Ajker Patrika

সার্ভিস লেনহীন মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি

  • ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বেশির ভাগ মহাসড়কে সার্ভিস লেন নেই
  • একই মহাসড়কে ভারী ও দ্রুতগতির যানবাহন ও ধীরগতির যান চলছে
  • সার্ভিস লেন ব্যবহারের নিয়ম, দণ্ডের বিষয়ে জানেন না ব্যবহারকারীরা
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১১: ৩২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বাড়ছেই। মহাসড়কে দ্রুতগতির যানবাহনের পাশাপাশি ধীরগতির যান চলাচল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যাপ্ত সার্ভিস লেন না থাকায় মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। যেসব মহাসড়কে সার্ভিস লেন আছে, সেগুলোও কিছুদূর পরপর মহাসড়কে মিশেছে। সার্ভিস লেন ব্যবহারের নিয়ম জানেন না চালকেরা। নিয়ম অমান্যে দণ্ডের বিষয়েও নেই যথেষ্ট প্রচার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শুধু নির্মাণকেই সমাধান মনে করে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত সার্ভিস লেন নেই। যেগুলো আছে সেগুলোতেও চলাচলকারী যানবাহন প্রধান সড়কে উঠে ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। নিয়মের ব্যতিক্রম হওয়ায় ঝুঁকির মাত্রা বাড়ে। দেশে যে উদ্দেশ্যে সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হয়, তা বাস্তবায়ন হয় না।

সবচেয়ে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। দেশের প্রথম চার লেনের এই মহাসড়কে নেই সার্ভিস লেন। ফলে এই মহাসড়কে ভারী ও দ্রুতগতির যানবাহনের পাশাপাশি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, রিকশা ভ্যানসহ ধীরগতির যানবাহনও চলে পাল্লা দিয়ে।

ফলে ধীরগতির যানবাহনের কারণে ওই মহাসড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার কারণে প্রাণহানি হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সার্ভিস লেন থাকলে গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কে দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমে যেত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে ২৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে উল্টো পথেও চলতে দেখা গেছে। এই উল্টো পথে চলাচল আটকাতে পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। অথচ আগের দিন কুমিল্লার পদুয়ার বাজারে ইউটার্ন নেওয়া একটি প্রাইভেট কার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ওপর উল্টে পড়ে একটি কাভার্ড ভ্যান। এতে কারে থাকা একই পরিবারের চারজন নিহত হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাইওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সার্ভিস লেন না রাখা বিরাট ভুল হয়েছে। এই মহাসড়কে ৬৬২টি ফিডার রোড রয়েছে। সার্ভিস লেন থাকলে যানগুলো ফিডার রোড থেকে সরাসরি মহাসড়কে উঠতে পারত না; কিংবা উল্টো পথে চলার সুযোগ পেত না। যেমন সার্ভিস লেন রয়েছে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে।

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েজুড়ে সার্ভিস লেন আছে। ফলে ধীরগতির যান মহাসড়কে তেমন ওঠে না। কিন্তু সাসেক-১ (গাজীপুর-এলেঙ্গা) মহাসড়কের পুরোটায় সার্ভিস লেন নেই। কিছুদূর পরপর সার্ভিস লেন মিশেছে মহাসড়কের সঙ্গে। গাজীপুরের ভোগড়া থেকে ঢাকা বাইপাস ফোর লেন এক্সপ্রেসওয়ের ৪৮ কিলোমিটার সার্ভিস লেনসহ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভোগড়া থেকে ভুলতা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সাসেক-২ (এলেঙ্গা-রংপুর), ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক, আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পে সার্ভিস লেন করা হচ্ছে। হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের এক পাশে সার্ভিস লেন থাকলেও কিছুদূর পর মূল সড়কে মিশেছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘মহাসড়কের প্রধান বৈশিষ্ট্য সার্ভিস লেন থাকতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক। আমাদের একাধিক মহাসড়কে সার্ভিস লেন থাকলেও সেগুলো কিছুদূর পরপর মূল সড়কের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। যেসব মহাসড়কে সার্ভিস লেন নেই, সেখানে অবশ্যই সড়ক ডিভাইডার রাখতে হবে; কিন্তু তাও করা হচ্ছে না।’

সওজ সূত্র বলেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের আদলে এক্সপ্রেসওয়ে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য নকশাও তৈরি করা হয়েছে। এটি নির্মাণে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হতে পারে। এরই মধ্যে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, এখানে অবকাঠামো তৈরি করাকেই দায়িত্ব শেষ বলে মনে করা হয়। কিন্তু ব্যবহারকারীদের সচেতন করার বিষয়ে চিন্তা করা হয় না। উন্নয়নশীল দেশে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বাড়াতে হবে। চালকদের সচেতন করতে হবে, তাঁদের পথচলার নিয়ম ও ঝুঁকি সম্পর্কে জানাতে হবে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সূত্র বলেছে, কিছু এলাকায় সার্ভিস লেন করার প্রয়োজন ছিল ২০ ফুট। কিন্তু জায়গাস্বল্পতার কারণে ১৬-১৮ ফুট করতে হয়েছে। এগুলো ভবিষ্যতে সমন্বয় করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজের একাধিক প্রকৌশলী বলেন, মহাসড়কে সার্ভিস লেন হলে দুর্ঘটনা কমে যাবে। কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সব মহাসড়কে সার্ভিস লেন করা যাচ্ছে না। কৃষিজমি নষ্ট না করার নির্দেশনাও আছে। দেশে সার্ভিস লেনের প্রচলনও বেশি পুরোনো নয়। ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো নির্মাণের সময় সার্ভিস লেনসহ করার পরিকল্পনা করেছে সরকার।

জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজি মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা বলেন, সার্ভিস লেন ছাড়া মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। সার্ভিস লেন থাকা মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কম, সেখানে দুর্ঘটনার হারও কম। এখন থেকে যেসব মহাসড়ক সম্প্রসারণ করা হবে, সেগুলো অবশ্যই সার্ভিস লেনসহ করার অনুরোধ জানান তিনি।

মহাসড়কে গতি ও যাত্রার সময় কমানোর জন্য সার্ভিস লেন প্রয়োজন বলে মনে করেন সওজ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) মো. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, মহাসড়ককে নিরাপদ করার জন্য সার্ভিস লেন প্রয়োজন। একই সঙ্গে স্থানীয় মানুষের চলাচলের জন্য ধীরগতির যানবাহনের চলাচলও দরকার। বাজেটস্বল্পতার কারণে সব মহাসড়কে সার্ভিস লেন করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জমি নেই। কৃষিজমি নষ্ট হয়। মহাসড়কের পাশে বাজার আছে। মহাসড়ক সম্প্রসারণ করতে গেলে সেগুলো সরাতে হয়। এসব তাঁদের সীমাবদ্ধতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহতের মরদেহ ঢামেক মর্গে

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদারের (২১) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাতিরঝিল থানা পুলিশ মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন।

হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, সিয়াম মজুমদারের (২১) বাড়ি খুলনার দিঘুলিয়া উপজেলার কলোনীতে। তার বাবার নাম আলী আকবর মজুমদার। পরিবারের সাথে নিউ ইস্কাটন দুই হাজার গলির ১০১ নম্বর বাসায় থাকতেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।

নিহত সিয়ামের সহকর্মী অহিদুল হাওলাদার জানান, নিউ ইস্কাটনে ‘জাহিদ কার ডেকোরেশনের’ কর্মচারী সিয়াম। গত ৩-৪ বছর যাবৎ এখানে কাজ করে সে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দোকানে কাজ সেরে চা পান করার জন্য বের হয়েছিল সিয়াম। চা পান করেই চলে আসবে। এর আধাঘণ্টা পর দোকানে এসে কয়েকজন খবর দেয়, তাদের দোকানের কর্মচারী সিয়াম মারা গেছে। রাস্তায় তার মরদেহ পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তারা দোকান থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিয়ামের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান। সিয়াম অবিবাহিত ছিল। তার বাবা সিএনজি অটোরিকশা চালক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত