Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জে বিএনপির ৭ বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল, চিন্তিত তৃণমূল নেতা-কর্মীরা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির এক বিদ্রোহী প্রার্থী। ছবি: আজকের পত্রিকা
কিশোরগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির এক বিদ্রোহী প্রার্থী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে বিএনপির সাতজন বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এতে চিন্তিত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা মনে করছেন, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের বিপরীতে নিজ দলের অন্য নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ালে তা শেষ পর্যন্ত পুরো দলের জন্যই বিপদ ডেকে আনতে পারে। কারণ, দলের ভেতর এমন বিভক্তির সুযোগ নিতে পারে অন্যরা। এসব আসনে প্রার্থিতা নিয়ে বিরোধের অবসান ঘটলে বিএনপির জয় নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।

কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম। তিনি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আসলাম মোল্লার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এই আসনে মনোনয়ন না পেয়ে একই দিন বিএনপির চার বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হিলালী, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ রেজাউল করিম খান, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রুহুল হোসাইন ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ।

বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসনটিতে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন-বিক্ষোভ হয়েছে। নেতারা একে অন্যের বিষোদ্‌গার করেছেন। হয়েছে বাক্‌যুদ্ধ। প্রকাশ্য সমাবেশে বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীরা জানান, নেতাদের এমন অবস্থান নিয়ে চিন্তিত তাঁরা। ভেদাভেদ ভুলে সবাই একসঙ্গে দলীয় রাজনীতি করবেন, এটাই চান তাঁরা।

বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘সদর ও হোসেনপুর উপজেলার জনগণের ভালোবাসায় ও প্রেশারে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি। নির্বাচনে যাব কি যাব না, তা আগামী ২০ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন আলোচনা করে আপনাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে আইনজীবী মো. জালাল উদ্দীনকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি সোমবার দুপুরে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। জালাল উদ্দীন পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক। এই আসনে অবশ্য দলীয় কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। তাই অনেকটা নিশ্চিন্তে রয়েছেন তিনি।

কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ওসমান ফারুক সোমবার দুপুরে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ওসমান ফারুক বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা। এর আগে ওসমান ফারুকের মনোনয়নের বিরোধিতা করেছেন জাহাঙ্গীর আলম। ১২ ডিসেম্বর জেলা শহরের স্টেশন রোডে একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম ওসমান ফারুকের বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কথা জানিয়ে তিনি প্রার্থী হতে সক্ষম কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ ছাড়া মনোনয়ন চেয়ে বিশাল শোডাউনও করেন জাহাঙ্গীর আলম।

জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা বলেন, ‘বিগত দিনে দলের ক্রান্তিকালীন ও দুর্যোগপূর্ণ সময়ে নেতা-কর্মীদের পাশে আমি ছিলাম। দল আমাকে কীভাবে মূল্যায়ন করল সেটা বড় বিষয় নয়, আগামীতেও নেতা-কর্মীদের পাশে থাকব। এই কথা সত্য, দল আমাকে পরিচিতি দিয়েছে, সেই দলেই আমার শেষ ঠিকানা। এটার মধ্যেই আমি বিশ্বাস রাখতে চাই।’

অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে আলোচিত বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। গত রোববার তিনি ইটনায় নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা সাবেক জেলা প্রশাসক আবদুর রহিম মোল্লাও একই দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তবে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম জানিয়েছেন, আবদুর রহিম মোল্লার বিএনপিতে প্রাথমিক সদস্যপদও নেই। তিনি বিএনপির কেউ নন।

কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয় দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগদান করা সৈয়দ এহসানুল হুদাকে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনিও সোমবার দুপুরে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এই আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে এদিন দুপুরে বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। যদিও এই আসনে বিএনপি থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল শেখ মজিবুর রহমানকে। কিন্তু ২২ ডিসেম্বর নিজের দল বিলুপ্ত করে সৈয়দ এহসানুল হুদা বিএনপিতে যোগদান করায় তাঁকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হন মজিবুরের অনুসারীরা। ২৪ ডিসেম্বর বাজিতপুরের সরারচর রেলস্টেশনে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন মজিবুরের কর্মী-সমর্থকেরা। পরে ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কারণে এক দিন বিরতি দিয়ে ফের বিক্ষোভ করেন তাঁরা। ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল ও মশাল মিছিল করেন তাঁরা।

কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি মনোনয়নপত্র দাখিল করিনি। আমার পক্ষে বাজিতপুর নিকলীর বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাঁদের আবেগ-অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি প্রার্থী হয়েছি।’

সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে বিএনপি থেকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম। এই আসনে দলের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় নির্ভার রয়েছেন তিনি।

বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলীয় বিভক্তি নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম বলেন, ‘মনোনয়ন দেওয়া হয় দলের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে এসেছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে আমি বিষয়টি কেন্দ্রে জানাব। দলের সভাপতি হিসেবে আমি চাই না কেউ বিদ্রোহী থাকুক। দলটা সবাইকে নিয়েই করতে হবে।’

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ৬১ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আগামী শুক্র ও শনিবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর রামপুরায় অটোরিকশার ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪২
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর রামপুরা ডিআইটি রোডে সিএনজি চালিত অটোরিকশার ধাক্কায় এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। তাঁর নাম-পরিচয় জানাতে না পারলেও পুলিশের ধারণা, ওই ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৭০ বছর।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রামপুরার ডিআইটি রোড বেটারলাইফ হাসপাতালের পাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান পথচারীরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে মারা যান তিনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সফিকুল ইসলাম খান। তিনি জানান, মৃত ব্যক্তির নাম-পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে। অটোরিকশাটিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে বাঁশবাগানে পড়ে ছিল কলেজছাত্রের লাশ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৪
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সিয়াম হোসেন (১৭) নামের এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নিখোঁজ হওয়ার পর আজ মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি বাঁশবাগানে তার লাশ পাওয়া যায়।

সিয়াম দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের মধুগাড়ি এলাকার বাসিন্দা। সে গোয়ালগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় মসজিদের ইমাম সিপুল হোসেনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে মধুগাড়ি এলাকার শেহালা উত্তর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের একটি বাঁশবাগানে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। পরে দৌলতপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

মৃত শিক্ষার্থীর পরিবার জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি সিয়াম। পরে আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী মিলে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ সকালে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, সকালে এক কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গয়েশ্বর চন্দ্রের আসনে বিএনপির বিদ্রোহী তিন বড় নেতাসহ ১৬ প্রার্থী, শক্ত লড়াইয়ের আভাস

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ফাইল ছবি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ফাইল ছবি

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে গতকাল সোমবার ঢাকা-৩ সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের আসন হিসেবে পরিচিত এই আসনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিদ্রোহী প্রার্থীসহ মোট ১৬ জন এদিন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এতে নির্বাচনী মাঠে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে এই আসনে শক্ত লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে, সে আভাসই মিলেছে।

এদিন ঢাকা-২ ও ঢাকা-৩ আসনে ধানের শীষ, দাঁড়িপাল্লা ও হাতপাখা প্রতীকে একজন করে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। পাশাপাশি গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, গণসংহতি আন্দোলন এবং একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনের দৌড়ে যুক্ত হন।

গতকাল বেলা ৩টার দিকে ঢাকা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ওমর ফারুকের কাছে তাঁর মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। একই দিনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহীনুর ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সুলতান আহমেদ খানও মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এদিন ঢাকা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া বিএনপির একাধিক বিদ্রোহী নেতা ও সমর্থকের উপস্থিতি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিএনপির তিনজন বড় নেতা ও তিনজন সমর্থক রয়েছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও অবিভক্ত কেরানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজী নাজিমউদ্দীন মাস্টার, জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল কবির পল এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেত আলী বাবু। তাঁদের মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা রেজাউল কবির পল অনেক দিন ধরে ঢাকা-৩ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠ থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ করেছেন। শেষ পর্যন্ত দল গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কেই মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন।

এ ছাড়া গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বিএনপির সমর্থকদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া নিয়েও এলাকায় কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাজ্জাত হোসেন, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি পাভেল মোল্লার মা পারুল মোল্লাসহ আরও কয়েকজন। বিএনপি নেতাদের একটি অংশের দাবি, কৌশলগত কারণেই এসব প্রার্থীকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনী মাঠে রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া একই আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী সাজ্জাদ আল ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মোহাম্মদ জাফর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রার্থী বাচ্চু ভূঁইয়া, গণফোরামের প্রার্থী মোহাম্মদ রওশন ইয়াজদানি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বেলাল হোসেন, মো. ফারুক, মো. সাজ্জাদ ও মো. শোয়েব মাহমুদ মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্রভাবে বিএনপির একাধিক প্রভাবশালী নেতা ও সমর্থকের অংশগ্রহণে ঢাকা-৩ আসনের নির্বাচনী সমীকরণ শুরুতেই জটিল হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিরোধী দলের পাশাপাশি বিএনপির ভেতরের এই বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের জন্য এবারের নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে এভারকেয়ারের সামনে ভিড়, পুলিশের ব্যারিকেড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এভারকেয়ারের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে বেষ্টনী দিয়ে রেখেছে পুলিশ। এছাড়া র‍্যাব ও বিজিবিসহ আরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে শেষবারের মতো এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নানান পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ছুটে এসেছেন এক পলক দেখতে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে শতশত মানুষ ভিড় জমতে দেখা গেছে। কেউ কেউ তাঁদের নেত্রীকে একপলক দেখার জন্য এসেছেন, কেউ কেউ ভালোবাসার টানে ছুটে এসেছেন।

ঢাকায় থাকা দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রায় সবাই ইতিমধ্যে হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত