Ajker Patrika

উপবৃত্তির টাকায় পাখি পালন, মোটরসাইকেল কেনার টাকায় খামার করে স্বাবলম্বী লিমন

কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
উপবৃত্তির টাকায় পাখি পালন, মোটরসাইকেল কেনার টাকায় খামার করে স্বাবলম্বী লিমন

উপবৃত্তির টাকায় দিয়ে শুরু করেন পাখি পালন। এরপর বাবা-মায়ের কাছ থেকে নেওয়া মোটরসাইকেল কেনার টাকা দিয়ে শুরু করেন মুরগির খামার। এভাবে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার লিমন সরকার (২০) নামের এক কলেজ পড়ুয়া যুবক। 

তিনি উপজেলার চরকুড়া গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে ও সরকারি হাজী কোরপ আলী মেমোরিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। 

রোববার (১৯ মার্চ) এ নিয়ে কথা হয় লিমন সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল নিজে নিজে কিছু করে টাকা আয় করব। এ জন্য উপবৃত্তির ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে প্রথমে বিদেশি জাতের পাখি পালন করা শুরু করি। এরপর কোয়েল পাখি। কোয়েল পাখির তেমন লাভ না থাকায় বিক্রি করে দিই। এরপর বাড়ি থেকে মা-বাবার কাছে মোটরসাইকেল কেনার জন্য ২ লাখ নেই। সেই টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল না কিনে মুরগির খামার শুরু করি। বর্তমানে টাইগার জাতের ৮০০ ও সোনালি জাতের ১ হাজার ২০০টি মুরগি রয়েছে। বর্তমানে মুরগির বাজার মূল্য প্রতি কেজি ২৮৫ টাকা। এ দুই জাতের মুরগি বিক্রি করে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিক্রি করা যাবে। যেখান থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা লাভ হবে।’ 

প্রতি মাসে ৪৫-৫০ হাজার টাকা আয় করছেন জানিয়ে লিমন সরকার বেকার যুবকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সবাই চাকরির পেছনে না ছুটে ছাত্র জীবন থেকে আয় করার চিন্তা ভাবনা করা উচিত। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে অন্যদিকে বেকারত্ব কমবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমার সমবয়সী বা আমার ছোট-বড় যারা স্বপ্ন দেখছেন নিজে কিছু করে পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন। তারা যে যেই কাজে পারদর্শী সেই কাজের দ্বারা নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলুন।’ 

লিখন সরকারের বাবা সোহরাব আলী বলেন, ‘মুরগি খামার ও পাখি পালন করে আমার ছেলে মাসে টাকা আয় করছে এতে আমরা খুশি। আমি চাই আমার ছেলের মতো অন্য যুবক ছেলেরাও পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করুক।’ 

নিজ খামারে মুরগিকে পরিচর্যা করছেন লিমন। ছবি: আজকের পত্রিকা কামারখন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, খামারিদের চিকিৎসা সেবা দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হয়। 

বেকার তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশে যারা শিক্ষিত বেকার যুবক রয়েছে তারা খামার করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে ও বেকারত্ব দূর করতে পারবে। শিক্ষিত যুবকেরা যদি খামার করতে আগ্রহী হন তাহলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগী করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে সরকারি নামমাত্র ফি থাকলেও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে বিচার চাইতে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে তাঁদের। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদটির হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নান্টু আলী নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগের সপক্ষে ভিডিও প্রমাণও দাখিল করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাম আদালতে দেওয়ানি মামলার ফি ২০ টাকা এবং ফৌজদারি মামলার ফি ১০ টাকা। অথচ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, এখানে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে হাজিরা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, স্বল্প সময়ে ও কম খরচে বিচার পাওয়ার আশায় তাঁরা গ্রাম আদালতে আসেন। কিন্তু এখানে এসেও তাঁদের অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।

আল্লাহর দরগা বাজার এলাকার এক ঝালমুড়ি ও ফুচকা বিক্রেতা জানান, পারিবারিক কলহ-সংক্রান্ত মামলায় তাঁর কাছ থেকে ধাপে ধাপে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। মুন্না নামের অন্য এক ভুক্তভোগী জানান, একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করতে তাঁকে ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে।

অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ান জানান, যোগদানের পর থেকেই তিনি এমনভাবে টাকা নিয়ে আসছেন।

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান উভয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে অবগত নন বলে দাবি করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ্য গুহ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির নামাজে জানাজা আজ শনিবার বেলা ২টায় অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এই জানাজাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানাজার সময় আধা ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে। এর আগে বেলা আড়াইটায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা আজ দুপুর ২টায় নির্ধারিত হয়েছে।

জানাজা উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ১ হাজারটি বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভি ও গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে:

ব্যাগ বহন নিষেধ: জানাজায় আসা মুসল্লিদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ: নিরাপত্তাঝুঁকি এড়াতে সংসদ ভবন ও এর সংলগ্ন এলাকায় যেকোনো ধরনের ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ওসমান হাদির জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে বিবেচনা করে ট্রাফিক বিভাগ থেকেও যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৪
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ সাতজনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১৪)।

আজ শনিবার ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। আটককৃতরা হলেন: মো. লিমন সরকার (১৯), মো. তারেক হোসেন (১৯), মো. মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)।

জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করেছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাবের একাধিক টিম ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা অভিযান চালায়। অভিযানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এই সাতজনকে আটক করা সম্ভব হয়।

উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ওই হিন্দু যুবককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল এবং স্থানীয়রা দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। পুলিশ ও র‍্যাব যৌথভাবে তদন্ত শুরু করার পর আজ কয়েকজন অভিযুক্তকে আটক করা হলো।

র‍্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। অধিকতর তদন্তের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আনিসুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) সভাপতি ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার গুমানমর্দন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, রাত ১২টার দিকে ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসে করে ঘটনাস্থলে আসে। তারা আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাড়িতে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ঘটনার সময় আনিসুল ইসলাম কিংবা তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে ছিলেন না।

হামলাকারীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোঁটা ছিল এবং অধিকাংশের মুখে মাস্ক পরা ছিল। তারা ঘরের আসবাব তছনছ করে একপর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাড়ির সামনে থাকা একটি প্রাইভেট কার পুড়ে যায়। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে কাজ চলছে। হামলার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পেছনের উদ্দেশ্য ও জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত