Ajker Patrika

না.গঞ্জে বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগ: তিন থানায় আসামি বিএনপি, জামায়াত ও গণ অধিকারের ১৯৬ নেতা-কর্মী

সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১১: ২৬
না.গঞ্জে বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগ: তিন থানায় আসামি বিএনপি, জামায়াত ও গণ অধিকারের ১৯৬ নেতা-কর্মী

নারায়ণগঞ্জ শহর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লায় ককটেল বিস্ফোরণ ও টায়ারে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপি, জামায়াত ও গণ অধিকার পরিষদের অন্তত ১৯৬ জন নেতা-কর্মীকে।

গত বুধবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক, ফতুল্লার সস্তাপুর ও শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ও টায়ারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করা হলেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা এসব ঘটিয়ে বিএনপিকে মামলায় জড়াতে চাইছে। 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পুলিশের উপপরিদর্শক দেবাশীষ কণ্ডু বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান। 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় বিএনপির ৫০ থেকে ৫৫ জন নেতা-কর্মী নাশকতার উদ্দেশ্যে মহাসড়ক অবরোধ করে মিছিল করেন। এ সময় তাঁরা ককটেলের বিস্ফোরণ ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। মিছিল থেকে তিন-চারটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় লাল স্কচটেপ মোড়ানো বিস্ফোরিত ককটেলের ৫ টুকরো অংশ, দুটি পোড়া টায়ারের অংশ, মশাল মিছিলে ব্যবহৃত সাতটি লাঠি ও টিনের কৌটা, গাড়ির ১১টি ভাঙা কাচের অংশ। 

মামলার নামীয় আসামিরা হলেন—নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল্লাহ, গণ অধিকার পরিষদের জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক  আরিফ ভূঁইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু, মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি জুয়েল রানা, থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, জামায়াত সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য পলাশ, ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রওশন আলী, সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক মাজহারুল হক ময়ূর, ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলজার হোসেন, মহানগর বিএনপির নেতা আনিস, বিএনপির নেতা জাকির, থানা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন, থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি জয়নাল, থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাজা মিয়া, থানা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুক্তার হোসেন, যুবদলের নেতা মাসুম গাজী, বিএনপির নেতা আফজাল হোসেনসহ অজ্ঞাত ৩৫ জন। 

নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় পুলিশের উপপরিদর্শক আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ২৯ জনের নাম উল্লেখ এবং ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিচুর রহমান মোল্লা। মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা ৩০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু সড়কে ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে যান চলাচলে বাধা তৈরি করেন। 

মামলায় নামীয় আসামিরা হলেন—শওকত হোসেন, হারুন অর রশিদ, হাসিবুল ইসলাম সাঈদ, আশিকুল ইসলাম সাজিদ, মনির হোসেন সরদার, ফারুক হোসেন, মনিরুল ইসলাম সজল, সাহেদ, রহমান, মোজাম্মেল, বাবু, আনোয়ার মাহমুদ বকুল, হারুন, ফারুক মাল, কে এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, শাহ আলম, ফয়সাল, লিংকন খান, সেলিম মোল্লা, জাকির, আক্তার হোসেন অপু, মোহাম্মদ আলী, এম হান্নান মামুন, ডিস মিঠু, শাহজালাল সরদার, আরিফ হোসেন, কাজী সেজান, তোফাজ্জল হোসেন টিয়া, জুয়েল নূরসহ অজ্ঞাত ৪০ জন। 

ফতুল্লা থানায় পুলিশের উপপরিদর্শক মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ এবং ৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ রিজাউল হক। মামলায় উল্লেখ করা হয়—আসামিরা ৩০ নভেম্বর সস্তাপুর এলাকায় ককটেলের বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে যান চলাচলে বাধা দেন। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি বিস্ফোরিত ককটেল, আটটি বাঁশের লাঠি, চারটি লোহার রড, একটি টায়ার ও কাচের টুকরা উদ্ধার করা হয়। 

মামলায় নামীয় আসামিরা হলেন—কুতুবপুরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মাতবর, ভুঁইগড় ইউনিট বিএনপির সভাপতি আলী আহমেদ ইঞ্জিনিয়ার, তুষারধারা ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এনামুল হক মামুন, হান্নান মিয়া, ইসমাইল হোসেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক  লুৎফর রহমান খোকা, যুগ্ম-আহ্বায়ক  শহীদুল ইসলাম টিটু, হাজি মো. শহীদুল্লাহ, ইসমাইল হোসেন খান, যুবদলের নেতা জাহাঙ্গীর, আলমগীর, আমির হোসেন, মিঠু, রনি, শাহিন, জাকির হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, বিল্লাল হোসেন, কাশিপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইকবাল, নুরুল হক সরদার, ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য জুয়েল আরমান, ফতুল্লা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহসম্পাদক নয়নসহ ৬০ জন। 

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, ‘আমাদের তো এখন কোনো কর্মসূচি নেই। এসব মিথ্যা মামলায় আমাদের জড়িয়ে ক্ষমতাসীন দল ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ বানচাল করতে চায়। ক্ষমতাসীন দলের চক্রান্তের অংশ হিসেবেই এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে এবং সেই পরিকল্পনা মোতাবেক মামলা দেওয়া হয়েছে। 

একই বিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, ‘এগুলো মিথ্যা মামলা। গায়েবি ঘটনায় আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। কারণ তারা ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের প্রস্তুতি দেখে ভয় পেয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সব কর্মসূচি পালন করেছি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার জন্য আওয়ামী লীগ এই কাজগুলো করছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয় অথচ নিষ্পাপ শিশু হত্যার বিচার নেই’

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
‘বিমান দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারের পক্ষ থেকে সরকার কর্তৃক ঘোষিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান’ শীর্ষক মানববন্ধনে অভিভাবকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘বিমান দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারের পক্ষ থেকে সরকার কর্তৃক ঘোষিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান’ শীর্ষক মানববন্ধনে অভিভাবকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো এতগুলো নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু এত দিনেও বিচার পায় না। মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির প্রায় পাঁচ মাস পর নিহত ও আহত শিক্ষার্থীর পরিবারগুলো এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণও প্রত্যাখ্যান করেছে।

আজ রোববার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গোলচত্বরে ‘বিমান দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারের পক্ষ থেকে সরকার কর্তৃক ঘোষিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান’ শীর্ষক মানববন্ধনে অভিভাবকেরা এই ক্ষোভ ব্যক্ত করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অভিভাবকেরা বলেন, তাঁদের বাচ্চার জীবনের মূল্য কি ২০ লাখ টাকা? আহতদের ভবিষ্যতের মূল্য কি পাঁচ লাখ টাকা? এ দেশে একটি কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো বাচ্চাদের জীবনের মূল্য নেই। তাঁরা অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।

১২ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নিহতদের পরিবারকে ২০ লাখ এবং আহতদের পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেন। এ সময় আহতদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথাও বলা হয়।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান করেছে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীর পরিবারগুলো।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিল বিমান দুর্ঘটনায় আহত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম নাবিল রোহান। দুই মাস চিকিৎসা নিয়ে সে এখন মোটামুটি সুস্থ। রোহানের বাবা নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘উপদেষ্টা বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমাদের ৩৬টা বাচ্চা মারা গেছে, ৫০-৬০ জন আহত হয়েছে। আমরা চাই বিচার। ৫ লাখ টাকা দিয়ে কী হবে? আমরা চাই, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হোক।’

নিহত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারিফ ফারহানের মা রাশিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বর্তমান সরকার আমাদের খোঁজখবর নেয়নি। আমরা আমাদের দাবি জানাতে এখানে দাঁড়িয়েছি। ক্ষতিপূরণের ঘোষণা আমাদের কাছে অসম্মানজনক।’

আহত ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ হোসেন নিলয়ের মা আইভি হোসেন নিঝুম জানান, তাঁর সন্তান ২৫ শতাংশ দগ্ধ। আরও তিনটি অপারেশন বাকি। বুক থেকে হাড় নিয়ে কান বানাতে হবে। হাত শক্ত হয়ে যাচ্ছে। নতুন চামড়া লাগাতে হবে। তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে সরকারের ৫ লাখ টাকা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেন, হতাহতদের সারা জীবনের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড ও নিহতদের পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণসহ শহীদের মর্যাদা দেওয়া হোক।

মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলেন ঢাকা-১৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘জীবনের মূল্য পাঁচ কোটি টাকাও না, ৫০০ কোটিও টাকাও না। জীবন, জীবনই। জীবনের মূল্য ২০ লাখ টাকা হয়, এটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা এবং সরকারের আগের ঘোষণার সমন্বয় করে সরকার একটি নতুন ঘোষণা দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে আহত যুবকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁওয়ে বাসার কাছে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে আহত ইমন দাশ (২৪) নামের এক যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ১৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তিনি মারা যান।

ইমন দাশ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ধলঘাট ইউনিয়নের দাশপাড়া এলাকার সাগর দাশের ছেলে। তিনি পরিবারের সঙ্গে নগরীর চান্দগাঁও থানার মৌলভীবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

সাগর দাশের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রবীর নামের একজন নিজেকে ইমনের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমন মারা যান। তাঁর বাবা সাগর দাশ এখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।’

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর নগরের চান্দগাঁওয়ের মৌলভীবাজার এলাকায় নিজ বাসার কাছে ইমনকে এলোপাতাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে একদল যুবক। পরে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় ৩ ডিসেম্বর পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে চান্দগাঁও থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন ইমনের বাবা সাগর দাশ। মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন নগরের একই থানা এলাকার বাসিন্দা ও ইমনের পরিচিত নয়ন মহাজন (২৯), কিরণ (৩০), আবু হানিফ (২৮), মহিউদ্দিন শরীফ (২৩) ও মো. নেজামকে (৩৫)।

নগরের কালুরঘাট শিল্প এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত সাগর দাশ ওই মামলার অভিযোগে বলেছেন, তাঁর বড় ছেলে ইমনের পূর্বপরিচিত আসামি নয়ন মহাজন। তাঁদের দুজনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। ৩০ নভেম্বর ভোরে পূজার ফুল নেওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন ইমন। এ সময় মৌলভীবাজারের ওয়াসা রোডে মরিয়ম ক্লাবের পাশে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা করে।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে কিরিচ, চাপাতি দিয়ে ইমনকে কুপিয়ে জখম করে। পরে খবর পেয়ে সাগর দাশসহ তাঁর পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে হুমকি দিয়ে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ইমনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবিরকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরায় জামায়াত প্রার্থীর সভায় পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত
সাতক্ষীরায় জামায়াত প্রার্থীর সভায় পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরায় দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থীর সভায় গান (জামায়াতের গুণগান-সংবলিত) পরিবেশনের অভিযোগে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মো. মহিবুল্লাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় যশোরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বরখাস্তের এই আদেশ দেন বলে জানা গেছে।

বরখাস্ত হওয়া মো. মহিবুল্লাহ নড়াইল জেলার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি যশোর পুলিশ লাইনসে কর্মরত। এর আগে তিনি সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে ছিলেন।

যশোর পুলিশের বরাতে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুকিত হাসান খাঁন আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি (মহিবুল্লাহ) গত ২৬ নভেম্বর ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে নিজ জেলা নড়াইলে রওনা হন এবং ছুটি শেষে ১২ ডিসেম্বর কর্মস্থলে হাজির হন।

ছুটিকালীন তিনি নড়াইল থেকে সাতক্ষীরায় এসে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে সংগীত পরিবেশন ও বক্তব্য দেন; যা পুলিশের পেশাদারত্ব ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। বিষয়টি রেঞ্জ ডিআইজিকে অবহিত করে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এর আগে আজ রোববার দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থীর সভায় গান পরিবেশনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

তিন মিনিট ১১ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সাতক্ষীরা–২ (সদর-দেবহাটা) আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী মুহাদ্দিস আব্দুল খালেকের একটি নির্বাচনী পথসভায় পুলিশের পোশাক পরিহিত মো. মহিবুল্লাহ গান পরিবেশন করেন। মাঝে মাঝে নারায়ে তাকবির স্লোগান দিয়ে দর্শকদের উজ্জীবিত করেন।

সূত্রে জানা গেছে, পথসভাটি ৭ ডিসেম্বরের। সাতক্ষীরা শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাটিয়া আমতলা মোড়ে ওই পথসভা হয়। সভায় ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের আমির মো. জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। সভার মাঝপথে মো. মহিবুল্লাহ এই গান পরিবেশন করেন।

আরও জানা গেছে, পুলিশের ওই এএসআই সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে কর্মরত থাকাকালে আগরদাড়ির একটি মাহফিলে ইসলামি গান পরিবেশন করেছিলেন। তাঁর সংগীতে মুগ্ধ হয়ে মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক তাঁকে পুরস্কৃত করেন। বাগেরহাটে বদলি হয়ে গেলেও তিনি খোঁজ নিয়ে ওই পথসভায় আসেন।

জানতে চাইলে এএসআই মো. মহিবুল্লাহ বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দিইনি। মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক আমাকে পুরস্কৃত করেছিলেন, সে কারণে আমি ইসলামি একটি সংগীত পরিবেশন করেছি’ বলেই লাইনটি কেটে দেন। পরে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা শহর জামায়াতের সেক্রেটারি খোরশেদ আলম বলেন, ‘পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি স্টেজে উঠে সংগীত পরিবেশন করতে চান। আমরা নিষেধ করা সত্ত্বেও তিনি সংগীত পরিবেশন করেছেন।’

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুকিত হাসান খাঁন জানান, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বর্তমানে সাতক্ষীরায় কর্মরত নন। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের পোশাক পরে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেন সৈয়দপুরের এক কলেজের ৪৫ শিক্ষার্থী

নীলফামারী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এ বছর ৪৫ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর (রাত সাড়ে ৯টা) এ তথ্য জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

সব শিক্ষার্থীর তথ্য পেলে সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ থেকে সুযোগ পাওয়া ৪৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে ১৩ জন ও মেয়ে ৩২ জন।

১২ ডিসেম্বর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ আজাদ আবুল কালাম জানান, মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা সংগ্রহ করে এ পর্যন্ত ৪৫ জনের নাম পেয়েছেন। এই নামের তালিকা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন।

তিনি বলেন, গত বছরও ৫৩ জন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুশৃঙ্খল পরিবেশ, পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং কঠোর তদারকির ফলে প্রতিবছর আশানুরূপ ফল করছেন শিক্ষার্থীরা। মূলত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিবছর মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ধারাবাহিক সফলতা ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে।

উল্লেখ, নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের আগের নাম ছিল সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয় (টেকনিক্যাল কলেজ)। ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ নাম রাখে। কলেজটিতে শুধু বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। ১৯৬৪ সালে দেশের চারটি শিল্পাঞ্চলে টেকনিক্যাল স্কুল গড়ে ওঠে। দেশের সর্ববৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সুবাদে এখানেও গড়ে ওঠে টেকনিক্যাল স্কুল। উদ্দেশ্য ছিল এখান থেকে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার জন্য দক্ষ, কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষার্থী গড়ে তোলা। পরে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি কলেজে উন্নীত হয়। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের নাম রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত