Ajker Patrika

ডুবোচরের কারণে ঢাকা-হাতিয়া রুটে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ২২: ৪৪
ডুবোচরের কারণে ঢাকা-হাতিয়া রুটে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে

ঢাকা থেকে হাতিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো প্রতিদিনই আটকা পড়ছে ডুবো চরে। খুব ভোরে জোয়ার না হলে চরে আটকে থাকতে হয় ঘণ্টা পর ঘণ্টা। সময় বেঁধে জোয়ার  এলেই তবেই ঘাটে আসে এসব লঞ্চ। এর ফলে এই রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। 

এই ডুবোচরগুলোর অবস্থান মূলত ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার পূর্ব পাশে। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার তমরদ্দি ঘাটের তিন কিলোমিটার পশ্চিমে বধনার চরের সন্নিকটে মেঘনা নদীতে। এই ডুবো চরের কারণে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল প্রায়ই ব্যাহত হয়। প্রায়ই লঞ্চ আটকে যায় চরে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা। অনেক সময় ব্যবসায়ীদের কাঁচামাল চরে আটকে পড়া লঞ্চেই নষ্ট হয়ে যায়। ডুবো চরে আটকা পড়লে দুর্ভোগের আর সীমা থাকে না। 

সম্প্রতি ঢাকা থেকে হাতিয়ায় আসার সময় লঞ্চে মারা যায় হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের এক নারী। মরদেহটি গ্রহণ করতে স্বজনেরা ঘাটে গিয়ে অপেক্ষা করে। এ দিকে মরদেহটি বহনকারী এমভি তাফসির-১ নামে লঞ্চটি ডুবোচরে আটকা পড়ে। এতে প্রায় ৩ ঘণ্টা অপেক্ষার পর স্বজনেরা একটি ছোট ট্রলার ভাড়া করে নদীর মাঝখান থেকে মরদেহটি নিয়ে আসে ঘাটে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্বজনদের। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দুটি লঞ্চ নদীর মাঝখানে আটকে আছে। ঘাটে অপেক্ষা করছে যাত্রীদের স্বজন, ঘাট শ্রমিক, বিভিন্ন যানবাহনের সহস্রাধিক মানুষ। ঘাটে আলাপ হয় হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের রেহানিয়া গ্রামের অধিবাসী বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে। 

বেলায়েত হোসেন জানান, এমভি ফারহান-৩ লঞ্চে ঢাকা থেকে তাঁর অসুস্থ বাবা আসতেছেন। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘাটে এসেছে। কিন্তু লঞ্চটি নদীর মাঝখানে আটকে আছে। ঘাট থেকে দেখা যায়। লঞ্চে থাকা অনেক যাত্রী অপেক্ষা না করে ছোট ট্রলারে ঘাটে চলে আসছে। কিন্তু তাঁর বৃদ্ধ পিতা অসুস্থ হওয়ায় তিনি সাহস করছেন না ছোট ট্রলারে নিয়ে আসতে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছেন। ঘাটে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন জোয়ার আসবে ১১টার দিকে তখন লঞ্চ ঘাটে আসবে। সেই সময় পর্যন্ত তাঁকে ঘাটে অপেক্ষা করতে হবে। 

ঢাকা থেকে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবো চরে আটকে যায়। ছোট ট্রলারে করে ঘাটে আসছেন যাত্রীরানোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া মূলত নদীবেষ্টিত এখানে প্রায় সাত লাখ লোকের বসবাস। এ উপজেলার মানুষের চলাচলে নদীপথই একমাত্র ভরসা। এর মধ্যে ঢাকা-হাতিয়া রুট, হাতিয়া-চট্রগ্রাম রুট ও হাতিয়ার নলচিরা-চেয়রম্যান ঘাট রুটে যাত্রী পারাপার হয় কিছু সরকারি ও কিছু বেসরকারি যানবাহনে। 

এর মধ্যে ১৯৯৭ সাল থেকে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সরাসরি লঞ্চ সার্ভিস চালু করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রথম দিকে একটি প্রতিষ্ঠান দুটি লঞ্চ দিয়ে যাত্রীসেবা দেয়। গত তিন বছর আগ থেকে এই রুটে আরও একটি প্রতিষ্ঠান তাদের লঞ্চ সার্ভিস চালু করে। প্রতিদিন হাতিয়ার তমরদ্দি ঘাট থেকে দুটি লঞ্চ দুপুর ১টার সময় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আবার প্রতিদিন বিকেল ৬টার সময় ঢাকার সদরঘাট থেকে দুটি লঞ্চ হাতিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। 

হাতিয়া থেকে যে কয়েকটি নৌ-রুটে যাত্রী পারাপার হয় এর মধ্যে ঢাকা-হাতিয়া রুটটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই রুটে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক যাত্রী আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া মাছ, চাল, আলু হাতিয়ায় উৎপাদিত খেসারি ডাল, বাদামসহ প্রচুর মালামাল আনা-নেওয়া করে ব্যবসায়ীরা। 

আলাপকালে তমরদ্দি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি ইব্রাহীম (৬০) জানান, বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানির উচ্চতা বেশি থাকায় লঞ্চগুলো চরে আটকে না। এখন নদীর পানি কমে যাওয়ায় প্রতিদিন আটকে যাচ্ছে লঞ্চগুলো। এতে ব্যবসায়ীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লঞ্চে পচে যায়। 

হাতিয়া-ঢাকা রুটে চলাচলকারী এমভি ফারহান-৩-এর মাস্টার বজলুর রহমান জানান, ঢাকা থেকে হাতিয়া আসতে কোথাও কোনো সমস্যা হয় না। শুধু হাতিয়ার পশ্চিম পাশে এই ডুবোচরে লঞ্চ চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। একাধিকবার বিআইডব্লিউটিএর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। ছোট একটি ড্রেজিং করে এই রুটটি নৌযান চলাচলে স্বাভাবিক করা যায়। 

তমরদ্দি ঘাট ইজারাদার প্রতিনিধি মিরাজ সর্দার বলেন, লঞ্চ চলাচলের এই পথে অসংখ্য ডুবোচর রয়েছে। ভাটির সময় কোনো কোনো চর জেগে ওঠে। জোয়ারে তলিয়ে যায়। আর এই চরেই আটকা পড়ে লঞ্চ। এতে রাতের বেলা বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে লঞ্চ চলাচল শতভাগ নিরাপদ করার দাবি তাঁর। 

এ বিষয়ে আলাপকালে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমি এই সমস্যাটি নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. আবদুল মতিনের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে এই নদীতে ড্রেজিং এর কাজ শুরু হবে। 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপির হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি: যুবক গ্রেপ্তার

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার করা ইসরাত রায়হান অমি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার করা ইসরাত রায়হান অমি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ এবং তাঁর কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম ইসরাত রায়হান অমি। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাতিয়া উপজেলার চরইশ্বর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দরোড এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, ইসরাত রায়হান অমি চরইশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে হাতিয়া থানায় তিনটি মামলা রয়েছে।

পুলিশের তথ্যমতে, শুক্রবার রাতে ইসরাত রায়হান অমি এনসিপির এক কর্মীর কাছে মেসেঞ্জারে উসকানিমূলক বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় তিনি লেখেন, আব্দুল হালিম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে হান্নান মাসউদ, তানভীরসহ অন্য নেতাদের হাতিয়ার উত্তরাঞ্চলে চলাচল ‘হারাম’ করে দেওয়া হবে। বার্তায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা সরাসরি গিলে খেয়ে ফেলবে।’

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, অভিযান চালিয়ে ইসরাত রায়হান অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বা সরাসরি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বকশীগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় রুপিসহ যুবক আটক

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি 
আটক করা যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক করা যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ভারতীয় রুপিসহ মো. আসাদ (৩০) নামের এক যুবককে আটক করেছেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যরা। আটক আসাদ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের বালুগাঁও গ্রামের আবু হোসেনের ছেলে। গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে কামালপুর সীমান্তবর্তী সাতানীপাড়া এলাকার ১০৮৬ নম্বর পিলারের কাছ থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে রাতেই তাঁকে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ সময় তাঁর কাছে থাকা ভারতীয় ১৮ হাজার রুপি উদ্ধার করেন সাতানীপাড়া বর্ডার আউটপোস্টের (বিওপি) বিজিবি সদস্যরা।

জামালপুর ৩৫ বিজিবির সাতানীপাড়া বিওপি সূত্রে জানা গেছে, গোপন খবরের ভিত্তিতে সাতানীপাড়া বিওপির বিজিবির নায়েব সুবেদার ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে টহল দল অভিযান পরিচালনা করেন। একপর্যায়ে ভারতীয় রুপি বহনকারী মো. আসাদকে আটক করা হয়।

সাতানীপাড়া বিওপির বিজিবির নায়েব সুবেদার ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৮ হাজার ভারতীয় রুপিসহ আসাদ নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাঁকে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন বলেন, আটক আসাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাইড্রোসেফালাসে আক্রান্ত আয়শার চিকিৎসা বন্ধ, অর্থাভাবে মানবেতর জীবন

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পাগলাটারী গ্রামের আশেক আলী ও সুমি বেগম দম্পতির আট বছর বয়সী মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত হয়ে চরম দুর্ভোগের জীবন কাটাচ্ছে। জন্মের পর থেকেই অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে তার মাথা। দারিদ্র্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আয়শার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ১০ লাখ টাকা। তবে দরিদ্র এই পরিবারের সবটুকু সম্বল ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফলে অর্থের অভাবে বর্তমানে শিশুটির চিকিৎসা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে অস্বাভাবিক বড় মাথা ও তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে ছোট্ট আয়শা।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ওই দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আয়শা বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে। মাথার ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সে নিজে নড়াচড়া করতে পারে না। প্রস্রাব-পায়খানা করাতে হলে দুজন তাকে ধরতে হয়।

আয়শার মা সুমি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের মাথার ওজন এতটাই বেড়ে গেছে যে একা ধরে রাখা যায় না। নাকে মাংস বেড়ে যাওয়ায় ঠিকমতো শ্বাসও নিতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে ডাক্তারের পরামর্শে মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক অপারেশনের কথা বলেছেন। অপারেশনে খরচ হবে প্রায় ৭ লাখ টাকা, অন্যান্য খরচসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা লাগবে। এত টাকা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে। তাই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে।’

জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে একটি জাতীয় দৈনিকে (নয়া দিগন্ত) আয়শার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দুজন প্রবাসী ব্যক্তি ৩৫ হাজার টাকা সহায়তা করেছিলেন। সেই অর্থে কিছুদিন চিকিৎসা চললেও পরে আর তা সম্ভব হয়নি।

আয়শার বাবা আশেক আলী ও মা সুমি বেগম বলেন, ‘দেশের কোনো বিত্তবান কিংবা প্রবাসী মানবিক মানুষ যদি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে আমাদের অবুঝ শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতাম।’

এলাকাবাসীও আয়শার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান ও মানবিক ব্যক্তিদের সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সবজি গ্রামে শীতকালীন চাষে ব্যস্ত গোপালগঞ্জের কৃষকেরা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের ‘সবজি গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত সদর উপজেলার রঘুনাথপুর, সিলনা ও গুয়াধানা এবং টুঙ্গীপাড়া উপজেলার রুপাহাটি, গোপালপুর, মিত্রডাঙ্গা ও বন্যাবাড়ি গ্রামের কৃষকেরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমভেদে সারা বছরই এসব গ্রামের কৃষকেরা নানা ধরনের শাকসবজি আবাদ করে থাকেন।

চলতি শীত মৌসুমে জমি ও মাছের ঘেরপাড়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, ব্রকলিসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন কৃষকেরা। নিজেদের কষ্টার্জিত বিষমুক্ত ও বালাইমুক্ত নিরাপদ সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করে ভালো আয় করছেন তাঁরা। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকদের সংসারে ফিরছে সচ্ছলতা।

এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। রঘুনাথপুর, সিলনা, গুয়াধানা, গোপালপুর ও মিত্রডাঙ্গা গ্রামের মাঠজুড়ে সারি সারি ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, মুলা, পালংশাকসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবজি শোভা পাচ্ছে। শুধু জমিতে নয়, মাছের ঘেরপাড়েও লাউ, করলা, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়েছে।

কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে চারা রোপণ, সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্ষেতখামারে। এসব গ্রামের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হলো সবজি চাষ। শাকসবজির ফলনেই নির্ভর করে হাজারো কৃষকের জীবন-জীবিকা।

এ বছর এসব গ্রামে সবজির ফলন ভালো হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলা থেকেও ব্যাপারীরা এসে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারি বাজারে মিষ্টিকুমড়া প্রতিটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং লাউ ২০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিলনা গ্রামের কৃষক প্রমথ ওঝা বলেন, ‘আমরা মৌসুম অনুযায়ী সবজি চাষ করি। শীতকালে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো ও শাকসবজি চাষ করে সংসারের খরচ ও সন্তানদের পড়াশোনার ব্যয় মেটাই। এই ফসলের ওপরই আমাদের জীবন।’

সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

একই গ্রামের শিলা ওঝা বলেন, ‘১৫ কাঠা জমিতে সবজি চাষ করেছি। ফসল ভালো হয়েছে, লাভও ভালো হবে। এই চাষ করেই আমরা ভালো আছি।’

সিলনা গ্রামের কিষানি রিতা কীর্তনিয়া বলেন, ‘আমি ২২ বছর ধরে সবজি চাষ করছি। ভাসমান বেডেও নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করি। এতে ভালো লাভ হচ্ছে। গোপালগঞ্জসহ বাইরের জেলার ব্যাপারীরা এসেও আমাদের কাছ থেকে সবজি কিনে নেয়।’

সিংগারকুল গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঘেরপাড়ে টমেটো ও শসা চাষ করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। টমেটো প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং শসা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জের উপপরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান বলেন, ‘জেলার প্রায় ৪০ শতক জমি নিচু হওয়ায় কৃষকেরা সারা বছর ঘেরপাড়ে সবজি চাষ করেন। রবি মৌসুমে জমিতে ব্যাপকভাবে সবজি আবাদ হয়। এ বছর প্রায় ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা এরই মধ্যে অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের চেয়ে ভালো ফলনের আশা করছি। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত