Ajker Patrika

মাদারগঞ্জে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে যুবকের আত্মহত্যা 

মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ মে ২০২২, ১৫: ০৪
মাদারগঞ্জে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে যুবকের আত্মহত্যা 

জামালপুরের মাদারগঞ্জে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে শাকিব তালুকদার (২২) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে পৌর শহরের গাবেরগ্রাম তালুকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আজ সোমবার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে মাদারগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশ।

ওই এলাকার সাজ্জাত তালুকদারের ছেলে শাকিব। তাঁর স্ত্রী ও ৯ মাস বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, গত ২৫ মে পিকআপ ভ্যানের ব্যাটারি চুরির মিথ্যা অপবাদ দেন তারই আপন চাচা শাহজাদা তালুকদার। এ নিয়ে শাহজাদা তালুকদারের ভাতিজা নাকিব তালুকদার, নয়ন তালুকদার ও রাসেল তালুকদার তাঁকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি ও থানায় মামলা হয়েছে বলে ভয়ভীতি দেখান। এতে তিনি আতঙ্কিত হয়ে ২৬ মে বাড়ি ছেড়ে নারায়ণগঞ্জ চলে যান। পরে কোনো কাজ না পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। ফিরে আসার পর আবার তাঁকে নানান রকম হুমকি ও চুরির মিথ্যা অপবাদ দেন শাহজাদা তালুকদারের ঘনিষ্ঠ বালিজুড়ী নামাপাড়া এলাকার সালাম ব্যাপারির ছেলে কবির। এতে অপমানিত ও ভয় পেয়ে পাশের ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন শাকিব। পরে পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে মাদারগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শাকিবের মা ঝর্ণা বেগম বলেন, ‘ব্যাটারি চুরির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার ছেলেকে ভয়ভীতি দেখায়। বলে থানায় নাকি অভিযোগ করছে, পুলিশ নাকি যে কোনো সময় তাঁকে ধরবে। চুরির মিথ্যা অপবাদ ও পুলিশে ধরার ভয়ে সে দুনিয়া থেকে চলে গেল। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’

শাকিবের বোন সাদিয়া তালকুদার বলেন, ‘অভিযুক্তরা আগে থেকেই আমাদের ওপর অত্যাচার করত। হাসপাতাল থেকে আমার ভাইয়ের লাশ বাড়িতে নিয়ে এসে দেখি রাসেল তালুকদার ও তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা আমার মা ও বোনকে মারধর করেছে। কোনো প্রমাণ ছাড়াই আমার ভাইয়ের ওপর মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিছে। এ ঘটনায় আমরা দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।’

মাদারগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা নিহত শাকিবের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরশেদ আলী বলেন, নিহতের পরিবার যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

চুরির অপবাদ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ১৫ জন কারাগারে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দৈনিক ‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন— মো. নাইম ইসলাম (২৫), মো. সাগর ইসলাম (৩৭), মো. আহাদ শেখ (২০), মো. বিপ্লব (২০), মো. নজরুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ (২০), মো. জাহাঙ্গীর (২৮), মো. সোহেল মিয়া (২৫), মো. হাসান (২২), মো. রাসেল (২৬), মো. আব্দুল বারেক শেখ ওরফে আলামিন (৩১), মো. রাশেদুল ইসলাম (২৫), মো. সাইদুর রহমান (২৫), আবুল কাশেম (৩৩), মো. প্রাপ্ত সিকদার (২১) ও মো. রাজু আহমেদ (৩৩)।

সন্ধ্যার আগে তাঁদের আদালতে হাজির করে তেজগাঁও থানা-পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। কয়েকজন আসামির পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে যাদের জামিনের আবেদন করা হয়েছিল তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করেন ও প্রত্যেককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকা মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে একদল সন্ত্রাসী রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার কার্যালয়ে নজিরবিহীন তাণ্ডব চালায়। সন্ত্রাসীরা কার্যালয় দুটিতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর পর আগুন ধরিয়ে দেয়।

প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজধানীর তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে অজ্ঞাতনামা ৩৫০ থেকে ৪৫০ জনকে আসামি করে এই মামলাটি করা হয়। মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারা যুক্ত করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রথম আলোতে হামলাকারী ব্যক্তিগণ হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথম আলো আগুন ধরিয়ে দেয়, ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে, ব্যাপক ভাঙচুর করে লুটপাট করে, মূল্যবান বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট করে। এতে প্রথম আলোর ৩২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্ল্যাটের ভেতর গুলি করা হয় এনসিপির মোতালেবকে, মদের বোতল ও গুলির খোসা উদ্ধার

খুলনা প্রতিনিধি
তন্বী নামের এক নারী ভাড়া নেন ওই ফ্ল্যাট, সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া মদের বোতল। ছবি: আজকের পত্রিকা
তন্বী নামের এক নারী ভাড়া নেন ওই ফ্ল্যাট, সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া মদের বোতল। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাস্তার ওপরে নয়, এনসিপি নেতা মোতালেব শিকদারকে গুলি করা হয়েছে একটি ফ্ল্যাটের ভেতরে। সেখানে এক নারীসহ কয়েকজন নেশাদ্রব্য পান করছিলেন। কোনো একটি বিষয়ে মতবিরোধ হওয়ায় মোতালেবকে গুলি করা হয়। ওই ফ্ল্যাট থেকে মদ, ইয়াবা, গুলির খোসা, রক্তমাখা কাপড়সহ বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। বর্তমানে ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া তন্বী নামের এক নারীকে খুঁজছে পুলিশ।

খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার যে ফ্ল্যাটে এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধ হন, সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া গুলির খোসা ও ইয়াবা। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার যে ফ্ল্যাটে এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধ হন, সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া গুলির খোসা ও ইয়াবা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সোনাডাঙ্গা থানাধীন আল আকসা মসজিদ সরণির ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউসের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটার পর পুলিশ, সিআইডি, র‍্যাব ও যৌথ বাহিনীর প্রাথমিক তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। তবে ঘটনার পরপরই প্রচার করা হয়, মোতালেবকে একটি চায়ের দোকানে মারধর করার পর গুলি করা হয়। তবে পরে আসল ঘটনা প্রকাশ পায়।

এ বাড়ির নিচতলায় মোতালেব শিকদারকে গুলি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এ বাড়ির নিচতলায় মোতালেব শিকদারকে গুলি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মাদ তাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজ সকালে আমরা তথ্য পেয়েছি এনসিপির একজন গাজী মেডিকেলের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সত্যতা যাচাই করার জন্য ঘটনাস্থলে আসি। ঘটনাস্থল ও সাক্ষী খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে এনসিপির ভিকটিমের প্রাইভেট কার পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় আশপাশে কোথাও হয়েছে।’

উপপুলিশ কমিশনার বলেন, ‘তখন লাজফার্মা থেকে আমরা একটি ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভিকটিমসহ আরও দুজন এখানে আসে এবং কোথাও অবস্থান করে। সেই ডকুমেন্টস খুঁজতে খুঁজতে আমরা এখানে আসি। মুক্তা হাউসের নিচতলার ওই কক্ষ থেকে আমরা মাদকের বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করি। এখানে মেয়েদের নিয়ে এসে ফুর্তি করা হতো বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

এনসিপি নেতা মোতালেব শিকদারকে যে কক্ষে গুলি করা হয়, সে কক্ষে তল্লাশি। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা মোতালেব শিকদারকে যে কক্ষে গুলি করা হয়, সে কক্ষে তল্লাশি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গতকাল রোববার রাতে মোতালেব শিকদার এখানে এসেছিল এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ করেছে। তাদের নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারণে এ গুলির ঘটনা ঘটেছে, যেটা আমরা প্রাথমিক তদন্তে পেয়েছি। এর সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত আছে। মোতালেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমরা অন্যদের নাম জানতে পারব। যারা জড়িত আছে, তাদের খুব শিগগির আইনের আওতায় আনতে পারব। গুলিটি তার ভেতরে ঢোকেনি, চামড়া ভেদ করে বের হয়ে গেছে। মোতালেব এখন শঙ্কামুক্ত।’

সূত্র জানায়, রাতে তন্বী নামের একটি মেয়ের ওই ফ্ল্যাটে মোতালেব শিকদারের সহযোগীরা ইয়াবা সেবন, মদ্যপান ও মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করেছিলেন। নিজেদের মধ্যে মতবিরোধের কারণে সহযোগীর কেউ একজন তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি রিকশাযোগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান বলে পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়। ঘটনার পর থেকে ওই ফ্ল্যাটের ভাড়াটে তন্বীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁকে খুঁজছে পুলিশ।

শ্রমিক লীগের সঙ্গে জড়িত থাকাকালে খুলনার আলোচিত শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেলের সঙ্গে মোতালেব শিকদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রমিক লীগের সঙ্গে জড়িত থাকাকালে খুলনার আলোচিত শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেলের সঙ্গে মোতালেব শিকদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানতে চাইলে মসজিদ সরণি রোডের মুক্তা হাউসের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী নামের এক তরুণী এক মাস (ডিসেম্বরের ১ তারিখ) আগে নিচের ফ্লোরটি ভাড়া নেয়। সে নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকত। তার কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তার অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে এ মাসে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিই। কিন্তু বাড়ির ছাড়ার আগেই এ ঘটনা ঘটেছে।’

এদিকে ছেলের ওপর গুলির ঘটনা জানতে পেরে হাসপাতালে ছুটে যান মোতালেবের মা রাবেয়া বেগম, স্ত্রী ফাহিমা আক্তার ও তিন বছরের কন্যাসন্তান। সেখানে তাঁরা এ প্রতিবেদককে জানান, গতকাল সন্ধ্যায় মোতালেবের সঙ্গে সর্বশেষ মোবাইলে কথা হয়। মোতালেব তাঁদের জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে তাঁদের একজন কর্মী আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর সার্বিক খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তিনি খুমেক হাসপাতালে আছেন। এরপর ডাকবাংলো মোড়ে স্যান্ডেল কেনার জন্য যাবেন। এ কথা বলে মোতালেব ফোন কেটে দেন। রাতে আর কোনো কথা হয়নি তাঁর সঙ্গে। বেলা ১১টার দিকে একজন ফোন করে জানায়, তাঁকে গুলি করা হয়েছে। তাঁরা আরও জানান, জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দেওয়ার কারণে প্রতিপক্ষ তাঁকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায়।

খুমেক হাসপাতালে উপস্থিত এনসিপির খুলনা মহানগর সংগঠক আহম্মেদ হামীম রাহাত জানান, সোনাডাঙ্গা এলাকায় মোতালেব শিকদারকে গুলি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হামীম রাহাত ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, খুলনা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বিগত দিনে খুলনায় অহরহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। আর এসব সন্ত্রাসী গ্রুপই আওয়ামী নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট। নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী নেতাদের মদদেই সন্ত্রাসীরা খুলনাকে অশান্ত করার মিশনে নেমেছে। তিনি অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

এনসিপির খুলনা জেলা প্রধান সমন্বয়কারী মাফুজুল হাসান ফয়জুল্লাহ এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে সরাসরি দায়ী করে বলেন, মোতালেব সার্জিক্যাল হাসপাতালের সামনে গাড়ি থেকে নামার পর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে একটি চায়ের দোকানে নিয়ে মারধর করার পর গুলি করা হয়। তবে তাঁর এ বক্তব্যের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে খুমেক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক হারুন অর রশিদ বলেন, গুলিটি তাঁর বাম কানের চামড়া ভেদ করে বের হয়ে গেছে। খুলনা সিটি ইমেজিং সেন্টারে তাঁর মাথার স্ক্যান করা হয়েছে। সেখানে মাথায় গুলির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আহত মোতালেব মিয়া এখন শঙ্কামুক্ত।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গুলিবিদ্ধ মোতালেব আগে শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পরে তিনি এনসিপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি একজন ট্রাক ড্রাইভার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ মারা গেছেন

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ (৭০) মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

পরিবারসূত্রে জানা যায়, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। তিনি ধানমন্ডির বাসায় থাকতেন। গত কয়েক দিন ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

সুকুমার রঞ্জন ঘোষ শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ শ্রীনগর উপজেলা সদরে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে অসুস্থ ছিলেন।

উল্লেখ্য, সুকুমার রঞ্জন ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (কুলা প্রতীক) ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে (ধানের শীষ) পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে নিহত দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক, স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১০
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনিতে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের বাড়িতে শোকের মাতম এখনো থামেনি। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে পুরো পরিবার যেন শোকে কাতর।

প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তাসহ নানা আশ্বাস। এ ছাড়া দিপুর পরিবারের জন্য বাড়িতে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

আজ সোমবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান নিহত দিপু দাসের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সঙ্গে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, শীতবস্ত্র, শুকনো খাবার ও একটি সেলাই মেশিন পরিবারটিকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দিপুর স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও দেন জেলা প্রশাসক।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সহযোগিতাসহ সব সময় তাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছি।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ঘটনায় নিহতে দিপুর ছোট ভাই অপু দাস ১৯ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রতিবাদ সমাবেশ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ভালুকায় দিপু দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ময়মনসিংহ নগরী ও তারাকান্দায় মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। আজ সচেতন ময়মনসিংহবাসীর ব্যানারে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন দিপু দাসের ছোট ভাই অপু দাস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা আল নুর মো. আয়াস, হৃদয় খান, সাংবাদিক মোজাম্মেল খোকন, কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ।

একই দাবিতে দিপু দাসের নিজ উপজেলা তারাকান্দায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ফ্রন্ট ও দিপু দাসের পরিবার। আজ সকালে তারাকান্দা বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তারাকান্দা উপজেলা সভাপতি বিজন কুমার ভৌমিক রতন, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শর্মা সরকার কাঞ্চনসহ দিপুর পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা কারখানার মালিকসহ প্রকৃত দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন এবং দিপু দাসের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত