Ajker Patrika

গ্যাসের সংকট চরমে, শিল্প উৎপাদন বন্ধের উপক্রম

  • উচ্চমূল্য দিয়েও সারা দিনে দুই-তিন ঘণ্টাও প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না।
  • কারখানা চালু রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান মালিকেরা।
  • সকাল ৬টার পর গ্যাসের সরবরাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, গাজীপুর 
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৯: ৩৩
গ্যাসের সংকট চরমে, শিল্প উৎপাদন বন্ধের উপক্রম

গাজীপুর জেলা ও মহানগরী এলাকার বিভিন্ন শিল্পকারখানায় গ্যাসের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে প্রভাব পড়েছে উৎপাদনে। বিশেষ করে পোশাকশিল্পসংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোতে উৎপাদন প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এমন অবস্থায় ভবিষ্যতে শ্রমিকদের বেতন, ব্যাংকের সুদ ইত্যাদি পরিশোধ করে কারখানা চালু রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান কারখানা মালিকেরা। তাঁরা বলছেন, একদিকে মার্কিন শুল্ক আরোপ, অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের আন্তর্জাতিক বাজার দখলের চেষ্টা এবং দেশীয় পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের জ্বালানিনীতি এই শিল্পকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সাদমা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখন নানামুখী সংকট মোকাবিলা করছি। রপ্তানির ক্ষেত্রে আমেরিকা যখন পালটা শুল্ক আরোপ করল, ঠিক তখনই সরকার দেশের জ্বালানিনীতি পরিবর্তন করে গ্যাসের দাম বাড়াল। অন্যদিকে দাম বাড়ালেও গ্যাসের চাপ ও সরবরাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। এতে উৎপাদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘রাত ৮-৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কোনো রকমে কারখানা চালু রাখা হলেও সকাল ৬টার পর গ্যাসের চাপ এবং সরবরাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। আমার উৎপাদন দৈনিক ৬০ টন থেকে কমে ১০ টনে নেমে এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের সুদ ও কিস্তি পরিশোধ এবং শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য খরচ কোনোভাবেই থেমে থাকবে না। ফলে আগামী দিনগুলোয় এ অবস্থা চলতে থাকলে কীভাবে এসব পরিশোধ করব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।’ বিষয়গুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেও সন্তোষজনক কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

গাজীপুর মহানগরীর তিন সড়ক এলাকার স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক শাওন ইসলাম বলেন, ‘সরকার আমাদের আবেদন উপেক্ষা করেই শিল্পকারখানায় গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। এখন উচ্চমূল্য দিয়ে সারা দিনে দুই-তিন ঘণ্টাও প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। এতে তৈরি পোশাকশিল্প-সংশ্লিষ্ট যেসব প্রতিষ্ঠান যেমন—নেট কম্পোজিট, টেক্সটাইল, নিটওয়্যারের অবস্থা খুবই খারাপ।’

শাওন ইসলাম জানান, গত সোমবার থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ। ফলে গ্যাসনির্ভর কারখানাগুলোতে উৎপাদনও বন্ধ। তবে অনেকেই গ্যাসের বিকল্প হিসেবে ডিজেল দিয়ে বাধ্য হয়ে কারখানার উৎপাদন চালু রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি আরও বলেন, ডিজেল দিয়ে শিল্প উৎপাদন অব্যাহত রাখলে গ্যাসের তুলনায় ৩ গুণ খরচ হয়। উৎপাদনও কম হয়। বর্তমানে দেশের তৈরি পোশাকশিল্প নানামুখী সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম এই খাত টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দ্রুত ও সহানুভূতিশীল কার্যকর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক শাওন বলেন, ‘মার্কিন শুল্কহার আমাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। বায়াররা পণ্য নিতেও নানামুখী শর্ত আরোপ করছেন। অনেক সময় আগের দামের চেয়েও ছাড় দিয়ে কম দামে পণ্য রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছি। তার ওপর প্রতিবেশী দেশের সাম্প্রতিক নীতির পরিবর্তনের কারণে এই শিল্প কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে। এর মধ্যে গ্যাসের সংকট আরও কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে।’

গাজীপুরের প্যাসিফিক ফাইবার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রায়হান বলেন, গ্যাসের সংকট, মূল্যবৃদ্ধিসহ নানামুখী প্রতিকূলতার কারণে জটিল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাকশিল্প। গ্যাসের সংকটে অনেক কারখানার উৎপাদন প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে। অনেকে বিকল্প উপায়ে বেশি খরচ করে উৎপাদন চালু রাখলেও রপ্তানিতে নানা জটিলতার মুখে পড়ছেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, গাজীপুরে বিভিন্ন ধরনের নিবন্ধিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ২ হাজার ১৭৬টি। এসবের মধ্যে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত মোট কারখানা আছে ৭৪৩টি। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১২৪টি। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১২৮টি।

তিতাসের গাজীপুর আঞ্চলিক পরিচালন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী ফারুক জানান, গাজীপুরে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৬০০-৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে দৈনিক সর্বোচ্চ ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। সরবরাহ কম থাকায় কোনো কোনো এলাকায় গ্যাসের চাপ কম রয়েছে।

গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারিত চাপে গ্যাস সরবরাহ করতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করেছেন গাজীপুরের তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির উপমহাব্যবস্থাপক সুরুজ আলম। তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে চাহিদার তুলনায় গ্যাস সরবরাহ অনেক কম। সরবরাহ কম থাকায় গ্যাসের চাপও কমে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি জাতীয়ভাবে সমন্বয় করে কীভাবে পরিস্থিতির উন্নতি করা যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত