজিদের কাছ থেকে নিই না। হজের মূল যেটা খরচ বিমান ভাড়া, সৌদি আরবে থাকা-খাওয়া এবং নিরাপত্তার জন্য সৌদি আরবকে একটা টাকা দিতে হয়। এ মাসেই সৌদি হজমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হবে। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি, তখন টাকা কমিয়ে জনগণের কাছে একটা গ্রহণযোগ্য প্যাকেজ ঘোষণা করতে চাই।’ 

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ-ভারতের সুসম্পর্ক বহাল রাখতে চাই। রাজনাথ মন্ত্রীর বক্তব্য আমরা শুনেছি। কিন্তু বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি আছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট দল ভারতে গেলে হামলা করবে, এ রকম খবরও মিডিয়াতে আসছে। এটা নিয়ে আমাদের আলাদা ক্রিকেট বোর্ড আছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে—ওনারা এটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।’ 

পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় কার্যালয় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন ধর্ম উপদেষ্টা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এই সভার আয়োজন করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আলমগীর রহমান, স্থানীয় সরকারের বিভাগের পরিচালক পারভেজ রায়হান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর মাওলানা জামাল উদ্দিন সন্দীপী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে পাইলিংয়ের সময় ধসে পড়ল পাশের ভবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১০
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের বলা হলেও কর্ণপাত না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলি স্বর্ণকারপট্টির মুজিব সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একাধিক টিম।

সরেজমিন দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন এই ভবনের মালিক স্থানীয় সঞ্জয় কর্মকার, অজয় কর্মকার ও সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পার্শ্ববর্তী ভবনসংলগ্ন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা বা প্যারাসাইলিং ব্যবস্থা ছিল না। এই অবস্থায় পাইলিংয়ের (নিচের অংশ) কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। হঠাৎ করেই ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে দৌড়ে সরে পড়েন নির্মাণশ্রমিক ও শোরুমটির কর্মচারীরা।

বেস্ট বাইয়ের কর্মীরা জানান, তারা সকালে এসে ফ্লোরের টাইলসে ফাটল দেখতে পান। ফাটল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ক্যাশ কাউন্টার টেবিলটা সরিয়ে ফেলেন, এর মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনের এক পাশ।

ধসে পড়া ভবন ও বেস্ট বাই ফ্রাঞ্চাইজের মালিক মনিরা খাতুনের দাবি, এ ঘটনায় তাঁর ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তিনি এর বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বারবার নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা রাতের আঁধারে আমার ভবনের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছে, যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালে উল্টো আমার কর্মচারীদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।’

একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘটনাস্থলে ছুটে আসা শহরের বাসিন্দা ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং তা সঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব তাদের। যদি সঠিকভাবে তদারকি হতো তাহলে এমন দুর্ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভবনমালিকদের একজন সঞ্জয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পৌরসভার প্রশাসক ও ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাবিতে শেখ পরিবারের নামে থাকা ৪ হলের নাম পরিবর্তন

জাবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শেখ হাসিনা ও তাঁর স্বজনদের নামে থাকা চারটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজিজুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শেখ পরিবারের নামে থাকা চারটি হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এসব হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখ হয়েছে ‘শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হল’, শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘নবাব সলিমুল্লাহ হল’। এ ছাড়া শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই চব্বিশ জাগরণী হল’ এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ফেলানী খাতুন হল’ নাম রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত