Ajker Patrika

ময়মনসিংহে মামলা-বাণিজ্যে বিএনপি নেতারাও ভুক্তভোগী

  • ৫ আগস্টের পর জেলায় রাজনৈতিক মামলা করা হয়েছে ৩১টি।
  • মামলাকে পুঁজি করে লেনদেন মোটা অঙ্কের টাকা।
  • পুলিশের দাবি, নিরীহদের হয়রানি করা হচ্ছে না।
  • রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়েও আসামি অনেকে।
ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ময়মনসিংহে চলছে রমরমা মামলা-বাণিজ্য। এসব মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগীসংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি আসামি করা হচ্ছে বিএনপির নেতা-কর্মীদেরও। বাদ পড়ছেন না ব্যবসায়ী কিংবা সাধারণ মানুষও। মামলাকে পুঁজি করে লেনদেন হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এ নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে জেলাজুড়ে। তবে পুলিশ বলছে, বিভিন্ন মামলায় নিরীহ ব্যক্তিরা আসামি হয়ে থাকলেও তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে না। অভিযোগপত্র দেওয়ার সময় বাদ দেওয়া হবে তাঁদের নাম।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১০ সালে ডান হাতের কবজি কেটে নেওয়া হয় লুৎফুর রহমানের (৪২)। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের করা নাশকতা মামলায় বেশ কয়েক মাস জেলও খাটেন তিনি। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায়ও আসামি হয়েছেন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার ঘোগা ইউনিয়ন পরিষদের টানা তিনবারের সদস্য লুৎফুর।

নাশকতার অভিযোগ এনে গত ৩০ আগস্ট মুক্তাগাছা থানায় সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ ৯২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৪০০ থেকে ১৫০০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন দাওগাঁও ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম। এ মামলায় ২২ নম্বর আসামি বুলবুল (৪৫), ৮৪ নম্বর আসামি লুৎফুর রহমান (৪৫) এবং ৯০ নম্বর আসামি মুন্নাফ মিয়া কামাল (৪০) বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁরা সবাই উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বিএনপির কর্মী। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তাঁরা মামলা-হামলা, জেল খাটাসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন।

ভুক্তভোগী লুৎফুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় ২০১০ সালে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক দুলাল আমার একটি হাত কেটে ফেলে, অন্যটি ক্ষতিগ্রস্ত করে। এখনো বাঁ হাতটি স্বাভাবিক হয়নি। অন্যের সহযোগিতায় চলতে হয়। ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মনি বাদী হয়ে আমাকে প্রধান আসামি করে নাশকতার মামলায় আসামি করে। গত আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটলেও আমার নামে নাশকতার মামলা হয়। বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে এখন বাড়িতেই থাকছি।’

আরেক ভুক্তভোগী মুন্নাফ মিয়া কামাল বলেন, ‘ঘোগা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান লেবুর পক্ষে অবস্থান না নেওয়ায় আমাকে নাশকতার মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। এটি কখনোই কাম্য হতে পারে না।’

মামলার বাদী দাওগাঁও ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্দেশে এ মামলায় সবাইকে আসামি করা হয়েছে। তবে মামলায় বিএনপির তিনজন থাকার বিষয়ে আমি অবগত নই। এটা তাঁরা বলতে পারবেন।’

এদিকে, গত ১২ নভেম্বর ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলমের করা মামলায় ফেরারি আসামি হয়ে বাড়িছাড়া সদর উপজেলার নিলক্ষীয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ (৫৮)। ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি বিএনপির হরতাল সফল করার লক্ষ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করায় তৎকালীন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আলী আকবর বাদী হয়ে যে মামলা করেছিলেন, সেটির ৫ নম্বর আসামি ছিলেন মজিদ।

ভুক্তভোগী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ-বিএনপি কোনো দলই করিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাকে বিএনপি বানিয়ে নাশকতার মামলায় আসামি করা হয়েছে। এখন আমাকে আওয়ামী লীগ বানিয়ে বিএনপির অফিস পোড়ানোর মামলায় আসামি করা হলে আত্মগোপনে চলে যাই।’

গত ৪ আগস্ট শম্ভুগঞ্জ বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি ও হামলা-ভঙচুর চালিয়ে দোকান লুটের অভিযোগ এনে কোতোয়ালি মডেল থানায় পাঁচ-সাতজনের নামে অভিযোগ দেন ব্যবসায়ী হামিদ মণ্ডল। কিন্তু ১১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি দেখিয়ে ১ ডিসেম্বর অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ। মামলা হওয়ার পরপরই হামিদ মণ্ডলের একটি অডিও রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে হামিদকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি মামলা করিনি, কীভাবে মামলা হলো তাও জানি না।’

মোবাইল ফোনে মামলার বাদী হামিদ মণ্ডল বলেন, ‘মামলা আমার অজান্তে হয়েছে; এর জন্য আমিই দায়ী। কিন্তু কে বা কারা করিয়েছে, তা বলতে পারব না।’

মামলার বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘বাদীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব, সেখানে যদি কেউ নিরপরাধ হয়ে থাকেন তাহলে অভিযোগপত্র থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হবে।’

জেলার তারাকান্দার নলদীঘি গ্রামে ৫ আগস্ট হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে গত ২৮ সেপ্টেম্বর। এতে আসামি করা হয়েছে একই পরিবারের পাঁচজনকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থল তদন্ত না করেই বাদীপক্ষের কাছ থেকে মোট অঙ্কের টাকা নিয়ে মামলা করেছে।

ময়মনসিংহের তারাকান্দা-ধোবাউড়া সড়কের নলদীঘি গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনদের সাড়ে ১০ শতাংশ জমি ২০০৮ সাল থেকে জোরপূর্বক দখল করে রেখেছিলেন তারাকান্দা উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক সুমন বিকাশ সরকারের চাচাতো ভাই নিল্টন চন্দ্র সরকার। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা তাঁর দখলে থাকা জমিটি উদ্ধার করে। এ সময় করা হয় ভাঙচুরও। ঘটনাটি ২৮ সেপ্টেম্বরের দেখিয়ে ফয়েজ উদ্দিনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৮- ১০ জনকে আসামি করে তারাকান্দা থানায় মামলা করেন নিল্টন।

মামলার আসামি এমদাদুল হক বলেন, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমাদের সাড়ে ১০ শতাংশ জমি দখল দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করে আসছিলেন নিল্টন চন্দ্র। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলে ছাত্র-জনতা আমাদের জমিটুকু উদ্ধার করে দেয়। নতুন ওসি এসেই বিষয়টি তদন্ত না করে বাদীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আমাদের নামে ভুয়া মামলা করে হয়রানি করছেন।’

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, ‘এটি একটি সাধারণ মামলা, এ নিয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করার কিছু নেই। বাদী-বিবাদী মামলাটি আপসের পথে হাঁটছে। না হয় আমরা তদন্ত করে ফাইনাল রিপোর্ট দেব।’

ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক মামলায় নিরপরাধ কেউ আসামি হয়ে থাকলেও পুলিশ তাদের হয়রানি করছে না। চার্জশিট (অভিযোগপত্র) থেকে বাদ দেওয়া হবে তাঁদের নামও।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্টের পর জেলায় রাজনৈতিক মামলা হয়েছে ৩১টি। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই শতাধিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন, আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার দুই আসামি। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার দুই আসামি। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার মামলায় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের কাশর এলাকা থেকে আশিকুর রহমান ও কাইয়ুমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশ ও র‍্যাবের অভিযানে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আশিকুর রহমান (২৫) ও কাইয়ুম (২৫)। এর আগে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. লিমন সরকার (১৯), মো. তারেক হোসেন (১৯), মো. মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬), মো. আজমল হাসান সগীর (২৬), মো. শাহিন মিয়া (১৯) ও মো. নাজমুল (২১)।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জেলা পুলিশের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

এর আগে গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় মামলা করার পর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপুকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাত আড়াইটার দিকে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। দুই বছর ধরে তিনি এই কোম্পানিতে কাজ করছিলেন।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। কেন ওই যুবককে পুলিশের হাতে না দিয়ে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
আজ সকালে ভালুকা উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ভালুকা উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় একটি কারখানার শ্রমিককে বাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় পিএ নিট কম্পোজিট লিমিটেডের সামনে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজীপুর এলাকা থেকে কারখানার নিজস্ব বাসে করে শ্রমিকেরা ভালুকায় আসার পথে সৌখিন পরিবহনের একটি বাস শ্রমিকবাহী বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের সঙ্গে সৌখিন পরিবহনের চালকের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে আমিনুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক সৌখিন পরিবহনের বাসে উঠে চালকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটিতে জড়ান। পরে তাঁকে ওই বাসের মধ্যে আটক রেখে বাসটি ময়মনসিংহের দিকে চলে যায় বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকেরা।

এর প্রতিবাদে কারখানার শ্রমিকেরা প্রায় এক ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শ্রমিকেরা সৌখিন পরিবহনের কয়েকটি বাস আটকে রেখে অন্য যানবাহন ছেড়ে দেন।

ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘এক শ্রমিককে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। সৌখিন পরিবহনের বাসগুলো আটকে রাখা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতির আক্রমণ থেকে সুরক্ষায় কাপ্তাই বন বিভাগের সতর্কতামূলক কার্যক্রম

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়কে সতর্কবার্তা লিখে দেওয়া হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়কে সতর্কবার্তা লিখে দেওয়া হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাঙামাটির কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কে বন্য হাতির চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্কতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে কাপ্তাই বন বিভাগ। সম্প্রতি ওই সড়কে বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণহানির ঘটনার পর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে বন্য হাতির আক্রমণে ঝর্ণা চাকমা ও সবিতা চাকমা নামে দুই নারী নিহত হন। এই ঘটনার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সড়কটিতে হাতির চলাচল বাড়তে থাকে।

কাপ্তাই বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, বন বিভাগের পক্ষ থেকে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে সোলার ফেন্সিং কার্যকর করা হয়েছে। পাশাপাশি সোলার ফেন্সিংয়ের আওতার বাইরে থাকা কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কে জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন ও সড়কে সতর্কবার্তা লিখে দেওয়া হয়েছে।

ওমর ফারুক স্বাধীন আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশনায় হাতি চলাচলের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ও রোডমার্কিং করা হয়েছে। একই সঙ্গে কাপ্তাই রেঞ্জের পক্ষ থেকে নিয়মিত টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের বন্য হাতির চলাচল সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে, যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে সূর্যের দেখা নেই, বাড়ছে শীতের তীব্রতা

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
সকালে রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা খুব কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকালে রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা খুব কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় গতকাল শনিবার থেকে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশা না থাকলেও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে।

তীব্র শীতের কারণে কাজে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শীতের প্রভাব পড়েছে হাটবাজারেও। অধিকাংশ বাজারে দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে সকাল ১০টার পর। পেটের তাগিদে অনেকেই ঘরের বাইরে বের হলেও কাজ না পেয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন। অপর দিকে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

দৌলতপুর উপজেলায় নিজস্ব আবহাওয়া অফিস না থাকায় জেলার কুমারখালী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল থেকে শুরু হওয়া এই আবহাওয়া আরও এক দিন, অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেও তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকবে। রোববার কুষ্টিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনমজুর মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঠান্ডা ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে আজ কাজে যেতে পারিনি। তা ছাড়া আমার ঠান্ডাজনিত রোগ আছে, তাই বাইরে বের হওয়াও কষ্টকর।’

উপজেলার মথুরাপুর বাজারের অটোরিকশাচালক মামুন হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে মানুষের আনাগোনা কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। শীতের কারণে যাতায়াত কমে গেছে, আয়ও আগের তুলনায় অনেক কম।’

কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, ঘন কুয়াশা না থাকলেও মেঘাচ্ছন্ন আকাশের কারণে দু-এক দিন এমন আবহাওয়া থাকতে পারে। তবে দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিলতে পারে এবং মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়া আরও উন্নত হবে।

এদিকে শীতের প্রভাবে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ জ্বর, সর্দি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, শীত থেকে বাঁচতে সবাইকে গরম পোশাক পরতে এবং অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের সব সময় গরম পোশাকে রাখতে এবং গরম খাবার খাওয়াতে বলা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত