Ajker Patrika

শেরপুরে কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, কলেজ শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার ২

শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরে কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, কলেজ শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার ২

শেরপুরে এক কলেজছাত্রীকে (১৬) বাসায় ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার রাতে শেরপুর শহরের মধ্য গৌরীপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে শিক্ষকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া জোবায়ের হোসেন (২৮) নকলা উপজেলার চৌধুরী ছবরুন্নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের আইসিটি প্রভাষক ও শ্রীবরদী উপজেলার শিমুলকুচি গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে এবং লুৎফর রহমান (৩৫) শেরপুর পৌর শহরের গৌরীপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অপর আসামি শহরের সজবরখিলা এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে আবু রাহাত (৩৫) পলাতক রয়েছে। রাহাত পেশায় একজন আইনজীবী। 

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। একইদিন বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত কলেজশিক্ষক জোবায়ের হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই সঙ্গে বাসার মালিক লুৎফর রহমানকে আদালতে সোপর্দ করে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানালে আগামী রোববার তাঁর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে উভয় আসামিকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বন্দে আলী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নকলা পৌর শহরের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী একই কলেজের আইসিটি বিষয়ের প্রভাষক জোবায়ের হোসেনের কাছে প্রাইভেট পড়ত। একপর্যায়ে তাদের মাঝে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীকে ফোন করে শেরপুর শহরের গৌরীপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে জোবায়ের হোসেন। সেখানে প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন তিনি। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসার মালিক লুৎফর রহমান ও তাঁর বন্ধু আবু রাহাত জোবায়েরের কক্ষে প্রবেশ করে ধর্ষণের ঘটনা দেখে ফেলা এবং তার ভিডিও ধারণের কথা বলে তাঁদেরকে চাপ দেয়। পরে শিক্ষক জোবায়েরকে পাশের একটি কক্ষে রেখে ওই ছাত্রীকে আবু রাহাত ও লুৎফর রহমান রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। 

ওই কলেজছাত্রীর বাবা-মা বাড়িতে না থাকায় রাতে বাসায় গিয়ে তার খালাতো ভাইয়ের সহায়তায় ৯৯৯ এ ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। পরে রাতেই কলেজশিক্ষক জোবায়েরকে নকলা শহরের বাজারদি এলাকার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নকলা থানা-পুলিশ। এরপর সদর থানায় কলেজছাত্রীর অভিযোগ দায়েরের প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে মধ্য গৌরীপুর এলাকা থেকে বাসার মালিক লুৎফর রহমানকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা-পুলিশ। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়। 

এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলা সদর হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মামলার আরেক পলাতক আসামি আবু রাহাতকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোলায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল তরুণীসহ ৩ অটোযাত্রীর

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভোলার বোরহানউদ্দিনে ট্রাকচাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন। আজ রোববার উপজেলার মানিকার হাটবাজারসংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মো. মিজান (৩৬), রিয়াজ উদ্দিন ও আজমিরী আমরিন (২০)। এর মধ্যে মো. মিজান ও রিয়াজ উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় আজমিরী আমরিনকে ভোলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুরে লালমোহন থেকে চালকসহ পাঁচ যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভোলার দিকে যাচ্ছিল। পথে মানিকার হাটবাজার এলাকায় পৌঁছালে দ্রুতগতির একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে সেটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অটোরিকশাচালকসহ তিন যাত্রীকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওসার জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নওগাঁ-৫: নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন

নওগাঁ সংবাদদাতা
এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেছেন নওগাঁ-৫ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী মনিরা শারমীন। আজ রোববার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন।

মনিরা শারমীন লিখেছেন, ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষায় গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী একমাত্র মধ্যপন্থী রাজনীতির ভরসাস্থল ছিল। এই দল থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে নওগাঁ-৫ থেকে আমি মনোনীত প্রার্থী। তবে মনোনয়ন পাওয়ার আগে আমি জানতাম না, এই দল জামায়াতের সঙ্গে ৩০ সিটের আসন সমঝোতা করবে। আমি জানতাম, ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে একক নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ছিল। যেহেতু এখন দলের পজিশন পরিবর্তন হয়েছে, তাই আমি নিজেকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করছি। নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করছি না।’

মনিরা শারমীন আরও বলেছেন, ‘আমি এনসিপির স্বতন্ত্র শক্তিতে বিশ্বাসী। দলের প্রতি আমার কমিটমেন্ট আমি ভাঙি নাই। কিন্তু এই মুহূর্তে দলের প্রতি কমিটমেন্টের চেয়ে আমার গণ অভ্যুত্থানের প্রতি কমিটমেন্ট ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

মনিরা শারমীন আরও লেখেন, ‘আমি দল থেকে পদত্যাগ করার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিই নাই। এনসিপি কারও একার সম্পত্তি না। এনসিপি যতখানি শীর্ষ নেতৃত্বের, তার থেকে অনেক বেশি আমার। আজ পর্যন্ত এমন কিছু বলি নাই বা করি নাই যাতে দল বিতর্কিত হয়। তবে নিজের নৈতিকতা বিক্রি করে রাজনীতি করতে চাই না, ক্ষমতায় যেতে চাই না।’

উল্লেখ্য, ১০ ডিসেম্বর নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমীনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ রোববার গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ রোববার গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা।

অবরোধের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ থাকে। ভোগান্তিতে পড়ে এই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। ‎

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী কলেজ গেট এলাকায় এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে মহাসড়কে মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে পুলিশের অনুরোধে বিক্ষুব্ধরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। ‎ছাত্র-জনতার ব্যানারে পালিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘তোর পুরস্কার গুলিতে মৃত্যু, দাফন-কাফনের জন্য তৈরি হ’

বাগেরহাট প্রতিনিধি
সায়মন শমিত জিয়ন । ছবি: সংগৃহীত
সায়মন শমিত জিয়ন । ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ছাত্রশক্তি বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক সায়মন শমিত জিয়নকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে জেলার মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে জিয়নের বাড়ির গেটে রেখা যাওয়া একটি চিরকুটে এই হুমকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় পরদিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী।

এদিকে আজ রোববার হুমকির চিরকুটটি জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক শেখ বাদশা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

জানতে চাইলে সায়মন শমিত জিয়ন বলেন, ২৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১১টা ২৫ মিনিটে প্রতিদিনের মতো বাড়িতে ফেরার সময় তিনি বাড়ির মূল গেটের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা একটি চিরকুট দেখতে পান। কাগজটি খুলে দেখতে পান, সেখানে লেখা ছিল—‘সায়মন জিয়ন। তোর পুরস্কার গুলিতে মৃত্যু। দাফন-কাফনের জন্য তৈরি হ। জুলাই... জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’

চিরকুটের ভাষা ও হুমকির ধরন দেখে তাঁর ধারণা, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

সায়মন শমিত জিয়ন বলেন, ‘আমরা জুলাইয়ে রাজপথে ছিলাম, গুলির মুখোমুখি হয়েই স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন করেছি। এসব হুমকি-ধমকিতে আমরা ভয় পাই না। মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে আমাদের থামানো যাবে না। দেশের জন্য আমরা যে কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতেও যে কাজ করব, তা অব্যাহত থাকবে।

‘কিছুদিন আগে জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি ভাইকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আজ জাতির কাছে একজন শহীদ। তিনি জুলাইকে ধারণ করেই শহীদ হয়েছেন, জুলাইকে বিক্রি করেননি। আমরাও সেই পথেই হাঁটতে চাই।’

সায়মন শমিত জিয়ন আরও বলেন, ‘হুমকির বিষয়টি আমি কিছু মনে না করলেও পরিবারের সবাই খুবই আতঙ্কে আছে।’

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চিরকুটের মাধ্যমে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত