Ajker Patrika

খুলনা শহর

আ.লীগ-বিএনপির ২০ নেতার দখলে শতকোটির জায়গা

  • সিটি করপোরেশন প্রকল্প গ্রহণ করলেও বাধার মুখে বাস্তবায়িত হয়নি।
  • প্রকল্পের জায়গায় ৭ বছরে খুঁটিও পুঁততে পারেনি যানবাহন অধিদপ্তর ।
কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা
সরকারি জায়গা দখল করে ‘রকি ডক ইয়ার্ড’ নামের একটি নৌযান কারখানা গড়েছেন আওয়ামী লীগের মিন্টু কাগজী। এ জায়গা এখনো উদ্ধার করা যায়নি। সম্প্রতি খুলনা মহানগরীর কাস্টমঘাট এলাকায়। 	ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি জায়গা দখল করে ‘রকি ডক ইয়ার্ড’ নামের একটি নৌযান কারখানা গড়েছেন আওয়ামী লীগের মিন্টু কাগজী। এ জায়গা এখনো উদ্ধার করা যায়নি। সম্প্রতি খুলনা মহানগরীর কাস্টমঘাট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা শহরের কাস্টম ঘাট এলাকায় সরকারের ৩ দশমিক ৩৩ একর জমি দখল করে রেখেছেন স্থানীয় আওয়ামী ও বিএনপি নেতারা। সেখানে সিটি করপোরেশন একবার প্রকল্প নিয়েছিল, তবে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এরপর সরকারের যানবাহন অধিদপ্তর সেখানে প্রকল্প হাতে নিয়েও কাজ শুরু করতে পারেনি। সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘হাত লম্বা ছিল’। তাই কিছু করা যায়নি। বর্তমানে বিএনপির নেতারা গায়ের জোরে জায়গা দখল করে রেখেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০ বছর আগে খুলনা শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের আওতায় খুলনার ভৈরব নদ ও রূপসা নদীর তীরে হাঁটাচলার জন্য ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে খুলনা সিটি করপোরেশন। প্রকল্পের আওতায় ভৈরব নদের অংশের কাজ শেষ হলেও অবৈধ দখলদারদের বাধার কারণে রূপসা নদীর ১ ও ২ নম্বর কাস্টম ঘাট অংশের কাজ করতে পারেনি করপোরেশন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল-মিটিং, বিক্ষোভ করে করপোরেশনের কাজ ঠেকিয়ে দেন।

জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে খুলনায় কেন্দ্রীয় নৌযান মেরামত কারখানা এবং আধুনিক নৌযান প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর। তখন জেলা প্রশাসন এই কাস্টম ঘাট এলাকার ৩ দশমিক ৩৩ একর জায়গা অধিদপ্তরকে দেয়। তখন ওই জমির বাজারমূল্য ছিল ৫৭ কোটি টাকার বেশি; বর্তমানে তা প্রায় ১০০ কোটি টাকা। যানবাহন অধিদপ্তর ৭ বছর আগে এই জায়গা পেয়েছে। তবে কোনো কাজ এখনো করতে পারেনি।

প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (নৌ) মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘২০১৭ সালে জমি বুঝে পাওয়া যায়। তবে দখলদারদের উচ্ছেদ করা যায়নি। যখনই প্রকল্পের কাজ নিয়ে মাপজোখ হয়, তখনই আন্দোলনে নামেন দখলদারেরা। মিছিল সমাবেশ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি দিয়ে বাধাগ্রস্ত করেন তাঁরা।

সম্প্রতি এই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ২ নম্বর কাস্টম ঘাট মোড়ে রয়েছে ‘মনোলিথ কনস্ট্রাকশন’। এর মালিক বিএনপির নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব কায়সার। এই প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০০ গজ উত্তরে রয়েছে সিটি করপোরেশনরে সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের ছোট ভাই তালুকদার আবদুল জলিলের ইট, বালু, পাথরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এ দুটি প্রতিষ্ঠানই সরকারি জায়গায়। এলাকায় রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মিন্টু কাগজীর ‘রকি ডক ইয়ার্ড’ নামের একটি নৌযান কারখানা। সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, তাঁর ভাই সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এবং বিসিবির সাবেক পরিচালক শেখ সোহেল এবং শেখ রুবেল, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুলের কার্গো জাহাজগুলো এই কারখানায় মেরামত এবং নতুন কার্গো নির্মাণ করা হয়। ফলে প্রশাসন তাঁর কাছে অনেকটাই জিম্মি। বর্তমানে তিনি বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার আশ্রয়ে দখলে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুধু মাহবুব কায়সার, মিন্টু ও তালুকদার জলিলই নন; এই এলাকায় সরকারি জমি দখল করে গড়ে উঠেছে দুই শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। দখল করা জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে ডক ইয়ার্ড, ইজিবাইকের গ্যারেজ, ইট, বালু, সিমেন্ট, পাথর, করাতকলসহ ছোট-বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ২০ নেতা।

এই এলাকায় জায়গা দখলকারীদের মধ্যে আরও রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাত্তার খলিফা, কমল সিদ্দিকী, মুক্তিযোদ্ধা (প্রয়াত) আব্দুল কাইয়ুম, বাবলু কাগজী, হালিম হাওলাদার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আকরাম হোসেন এবং বিএনপির নেতা ময়েজ উদ্দিন চুন্নু ও পান্না, প্রয়াত ইয়াকুব আলী খানের ভাই আইয়ুব হোসেন, আবুল হোসেন ও হাবিবুর রহমান ও দলটির সমর্থক নান্টু, মনির হোসেন, ইউসুফ আলী।

এই ব্যবসায়ীদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন সাবেক মেয়রের ভাই তালুকদার আবদুল জলিল। তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে বিএনপির নেতা ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব কায়সার ব্যবসায়ীদের পক্ষে বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকার একাধিক ভুয়া প্রকল্প গ্রহণের পর বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছে। এসব ভুয়া প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করতে দেব না। তবে সরকার যদি হাসপাতাল নির্মাণের মতো ভালো প্রকল্প গ্রহণ করে, তাহলে স্বাগত জানাব।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব কায়সার বলেন, এই জমির মালিকানা নিয়ে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন এবং বিআইডব্লিউটিএর মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে। তাদেরকে ম্যানেজ করেই ব্যবসায়ীদের চলতে হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিলম্ব

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশাজনিত কারণে আজ রোববার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমনকারী একাধিক ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের তুলনায় বিলম্বে অবতরণ ও উড্ডয়ন করেছে। তবে এদিন কোনো ফ্লাইট ডাইভার্ট (অন্যস্থানে অবতরণ) করা হয়নি।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ জানান, আজ ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত রানওয়ের দৃশ্যমান কমে যাওয়ায় ফ্লাইট অপারেশনে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। এ কারণে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট সময়সূচি অনুযায়ী পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়। বর্তমানে দৃশ্যমান অবস্থা স্বাভাবিক থাকায় ফ্লাইট পরিচালনা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বিবেচনায় সব ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

বিলম্বিত ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা প্রদান করছে বলে জানানো হয়েছে। যাত্রীদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তির জন্য এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ভ্রমণের আগে নিজ নিজ ফ্লাইটের সর্বশেষ অবস্থা জেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদা না দেওয়ায় হাতিয়ায় ব্যবসায়ীর ওপর হামলার অভিযোগ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৭
আহত ব্যবসায়ী মেহরাজ উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যবসায়ী মেহরাজ উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় চাঁদা না দেওয়ায় মেহরাজ উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ীর ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন।

গতকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতের এই ঘটনায় হাতিয়া থানায় চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টা ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় স্থানীয় ইউনুছ মাঝিসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৮ ডিসেম্বর অভিযুক্ত ইউনুছ মাঝি ও তাঁর সহযোগীরা মেহরাজ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ২৪ ডিসেম্বর সকালে মেহরাজ উদ্দিন তাঁর চাল ভাঙার মেশিনে কাজ করার সময় সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলার সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো কিরিচ দিয়ে মেহরাজ উদ্দিনের মাথায় এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। এতে মাথার হাড় ও খুলি মারাত্মকভাবে জখম হয়। এ ছাড়া লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়।

পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম আরিফ বলেন, মেহরাজ উদ্দিনের মাথার আঘাত খুবই গুরুতর। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

মেহরাজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, কয়েক দিন ধরে ইউনুছ মাঝি, তাঁর ছেলে হাসান ও রাজু এবং পাশের এলাকার আয়াত হোসেন তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। এর আগেও তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। এতে তিনি ও তাঁর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, মেহরাজ উদ্দিনের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে ট্রেনের ধাক্কায় পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর উত্তরার হাউস বিল্ডিং এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় নাজমুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাজমুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রতিবেশী ও ভাতিজা সাকিব আলম জানান, তাঁদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ওলিপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম নুরনবী। বর্তমানে গাজীপুরের টঙ্গীতে থাকতেন নাজমুল। তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় কোয়ালিটি সুপারভাইজার ছিলেন তিনি।

সাকিব আলম আরও জানান, রাতে গ্রাম থেকে তাঁকে ফোনে জানানো হয়, নাজমুল উত্তরার হাউস বিল্ডিংয়ের জয়নাল মার্কেট নতুন গেট এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় আহত হয়েছেন। পরে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে দেখতে পান। আহত অবস্থায় নাজমুলকে পথচারীরা সেখানে নিয়ে এসেছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর।

পথচারীদের বরাতে সাকিব আরও বলেন, হাউস বিল্ডিং এলাকার জয়নাল মার্কেটে নতুন গেট এলাকার রেললাইনে দুই দিক থেকে দুটি ট্রেন আসায় ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নাজমুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তবে তিনি সেখান দিয়ে কোথায় যাচ্ছিলেন, কেউ তা বলতে পারেননি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আবারও সেই ১৪ ভারতীয়কে পুশ ইনের চেষ্টা, দৌলতপুর সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৭
ভারতীয় ১৪ নাগরিক শূন্য লাইনে অবস্থান করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভারতীয় ১৪ নাগরিক শূন্য লাইনে অবস্থান করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ফের ১৪ ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কঠোর অবস্থান ও সতর্ক পাহারার কারণে রোববার ভোরে এই নতুন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ভোরে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির অধীন চল্লিশপাড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় ওই নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চালায় বিএসএফ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে একই ব্যক্তিদের পুশ ইনের চেষ্টা করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হলে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁরা পুনরায় ভারতে ফেরত যান।

এরপরও বিএসএফ দৌলতপুর সীমান্ত ব্যবহার করে নতুন করে পুশ ইনের চেষ্টা চালায়। বিজিবির কঠোর তৎপরতায় এবারও সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বর্তমানে ভুক্তভোগী ভারতীয় ওই নাগরিকেরা সীমান্তের শূন্য (জিরো) লাইনের আশপাশে অবস্থান করছেন।

শূন্য লাইনে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০)। শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, তাঁরা ভারতের ওডিশা রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা ও মুসলিম নাগরিক। ভারতীয় পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের আটক করে কারাগারে পাঠায় এবং আধার কার্ড ও রেশন কার্ড জব্দ করে। পরে ওডিশার একটি কারাগারে তাঁরা এক মাস পাঁচ দিন আটক ছিলেন। দুই দিন আগে তাঁদের কলকাতায় নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে নদীয়া জেলার গেঁদে সীমান্তে এনে মধ্যরাতের পর কাঁটাতারের গেট খুলে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করা হয়। তাঁরা দাবি করেন, তাঁরা বাংলা ভাষা বুঝতে পারেন না।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত