Ajker Patrika

সারের ডিলার হিসেবে নিয়োগ পেতে জাল প্রত্যয়নপত্র দাখিল, তদন্ত বন্ধ

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ৫৮
সারের ডিলার হিসেবে নিয়োগ পেতে জাল প্রত্যয়নপত্র দাখিল, তদন্ত বন্ধ

ময়মনসিংহের নান্দাইলের চর বেতাগৈর ইউনিয়নে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সারের ডিলার হিসেবে নিয়োগ পেতে জাল প্রত্যয়নপত্র দাখিলসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বাদল হোসাইন নামের এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন হলেও অজ্ঞাত কারণে তদন্ত বন্ধ রয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নান্দাইলের চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বিসিআইসির ডিলার শূন্য থাকায় ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর ডিলার নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেয় কর্তৃপক্ষ। তাতে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স স্যাম্বো এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স তাহমিনা আক্তার মীম এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স শাওন ট্রেডার্স আবেদন করে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়। যেখানে অভিজ্ঞতাসহ কাগজপত্র ও আবেদনপত্রের কাগজপত্র নির্ভুলভাবে দাখিল, ট্রেড লাইসেন্স, গুদামের চুক্তি, দোকানের চুক্তি ৫০ টন ধারণক্ষমতা থাকাসহ বিভিন্ন শর্ত উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, নাহার এন্টারপ্রাইজ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২০১৬ সালের ১৮ মে যে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে, তা গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন জাল বলে প্রত্যয়নপত্র দেন। মেসার্স তাহমিনা আক্তার মীম এন্টারপ্রাইজের চেয়ে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা কম, দোকানের চুক্তিপত্র ৫ বছরের কম। আর দোকান থেকে গুদাম দেড় কিলোমিটার দূরে থাকা সত্ত্বেও ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট তৎকালীন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন ১ নম্বরে রেখে আওয়ামী লীগ নেতা চর বেতাগৈর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের স্ত্রী শামছুন্নাহারের নামে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজের সুপারিশ করে রেজল্যুশন পাঠান।

পরবর্তীকালে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজকে বিসিআইসি সারের ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেয়। নিয়োগের পরে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আবেদনকারী বাদল হোসাইন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক এবং সার ও বীজ তদারকি কমিটির সভাপতির কাছে গত ৩০ মে লিখিত অভিযোগ দেন।

গত ১২ জুন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখার সহকারী কমিশনার মো. শাহনূর রহমান বিসিআইসি সারের ডিলার নিয়োগ অভিযোগের তদন্ত করতে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) চিঠি ইস্যু করে। ইউএনও তদন্ত না করে দেড় মাস পরে ৩১ জুলাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তিন কার্যদিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু ৪৪ কার্যদিবস পার হলেও তদন্ত হয়নি।

অভিযোগকারী বাদল হোসাইন বলেন, ‘মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ জাল কাগজপত্র দাখিল করে। অন্য চারজনকে কৌশলে বাদ দিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে। নিয়োগে মোটা অঙ্কের লেনদেন হয়েছে যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।’

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, ‘২০২০ সালের ১৯ আগস্ট উপজেলা সার ও বীজ কমিটি থেকে রেজল্যুশনের মাধ্যমে আবেদন করা চারজনের তালিকা জেলার সার বীজ তদারকি কমিটিতে পাঠানো হয়। ওই তদারকি কমিটি যাচাই-বাছাই করে বিসিআইসিতে পাঠায়। পরবর্তীকালে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ইউএনওর অফিস থেকে একটি তদন্তের চিঠি পেয়েছি। তবে তদন্তে বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।’

নান্দাইলের ইউএনও অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।’ তদন্তের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনি যদি তদন্ত না করেন, তাহলে আমাকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলে অন্য কাউকে তদন্তের ভার দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুদান হামলা: মিশন যাত্রার ১ মাস ৮ দিনের মাথায় প্রাণ গেল শান্তিরক্ষী মাসুদের, পরিবারে মাতম

নাটোর ও লালপুর প্রতিনিধি 
মাসুদ রানার মৃত্যুর খবরে পরিবারে কান্নার রোল উঠেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাসুদ রানার মৃত্যুর খবরে পরিবারে কান্নার রোল উঠেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন যাত্রার মাত্র এক মাস আট দিনের মাথায় সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন করপোরাল মাসুদ রানা। তাঁর মৃত্যুর খবরে নাটোরের লালপুরের বাড়িতে এখন কান্নার রোল উঠেছে।

গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। নিহত শান্তিরক্ষীদের মধ্যে মাসুদ রানাও রয়েছেন।

মাসুদ রানা নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার উদ্দিনের ছেলে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তাঁর ছোট দুই ভাই মনিরুল ইসলাম জনি ও রনি আহমেদও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত।

মাসুদের শোকে তাঁর স্ত্রী আসমাউল হুসনা আঁখি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই দম্পতির আট বছরের মেয়ে আছে। আঁখি বলেন, ‘আমার মেয়েকে এতিম করে সে চলে গেল। বাকি জীবন আমরা কীভাবে কাটাব? গতকালও (শনিবার) আমাদের সঙ্গে সে কথা বলেছিল। আজ সে নেই, ভাবতে পারছি না।’

ছেলের মৃত্যুর খবরে মা মর্জিনা খাতুন (৫৫) বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার তিন সন্তান সেনাবাহিনীতে। এক সন্তান দেশের জন্য প্রাণ দিল। আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। সরকার যেন আমার সন্তানের বিধবা স্ত্রী ও এতিম মেয়ের কথা ভাবে। আমাদের আর কেউ নাই।’

প্রতিবেশীরা জানান, মাসুদ রানা ছিলেন শান্ত ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। পরিবারের সুখের স্বপ্ন নিয়ে তিনি শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়েছিলেন।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ বলেন, নিহত মাসুদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে আজ রোববার বিকেলে নাটোর আর্মি স্টেডিয়ামের সেনাক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মো. নাজমুল আলম আবীর নিহত শান্তিরক্ষী মাসুদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, শহীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

কুমিল্লা নগরীর পাথুরিয়া এলাকায় বেকারি পণ্য ও শিশুখাদ্য প্রস্তুতকারী একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে ওজনে কম দেওয়া, শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, পোড়া তেল দিয়ে শিশুখাদ্য ভাজা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রস্তুতের অভিযোগে ‘আরব বেকারি’কে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর বিভিন্ন ধারায় এ জরিমানা করা হয়।

অভিযানকালে দেখা গেছে, পার্টি কেকের ক্ষেত্রে প্রতি দুই পাউন্ডে প্রায় ৭০ গ্রাম কম দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া শিশুখাদ্য প্রস্তুতে নিষিদ্ধ রং ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের একাধিক প্রমাণ পাওয়া যায়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. কাউছার মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নমুনা সংগ্রহকারী মো. সাকিব। অভিযানে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল সহযোগিতা করে।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. কাউছার মিয়া বলেন, অভিযানে জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত
বাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বাড্ডায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে অছিম পরিবহনের মিরপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার মো. শাজাহান শিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শামীম জানান, উত্তর বাড্ডার এএমজেড হাসপাতালের সামনের সড়কে বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরুল ইসলাম বলেন, কারা বাসে আগুন দিয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে এবং বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এর আগে, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সে সময় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘চিকিৎসা না পেয়ে’ গর্ভের সন্তানের মৃত্যু: চট্টগ্রামে ৪ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের । ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের । ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় এক নারীর গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা সাত্তারের আদালতে ভুক্তভোগী নারী নাসরিন আক্তার মামলার আরজি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সিরাজুন নূর, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) মো. নুরুল হক, পরিচালক (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) এ এফ এম আশরাফুল করিম এবং ডেপুটি ডিরেক্টর (অ্যাডমিন-আইসিইউ) মো. আবু সাইদ চৌধুরী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রিগ্যান আচার্য্য জানান, মামলার আবেদনের পর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং মামলাটি তদন্তের জন্য ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দেন। আদালত আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকালে প্রসবব্যথা নিয়ে নাসরিন আক্তারকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তাঁর গর্ভকাল ছিল ৩৭ সপ্তাহ। আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট অনুযায়ী গর্ভস্থ সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। ভর্তির পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা তাৎক্ষণিক জরুরি চিকিৎসা দেননি বলে অভিযোগ করা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে রেখে দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। রোগীর স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলেও আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়, এমন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, দীর্ঘ সময় লেবার রুমে ফেলে রাখার কারণে রোগীর রক্তক্ষরণ বেড়ে যায় এবং অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। পরে একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জরুরি অস্ত্রোপচারের নির্দেশ দেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নারী মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে মায়ের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়।

বাদীপক্ষের দাবি, সময়মতো সঠিক ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হলে গর্ভস্থ শিশুটিকে বাঁচানো যেত। ঘটনার পর দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি; বরং বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে দীর্ঘদিন অপেক্ষায় রাখা হয়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মো. নুরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার বিষয়টি জানলাম। তবে ওই রোগীর কাগজপত্র না দেখে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত