Ajker Patrika

ভারতীয় গণমাধ্যমে ধর্মান্তরিত না হওয়ায় সনাতনী মা-মেয়েকে খুনের খবরটি গুজব

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ৩৭
খানসামায় একই রশিতে মা ও মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে টিভি-৯ বাংলায় গুজব প্রচার। ছবি: সংগৃহীত
খানসামায় একই রশিতে মা ও মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে টিভি-৯ বাংলায় গুজব প্রচার। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বী মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্দেশ্যমূলক অপতথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি, ধর্মান্তরিত হতে না চাওয়ায় আক্রোশে হিন্দু পরিবারকে খুন করে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তবে নিহতের পরিবার বলছে, এমন দাবি একেবারেই অমূলক ও অস্বস্তিকর।

ভারতীয় গণমাধ্যম টিভি-৯ বাংলাসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে ‘বাংলাদেশে হিন্দু পরিবারকে ধর্ম বদলের চাপ, বাধা দেওয়ার আক্রোশে হিন্দু পরিবার খুন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব সংবাদে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে হিন্দু পরিবারকে ধর্ম বদলের চাপ, বাধা দেওয়ার আক্রোশে হিন্দু পরিবার খুন করে ঝুলিয়ে রাখে কট্টরপন্থীরা। কয়েক দিন ধরেই হিন্দু পরিবারকে হুমকি দিচ্ছিল কট্টরপন্থীরা।

এই খবরের সত্যতা জানতে আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ৩ নম্বর আংগারপাড়া ইউনিয়নের আরাজী জুগীর ঘোপা গ্রামের বেণুপাড়া এলাকায় সেই মা সুজাতা রায় (২৬) ও মেয়ে নীলাদ্রি রায়ের (৬) বাড়িতে যাওয়া হয়। সেখানে নিহতের শাশুড়ি, ঠাকুমা, শ্বশুরবাড়ি লোকজন, এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন ও সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। তাঁরা জানান, টিভি-৯ বাংলা ও অন্যান্য ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ একেবারেই গুজব।

ওই তরুণীর প্রতিবেশীরা জানান, ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর মিথ্যা। ধর্ম বদল বিষয়ে কোনো চাপ কেউ প্রয়োগ করেনি। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা—সেই বিষয়ে নিহতের শ্বশুরবাড়ির পরিবার ও বাবার পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এর মাঝে এমন সংবাদ অস্বস্তিকর।

ওই ভিডিও প্রতিবেদনে উপস্থাপক ও টিভির সংবাদকর্মীর বক্তব্য প্রচার হলেও নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর কোনো বক্তব্য প্রচার করেনি টিভি-৯ বাংলা।

জানা যায়, ২০১৮ সালে পার্বতীপুর উপজেলার বিলাইচণ্ডী ইউনিয়নের বাঘাচড়া ঝাউপাড়ার অমিত্য রায়ের মেয়ের সঙ্গে প্রস্তাবের মাধ্যমে ভক্ত রায়ের বিয়ে হয়। ভক্ত রায় পেশায় একজন দরজি। নিহত সুজাতা রায় অনার্স তৃতীয় বর্ষের বাংলা বিভাগের ছাত্রী ও বৈবাহিক জীবনে নীলাদ্রি রায় নামে ৬ বছর বয়সী একটি মেয়েসন্তান রয়েছে।

নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় একই রশিতে মা ও মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের বাবার পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তবে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মহত্যার কথা বলছেন।

নিহতের শয়নকক্ষে একটি চিঠি পাওয়া গেছে সেখানে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুতে কেউ দায়ী নয়’। তবে দুই পৃষ্ঠার এই চিঠির হাতের লেখা নিহতের কি না সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিন্নাহ আল মামুন।

গত বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের আরাজী যুগীর ঘোপা গ্রামের বেণুপাড়ায় নিহতের শয়নকক্ষ থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের বাবার জিম্মায় মরদেহ হস্তান্তর ও গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) তাঁরা দাহ সম্পন্ন করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা অমিত্য রায় বাদী হয়ে খানসামা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আছিয়া বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সঠিক নয়। হিন্দুধর্ম বদলের যে চাপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে—এমন ঘটনাই ঘটেনি।’

সুজাতার দাদি শাশুড়ি কুমোদিনী রায় বলেন, ‘আমার নাতনি বউ সুজাতা রায় ও তার মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার নিয়ে ভারতীয় টিভিতে যে খবর দেখাইছে—এটা সঠিক নয়। সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর আশপাশের মুসলমানরা আমাদের পাহারা ও সাহস দিয়েছে। সেখানে এমন ঘটনা মিথ্যা।’

মৃত সুজাতার শাশুড়ি তৃফলা রানী রায় বলেন, ‘নিহতের দিনেও হাসিখুশি ও স্বাভাবিক ছিল সুজাতা। আমরা সেদিন সবাই বাড়ির সাংসারিক কাজে ব্যস্ত ছিলাম। সন্ধ্যাবেলা সন্ধ্যাবাতি দেওয়ার জন্য সুজাতার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তার দরজা খুলে দেখি সে ও তার মেয়ে শয়নকক্ষ ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। এটা দেখে আমরা নিজেরাও হতবাক হয়েছি। তবে ভারতীয় গণমাধ্যমে হিন্দুধর্ম বদলের চাপ সংবাদটিকে মিথ্যা বলে দাবি করেন নিহতের শাশুড়ি।’

খানসামা উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক কেশব কর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারতীয় টিভি-৯ বাংলায় যে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে—সেটি শতভাগ মিথ্যা। পারিবারিক কারণে এই মা ও মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তাই ভারতীয় সরকার ও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান এমন মিথ্যা সংবাদ প্রচার করবেন না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে অতীতের মতো আমাদের শান্তিতে থাকতে দেন।’

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজমূল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঝুলন্ত অবস্থায় মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করে নিহতের শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। পারিবারিক কারণে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে, এটি সাম্প্রদায়িক কোনো বিষয় নয়। ধর্ম বদলের চাপ বিষয়ে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ নেই। তাই ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। এই উপজেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সকল ধর্মের মানুষ বাস করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে তদন্তে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা হত্যার আলামত পাওয়া যায়নি। এরপরেও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎আরমানিটোলায় বহুতল ভবনে আগুন‎, ৪০ মিনিট পর নিয়ন্ত্রণে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৯
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস

‎রাজধানীর আরমানিটোলার বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠতলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে আজ সকালে খুদে বার্তায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানানো হয়।

‎‎ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়া যায়। খবর পাওয়ার মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে, অর্থাৎ সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস

হাজী টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সদরঘাট ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি, সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন থেকে ৫টি এবং সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশন থেকে ২টিসহ মোট ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করে। পরে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।‎

তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্দোষ আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করার দাবি বিএনপি নেতার

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪১
গতকাল দুপুরে নেছারাবাদে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল দুপুরে নেছারাবাদে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেছারাবাদে নির্দোষ ও নিরপরাধ আওয়ামী লীগ সমর্থকসহ সাধারণ জনগণকে হয়রানি না করার জন্য পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। গতকাল সোমবার দুপুরে নেছারাবাদ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই দাবি জানান। জেলা প্রশাসকের সফর উপলক্ষে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ হলরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. আবু সাঈদ। সভাপতিত্ব করেন নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত দত্ত। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নেছারাবাদ-কাউখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাবিহা মেহবুবা, নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান।

সভায় স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল হাসান বলেন, ‘নেছারাবাদ উপজেলায় যেন কোনো নির্দোষ ও নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা না হয়। গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন বা হয়রানি বন্ধ করতে হবে।’ প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমনও ইতিপূর্বে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে একই ধরনের অনুরোধ জানিয়েছেন।’ পাশাপাশি ধর্মকে অপব্যবহার করে নেছারাবাদে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি যেন না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে একই সভায় বক্তব্য দেন জামায়াত নেতা মো. গোলাম আযম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অতীতে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে নির্দোষ কিছু মানুষকে ধরে গ্রেপ্তার-বাণিজ্য করা হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান তিনি।

নেছারাবাদ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রায়হান মাহমুদের সঞ্চালনায় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন, নেছারাবাদ সেনাক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন আল আরাফ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন জয় প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফকিরহাটে ভৈরব নদ: খননেও মেলেনি সুফল বাধা ওয়াসার পাইপ

  • ২০২০ সালে নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পাউবো।
  • পাঁচ বছরের মধ্যে নদটির বিভিন্ন অংশে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে।
ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ভৈরব নদের মাঝামাঝি স্থানে ওয়াসার পাইপলাইন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ভৈরব নদের মাঝামাঝি স্থানে ওয়াসার পাইপলাইন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফকিরহাট বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের একটি সেতুর নিচে ভৈরব নদের মাঝ বরাবর বড় পানির পাইপ রয়েছে। পাইপটি রক্ষায় নদীর ভেতর আড়াআড়িভাবে লোহার খাম্বা বসিয়ে বেড়া দেওয়ায় নদীটিতে বাঁধ তৈরি হয়েছে। ফলে জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে নদীগর্ভে দ্রুত পলি জমছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌচলাচল।

স্থানীয়রা বলেন, ফকিরহাট, মোল্লাহাট এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নৌপথ সচল রাখতে ২০২০ সালে ভৈরব নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে খননের সুফল কাজে আসেনি। মোল্লাহাটের মধুমতী নদী থেকে খুলনা শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় ফকিরহাট এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়।

ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মুকুন্দ পাল বলেন, নৌচলাচল বন্ধ থাকায় ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। নৌপথ চালু থাকলে খুলনা, মোংলা বন্দর, বাগেরহাট ও বরিশালের সঙ্গে স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, ওয়াসার পাইপটি ফকিরহাটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য দীর্ঘদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরমান সিদ্দিক বলেন, ওই স্থানে পাইপলাইনের মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি চীন থেকে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যন্ত্রপাতি এলে পাইপলাইনটি নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিচার পেতে জীবনের ঝুঁকি

মো. হোসাইন আলী কাজী
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৩
বিএডিসির জরাজীর্ণ ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএডিসির জরাজীর্ণ ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা ওই পথ ব্যবহার করছেন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ভবন দুটি দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ ও কৃষি উপকরণ সংরক্ষণের জন্য দুটি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করে। প্রায় ১৫ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন ভবন দুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেগুলো অপসারণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

পরিত্যক্ত ওই ভবন দুটির মাঝখান দিয়েই আদালতের প্রধান প্রবেশদ্বার নির্মিত। প্রতিদিন বিচারকাজে অংশ নিতে হাজারো মানুষ ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচ দিয়ে আদালতে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের দাবি, ভবন দুটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এতে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।

গত রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবন দুটির বিভিন্ন অংশ থেকে ইট, পাথর ও বিম খসে পড়ছে। দেয়ালজুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ভেতরের অবস্থা এমন যে দিনের বেলায়ও সেখানে ঢুকতে ভয় পান মানুষ। ভবন দুটি ভুতুড়ে অবস্থায় পরিণত হওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।

বিচারপ্রার্থী আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আদালতের সামনে এভাবে দুটি পরিত্যক্ত ভবন থাকা যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি তা আমাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা প্রয়োজন।’

আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আবুবকর বলেন, আদালতের প্রবেশপথের দুই পাশে পরিত্যক্ত দুটি ভবন পড়ে আছে। ভবন ধসে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।

জেলা বার সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা জরুরি।

জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন দুটি বহু আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এখনো সেগুলো অপসারণ করা হয়নি, তা আমারও বোধগম্য নয়।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপসারণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত