Ajker Patrika

রাজশাহী-১ আসন: বিএনপিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব, প্রস্তুত জামায়াত

  • বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আটজনের নাম শোনা যাচ্ছে।
  • অন্তঃকলহ মোকাবিলা করাই হবে বিএনপির বড় চ্যালেঞ্জ।
  • নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন জামায়াতের মুজিবুর রহমান।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১১
শরীফ উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, মাহফুজুর রহমান মিলন ও সুলতানুল ইসলাম তারেক। ছবি: সংগৃহীত
শরীফ উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, মাহফুজুর রহমান মিলন ও সুলতানুল ইসলাম তারেক। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অন্তর্দ্বন্দ্ব ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে। সংঘাতে প্রাণ গেছে দলের দুই কর্মীর। একই স্থানে সমাবেশ ডাকাকে কেন্দ্র করে ঘটেছে সংঘাত। হয়েছে পাল্টাপাল্টি মামলা। বিপরীতে এর মধ্যে ভোটের মাঠ অনেকটাই গুছিয়ে এনেছে বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ জামায়াতে ইসলামী।

রাজশাহী-১ আসনে বরাবরই ছিল বিএনপির আধিপত্য। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে এখান থেকে এমপি নির্বাচিত হন সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক। ২০১৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এবার আসনটিতে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে তাঁর ভাই মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিনসহ অন্তত আটজনের নাম শোনা যাচ্ছে। বাকি মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে রয়েছেন আমিনুল হকের ফুফাতো বোনের ছেলে ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন, শিল্পপতি সুলতানুল ইসলাম তারেক, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগর বিএনপির সাবেক নেতা কে এম জুয়েল, জিয়া পরিষদের সহকারী মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিপ্লব, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী শাহাদাত হোসেন শাহিন। এ ছাড়া ব্যারিস্টার আমিনুল হকের স্ত্রী আভা হকের নামও শোনা যাচ্ছে।

ব্যারিস্টার আমিনুল হকের আমলে এলাকায় রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাঁর অবদানের কথা এখনো মনে রেখেছেন এলাকাবাসী। ২০০৮ সালে তিনি প্রার্থী হতে পারেননি। আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন তাঁর ভাই এম এনামুল হক। পরের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনেও এমপি হন ফারুক।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর আসনটি আবারও ফিরে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তবে এ ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতই তাঁদের জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে; বিশেষ করে শরীফ উদ্দিন ও সুলতানুল ইসলাম তারেকের সমর্থকেরা একের পর এক সংঘাতে জড়াচ্ছেন। আবার শরীফ উদ্দিনের অনুসারীদের মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।

গত ১১ মার্চ তানোর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে বিএনপির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে শরীফ উদ্দিনকে বরণ করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গানিউল ইসলাম নামের একজন নিহত হন। ২৭ মার্চ তানোরে শরীফের ইফতার মাহফিলের জন্য চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কৃষক দলনেতা নেকশার আলী নিহত হন।

তানোর উপজেলা সদরে গত ১৫ ডিসেম্বর সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় শরীফ উদ্দিনের অনুসারীদের। ৪ জানুয়ারি ভবানীপুরে তারেকের সমাবেশে তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে শরীফ সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি গোদাগাড়ীর বারোমাইল এলাকায় শরীফের অনুসারীদের হামলার শিকার হন তারেকের অনুসারী কয়েকজন নেতা। সবশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গোদাগাড়ীতে একই স্থানে উভয় পক্ষের সমাবেশ আহ্বানকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এসব ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করা হয়েছে।

দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের বাইরে নিজের মতো করে ভোটের মাঠে দৌড়ঝাঁপ করছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। দলের দুঃসময়ে তিনি অনেকে নেতা-কর্মীকে বিনা মূল্যে আইনি সেবা দিয়েছেন। তিনি পরিচ্ছন্ন ইমেজের জন্য সবার কাছে পরিচিত। অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মাঠে নেমেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের পর।

মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারও বাবা, মামা, ভাই এমপি ছিলেন বলেই তিনি মনোনয়ন পাবেন, বিষয়টি এমন নয়। এবার জনপ্রিয়তা, ক্লিন ইমেজ এবং দলের জন্য অবদান বিবেচনা করা হবে। আমি দলের দুঃসময়ে রাজনৈতিক মামলা থেকে বহু নেতা-কর্মীকে জামিন করিয়েছি। শুধু আমাদের উপজেলা নয়, পুরো রাজশাহীতে বিনা মূল্যে এ সেবা দিয়েছি। জনগণ তাদের যোগ্য প্রতিনিধি খুঁজে নেবে। দলও সবকিছু বিবেচনা করবে।’

সুলতানুল ইসলাম তারেক বলেন, ‘দুঃসময়ে আমি সবাইকে সহযোগিতা করেছি। দলকে অর্থসহায়তা দিয়েছি। দল সবকিছু বিবেচনা করবে।’ শরীফ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

রাজশাহী-১ আসনে দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। তিনি ১৯৮৬ সালেও এমপি ছিলেন। এবারও জোরেশোরে ভোটের মাঠে নেমেছেন তিনি। নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন, দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। একক প্রার্থী হওয়ায় পুরো দল তাঁর হয়ে কাজ করছে।

রাজশাহী জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল খালেক বলেন, ‘প্রার্থী ঘোষণার পর আমাদের মাঠ গোছানোর কাজও শেষ। সাংগঠনিকভাবে ভোটের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। মানুষের কাছ থেকে দারুণ সাড়া মিলছে।’

রাজশাহীতে এবি পার্টির সমন্বয়ক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রহমান মুহসেনী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এলাকায় পোস্টার সাঁটিয়েছেন। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্য কোনো দলের কেউ এখনো মাঠে নামেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা-৩ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল, বৈধ ৯টি

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এই তথ্য জানান।

ফয়সাল কাদের জানান, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন কারণে যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ মোল্যা, আবুল হাসান সিদ্দিক ও আরিফুর রহমান মিঠু। তবে তাঁরা চাইলে বিধি অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

এই আসনে যাঁদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মো. আউয়াল, বিএনপির রকিবুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মাহফুজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ খান লিটন ও মইন মোহাম্মদ মায়াজ, বাসদের জনার্দন দত্ত, খেলাফত মজলিসের এফ এম হারুন অর রশিদ, এনডিএমের শেখ আরমান হোসেন এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৭ দফা বিধিনিষেধ পুলিশের

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করায় অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে ৭ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা কিংবা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আয়োজন করা যাবে না। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।

অলক বিশ্বাস জানান, বিধিনিষেধ কার্যকরের পাশাপাশি শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হবে।

পর্যটকের উপস্থিতি

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের শুরুতে কক্সবাজারে সাধারণত পর্যটকের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকতে ভিড় জমান। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮-৯ বছর ধরে সৈকতে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উন্মুক্ত কোনো আয়োজন হচ্ছে না। শহরের কয়েকটি মানসম্মত হোটেল ও রিসোর্টে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান হলেও এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেলের মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা বলেন, ‘শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে অনেক পর্যটক বুধবারের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছেন। আবার যাঁরা মঙ্গল বা বুধবার কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের বড় অংশই সফর স্থগিত করেছেন।’

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খানসামায় গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া চেয়ারম্যানপাড়া গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ভ্যানযোগে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাছেত সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশটির পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ও পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিয়ে আত্মগোপনে স্বামী

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এই ঘটনায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত রিংকির বোন আশা খাতুন জানান, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তাঁর ফোনে একটি মিসকল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।

রিংকির মামি আয়না খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, ‘এর আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াবিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত