Ajker Patrika

যশোরে ফুটপাত দখলে নিয়ে ইউএনওর মিনি পার্ক, দুর্ঘটনার শঙ্কা

আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭: ৫১
মনিরামপুরের মোহনপুর বটতলায় আঞ্চলিক সড়কের গা ঘেঁষে পৌর মিনি পার্ক করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনিরামপুরের মোহনপুর বটতলায় আঞ্চলিক সড়কের গা ঘেঁষে পৌর মিনি পার্ক করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের মনিরামপুরে সড়ক ও জনপদের (সওজ) জায়গায় পৌর মিনি পার্ক গড়ে তুলেছেন পৌরসভার প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না। যশোর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের মোহনপুর বটতলা মোড়ে ফুটপাতের ওপর এই পার্ক নির্মাণে পৌরসভার ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সওজের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, তাদের অনুমতি ছাড়াই এই পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ফুটপাতের ওপর বানানো এই পার্কের কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা আরও বেড়ে গিয়েছে।

চলতি মাসের ১৬ তারিখ আনুষ্ঠানিক পার্কটি উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে মোহনপুর বটতলা মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, যশোর-চুকনগর সড়কের পশ্চিম পাশে ফুটপাতের অংশে ড্রেন নির্মাণের জন্য মাটি তুলে রেখেছে পৌরসভা। ঠিক তার পূর্ব পাশে ফুটপাতের ওপর পিচের রাস্তা ঘেঁষে কংক্রিটের পিলার স্থাপন করে জায়গাটি দখলে নিয়েছে পৌরসভা। ওই অংশে পুরোনো একটি যাত্রী ছাউনি আছে। সেটিকে টাইলস দিয়ে নতুন করে সাজানো হয়েছে। এর পাশে ইটের গাঁথুনি দিয়ে শতাধিক ফুলগাছ লাগানো হয়েছে। এর পাশে সড়ক ঘেঁষে পিলার স্থাপন করা হয়েছে। একটা রড দিয়ে নির্মিত ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার পিলারগুলোর অবস্থা এরই মধ্যে বেশ নাজুক হয়ে পড়েছে। একটিকে ভেঙে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

মোহনপুর বটতলা মোড়ের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই মোড়টি দুর্ঘটনা প্রবণ। এর মধ্যে এভাবে ফুটপাত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানি বলেন, ‘এখানে পার্কের কোনো উপকারিতা নেই। গত ১৫ দিনে কাউকে এখানে এসে সময় কাটাতে দেখিনি। বরং পার্কের নামে রাস্তার ওপর পিলার দেওয়া হয়েছে। বড় গাড়িগুলোকে সাইড দিতে ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল বা সাইকেলের সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বাড়ছে।’

ওই দোকানি বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে একটি ইঞ্জিন ভ্যান মাইক্রোবাসকে এগিয়ে দিতে সরে যাওয়ার কোনো জায়গা পায়নি। পরে মাইক্রোবাসটি পেছন থেকে এসে ভ্যানে ধাক্কা দিয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের এক শিক্ষক বলেন, মোহনপুর বটতলা মোড়ে যাত্রী ছাউনির সামনে বাস থামে না। যাত্রী ছাউনিটি অকেজো পড়ে আছে দীর্ঘদিন। আগে যাত্রী ছাউনিটা খোলা ছিল। তারপরও যাত্রীরা এখানে আসতেন না। এখন সেটাতে টাইলস বসিয়ে রং করে কয়েকটি ফুলের চারা লাগানো হয়েছে।

যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম পার্ক উদ্বোধন করছেন। পাশে ইউএনও নিশাত তামান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম পার্ক উদ্বোধন করছেন। পাশে ইউএনও নিশাত তামান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি আরও বলেন, ব্যস্ততম এই সড়কের গা ঘেঁষে এখানে পার্কের কোনো কার্যকারিতা নেই। কিছু টাইলস আর ফুলের চারা লাগিয়ে ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। এতে এত টাকা খরচ হওয়ার কথা না। মূলত পৌরসভার টাকা লোপাট করতে পার্কের নামে পথচারীদের ভোগান্তি বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মনিরামপুর পৌরসভার কার্যসহকারী আব্দুর রাশিদ তপু বলেন, ‘সওজের ৩ থেকে ৪ শতক জমির ওপর মিনি পার্ক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। সওজ চাইলে পার্ক ভেঙে যে কোনো সময় তাদের জমি দখলে নিতে পারবে।’

সওজের জায়গায় পার্কের নামে লাগানো হয়েছে ফুলের চারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সওজের জায়গায় পার্কের নামে লাগানো হয়েছে ফুলের চারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মনিরামপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী উত্তম মজুমদার বলেন, ‘ইউএনও জায়গাটি পছন্দ করেছেন। ওই স্থানে আমাদের একটি যাত্রী ছাউনি আছে। সেটা দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। স্থানীয়রা ওই জায়গা দখলে নিয়ে ব্যবসা করতেন। যাত্রী ছাউনি সংস্কার করে মিনি পার্ক গড়লে জনসাধারণের ভালো হবে ভেবে ইউএনও এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

উত্তম মজুমদার আরও বলেন, ‘টেন্ডারের মাধ্যমে পার্কের কাজ করা হয়েছে। পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। জরুরি হওয়ায় আমাদের পৌরসভার এক ঠিকাদারকে দিয়ে ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে মিনি পার্ক করা হয়েছে। এই টাকার মধ্যে যাত্রী ছাউনি টাইলস বসিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। পার্কে টাইলস বসানো হয়েছে। বালু ফেলে ফ্লোর ঢালাই দেওয়া হয়েছে। ইটের গাঁথুনি দিয়ে ফুল বাগিচা করা হয়েছে। একটা ছাতা স্থাপন করা হয়েছে। সেগুলো রক্ষায় রাস্তার পাশ দিয়ে পিলার পুঁতে পার্ক ঘিরে দেওয়া হয়েছে।’ এদিকে সওজের কর্মকর্তারা বলছেন, যশোর-চুকনগর সড়কের পিচের অংশ বাদে দুই সাইডে যতটুকু জায়গায় মাটি ভরাট করা আছে তার পুরোটাই সওজের। সেই জায়গায় পার্ক করার সুযোগ নেই। পার্কের জন্য পৌরসভা কোনো অনুমতি নেয়নি।

ভেঙে পড়েছে পার্কের প্রাচীরের কংক্রিটের পিলার। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভেঙে পড়েছে পার্কের প্রাচীরের কংক্রিটের পিলার। ছবি: আজকের পত্রিকা

সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমাদের জায়গায় পার্ক গড়তে পৌরসভা কোনো অনুমতি নেয়নি। আমরা দ্রুত সরেজমিন পরিদর্শন করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’

সওজের জায়গায় পার্ক করার প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মনিরামপুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, ‘আমাদের পৌরসভায় পার্ক করার মতো জায়গা নেই। মোহনপুর বটতলা মোড়ে আমাদের একটি যাত্রী ছাউনি আছে। সেখানে যাত্রীরা বসে বিশ্রাম নেবেন। এ ছাড়া আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনেকে ওই পথ দিয়ে মনিরামপুরে আসেন। এ জন্য জায়গাটার শোভা বাড়াতে মিনি পার্ক করা হয়েছে।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘সওজ যদি মনে করে কখনো রাস্তা বাড়াবে, তখন সেটা দেখা যাবে। জায়গাটি পড়ে ছিল। আমরা সেটাকে দখলমুক্ত রাখতে পার্ক গড়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত