তামীম আদনান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)

আত্মানুসন্ধানের বেরিয়ে পড়েছিলেন ফরাসি দেশের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে পড়েন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। এখানে ঘর বেঁধেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশি বধূ। তিনি এখন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুসঙ্গই তাঁর দৈনন্দিন রুটিন।
২০১৭ সালে লালনের তিরোধান দিবসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রাজন ফকিরকে বিয়ে করেন দেবোরাহ। রাজন ফকির উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় এলাকার ফকির গুরু নহির শাহ্র ভাতিজা ও শিষ্য। এখন জায়গাটি ‘হেম আশ্রম’ নামেই পরিচিত।
বিদেশি এই নারীর সাবলীল বাংলায় কথা বলা ও লেখায় মুগ্ধ হবেন যে কেউ। বাঙালি নারীদের মতো চলাফেরাও রপ্ত করেছেন। পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব দেবোরাহের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের। কেন বাংলাদেশে আসা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে সাধুসঙ্গ দেখতে এসেছি দুইটা লক্ষ্যে—ব্যক্তিগত কৌতূহল ও পিএইচডি গবেষণার জন্য। কিন্তু শেষ বেলায় সিদ্ধান্ত নিতে হলো কোনটা আমার জন্য বেশি জরুরি—সামাজিক আর একটা সার্টিফিকেট অর্জন করা নাকি গুরুকে ধরে সত্যিকারে ভক্ত হওয়া। এ সময় সাধু বা সাধকের আধ্যাত্মিকতা দেখে প্রেমে পড়ে যাই লালনের। খ্যাতি ও অর্থের মোহ পিছু ঠেলে থেকে যাই এ দেশে। মাঝে মধ্যে মাতৃভূমি ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে প্যারিসে যাই।’
দেবোরাহের ভাষায়, ফকির লালন শাহকে যতই জেনেছেন ততই তাঁর প্রেমে পড়েছেন। বেড়েছে শ্রদ্ধাভক্তি ও প্রেমবোধ। গুরু ফকির নহির শাহ্র কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে তাঁরই ভাতিজাকে বিয়ে করেছেন। বাউল–ফকিরদের জীবনাচারে প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছেন তিনি। আর বাংলার মাটি ও বাতাসকে খুব আপন করে নিয়েছেন। লালন শাহেই জীবনের সব প্রশ্নের উত্তরও পেয়েছেন বলে জানান দেবোরাহ।
ফ্রান্সিস ও লিন্ডা কুকিয়েরমানের মেয়ে তিনি। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। ২০০৭ সালে লন্ডন কিংস্টোন ইউনিভার্সিটি থেকে নৃতত্ত্বে স্নাতক। দেশে থাকাকালীন ফরাসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের কাজও করতেন। দর্শনে এমএ করে ফ্রান্সে একসময় যোগের শিক্ষকতাও করেছেন।
আমি কে—এই প্রশ্ন নিয়ে তিনি কেন ঘুরেছেন, এর জবাবে দেবোরাহ বলেন, ‘কারণ, নিজের পরিচয় সবাই দেখাতে পারে কিন্তু কোনটা সত্য সেটা বেছে নিতে হয়। প্যারিসে ছেলেবেলা কাটিয়েছি, বড় হয়েছি, অনার্স পড়েছি, লন্ডন-আমেরিকাতে থেকেছি। আমি একসময় সিনেমাতে কাজ করতাম। আর সব সময় যোগের মধ্যে একটা সাধনা ছিল। সাধনা এতই বেশি হয়ে যায় তখন চাকরি ত্যাগ করে যোগেই মনোযোগী হই। ওই সময়টাতে আরও বেশি করে মনে প্রশ্ন জাগে “কে আমি? ” আসলে প্রশ্নের কোনো শেষ নেই। শেখারও শেষ নেই। তখন ফ্রান্স ছেড়ে চলে আসি ভারতে একটা আশ্রমে, যেখানে ধ্যান সাধনা শেখান হয়। গবেষণা করতে ও নিজের সাধনায় আরও গভীরে যেতে হয়। তারপর পথ খুঁজতে খুঁজতে প্রাগপুরের এই দীঘিরপাড়ে।’
বিয়ে এবং বর্তমান সংসার জীবন কেমন কাটছে? দেবোরাহ বলেন, ‘এ দেশে এসে ঘর-সংসার করা আমার জন্য এত সহজ ছিল না। সত্যি বলতে কী ভীষণ কষ্ট যে করেছি! তবে এখন ভালো আছি। এই বাংলার মাটি আমার খুব চেনা। এখানে যেন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে পারি। এখানে আসার পর কেন জানি আমার বারবারই মনে হয়েছে, এই দেশ আমার আপন ঠিকানা। আমি যেই গুরুকে খুঁজছিলাম তাঁকে পেয়েছি। এখানে এসে একজন স্বামী পেয়েছি যে আমার থেকেও অনেক বেশি জ্ঞানী। আমার প্রতি যত্নবান। এ ছাড়া আমার গুরু নহির শাহকে নিয়ে কিছু বলার নেই! তিনি ভীষণ ভালো মানুষ।’
দীঘিরপাড়ে তিনতলা বাড়ি করেছেন দেবোরাহ। স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছেন। নিজের থাকার ঘরটিতে ফরাসি সংস্কৃতির ছোঁয়া। তাকে সাজানো সারি সারি বই। তাঁর কণ্ঠে লালন সংগীতও মনোমুগ্ধকর।
সাধুদের জীবনযাপন কেমন লাগছে? একটু গম্ভীর হয়ে যান দেবোরাহ। বলেন, ‘কেউ সহজে সাধু হয় না, কোন রহস্যে মনটা ব্যতিক্রম হয়, হৃদয়ের টান বেশি জোরে বাজায়। আমার ক্ষেত্রে মুখের কথা, চিন্তা-ভাবনা, ও কর্মকে মিলাতে গিয়ে সাধনায় পড়েছি। বিশ্বজুড়ে সাধারণ সমাজে যে অমিল থাকে এই তিনটি স্তরে, সেটা আমার কাছে অসহনীয় ছিল। ‘‘সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন’’ এই কথার ওপরে আর কোনো আদর্শ নেই আমার কাছে। কিন্তু সাধকের জীবন যাপন করতে গেলে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়, নিজের মধ্যে ও সমাজের সম্মুখে। সাধু হওয়া অনেক বড় একটা জিহাদ। তবু ভোগে সুখ নেই, ত্যাগে শান্তি।’
দেবোরাহ বলেন, ‘আমাদের গুরু বলেন, আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জীব, আমাদের মানুষ হতে হবে। কয়েক দিন ধরে আমার কানে একটাই কথা বাজছে: ধর্ম যার যার, মনুষ্যত্ব সবার। এটা বাস্তবায়ন করতে হলে নিজের পরিবেশ থেকে দূরে যেতে হয়, নিজের সামাজিক পরিচয়কে শূন্য করতে হয়। যেটা সাধুগুরুর আখড়ায় গিয়ে সাধুগুরুর সান্নিধ্য লাভ করলে মাত্র সম্ভব। এটা মানব জাতির মূল সম্পদ এবং নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে করি যে বাংলাদেশে আসতে পেরেছি। একাকিত্ব বোধ থেকে আমরা স্বার্থপর হয়ে থাকি, ভয় ও লোভের ফাঁদে পড়ে। মানুষ হতে পারলে, নিজের সঙ্গে ও অন্যের সঙ্গে ঐক্যবোধটা আমাদের শান্তি ও আনন্দে বেঁচে রাখে।’
বাবা–মা, স্বজনেরা এই বিদেশ বিভুঁইয়ে এমন জীবন গ্রহণকে কীভাবে নিয়েছেন? এমন প্রশ্নে দেবোরাহ বলেন, ‘বাবা ও ভাই এসেছেন। বাবা এসেছেন আমার বিয়ের সিদ্ধান্ত শুনে, ২০১৭ সালের মে মাসে। যে মেয়ে ছোটকাল থেকে বলত বিয়ে করবে না, তার সর্বাঙ্গ সাধনায় আজীবন মুগ্ধ থাকবে, আবার প্যারিসে ফিরে এসে বলছে, বাংলাদেশে একজন ফকিরের সঙ্গে বিয়ে করতে চাচ্ছে—এ কী রকম পাগলামি! তাই বাবা পরিবেশটি দেখতে এলেন, আমাদের গুরুকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। যাওয়ার সময় বললেন, তোমার পছন্দ ঠিক আছে। তোমার সঙ্গে সবদিকে মিল আছে, গভীর আধ্যাত্মিক চিন্তা, নিরামিষ ভোজন, যোগসাধনা, সংগীত চর্চা। পরিবেশটি শান্ত। এরা অনেক শুদ্ধ, শিক্ষিত, ভদ্র, মমতাময়, এদের মন মানসিকতা সুস্থ। তোমার সিদ্ধান্ত স্থির হলে আমাদের আপত্তি নেই। আর আমার ভাই আমাদের বিয়ের পরে এসেছে, তাকে একটা সাধুসঙ্গে নিয়ে গিয়েছি। ওখানে ছিলাম তিন দিন। যাওয়ার সময় বলল, সহজ জীবন যাপন আসলে খুব কঠিন ব্যাপার!’
এরই ফাঁকে কথা হয় হাস্যোজ্জ্বল রাজন ফকিরের সঙ্গে, দেবোরাহ জান্নাতের স্বামী। বিদেশিনীর সঙ্গে সংসার জীবন কেমন কাটছে—রাজন ফকির বলেন, ‘আমরা দুজন খুব ভালো আছি। দেবোরাহ মানুষটা খুবই ভালো, একজন সহজ মানুষ। এ অঞ্চলের মানুষ খুব ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে, সেও সবাইকে ভালোবাসে এবং অনেক জ্ঞানী।’
উল্লেখ্য, ফকির নহির শাহ্ বাংলাদেশের একজন প্রবীণ লালনভক্ত সাধক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড়ে ‘হেম আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। আধ্যাত্মিক চর্চাই এখন তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত।

আত্মানুসন্ধানের বেরিয়ে পড়েছিলেন ফরাসি দেশের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে পড়েন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। এখানে ঘর বেঁধেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশি বধূ। তিনি এখন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুসঙ্গই তাঁর দৈনন্দিন রুটিন।
২০১৭ সালে লালনের তিরোধান দিবসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রাজন ফকিরকে বিয়ে করেন দেবোরাহ। রাজন ফকির উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় এলাকার ফকির গুরু নহির শাহ্র ভাতিজা ও শিষ্য। এখন জায়গাটি ‘হেম আশ্রম’ নামেই পরিচিত।
বিদেশি এই নারীর সাবলীল বাংলায় কথা বলা ও লেখায় মুগ্ধ হবেন যে কেউ। বাঙালি নারীদের মতো চলাফেরাও রপ্ত করেছেন। পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব দেবোরাহের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের। কেন বাংলাদেশে আসা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে সাধুসঙ্গ দেখতে এসেছি দুইটা লক্ষ্যে—ব্যক্তিগত কৌতূহল ও পিএইচডি গবেষণার জন্য। কিন্তু শেষ বেলায় সিদ্ধান্ত নিতে হলো কোনটা আমার জন্য বেশি জরুরি—সামাজিক আর একটা সার্টিফিকেট অর্জন করা নাকি গুরুকে ধরে সত্যিকারে ভক্ত হওয়া। এ সময় সাধু বা সাধকের আধ্যাত্মিকতা দেখে প্রেমে পড়ে যাই লালনের। খ্যাতি ও অর্থের মোহ পিছু ঠেলে থেকে যাই এ দেশে। মাঝে মধ্যে মাতৃভূমি ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে প্যারিসে যাই।’
দেবোরাহের ভাষায়, ফকির লালন শাহকে যতই জেনেছেন ততই তাঁর প্রেমে পড়েছেন। বেড়েছে শ্রদ্ধাভক্তি ও প্রেমবোধ। গুরু ফকির নহির শাহ্র কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে তাঁরই ভাতিজাকে বিয়ে করেছেন। বাউল–ফকিরদের জীবনাচারে প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছেন তিনি। আর বাংলার মাটি ও বাতাসকে খুব আপন করে নিয়েছেন। লালন শাহেই জীবনের সব প্রশ্নের উত্তরও পেয়েছেন বলে জানান দেবোরাহ।
ফ্রান্সিস ও লিন্ডা কুকিয়েরমানের মেয়ে তিনি। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। ২০০৭ সালে লন্ডন কিংস্টোন ইউনিভার্সিটি থেকে নৃতত্ত্বে স্নাতক। দেশে থাকাকালীন ফরাসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের কাজও করতেন। দর্শনে এমএ করে ফ্রান্সে একসময় যোগের শিক্ষকতাও করেছেন।
আমি কে—এই প্রশ্ন নিয়ে তিনি কেন ঘুরেছেন, এর জবাবে দেবোরাহ বলেন, ‘কারণ, নিজের পরিচয় সবাই দেখাতে পারে কিন্তু কোনটা সত্য সেটা বেছে নিতে হয়। প্যারিসে ছেলেবেলা কাটিয়েছি, বড় হয়েছি, অনার্স পড়েছি, লন্ডন-আমেরিকাতে থেকেছি। আমি একসময় সিনেমাতে কাজ করতাম। আর সব সময় যোগের মধ্যে একটা সাধনা ছিল। সাধনা এতই বেশি হয়ে যায় তখন চাকরি ত্যাগ করে যোগেই মনোযোগী হই। ওই সময়টাতে আরও বেশি করে মনে প্রশ্ন জাগে “কে আমি? ” আসলে প্রশ্নের কোনো শেষ নেই। শেখারও শেষ নেই। তখন ফ্রান্স ছেড়ে চলে আসি ভারতে একটা আশ্রমে, যেখানে ধ্যান সাধনা শেখান হয়। গবেষণা করতে ও নিজের সাধনায় আরও গভীরে যেতে হয়। তারপর পথ খুঁজতে খুঁজতে প্রাগপুরের এই দীঘিরপাড়ে।’
বিয়ে এবং বর্তমান সংসার জীবন কেমন কাটছে? দেবোরাহ বলেন, ‘এ দেশে এসে ঘর-সংসার করা আমার জন্য এত সহজ ছিল না। সত্যি বলতে কী ভীষণ কষ্ট যে করেছি! তবে এখন ভালো আছি। এই বাংলার মাটি আমার খুব চেনা। এখানে যেন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে পারি। এখানে আসার পর কেন জানি আমার বারবারই মনে হয়েছে, এই দেশ আমার আপন ঠিকানা। আমি যেই গুরুকে খুঁজছিলাম তাঁকে পেয়েছি। এখানে এসে একজন স্বামী পেয়েছি যে আমার থেকেও অনেক বেশি জ্ঞানী। আমার প্রতি যত্নবান। এ ছাড়া আমার গুরু নহির শাহকে নিয়ে কিছু বলার নেই! তিনি ভীষণ ভালো মানুষ।’
দীঘিরপাড়ে তিনতলা বাড়ি করেছেন দেবোরাহ। স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছেন। নিজের থাকার ঘরটিতে ফরাসি সংস্কৃতির ছোঁয়া। তাকে সাজানো সারি সারি বই। তাঁর কণ্ঠে লালন সংগীতও মনোমুগ্ধকর।
সাধুদের জীবনযাপন কেমন লাগছে? একটু গম্ভীর হয়ে যান দেবোরাহ। বলেন, ‘কেউ সহজে সাধু হয় না, কোন রহস্যে মনটা ব্যতিক্রম হয়, হৃদয়ের টান বেশি জোরে বাজায়। আমার ক্ষেত্রে মুখের কথা, চিন্তা-ভাবনা, ও কর্মকে মিলাতে গিয়ে সাধনায় পড়েছি। বিশ্বজুড়ে সাধারণ সমাজে যে অমিল থাকে এই তিনটি স্তরে, সেটা আমার কাছে অসহনীয় ছিল। ‘‘সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন’’ এই কথার ওপরে আর কোনো আদর্শ নেই আমার কাছে। কিন্তু সাধকের জীবন যাপন করতে গেলে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়, নিজের মধ্যে ও সমাজের সম্মুখে। সাধু হওয়া অনেক বড় একটা জিহাদ। তবু ভোগে সুখ নেই, ত্যাগে শান্তি।’
দেবোরাহ বলেন, ‘আমাদের গুরু বলেন, আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জীব, আমাদের মানুষ হতে হবে। কয়েক দিন ধরে আমার কানে একটাই কথা বাজছে: ধর্ম যার যার, মনুষ্যত্ব সবার। এটা বাস্তবায়ন করতে হলে নিজের পরিবেশ থেকে দূরে যেতে হয়, নিজের সামাজিক পরিচয়কে শূন্য করতে হয়। যেটা সাধুগুরুর আখড়ায় গিয়ে সাধুগুরুর সান্নিধ্য লাভ করলে মাত্র সম্ভব। এটা মানব জাতির মূল সম্পদ এবং নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে করি যে বাংলাদেশে আসতে পেরেছি। একাকিত্ব বোধ থেকে আমরা স্বার্থপর হয়ে থাকি, ভয় ও লোভের ফাঁদে পড়ে। মানুষ হতে পারলে, নিজের সঙ্গে ও অন্যের সঙ্গে ঐক্যবোধটা আমাদের শান্তি ও আনন্দে বেঁচে রাখে।’
বাবা–মা, স্বজনেরা এই বিদেশ বিভুঁইয়ে এমন জীবন গ্রহণকে কীভাবে নিয়েছেন? এমন প্রশ্নে দেবোরাহ বলেন, ‘বাবা ও ভাই এসেছেন। বাবা এসেছেন আমার বিয়ের সিদ্ধান্ত শুনে, ২০১৭ সালের মে মাসে। যে মেয়ে ছোটকাল থেকে বলত বিয়ে করবে না, তার সর্বাঙ্গ সাধনায় আজীবন মুগ্ধ থাকবে, আবার প্যারিসে ফিরে এসে বলছে, বাংলাদেশে একজন ফকিরের সঙ্গে বিয়ে করতে চাচ্ছে—এ কী রকম পাগলামি! তাই বাবা পরিবেশটি দেখতে এলেন, আমাদের গুরুকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। যাওয়ার সময় বললেন, তোমার পছন্দ ঠিক আছে। তোমার সঙ্গে সবদিকে মিল আছে, গভীর আধ্যাত্মিক চিন্তা, নিরামিষ ভোজন, যোগসাধনা, সংগীত চর্চা। পরিবেশটি শান্ত। এরা অনেক শুদ্ধ, শিক্ষিত, ভদ্র, মমতাময়, এদের মন মানসিকতা সুস্থ। তোমার সিদ্ধান্ত স্থির হলে আমাদের আপত্তি নেই। আর আমার ভাই আমাদের বিয়ের পরে এসেছে, তাকে একটা সাধুসঙ্গে নিয়ে গিয়েছি। ওখানে ছিলাম তিন দিন। যাওয়ার সময় বলল, সহজ জীবন যাপন আসলে খুব কঠিন ব্যাপার!’
এরই ফাঁকে কথা হয় হাস্যোজ্জ্বল রাজন ফকিরের সঙ্গে, দেবোরাহ জান্নাতের স্বামী। বিদেশিনীর সঙ্গে সংসার জীবন কেমন কাটছে—রাজন ফকির বলেন, ‘আমরা দুজন খুব ভালো আছি। দেবোরাহ মানুষটা খুবই ভালো, একজন সহজ মানুষ। এ অঞ্চলের মানুষ খুব ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে, সেও সবাইকে ভালোবাসে এবং অনেক জ্ঞানী।’
উল্লেখ্য, ফকির নহির শাহ্ বাংলাদেশের একজন প্রবীণ লালনভক্ত সাধক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড়ে ‘হেম আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। আধ্যাত্মিক চর্চাই এখন তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত।
তামীম আদনান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)

আত্মানুসন্ধানের বেরিয়ে পড়েছিলেন ফরাসি দেশের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে পড়েন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। এখানে ঘর বেঁধেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশি বধূ। তিনি এখন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুসঙ্গই তাঁর দৈনন্দিন রুটিন।
২০১৭ সালে লালনের তিরোধান দিবসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রাজন ফকিরকে বিয়ে করেন দেবোরাহ। রাজন ফকির উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় এলাকার ফকির গুরু নহির শাহ্র ভাতিজা ও শিষ্য। এখন জায়গাটি ‘হেম আশ্রম’ নামেই পরিচিত।
বিদেশি এই নারীর সাবলীল বাংলায় কথা বলা ও লেখায় মুগ্ধ হবেন যে কেউ। বাঙালি নারীদের মতো চলাফেরাও রপ্ত করেছেন। পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব দেবোরাহের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের। কেন বাংলাদেশে আসা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে সাধুসঙ্গ দেখতে এসেছি দুইটা লক্ষ্যে—ব্যক্তিগত কৌতূহল ও পিএইচডি গবেষণার জন্য। কিন্তু শেষ বেলায় সিদ্ধান্ত নিতে হলো কোনটা আমার জন্য বেশি জরুরি—সামাজিক আর একটা সার্টিফিকেট অর্জন করা নাকি গুরুকে ধরে সত্যিকারে ভক্ত হওয়া। এ সময় সাধু বা সাধকের আধ্যাত্মিকতা দেখে প্রেমে পড়ে যাই লালনের। খ্যাতি ও অর্থের মোহ পিছু ঠেলে থেকে যাই এ দেশে। মাঝে মধ্যে মাতৃভূমি ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে প্যারিসে যাই।’
দেবোরাহের ভাষায়, ফকির লালন শাহকে যতই জেনেছেন ততই তাঁর প্রেমে পড়েছেন। বেড়েছে শ্রদ্ধাভক্তি ও প্রেমবোধ। গুরু ফকির নহির শাহ্র কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে তাঁরই ভাতিজাকে বিয়ে করেছেন। বাউল–ফকিরদের জীবনাচারে প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছেন তিনি। আর বাংলার মাটি ও বাতাসকে খুব আপন করে নিয়েছেন। লালন শাহেই জীবনের সব প্রশ্নের উত্তরও পেয়েছেন বলে জানান দেবোরাহ।
ফ্রান্সিস ও লিন্ডা কুকিয়েরমানের মেয়ে তিনি। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। ২০০৭ সালে লন্ডন কিংস্টোন ইউনিভার্সিটি থেকে নৃতত্ত্বে স্নাতক। দেশে থাকাকালীন ফরাসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের কাজও করতেন। দর্শনে এমএ করে ফ্রান্সে একসময় যোগের শিক্ষকতাও করেছেন।
আমি কে—এই প্রশ্ন নিয়ে তিনি কেন ঘুরেছেন, এর জবাবে দেবোরাহ বলেন, ‘কারণ, নিজের পরিচয় সবাই দেখাতে পারে কিন্তু কোনটা সত্য সেটা বেছে নিতে হয়। প্যারিসে ছেলেবেলা কাটিয়েছি, বড় হয়েছি, অনার্স পড়েছি, লন্ডন-আমেরিকাতে থেকেছি। আমি একসময় সিনেমাতে কাজ করতাম। আর সব সময় যোগের মধ্যে একটা সাধনা ছিল। সাধনা এতই বেশি হয়ে যায় তখন চাকরি ত্যাগ করে যোগেই মনোযোগী হই। ওই সময়টাতে আরও বেশি করে মনে প্রশ্ন জাগে “কে আমি? ” আসলে প্রশ্নের কোনো শেষ নেই। শেখারও শেষ নেই। তখন ফ্রান্স ছেড়ে চলে আসি ভারতে একটা আশ্রমে, যেখানে ধ্যান সাধনা শেখান হয়। গবেষণা করতে ও নিজের সাধনায় আরও গভীরে যেতে হয়। তারপর পথ খুঁজতে খুঁজতে প্রাগপুরের এই দীঘিরপাড়ে।’
বিয়ে এবং বর্তমান সংসার জীবন কেমন কাটছে? দেবোরাহ বলেন, ‘এ দেশে এসে ঘর-সংসার করা আমার জন্য এত সহজ ছিল না। সত্যি বলতে কী ভীষণ কষ্ট যে করেছি! তবে এখন ভালো আছি। এই বাংলার মাটি আমার খুব চেনা। এখানে যেন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে পারি। এখানে আসার পর কেন জানি আমার বারবারই মনে হয়েছে, এই দেশ আমার আপন ঠিকানা। আমি যেই গুরুকে খুঁজছিলাম তাঁকে পেয়েছি। এখানে এসে একজন স্বামী পেয়েছি যে আমার থেকেও অনেক বেশি জ্ঞানী। আমার প্রতি যত্নবান। এ ছাড়া আমার গুরু নহির শাহকে নিয়ে কিছু বলার নেই! তিনি ভীষণ ভালো মানুষ।’
দীঘিরপাড়ে তিনতলা বাড়ি করেছেন দেবোরাহ। স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছেন। নিজের থাকার ঘরটিতে ফরাসি সংস্কৃতির ছোঁয়া। তাকে সাজানো সারি সারি বই। তাঁর কণ্ঠে লালন সংগীতও মনোমুগ্ধকর।
সাধুদের জীবনযাপন কেমন লাগছে? একটু গম্ভীর হয়ে যান দেবোরাহ। বলেন, ‘কেউ সহজে সাধু হয় না, কোন রহস্যে মনটা ব্যতিক্রম হয়, হৃদয়ের টান বেশি জোরে বাজায়। আমার ক্ষেত্রে মুখের কথা, চিন্তা-ভাবনা, ও কর্মকে মিলাতে গিয়ে সাধনায় পড়েছি। বিশ্বজুড়ে সাধারণ সমাজে যে অমিল থাকে এই তিনটি স্তরে, সেটা আমার কাছে অসহনীয় ছিল। ‘‘সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন’’ এই কথার ওপরে আর কোনো আদর্শ নেই আমার কাছে। কিন্তু সাধকের জীবন যাপন করতে গেলে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়, নিজের মধ্যে ও সমাজের সম্মুখে। সাধু হওয়া অনেক বড় একটা জিহাদ। তবু ভোগে সুখ নেই, ত্যাগে শান্তি।’
দেবোরাহ বলেন, ‘আমাদের গুরু বলেন, আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জীব, আমাদের মানুষ হতে হবে। কয়েক দিন ধরে আমার কানে একটাই কথা বাজছে: ধর্ম যার যার, মনুষ্যত্ব সবার। এটা বাস্তবায়ন করতে হলে নিজের পরিবেশ থেকে দূরে যেতে হয়, নিজের সামাজিক পরিচয়কে শূন্য করতে হয়। যেটা সাধুগুরুর আখড়ায় গিয়ে সাধুগুরুর সান্নিধ্য লাভ করলে মাত্র সম্ভব। এটা মানব জাতির মূল সম্পদ এবং নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে করি যে বাংলাদেশে আসতে পেরেছি। একাকিত্ব বোধ থেকে আমরা স্বার্থপর হয়ে থাকি, ভয় ও লোভের ফাঁদে পড়ে। মানুষ হতে পারলে, নিজের সঙ্গে ও অন্যের সঙ্গে ঐক্যবোধটা আমাদের শান্তি ও আনন্দে বেঁচে রাখে।’
বাবা–মা, স্বজনেরা এই বিদেশ বিভুঁইয়ে এমন জীবন গ্রহণকে কীভাবে নিয়েছেন? এমন প্রশ্নে দেবোরাহ বলেন, ‘বাবা ও ভাই এসেছেন। বাবা এসেছেন আমার বিয়ের সিদ্ধান্ত শুনে, ২০১৭ সালের মে মাসে। যে মেয়ে ছোটকাল থেকে বলত বিয়ে করবে না, তার সর্বাঙ্গ সাধনায় আজীবন মুগ্ধ থাকবে, আবার প্যারিসে ফিরে এসে বলছে, বাংলাদেশে একজন ফকিরের সঙ্গে বিয়ে করতে চাচ্ছে—এ কী রকম পাগলামি! তাই বাবা পরিবেশটি দেখতে এলেন, আমাদের গুরুকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। যাওয়ার সময় বললেন, তোমার পছন্দ ঠিক আছে। তোমার সঙ্গে সবদিকে মিল আছে, গভীর আধ্যাত্মিক চিন্তা, নিরামিষ ভোজন, যোগসাধনা, সংগীত চর্চা। পরিবেশটি শান্ত। এরা অনেক শুদ্ধ, শিক্ষিত, ভদ্র, মমতাময়, এদের মন মানসিকতা সুস্থ। তোমার সিদ্ধান্ত স্থির হলে আমাদের আপত্তি নেই। আর আমার ভাই আমাদের বিয়ের পরে এসেছে, তাকে একটা সাধুসঙ্গে নিয়ে গিয়েছি। ওখানে ছিলাম তিন দিন। যাওয়ার সময় বলল, সহজ জীবন যাপন আসলে খুব কঠিন ব্যাপার!’
এরই ফাঁকে কথা হয় হাস্যোজ্জ্বল রাজন ফকিরের সঙ্গে, দেবোরাহ জান্নাতের স্বামী। বিদেশিনীর সঙ্গে সংসার জীবন কেমন কাটছে—রাজন ফকির বলেন, ‘আমরা দুজন খুব ভালো আছি। দেবোরাহ মানুষটা খুবই ভালো, একজন সহজ মানুষ। এ অঞ্চলের মানুষ খুব ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে, সেও সবাইকে ভালোবাসে এবং অনেক জ্ঞানী।’
উল্লেখ্য, ফকির নহির শাহ্ বাংলাদেশের একজন প্রবীণ লালনভক্ত সাধক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড়ে ‘হেম আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। আধ্যাত্মিক চর্চাই এখন তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত।

আত্মানুসন্ধানের বেরিয়ে পড়েছিলেন ফরাসি দেশের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে পড়েন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। এখানে ঘর বেঁধেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশি বধূ। তিনি এখন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুসঙ্গই তাঁর দৈনন্দিন রুটিন।
২০১৭ সালে লালনের তিরোধান দিবসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রাজন ফকিরকে বিয়ে করেন দেবোরাহ। রাজন ফকির উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় এলাকার ফকির গুরু নহির শাহ্র ভাতিজা ও শিষ্য। এখন জায়গাটি ‘হেম আশ্রম’ নামেই পরিচিত।
বিদেশি এই নারীর সাবলীল বাংলায় কথা বলা ও লেখায় মুগ্ধ হবেন যে কেউ। বাঙালি নারীদের মতো চলাফেরাও রপ্ত করেছেন। পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব দেবোরাহের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের। কেন বাংলাদেশে আসা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে সাধুসঙ্গ দেখতে এসেছি দুইটা লক্ষ্যে—ব্যক্তিগত কৌতূহল ও পিএইচডি গবেষণার জন্য। কিন্তু শেষ বেলায় সিদ্ধান্ত নিতে হলো কোনটা আমার জন্য বেশি জরুরি—সামাজিক আর একটা সার্টিফিকেট অর্জন করা নাকি গুরুকে ধরে সত্যিকারে ভক্ত হওয়া। এ সময় সাধু বা সাধকের আধ্যাত্মিকতা দেখে প্রেমে পড়ে যাই লালনের। খ্যাতি ও অর্থের মোহ পিছু ঠেলে থেকে যাই এ দেশে। মাঝে মধ্যে মাতৃভূমি ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে প্যারিসে যাই।’
দেবোরাহের ভাষায়, ফকির লালন শাহকে যতই জেনেছেন ততই তাঁর প্রেমে পড়েছেন। বেড়েছে শ্রদ্ধাভক্তি ও প্রেমবোধ। গুরু ফকির নহির শাহ্র কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে তাঁরই ভাতিজাকে বিয়ে করেছেন। বাউল–ফকিরদের জীবনাচারে প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছেন তিনি। আর বাংলার মাটি ও বাতাসকে খুব আপন করে নিয়েছেন। লালন শাহেই জীবনের সব প্রশ্নের উত্তরও পেয়েছেন বলে জানান দেবোরাহ।
ফ্রান্সিস ও লিন্ডা কুকিয়েরমানের মেয়ে তিনি। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। ২০০৭ সালে লন্ডন কিংস্টোন ইউনিভার্সিটি থেকে নৃতত্ত্বে স্নাতক। দেশে থাকাকালীন ফরাসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের কাজও করতেন। দর্শনে এমএ করে ফ্রান্সে একসময় যোগের শিক্ষকতাও করেছেন।
আমি কে—এই প্রশ্ন নিয়ে তিনি কেন ঘুরেছেন, এর জবাবে দেবোরাহ বলেন, ‘কারণ, নিজের পরিচয় সবাই দেখাতে পারে কিন্তু কোনটা সত্য সেটা বেছে নিতে হয়। প্যারিসে ছেলেবেলা কাটিয়েছি, বড় হয়েছি, অনার্স পড়েছি, লন্ডন-আমেরিকাতে থেকেছি। আমি একসময় সিনেমাতে কাজ করতাম। আর সব সময় যোগের মধ্যে একটা সাধনা ছিল। সাধনা এতই বেশি হয়ে যায় তখন চাকরি ত্যাগ করে যোগেই মনোযোগী হই। ওই সময়টাতে আরও বেশি করে মনে প্রশ্ন জাগে “কে আমি? ” আসলে প্রশ্নের কোনো শেষ নেই। শেখারও শেষ নেই। তখন ফ্রান্স ছেড়ে চলে আসি ভারতে একটা আশ্রমে, যেখানে ধ্যান সাধনা শেখান হয়। গবেষণা করতে ও নিজের সাধনায় আরও গভীরে যেতে হয়। তারপর পথ খুঁজতে খুঁজতে প্রাগপুরের এই দীঘিরপাড়ে।’
বিয়ে এবং বর্তমান সংসার জীবন কেমন কাটছে? দেবোরাহ বলেন, ‘এ দেশে এসে ঘর-সংসার করা আমার জন্য এত সহজ ছিল না। সত্যি বলতে কী ভীষণ কষ্ট যে করেছি! তবে এখন ভালো আছি। এই বাংলার মাটি আমার খুব চেনা। এখানে যেন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে পারি। এখানে আসার পর কেন জানি আমার বারবারই মনে হয়েছে, এই দেশ আমার আপন ঠিকানা। আমি যেই গুরুকে খুঁজছিলাম তাঁকে পেয়েছি। এখানে এসে একজন স্বামী পেয়েছি যে আমার থেকেও অনেক বেশি জ্ঞানী। আমার প্রতি যত্নবান। এ ছাড়া আমার গুরু নহির শাহকে নিয়ে কিছু বলার নেই! তিনি ভীষণ ভালো মানুষ।’
দীঘিরপাড়ে তিনতলা বাড়ি করেছেন দেবোরাহ। স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছেন। নিজের থাকার ঘরটিতে ফরাসি সংস্কৃতির ছোঁয়া। তাকে সাজানো সারি সারি বই। তাঁর কণ্ঠে লালন সংগীতও মনোমুগ্ধকর।
সাধুদের জীবনযাপন কেমন লাগছে? একটু গম্ভীর হয়ে যান দেবোরাহ। বলেন, ‘কেউ সহজে সাধু হয় না, কোন রহস্যে মনটা ব্যতিক্রম হয়, হৃদয়ের টান বেশি জোরে বাজায়। আমার ক্ষেত্রে মুখের কথা, চিন্তা-ভাবনা, ও কর্মকে মিলাতে গিয়ে সাধনায় পড়েছি। বিশ্বজুড়ে সাধারণ সমাজে যে অমিল থাকে এই তিনটি স্তরে, সেটা আমার কাছে অসহনীয় ছিল। ‘‘সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন’’ এই কথার ওপরে আর কোনো আদর্শ নেই আমার কাছে। কিন্তু সাধকের জীবন যাপন করতে গেলে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়, নিজের মধ্যে ও সমাজের সম্মুখে। সাধু হওয়া অনেক বড় একটা জিহাদ। তবু ভোগে সুখ নেই, ত্যাগে শান্তি।’
দেবোরাহ বলেন, ‘আমাদের গুরু বলেন, আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জীব, আমাদের মানুষ হতে হবে। কয়েক দিন ধরে আমার কানে একটাই কথা বাজছে: ধর্ম যার যার, মনুষ্যত্ব সবার। এটা বাস্তবায়ন করতে হলে নিজের পরিবেশ থেকে দূরে যেতে হয়, নিজের সামাজিক পরিচয়কে শূন্য করতে হয়। যেটা সাধুগুরুর আখড়ায় গিয়ে সাধুগুরুর সান্নিধ্য লাভ করলে মাত্র সম্ভব। এটা মানব জাতির মূল সম্পদ এবং নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে করি যে বাংলাদেশে আসতে পেরেছি। একাকিত্ব বোধ থেকে আমরা স্বার্থপর হয়ে থাকি, ভয় ও লোভের ফাঁদে পড়ে। মানুষ হতে পারলে, নিজের সঙ্গে ও অন্যের সঙ্গে ঐক্যবোধটা আমাদের শান্তি ও আনন্দে বেঁচে রাখে।’
বাবা–মা, স্বজনেরা এই বিদেশ বিভুঁইয়ে এমন জীবন গ্রহণকে কীভাবে নিয়েছেন? এমন প্রশ্নে দেবোরাহ বলেন, ‘বাবা ও ভাই এসেছেন। বাবা এসেছেন আমার বিয়ের সিদ্ধান্ত শুনে, ২০১৭ সালের মে মাসে। যে মেয়ে ছোটকাল থেকে বলত বিয়ে করবে না, তার সর্বাঙ্গ সাধনায় আজীবন মুগ্ধ থাকবে, আবার প্যারিসে ফিরে এসে বলছে, বাংলাদেশে একজন ফকিরের সঙ্গে বিয়ে করতে চাচ্ছে—এ কী রকম পাগলামি! তাই বাবা পরিবেশটি দেখতে এলেন, আমাদের গুরুকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। যাওয়ার সময় বললেন, তোমার পছন্দ ঠিক আছে। তোমার সঙ্গে সবদিকে মিল আছে, গভীর আধ্যাত্মিক চিন্তা, নিরামিষ ভোজন, যোগসাধনা, সংগীত চর্চা। পরিবেশটি শান্ত। এরা অনেক শুদ্ধ, শিক্ষিত, ভদ্র, মমতাময়, এদের মন মানসিকতা সুস্থ। তোমার সিদ্ধান্ত স্থির হলে আমাদের আপত্তি নেই। আর আমার ভাই আমাদের বিয়ের পরে এসেছে, তাকে একটা সাধুসঙ্গে নিয়ে গিয়েছি। ওখানে ছিলাম তিন দিন। যাওয়ার সময় বলল, সহজ জীবন যাপন আসলে খুব কঠিন ব্যাপার!’
এরই ফাঁকে কথা হয় হাস্যোজ্জ্বল রাজন ফকিরের সঙ্গে, দেবোরাহ জান্নাতের স্বামী। বিদেশিনীর সঙ্গে সংসার জীবন কেমন কাটছে—রাজন ফকির বলেন, ‘আমরা দুজন খুব ভালো আছি। দেবোরাহ মানুষটা খুবই ভালো, একজন সহজ মানুষ। এ অঞ্চলের মানুষ খুব ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে, সেও সবাইকে ভালোবাসে এবং অনেক জ্ঞানী।’
উল্লেখ্য, ফকির নহির শাহ্ বাংলাদেশের একজন প্রবীণ লালনভক্ত সাধক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড়ে ‘হেম আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। আধ্যাত্মিক চর্চাই এখন তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের উদ্যোগে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
৩ মিনিট আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন।
৭ মিনিট আগে
পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
১৪ মিনিট আগে
দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে তাঁর জন্মস্থান দিনাজপুরে। খালেদা জিয়ার পৈতৃক নিবাস দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকায়।
২০ মিনিট আগেজাবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের উদ্যোগে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সংগঠনটির শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শুধু একটি দলেরই নয়, বরং তিনি গোটা দেশের অভিভাবকে পরিণত হয়েছেন। তিনি যেভাবে আপসহীন নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন, সেটা তাঁকে এই দেশের মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় করে রাখবে।
কর্মসূচি চলাকালে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মো. শামছুল আলম বলেন, ‘আমাদের জাতির অভিভাবক হিসেবে তিনি ছিলেন মৃদুভাষী, সহনশীল ও মানবিক একজন মানুষ। গত ১৬ বছরে তাঁর ওপর বহু নির্যাতন ও অবিচার হলেও তিনি কখনো কারও প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেননি।’
শামছুল আলম আরও বলেন, ‘তিনি তাঁর প্রিয় বাসা থেকে উৎখাত হয়েও দেশ ছাড়ার কথা ভাবেননি; দেশকেই তিনি ভালোবেসেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে তিনি বহুবার কারাবরণ করেছেন এবং আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতবাসী করেন।’
এ সময় সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’
ড. মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘দুঃসংবাদ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করেছে এবং কালো ব্যাজ ধারণের মাধ্যমে শোক পালন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাফরুহী সাত্তারসহ আরও অনেকে।
এর আগে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের উদ্যোগে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সংগঠনটির শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শুধু একটি দলেরই নয়, বরং তিনি গোটা দেশের অভিভাবকে পরিণত হয়েছেন। তিনি যেভাবে আপসহীন নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন, সেটা তাঁকে এই দেশের মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় করে রাখবে।
কর্মসূচি চলাকালে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মো. শামছুল আলম বলেন, ‘আমাদের জাতির অভিভাবক হিসেবে তিনি ছিলেন মৃদুভাষী, সহনশীল ও মানবিক একজন মানুষ। গত ১৬ বছরে তাঁর ওপর বহু নির্যাতন ও অবিচার হলেও তিনি কখনো কারও প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেননি।’
শামছুল আলম আরও বলেন, ‘তিনি তাঁর প্রিয় বাসা থেকে উৎখাত হয়েও দেশ ছাড়ার কথা ভাবেননি; দেশকেই তিনি ভালোবেসেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে তিনি বহুবার কারাবরণ করেছেন এবং আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতবাসী করেন।’
এ সময় সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’
ড. মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘দুঃসংবাদ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করেছে এবং কালো ব্যাজ ধারণের মাধ্যমে শোক পালন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাফরুহী সাত্তারসহ আরও অনেকে।
এর আগে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

আত্মানুসন্ধানের বেরিয়ে পড়েছিলেন ফরাসি দেশের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে পড়েন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। এখানে ঘর বেঁধেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশি বধূ। তিনি এখন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুস
১৬ অক্টোবর ২০২২
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন।
৭ মিনিট আগে
পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
১৪ মিনিট আগে
দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে তাঁর জন্মস্থান দিনাজপুরে। খালেদা জিয়ার পৈতৃক নিবাস দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকায়।
২০ মিনিট আগেচন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন। জোটগত সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল অলি আহমদের (বীর বিক্রম) ছেলে ওমর ফারুকের পক্ষে তিনি নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের এই ঘোষণা দেন।
গতকাল সোমবার রাতে মো. শাহাদাৎ হোসেন তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টের মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান। দীর্ঘ ১০ মাস ১২ দিন প্রচার-প্রচারণা চালানোর পর সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! দীর্ঘ ১০ মাস ১২ দিন পর আজ এক বড় জবাবদিহিতার জিম্মাদারি থেকে মুক্তি পেলাম। জোটের বৃহৎ স্বার্থে জনগণের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমরা সকলেই সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করলাম। ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে আমরা সর্বদা একযোগে কাজ করব ইনশা আল্লাহ।’
শাহাদাৎ হোসেন জামায়াতে ইসলামীর কোনো পদ-পদবিতে না থাকলেও দলের একজন একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং মাঠপর্যায়ে ব্যাপক জনমত তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। নিজের আসনটি তিনি অলি আহমদের ছেলের জন্য সহজে ছেড়ে দিতে রাজি হবেন কি না, তা নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক কৌতূহল ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে জোটের ঐক্য সুসংহত করার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন। জোটগত সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল অলি আহমদের (বীর বিক্রম) ছেলে ওমর ফারুকের পক্ষে তিনি নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের এই ঘোষণা দেন।
গতকাল সোমবার রাতে মো. শাহাদাৎ হোসেন তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টের মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান। দীর্ঘ ১০ মাস ১২ দিন প্রচার-প্রচারণা চালানোর পর সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! দীর্ঘ ১০ মাস ১২ দিন পর আজ এক বড় জবাবদিহিতার জিম্মাদারি থেকে মুক্তি পেলাম। জোটের বৃহৎ স্বার্থে জনগণের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমরা সকলেই সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করলাম। ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে আমরা সর্বদা একযোগে কাজ করব ইনশা আল্লাহ।’
শাহাদাৎ হোসেন জামায়াতে ইসলামীর কোনো পদ-পদবিতে না থাকলেও দলের একজন একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং মাঠপর্যায়ে ব্যাপক জনমত তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। নিজের আসনটি তিনি অলি আহমদের ছেলের জন্য সহজে ছেড়ে দিতে রাজি হবেন কি না, তা নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক কৌতূহল ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে জোটের ঐক্য সুসংহত করার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

আত্মানুসন্ধানের বেরিয়ে পড়েছিলেন ফরাসি দেশের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে পড়েন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। এখানে ঘর বেঁধেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশি বধূ। তিনি এখন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুস
১৬ অক্টোবর ২০২২
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের উদ্যোগে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
৩ মিনিট আগে
পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
১৪ মিনিট আগে
দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে তাঁর জন্মস্থান দিনাজপুরে। খালেদা জিয়ার পৈতৃক নিবাস দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকায়।
২০ মিনিট আগেঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী ভাটামালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানটি পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান। প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. তামিম হাসান। অভিযানে পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতা করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া এবং নিষিদ্ধ এলাকায় গড়ে ওঠা এই ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এতে ফসলি জমির ফসল ও মাটির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বায়ুদূষণ বাড়ছিল। অভিযানে ভাটার চুল্লি ভেঙে ফেলা হয় এবং কাঁচা ইট নষ্ট করে দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান জানান, পরিবেশ ও জনস্বার্থ রক্ষায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আইন অমান্যকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী ভাটামালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানটি পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান। প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. তামিম হাসান। অভিযানে পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতা করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া এবং নিষিদ্ধ এলাকায় গড়ে ওঠা এই ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এতে ফসলি জমির ফসল ও মাটির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বায়ুদূষণ বাড়ছিল। অভিযানে ভাটার চুল্লি ভেঙে ফেলা হয় এবং কাঁচা ইট নষ্ট করে দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান জানান, পরিবেশ ও জনস্বার্থ রক্ষায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আইন অমান্যকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

আত্মানুসন্ধানের বেরিয়ে পড়েছিলেন ফরাসি দেশের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে পড়েন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। এখানে ঘর বেঁধেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশি বধূ। তিনি এখন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুস
১৬ অক্টোবর ২০২২
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের উদ্যোগে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
৩ মিনিট আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন।
৭ মিনিট আগে
দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে তাঁর জন্মস্থান দিনাজপুরে। খালেদা জিয়ার পৈতৃক নিবাস দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকায়।
২০ মিনিট আগেদিনাজপুর প্রতিনিধি

দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দিনাজপুরে। খালেদা জিয়ার পৈতৃক নিবাস দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকায়। এই বালুবাড়ি এলাকায় তৈয়বা ভিলা বাড়িতেই কেটেছে খালেদা জিয়ার শৈশব ও কৈশোরের দিনগুলো। আজ সকাল থেকে তৈয়বা ভিলার সামনে জড়ো হয়েছেন শোকার্ত স্থানীয় মানুষ, দলীয় নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম পুতুল। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ইস্কান্দার মজুমদার ও মা তৈয়বা মজুমদার। বর্তমানে খালেদা জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত তৈয়বা ভিলায় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার করা হয়েছে।
আজ সকালে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে শহরের জেলমোড় এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছুটে যান ।
দলীয় কার্যালয় ও বালুবাড়ির পৈতৃক নিবাসে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করা হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার আপন খালাতো ভাই আবু তাহের আবু বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) ছিলেন আমাদের অভিভাবক। নিজের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তিনি ছিলেন খুবই আন্তরিক। ১৯৯১ সালের তিনি যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দিনাজপুরে এলেন, এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিরে পটল কেমন আছিস? তিনি আদর করে আমাকে পটল বলে ডাকতেন। তিনি বাসায় এলে সবার কথা শুনতেন। সবশেষ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে একবার দিনাজপুর গোরে শহীদ ময়দানে এক জনসভায় এসেছিলেন তিনি। তারও আগে ২০০৮ সালে মায়ের মৃত্যুর সময় একবার দিনাজপুরে এসেছিলেন।’
পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুর মিশন স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। এরপর ১৯৬০ সালে ভর্তি হন দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে।
সেখান থেকেই ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। পরবর্তীকালে ভর্তি হন দিনাজপুর সরকারি কলেজে (পূর্বের নাম সুরেন্দ্রনাথ কলেজ)।

তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা ইয়াসমিনবলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া দিনাজপুরের গর্ব, দেশের গর্ব। আমরা গর্ব করে বলি, তিনি এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। প্রথম নারী হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ আজকে একজন অভিভাবক হারাল।’
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নিজের জন্মস্থানে প্রার্থী হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ২৮ ডিসেম্বর জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছিলেন। দিনাজপুর-৩ আসনে দলের
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের কথা শুনে সব বিভেদ ভুলে একাট্টা হয়েছিলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রিয় নেত্রীর পক্ষে প্রচারণাও চালিয়েছেন।
তাঁর মৃত্যুতে জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেন, ‘বাংলাদেশের অবিসংবাদিত আপসহীন নেত্রীকে হারিয়ে দেশ আজ একজন
অভিভাবককে হারাল। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। সবশেষ তিনি অসুস্থ হওয়ার কয়েক দিন আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রিয় নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। দিনাজপুরের মানুষ তাঁকে প্রার্থী হিসেবে পেয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। দিনাজপুরের উন্নয়নে
স্বাক্ষর রেখে গেলেন। জাতির বড় প্রয়োজনের সময় আমরা তাঁকে হারালাম। এই দেশ জাতির ইতিহাসে তিনি কিংবদন্তী।’
জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মো. মোকাররম হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিভাবককে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী সবাই শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। জেলার সকল এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা তাঁর জানাজায় শরিক হওয়ার জন্য রাজধানীর পথে রওনা দিতে শুরু করেছে। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’

দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দিনাজপুরে। খালেদা জিয়ার পৈতৃক নিবাস দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকায়। এই বালুবাড়ি এলাকায় তৈয়বা ভিলা বাড়িতেই কেটেছে খালেদা জিয়ার শৈশব ও কৈশোরের দিনগুলো। আজ সকাল থেকে তৈয়বা ভিলার সামনে জড়ো হয়েছেন শোকার্ত স্থানীয় মানুষ, দলীয় নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম পুতুল। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ইস্কান্দার মজুমদার ও মা তৈয়বা মজুমদার। বর্তমানে খালেদা জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত তৈয়বা ভিলায় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার করা হয়েছে।
আজ সকালে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে শহরের জেলমোড় এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছুটে যান ।
দলীয় কার্যালয় ও বালুবাড়ির পৈতৃক নিবাসে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করা হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার আপন খালাতো ভাই আবু তাহের আবু বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) ছিলেন আমাদের অভিভাবক। নিজের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তিনি ছিলেন খুবই আন্তরিক। ১৯৯১ সালের তিনি যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দিনাজপুরে এলেন, এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিরে পটল কেমন আছিস? তিনি আদর করে আমাকে পটল বলে ডাকতেন। তিনি বাসায় এলে সবার কথা শুনতেন। সবশেষ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে একবার দিনাজপুর গোরে শহীদ ময়দানে এক জনসভায় এসেছিলেন তিনি। তারও আগে ২০০৮ সালে মায়ের মৃত্যুর সময় একবার দিনাজপুরে এসেছিলেন।’
পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুর মিশন স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। এরপর ১৯৬০ সালে ভর্তি হন দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে।
সেখান থেকেই ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। পরবর্তীকালে ভর্তি হন দিনাজপুর সরকারি কলেজে (পূর্বের নাম সুরেন্দ্রনাথ কলেজ)।

তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা ইয়াসমিনবলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া দিনাজপুরের গর্ব, দেশের গর্ব। আমরা গর্ব করে বলি, তিনি এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। প্রথম নারী হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ আজকে একজন অভিভাবক হারাল।’
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নিজের জন্মস্থানে প্রার্থী হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ২৮ ডিসেম্বর জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছিলেন। দিনাজপুর-৩ আসনে দলের
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের কথা শুনে সব বিভেদ ভুলে একাট্টা হয়েছিলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রিয় নেত্রীর পক্ষে প্রচারণাও চালিয়েছেন।
তাঁর মৃত্যুতে জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেন, ‘বাংলাদেশের অবিসংবাদিত আপসহীন নেত্রীকে হারিয়ে দেশ আজ একজন
অভিভাবককে হারাল। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। সবশেষ তিনি অসুস্থ হওয়ার কয়েক দিন আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রিয় নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। দিনাজপুরের মানুষ তাঁকে প্রার্থী হিসেবে পেয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। দিনাজপুরের উন্নয়নে
স্বাক্ষর রেখে গেলেন। জাতির বড় প্রয়োজনের সময় আমরা তাঁকে হারালাম। এই দেশ জাতির ইতিহাসে তিনি কিংবদন্তী।’
জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মো. মোকাররম হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিভাবককে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী সবাই শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। জেলার সকল এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা তাঁর জানাজায় শরিক হওয়ার জন্য রাজধানীর পথে রওনা দিতে শুরু করেছে। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’

আত্মানুসন্ধানের বেরিয়ে পড়েছিলেন ফরাসি দেশের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে পড়েন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। এখানে ঘর বেঁধেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশি বধূ। তিনি এখন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুস
১৬ অক্টোবর ২০২২
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের উদ্যোগে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
৩ মিনিট আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন।
৭ মিনিট আগে
পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
১৪ মিনিট আগে