Ajker Patrika

যে বাজারে ৪৭ কেজিতে মণ

রিমন রহমান
যে বাজারে ৪৭ কেজিতে মণ

রাজশাহী সদর (রাজশাহী): সাধারণ ক্রেতারা যখন এক মণ আম কেনেন, তখন ৪০ কেজিই পান। কিন্তু চাষিরা যখন আড়তে বিক্রি করেন, তখন দিতে হয় ৪৭ কেজি। রাজশাহীতে এই চর্চা বছরের পর বছর ধরেই চলছে। বাড়তি এই সাত কেজি আম ‘ঢলন’ হিসেবে নেন ব্যবসায়ীরা। তবে এ বছর কথা ছিল ৪০ কেজিতেই মণ হবে। ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে বাড়তি আম নিতে পারবেন না। কিন্তু বাস্তবে সে রকম দেখা যাচ্ছে না। চাষিদের এখনো ঢলন দিতে হচ্ছে। ঢলনের কারণে চাষিরা ঠকছেন। কিন্তু তাঁরা অসহায়। যাঁরা ঢলনসহ আম দিতে রাজি হচ্ছেন না, ব্যবসায়ীরা তাঁদের আম কিনছেন ‘ঠিকা’ হিসেবে। অর্থাৎ ক্যারেটে সাজানো আম কত কেজি হতে পারে, এভাবে চোখের আন্দাজ করে দাম ঠিক করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমের ওজনই করা হচ্ছে না।

রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে। আম ছাড়াও এখানে সারা বছর ডাল, পেঁয়াজ, ভুট্টাসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের আড়ত রয়েছে। এসব পণ্যের ক্ষেত্রেও ঢলন প্রথা চলে আসছে। এই ঢলন প্রথা বিলুপ্ত করতে গত বছরের ২৩ অক্টোবর বানেশ্বর বাজার বণিক সমিতির কার্যালয়ে একটি সভা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুনসুর রহমান। ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম হিরা বাচ্চু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুমানা আফরোজ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভূঁইয়া। এতে সভাপতিত্ব করেন বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বণিক সমিতির সহসভাপতি গাজী সুলতান। সভায় স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীরাও উপস্থিত ছিলেন।

ওই সভায় চাষিরা বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে তাঁদের এক মণে অতিরিক্ত কৃষিপণ্য দিতে হয়। দিতে না চাইলে কৃষিপণ্য কেনা হয় না। চাষিরা এই ঢলন প্রথা বাতিলের দাবি জানান। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে সব পণ্যের এক মণ হবে ৪০ কেজিতে। এর বেশি নেওয়া যাবে না। আমের কারবার শুরু হওয়ার পর গত ২১ মে ইউএনও নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ ৪০ কেজিতে মণ ধরেই চাষির কাছ থেকে আম কেনার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি নির্দেশনা জারি করেন। ওজনের সময় এক মণে ৪০ কেজির বেশি নিলে শাস্তিরও ঘোষণা দেন ইউএনও। ওই দিন বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড আইন-২০১৮ অনুসারে বেশ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছিলেন।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো লেনদেন বা মালামাল সরবরাহের কাজে মেট্রিক পদ্ধতির অনুসরণ ব্যতীত অন্য কোনো পদ্ধতির ওজন বা পরিমাপ ব্যবহার করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি যদি ওজন বা পরিমাপ অথবা সংখ্যা মানের মানদণ্ড ছাড়া অন্য কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করলে অনূর্ধ্ব ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এতে আরও বলা হয়, আইন অনুযায়ী মেট্রিক পদ্ধতিতে ৪০ কেজিতে এক মণ। মণে কেনাবেচা হলে ৪০ কেজির বেশি দাবি করা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। যদি মণে ৪০ কেজির বেশি ধরে কেনাবেচা করতে হয়, সে ক্ষেত্রে কেজিতে ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য বলা হয়। কেজিতে ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতি কেজির দাম প্রথমে নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

গত রোববার (২৩ মে) বিকেলে বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে আমের কেনাবেচা জমে উঠেছে। আড়তদারেরা এক মণের জন্য নিচ্ছেন ৪৭ কেজি আম। তাঁরা যখন স্থানীয় খুচরা বিক্রেতা কিংবা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে আম বিক্রি করছেন, তখন দেওয়া হচ্ছে ৪৬ কেজি। আর বানেশ্বরেই যখন খুচরা বিক্রেতারা সাধারণ ভোক্তাদের কাছে আম বিক্রি করছেন, তখন এক মণে ৪০ কেজিই দেওয়া হচ্ছে। এভাবে ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন। আর চাষিরা ঠকছেন।

বানেশ্বর হাটে পুঠিয়া ছাড়াও আশপাশের উপজেলার চাষিরা আম নিয়ে যান। ওই দিন বিকেলে চারঘাটের শলুয়া গ্রামের চাষি শাহীন আলম জানান, তিনি চার ভ্যান আম নিয়ে যান। এর মধ্যে তিন ভ্যান বিক্রি করেছেন। প্রতি মণে তাঁকে সাত কেজি করে ঢলন দিতে হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত তাঁর এক ভ্যান আমও বিক্রি হয়নি। এসব আম ঠিকায় কিনতে চেয়েছেন কয়েকজন আড়তদার। কিন্তু দামে না পোষানোয় তিনি বেচেননি।

বানেশ্বরে খুচরা আম বিক্রি করছিলেন বানেশ্বর কাচারিপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা আড়ত থেকেও আম কিনি, আবার চাষিদের কাছ থেকেও কিনি। আড়তে কিনলে মণে ছয় কেজি করে ঢলন পাই। আর চাষিদের কাছ থেকে কিনলে ওজন করি না। চোখের আন্দাজ করে নিই যে, আমগুলো এত কেজি হতে পারে। সেই হিসাব করে ঠিকায় একটা দাম বলে দিই। চাষির পছন্দ হলে দিয়ে দেন, না হলে অন্যজনকে দেখান। এই হাটে যুগের পর যুগ ধরে এভাবেই আম বেচাকেনা চলছে।

পুঠিয়ার তারাপুর গ্রাম থেকে আম আনেন চাষি আবদুল খালেক। তিনি জানান, এ দিন তিনি গুটি এবং গোপালভোগ জাতের আম এনেছিলেন। আড়তে গুটি আম নেয়নি। সেগুলো ঠিকায় খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করেছেন। আর গোপালভোগগুলো বিক্রি করেছেন আড়তে। প্রতি মণ আমে তাঁকে সাত কেজি করে ঢলন দিতে হয়েছে। খালেক বলেন, ‘ঢলন ছাড়া কেউ আম নেবে না। আবার ঠিকায় আম বিক্রি করে লস। এতে সঠিক দাম পাওয়া যায় না। আমরা চাষিরা সবদিকেই ক্ষতির শিকার। আম কেনার সময়ই ব্যবসায়ীরা লাভ করে নিচ্ছে।

প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঢলন নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বানেশ্বরের আড়তদার ফিরোজ আহমেদ বলেন, আম কাঁচামাল। পচে নষ্ট হয়। তাই আমরা যখন কিনি, তখন ঢলন নিয়ে থাকি সাত কেজি। আবার ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি বিক্রির সময় আমরাও ছয় কেজি ঢলন দিই। প্রশাসনের নির্দেশনার বিষয়ে জানেন কিনা—এমন প্রশ্নে ফিরোজ বলেন, ‘সেটা তো জানি। কিন্তু প্রশাসন তো ব্যবসা বোঝে না। ঢাকায় যাওয়ার পথে যেসব আম নষ্ট হবে, সেটা কি প্রশাসন দেবে? তখন তো ব্যবসায়ীরাই ক্ষতির শিকার হবে। এই ক্ষতি এড়ানোর জন্যই ঢলন।’

বানেশ্বর বাজার বণিক সমিতির সহসভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সুলতান বলেন, এক মণে ৪০ কেজির বেশি নেওয়া যাবে না। এটা আড়তদারদের বলা হয়েছে। কেউ যদি বেশি নেয়, সে ক্ষেত্রে চাষিরা ইউএনওকে ফোন করতে পারেন। তিনি এসে মোবাইল কোর্ট বসাবেন।

এ ব্যাপারে পুঠিয়ার ইউএনও নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢলন না নেওয়া এবং ঠিকায় আম না কেনার জন্য ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রতিদিনই হাটে নজরদারি করি। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেখলে আড়তদারেরা ঢলন নেওয়া বন্ধ করে দেন। তাই হাতেনাতে ধরা যায় না। কোনো চাষিও অভিযোগ করেন না। তবে ঢলন নেওয়া কিংবা ঠিকায় আম কেনার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত