Ajker Patrika

নেত্রকোনায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যদের অনাস্থা, পরে প্রত্যাহার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শামছুল হক। ছবি: সংগৃহীত
বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শামছুল হক। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শামছুল হকের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছিলেন ইউনিয়নের সব ওয়ার্ডের সদস্যরা। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চলমান মামলার কারণে পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল বলে তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন।

তবে পরে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যস্থতায় সেই অনাস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে। প্রথম দিকে ওয়ার্ড সদস্যরা সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা বললেও এখন আর কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না।

সদস্যদের অভিযোগ ছিল, চেয়ারম্যান শামছুল হকের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তিনি স্বাভাবিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছিলেন না। বিশেষ করে ইউনিয়নের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বিল উত্তোলন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা তৈরি হচ্ছিল। এতে পরিষদের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে।

এই প্রেক্ষাপটে ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগের পথ সুগম করতেই সদস্যরা গত ৪ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিতভাবে অনাস্থা দেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পরে তা প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা। এরপর অধিকাংশ সদস্য সাংবাদিকদের ফোন ধরছেন না, কেউ কেউ কল কেটে দিচ্ছেন কিংবা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।

শামছুল হক বাউসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়ে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হন। গত ৫ আগস্ট সরকারবিরোধী একটি মামলায় তাঁকে কারাগারে যেতে হয়। পরে জামিনে মুক্ত হলেও মামলার কারণে পরিষদের কাজে তিনি সম্পৃক্ত হতে পারেননি। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পের বিলসহ নানা সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যায়নি।

৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলমগীর হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে সালাম ও কুশল বিনিময় করলেও অনাস্থা প্রত্যাহার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ব্যস্ততা দেখিয়ে কল কেটে দেন। একইভাবে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহাজাহান কবীরও কল কেটে দেন।

তবে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোছা. লাভলী বলেন, ‘চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল, বিশেষ করে প্রকল্পের বিল তুলতে পারছিলাম না। তাই অনাস্থা দিয়েছিলাম। পরে চিন্তা করলাম, উনি বয়সে প্রবীণ মানুষ, মানবিক বিবেচনায় অভিযোগ তুলে নিয়েছি।’

চেয়ারম্যান শামছুল হক বলেন, ‘আগে একটা মামলায় জেলে ছিলাম। এখন আবার আরেকটি মামলায় আসামি হয়েছি। উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য দৌড়াদৌড়ির কারণে প্রকল্পের কিছু বিল আটকে গিয়েছিল। এখন কিছু কিছু তোলা যাচ্ছে। সদস্যরা অনাস্থা দিয়েছিল, পরে আবার প্রত্যাহার করেছে। তবে সমঝোতার বিষয়টি আমার জানা নেই।’

আজ বৃহস্পতিবার ইউএনও খবিরুল আহসান বলেন, ‘সদস্যরা অনাস্থা দিয়েছিলেন, পরে প্রত্যাহার করেছেন। এর আগে চেয়ারম্যান জেলে গেলেও প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার আগেই তিনি জামিনে চলে আসেন, তাই আর প্রশাসক নিয়োগের প্রয়োজন হয়নি।’ তবে বিল আটকে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কাজ চলমান রয়েছে, কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

স্থানীয়দের অনেকের মতে, মামলা ও রাজনৈতিক সমঝোতার প্রেক্ষাপটে অনাস্থা প্রত্যাহার আপাতত একটি সমাধান হলেও এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রমে পড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় আটক ৭

সিলেট প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইল ১ নম্বর রোডের মারুফ টি স্টল নামক দোকানে অভিযান পরিচালনা করে তির শিলং-জাতীয় জুয়া খেলা অবস্থায় তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইলের সজীব মিয়ার কলোনির রমিজ আলীর ছেলে তাহের মিয়া (৩০), উসমান মিয়ার ছেলে শামীম (২০), ইমন মিয়ার কলোনির মো. আব্দুল করিম তালুকদারের ছেলে মো. স্বপন মিয়া (৫৫), রঙ্গ মিয়ার ছেলে জসিম (৪৫), জামাল উদ্দিনের ছেলে আল আমিন (২৭), আব্দুর রশিদের ছেলে মো. বাদল (৩৮) এবং আবুল কালামের ছেলে সুজাত মিয়া (৩৫)।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় মা হত্যায় ছেলে গ্রেপ্তার

খুলনা প্রতিনিধি
মো. রিয়াদ খান।  ছবি: সংগৃহীত
মো. রিয়াদ খান। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় শিউলী বেগম হত্যা মামলায় ছেলে মো. রিয়াদ খানকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাঁকে খুলনা র‌্যাব-৬ এবং ৭-এর যৌথ অভিযানে ফেনী জেলার সদর থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার রিয়াদ শিউলী বেগমের একমাত্র ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ২ লাখ ৫ হাজার ৮০ টাকা, দুটি আইফোন, একটি স্মার্টফোন ও একটি এয়ারপড জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের পাঠানো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, নিহত শিউলি বেগম সৌদি আরবপ্রবাসী ছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর দুই মাসের ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। পরে নগরীর ট্যাংক রোডের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের বাড়ির নিচতলায় ছেলে রিয়াদ খান এবং দ্বিতীয় স্বামী সাগরকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন।

দেশে আসার ১০-১২ দিন পরে উত্তরা ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আলমারিতে রেখে দেন।

৯ ডিসেম্বর রাতে শিউলী বেগমের বড় মেয়ে রুবিনা আক্তার এবং তাঁর স্বামী রাজিব রাতের খাবার খেয়ে বাড়িতে চলে যান। ১০ ডিসেম্বর সকাল থেকে শিউলী বেগমকে ফোনে না পেয়ে রুবিনা আক্তারকে খোঁজ নিতে বলেন তাঁর স্বামী।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে তাঁর সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘর থেকে শিউলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে তাঁর ঘর থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উধাও হয়ে যায়। শিউলী বেগম হত্যার পর থেকে একমাত্র ছেলে রিয়াদ খানেরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই রায়হান গাজী বাদী হয়ে শিউলী বেগমের ছেলে রিয়াদ খানকে আসামি করে মামলা করেন। উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব খুলনা-৬ ও ৭-এর একটি দল তাঁকে ফেনী সদর থেকে গ্রেপ্তার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত