Ajker Patrika

ভাতের খোঁজে থাকা আলমগীরের চাকরির খবরে শান্তির ঘুম হয় বাবার

গোলাম ওয়াদুদ, ঢাকা ও আকতার হোসেন বকুল, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) 
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮: ৩৬
ভাতের খোঁজে থাকা আলমগীরের চাকরির খবরে শান্তির ঘুম হয় বাবার

‘শুধুমাত্র দু-বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’—লেখা সংবলিত পোস্টার লাগানো আলমগীর কবিরের চাকরি হয়েছে দেশের রিটেইল চেইন শপ ‘স্বপ্ন’-তে। ছেলের চাকরি পাওয়ার খবর শুনে স্বস্তি মিলেছে বাবা কফিল উদ্দীনের। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘রাতে এখন শান্তির ঘুম হয়।’ 

বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী মো. আলমগীর কবির। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। আলমগীর কবির জানিয়েছেন, ‘স্বপ্ন’–তে তাঁকে ‘রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট’ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

আলমগীরের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বরাইল গ্রামে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে গ্রামের লোকজন এসে ভিড় করছে। কিসের চাকরি, কোথায়, কবে থেকে শুরু এসব শুনতেই বাড়িতে আসছে গ্রামের মানুষ। গল্প করছে কবিরের বাবা-মার সঙ্গে। 

আলমগীর কবিরের বাবা বলেন, ‘প্রতিদিনই মানুষ আমার বাড়িতে আসছে। ছেলের চাকরির বিষয়ে জানতেই তাঁরা আসে। আলমগীর চাকরি পাওয়ায় গ্রামের মানুষও অনেক খুশি।’ 

কফিল উদ্দিন জানান, তাঁর ছয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে এক মেয়ে মারা গেছে। এক ছেলে প্রতিবন্ধী এবং এক মেয়ে বিধবা হয়ে তাদের সঙ্গেই থাকেন। তাঁর চার বিঘা ফসলি জমি ছিল, যার তিন বিঘা মেয়েদের বিয়ে ও ছেলের পড়ালেখা করাতে বিক্রি করে দিয়েছেন। ছেলে পড়ালেখা শেষ করেও চাকরি পাচ্ছিল না। সবকিছু নিয়েই তিনি ঝামেলায় পড়ে যান। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এলাকায় আলমগীর কবিরের সুনাম রয়েছে। তাকে সবাই ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের বলেই জানে। প্রতিবেশী মনোয়ারা বেগমসহ অনেকে বলেন, ‘ছেলেটি খুব ভালো ও শান্ত প্রকৃতির। শুধু দুই ঈদে বাড়ি আসত। যে দুই-তিন দিন থাকত, ঘরেই থাকত। বাইরে আড্ডা দিত না।’ 

শুধু প্রতিবেশী নয়, এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও আলমগীরের চাকরি পাওয়ার খবরে খুশি। সংরক্ষিত আসনের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শিল্পী নাহার বলেন, ‘তাদের পরিবারের খুব অভাব। অনেক কষ্টে তারা জীবন যাপন করে। ছেলেটার চাকরি হওয়ার খবরে আমি অনেক খুশি হয়েছি।’ 

আলমগীর কবিরের বাবা আজকের পত্রিকাকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলে বেতনের টাকা আমাদের দিক বা না দিক, কোনো সমস্যা নেই। আমার ছেলেটা সুখে থাক, এটাই আমাদের আনন্দ।’ 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলমগীর কবিরকে নিয়ে নানা নেতিবাচক খবর ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম তাঁর পোস্টার লাগানোকে ‘কুকীর্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তাঁর এমন পোস্টার লাগানোর পেছনে ‘খারাপ উদ্দেশ্য আছে’—এমন কথা অনেকেই বলেছেন। আলমগীর কবির ভণ্ডামি করছেন কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছে। 

আলমগীর কবিরের ছোট্ট মাটির বাড়িতে তাঁর বাবা-মা

তবে সরেজমিনে আলমগীরের এলাকায় গিয়ে এমন কিছুর প্রমাণ মেলেনি। তাঁর পরিবার যে অতিদরিদ্র, সেটি অন্তত স্পষ্ট। আলমগীর কবিরের পুরো সংসার চলে তাঁর বিধবা বোনের দরজির কাজ থেকে পাওয়া টাকায়। গ্রামের মানুষের কাপড় সেলাই করে যে টাকা তিনি পান, তা দিয়ে সংসার চলে। সেই সঙ্গে ভাইকেও যৎসামান্য কিছু অর্থ বোন পাঠাতেন বলে জানা গেছে। 

আলমগীরের কোনো অপকর্মের তথ্য পায়নি বগুড়া জেলা পুলিশ ও জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানা-পুলিশ। পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আলমগীর কবিরের খবর ভাইরাল হওয়ার পর থানা-পুলিশ তাঁর বিষয়ে খোঁজ নেয়। তাতে দেখা যায়, আসলে তারা অনেক গরিব।’ 

ওসি জানান, পুলিশ তাঁর বাবা-মা এবং এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁর সম্পর্কে বিস্তর তথ্য নেওয়া হয়। সবার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারটি সত্যিই অভাবী। 

এসব বিষয় নিয়ে আলমগীর কবির বলেন, ‘আমাকে নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে—আমি অপকর্ম করেছি, খারাপ কাজ করেছি। খাবারের সন্ধান করা কি অপকর্ম? আমার কষ্ট তো আর মানুষ বুঝবে না। যার যার কষ্ট সে–ই বোঝে।’ 

কবির বলেন, ‘আমি যদি অপকর্ম করতাম তাহলে নিজে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতাম না। আমার সঙ্গে অনেকক্ষণ পুলিশ সুপার মহোদয় কথা বলেছেন। আমার সবকিছু শুনেছেন। আমি যদি অন্যায় করতাম তাহলে তাঁরা তো সেটা পেত। আমি সেদিন অনেকগুলো মিডিয়ার সামনাসামনি হয়েছি। তাদের কাছেও আমি প্রমাণ দিয়েছি।’ 

চাকরির বিষয়ে আলমগীর বলেন, ‘আমি বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের কাছে কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞ স্বপ্নের কাছে। তারা আমাকে একটা চাকরি দিয়েছেন।’ 

এখন কেমন আছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, ‘আগের মতোই। চাকরিতে যুক্ত হওয়ার পর ইনশা আল্লাহ ভালো কিছু হবে। আমার পরিবারের জন্য কিছু করতে চাই।’ 

চাকরি পাওয়ার পর বাবা-মার সঙ্গে দেখা হয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নে আলমগীর বলেন, ‘ফোনে কথা হয়েছে। বাবাকে বলেছি যেদিন বেতন পাব, তার পর দিন ছুটি নিয়ে বাড়ি আসব। বাবাও বলেছেন আগে চাকরিতে জয়েন করতে।’ 

এদিকে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চাকরি পেলেও আলমগীর তাতে যোগ দেবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে। এ বিষয়ে আলমগীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার তো দরকার ভালোভাবে বেঁচে থাকার। আমার একটি চাকরি হয়েছে, আমি কেন জয়েন করব না? আগামীকাল সোমবার আমি জয়েন করব। রোববার (আজ) আমি ঢাকায় যাব।’ 

গত ২৫ জানুয়ারি ‘শুধুমাত্র দু-বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’—এমন লেখা সংবলিত একটি পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর সেটা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে। পরে গত ২ ফেব্রুয়ারি বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে চাকরি হয় আলমগীরের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত