Ajker Patrika

মাদারীপুর

কাজে আসেনি পূর্বাভাস যন্ত্র

  • বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, ঝড়ের পূর্বাভাসসহ ১০টি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও পূর্বাভাস দেওয়ার কথা ছিল রেইন গেজ যন্ত্রের।
  • মাদারীপুর জেলার ৫৯টি ইউনিয়ন পরিষদের ৫৬টিতে রেইন গেজ মিটার স্থাপন করা হয়।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী, মাদারীপুর
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০১: ১৪
কৃষি আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য মাদারীপুর সদরের ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের দেয়ালে স্থাপিত রেইন গেজ মিটার। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কৃষি আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য মাদারীপুর সদরের ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের দেয়ালে স্থাপিত রেইন গেজ মিটার। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাদারীপুর জেলার ৫৯টি ইউনিয়নের ৫৬টিতে রেইন গেজ মিটার স্থাপন করে। এই যন্ত্রের নির্দিষ্ট এলাকার বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, ঝড়ের পূর্বাভাস, আলোক ঘণ্টাসহ ১০টি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও পূর্বাভাস তিন দিন আগে জানিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পটি থেকে কৃষকেরা কোনো উপকার পাননি।

পাঁচ বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের বাইরের দেয়ালে স্থাপিত এসব রেইন গেজ যন্ত্রের অধিকাংশ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কোথাও কোথাও অনেকগুলো উধাও হয়ে গেছে। এমনকি এসব যন্ত্র দেখাশোনা ও পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য প্রত্যেক উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দেওয়া ট্যাব, প্রিন্টার, সিম কার্ড ও মডেমের অধিকাংশেরই কোনো হদিস নেই।

কৃষকেরা বলছেন, রেইন গেজ কী জিনিস, সে সম্পর্কেই তাঁরা কিছু জানেন না। এগুলো তাঁদের কোনো কাজে আসেনি। ফলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি ও দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য স্থাপিত রেইন গেজ প্রকল্পের অর্থ বিফলে গেছে বলে কৃষকেরা অভিযোগ তুলেছেন।

মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটমাঝি ইউপির দেয়ালে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যন্ত্রটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে আছে। এটি যাঁরা স্থাপন করেছেন, তাঁরাই বলতে পারবেন, এটির কী উপকারিতা আছে। আমরা এ সম্পর্কে কিছু বলতে পারব না।’

ঘটমাঝি ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু তালেব বলেন, ‘ইউপির ছাদে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যন্ত্রটির কিছু অংশ অনেক আগেই চুরি হয়ে গেছে। বাকি অংশ দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে আছে। এটা দিয়ে কৃষকের কোনো উপকারই হয়নি।’

মিজানুর রহমান নামের এক কৃষক বলেন, ‘আমরা কোনো দিনও ইউপি থেকে আবহাওয়ার আগাম তথ্য পাইনি। এই তথ্য পেলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো। ফসল ফলাতে অনেকটাই কাজে আসত। অনেক সফল নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পেত। তা ছাড়া আমাদের ইউপিতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যন্ত্র আছে, সেটি আমাদের জানা নেই। এই যন্ত্রের কাজ কী, তা-ও জানি না।’

কেন্দুয়া ইউপির পাশেই বাড়ি কৃষক জগদীশ দাসের। তিনি কখনো রেইন গেজ থেকে আবহাওয়ার কোনো পূর্বাভাস পাননি অভিযোগ তুলে বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশে ইউপি। কিন্তু আমি এই সম্পর্কে কিছুই জানি না। এখানে আবহাওয়ার যন্ত্র বসানো হয়েছে। এর কাজ কী, এই ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই।’

কেন্দুয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. মোতাহার মিয়া বলেন, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার জন্য রেইন গজ মিটার কী, তা আমরা জানি না। এটা দিয়ে কী কাজ হয়, তা-ও জানি না। কবে বসিয়েছে, এই সম্পর্কে কিছুই ধারণা নেই আমাদের। তবে আগে থেকে আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে পারলে আমাদের অনেক উপকার হতো। আমরা সেভাবে প্রস্তুত নিতে পারতাম।’

প্রকল্পের আওতায় দেওয়া ট্যাব, প্রিন্টার, সিম কার্ড ও মডেমের বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ওই প্রকল্প যখন শুরু হয়, তখন আমি এখানে ছিলাম না। আমি নতুন এসেছি। তা ছাড়া এই প্রকল্পে আমাদের কোনো ট্যাব, সিম কার্ড, ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। শুনেছি, শুধু একজনকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাকে দেওয়া হয়েছিল, তা আমি জানি না। বর্তমানে ওই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।’

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও ডাসার উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মিলটন বিশ্বাস বলেন, ‘কয়েক বছর আগে ঢাকা থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসে প্রকল্পের কাজ করে গেছেন। আমাদের কাছ থেকে শুধু চাহিদা অনুযায়ী ইউনিয়নগুলোর নাম চেয়েছিলেন। আমরা নাম দিয়েছি। তাই এর থেকে বেশি কিছু জানি না।’

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সন্তোষ চন্দ চন্দ্র আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই অনেক স্থানে এর ব্যবহার হচ্ছে না। তা ছাড়া অচল যন্ত্রগুলো সচল করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, তারা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

কুমিল্লা নগরীর পাথুরিয়া এলাকায় বেকারি পণ্য ও শিশুখাদ্য প্রস্তুতকারী একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে ওজনে কম দেওয়া, শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, পোড়া তেল দিয়ে শিশুখাদ্য ভাজা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রস্তুতের অভিযোগে ‘আরব বেকারি’কে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর বিভিন্ন ধারায় এ জরিমানা করা হয়।

অভিযানকালে দেখা গেছে, পার্টি কেকের ক্ষেত্রে প্রতি দুই পাউন্ডে প্রায় ৭০ গ্রাম কম দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া শিশুখাদ্য প্রস্তুতে নিষিদ্ধ রং ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের একাধিক প্রমাণ পাওয়া যায়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. কাউছার মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নমুনা সংগ্রহকারী মো. সাকিব। অভিযানে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল সহযোগিতা করে।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. কাউছার মিয়া বলেন, অভিযানে জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত
বাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বাড্ডায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে অছিম পরিবহনের মিরপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার মো. শাজাহান শিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শামীম জানান, উত্তর বাড্ডার এএমজেড হাসপাতালের সামনের সড়কে বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরুল ইসলাম বলেন, কারা বাসে আগুন দিয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে এবং বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এর আগে, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সে সময় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘চিকিৎসা না পেয়ে’ গর্ভের সন্তানের মৃত্যু: চট্টগ্রামে ৪ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের । ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের । ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় এক নারীর গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা সাত্তারের আদালতে ভুক্তভোগী নারী নাসরিন আক্তার মামলার আরজি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সিরাজুন নূর, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) মো. নুরুল হক, পরিচালক (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) এ এফ এম আশরাফুল করিম এবং ডেপুটি ডিরেক্টর (অ্যাডমিন-আইসিইউ) মো. আবু সাইদ চৌধুরী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রিগ্যান আচার্য্য জানান, মামলার আবেদনের পর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং মামলাটি তদন্তের জন্য ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দেন। আদালত আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকালে প্রসবব্যথা নিয়ে নাসরিন আক্তারকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তাঁর গর্ভকাল ছিল ৩৭ সপ্তাহ। আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট অনুযায়ী গর্ভস্থ সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। ভর্তির পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা তাৎক্ষণিক জরুরি চিকিৎসা দেননি বলে অভিযোগ করা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে রেখে দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। রোগীর স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলেও আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়, এমন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, দীর্ঘ সময় লেবার রুমে ফেলে রাখার কারণে রোগীর রক্তক্ষরণ বেড়ে যায় এবং অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। পরে একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জরুরি অস্ত্রোপচারের নির্দেশ দেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নারী মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে মায়ের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়।

বাদীপক্ষের দাবি, সময়মতো সঠিক ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হলে গর্ভস্থ শিশুটিকে বাঁচানো যেত। ঘটনার পর দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি; বরং বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে দীর্ঘদিন অপেক্ষায় রাখা হয়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মো. নুরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার বিষয়টি জানলাম। তবে ওই রোগীর কাগজপত্র না দেখে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটা রীতিমতো অবান্তর: চবির উপ-উপাচার্য

চবি প্রতিনিধি 
চবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি অবান্তর বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ রোববার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য দপ্তরে ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের দিন নির্ধারিত ছিল। পাকিস্তানি বাহিনী দেশ থেকে পালানোর জন্য চেষ্টা করছিল, সে সময় তারা জীবিত থাকবে—না মৃত থাকবে, সে বিষয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি, সে সময় পাকিস্তানি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি আমি মনে করি রীতিমতো অবান্তর।’

এ সময় তিনি ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর কী হয়েছিল, তা জানতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করার অনুরোধ করেন।

মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এ দেশকে আরেকটা দেশের করদরাজ্যে পরিণত করার জন্য বুদ্ধিজীবীদের ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা করা হয়েছে। আমরা আজ পর্যন্ত জহির রায়হানকে খুঁজে পাইনি। যদি জহির রায়হানকে খুঁজে পাওয়া যেত, সত্যিকার ইতিহাস আমরা পেতাম।’

মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান আরও বলেন, ‘গতকাল টিভিতে দেখলাম, মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান (সদ্য জামায়াতে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি মেজর অব. আখতারুজ্জামান) বক্তব্য দিচ্ছেন। তাঁকে যখন প্রশ্ন করা হলো যে আপনি তো বলতেন, ১৯৭১ সালে লাখ লাখ লোক শাহাদাত বরণ করেছে। এখন আপনি এর বিপরীত রাজনীতিতে যুক্ত হলেন, এটি কেন?

মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান বললেন, ‘এগুলো হচ্ছে রেটরিক (আলংকারিক) বক্তব্য। এগুলো তো সত্য নয়। রেটরিক বক্তব্য আমরা জাতির সামনে শুনতে চাই না। আমরা রিয়েলিটি চাই। আমরা সত্যিকারভাবে বাংলাদেশে কী ঘটেছিল ১৯৭১ সালে, সেই ঘটনায় কারা কারা শহীদ হয়েছে, সেই তথ্য আমরা জানতে চাই। কারা কারা হত্যা করেছে, সেই তথ্য এখন পর্যন্ত আমাদের জানা হয়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও চবি জাদুঘরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান।

বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, চাকসুর সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী।

এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে একটি র‍্যালি শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।

এ দিকে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়ে উপ-উপাচার্যের (একাডেমিক) মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এ বিষয়ে কথা বলতে অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত