Ajker Patrika

সাত মাসে আলেশা মার্টের মালিকের সম্পত্তি বেড়েছে ২২৮ গুণ 

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৩, ১৭: ৩১
সাত মাসে আলেশা মার্টের মালিকের সম্পত্তি বেড়েছে ২২৮ গুণ 

মামলা হয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম সিকদারসহ চার ব্যক্তি ও ১৪ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। ডিএমপির বনানী থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুন।

চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে গ্রাহকের ৪২১ কোটি টাকা পাচার করেছে আলেশা মার্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম সিকদার। অর্থপাচারে তাকে সহযোগিতা করেছেন তাঁর স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীসহ তিন ব্যক্তি ও দশ প্রতিষ্ঠান। সারা বছরে মঞ্জুর আলমের আয় ছিল ১৩ লাখ টাকা। তবে আলেশা মার্ট খোলার সাত মাসেই ৩১ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হন তিনি। সাত মাসে তাঁর সম্পদ ও আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ২২৮ গুণের বেশি। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, এগুলো সবই গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে গড়ে তোলা সম্পদ। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গ্রাহকের অর্থপাচারের প্রাথমিক প্রমাণ মিলছে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বনানী থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।

গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ও মামলার পর আলেশা মার্টের অর্থপাচারের বিষয়ে আড়াই বছর ধরে অনুসন্ধান করে সিআইডি। অনুসন্ধান শেষে সিআইডি প্রতিষ্ঠান ও মালিকের বিরুদ্ধে ৪২১ কোটি ৯১ লাখ টাকা পাচারের প্রাথমিক প্রমাণ পায়। এই ঘটনায় গত ৩১ মে মামলা করা হয়।

মামলায় আসামিরা হলেন আলেশা মার্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর আলম সিকদার, তাঁর স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরী, প্রস্তাবিত পিপিলস ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম, মোটরসাইকেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও এস কে ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আল মামুন। এছাড়াও দশটি প্রতিষ্ঠানকে আসামি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো আলেশা মার্ট লিমিটেড, আলেশা হোল্ডিং লিমিটেড, আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভিসিং লিমিটেড, আলেশা টেক লিমিটেড, আলেশা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, আলেশা রাইড লিমিটেড, আলেশা এক্সপোর্ট–ইমপোর্ট লিমিটেড, আলেশা ফার্মেসি লিমিটেড ও আলেশা এগ্রো লিমিটেড। সবগুলো প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা বনানীর ১৭ নম্বর সড়কের রূপসা টাওয়ার।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ৩১ মে আলেশা মার্টের মালিকের বিরুদ্ধে অর্থপাচার আইনে সিআইডির একজন কর্মকর্তা মামলাটি করেছেন। মামলা নম্বর ৪০। মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের চারটি অ্যাকাউন্ট থেকে ৪২১ কোটি ৯১ লাখ টাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন সময় পাচার করেছেন।

সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে মঞ্জুর আলম সিকদারের আয়কর নথিতে তাঁর বেতনসহ অন্যান্য সোর্স থেকে বার্ষিক আয় ছিল ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা মাত্র। কিন্তু আলেশা মার্ট শুরুর পর তিনি ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩১ কোট ৮০ লাখ ৫৮ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হন। সাত মাসে তাঁর সম্পদ ও আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ২২৮ গুণের বেশি। আসলে মঞ্জুর আলম হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নিয়ে এই সম্পদের মালিক হন।

এছাড়াও গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে মঞ্জুর আলম সিকদার প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক লিমিটেডের ডাইরেক্টরশীপ নেওয়া এবং শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন। পিপলস ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। এই ঘটনায় আবুল কাশেমকেও মামলায় আসামি করেছে সিআইডি।
 
আলেশা মার্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বাইক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস কে ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী আল মামুনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি দেশের হাজার হাজার গ্রাহককে আলেশা মার্টে বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করেছেন। তিনি সাধারণ গ্রাহকদের আস্থা তৈরি করতে নিজের প্রতিষ্ঠানের চেক দিয়েছেন। যা বিশ্বাস করে গ্রাহকেরা প্রতারিত হয়েছে। এস কে ট্রেডার্সের মামুন মঞ্জুর আলম সিকদারকে অর্থপাচারে সহযোগিতা করেছেন বলেও সিআইডি দাবি করেছে।

গত ১ মে পর্যন্ত আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে ২ হাজার ৮৭ জন এবং সিআইডি সদর দপ্তরে ৩৫ জন গ্রাহক প্রতারিত হয়ে অভিযোগ করেন। এ সকল অভিযোগে অর্থ আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে এবং তারা টাকা ফেরতে আইনি সহায়তা চেয়েছেন।
 
সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আলেশা মার্ট শুরু থেকেই আকর্ষণীয় ডিসকাউন্টে বিভিন্ন অফার দিয়ে অসংখ্য গ্রাহকের কাছ থেকে মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিক বিভিন্ন পণ্য সরবরাহের কথা বলে অগ্রিম টাকা নেয়। টাকা ফেরত না দিয়ে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের মালিক ই-কমার্স ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থপাচার করেছেন।

অর্থপাচারের মামলা হলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার হননি। পুলিশ বলছে আসামিরা পলাতক। তবে গ্রাহকদের অনেকেই জানিয়েছেন মঞ্জুর আলম প্রকাশ্যে রয়েছে। তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না। মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধ এই মামলা ছাড়াও ঢাকা ও ঢাকার বাইরে একাধিক মামলা রয়েছে। সেগুলোর কয়েকটিতে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের পরোয়ানাও রয়েছে। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকছেন। যে দশটি প্রতিষ্ঠান মঞ্জুর আলম করেছেন, তাও গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে।

অর্থপাচারের বিষয়ে মঞ্জুর আলমের বক্তব্য জানতে আলেশা মার্টের বনানীর রূপসা টাওয়ারের অফিসে দুদিন গিয়েও সেখানে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনে ফোন করে ও খুদে বার্তা দিয়েও কোনো সারা মেলেনি। অপর আসামিদের বর্তমান ঠিকানায় গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ। তারা পলাতক রয়েছেন।

সিআইডি’র অর্গানাইজড ক্রাইমের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কুসুম দেওয়ান জানান, মামলাটি তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সিআইডির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, আলেশা মার্ট ২০২০ সালের ২৬ জুলাই আরজেএসসি (যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের পরিদপ্তর) থেকে নিবন্ধন করা হয়। একই বছরের ১০ নভেম্বর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেয়। ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনায় অংশ নিতে ঢাকামুখী হয়েছেন হাজার হাজার নেতা-কর্মী। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ অংশে মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় এই যানজটের চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে মদনপুর পর্যন্ত এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে রূপগঞ্জের তারাব পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট লেগে আছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন থেমে থেমে চলাচল করলেও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অনেক যানবাহন একই স্থানে দীর্ঘ সময় আটকে রয়েছে। এতে যাত্রী ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে, নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

যানজটে আটকে পড়া রহমান রিপন বলেন, ‘মৌচাক থেকে মদনপুর যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম। মাত্র ১০ মিনিটের পথ ৩০ মিনিটেও পাড়ি দিতে পারিনি।’

বিএনপির সমর্থক আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমার নেতাকে একঝলক দেখার এবং তাঁর বক্তব্য শোনার আশায় কাজ রেখে পূর্বাচলের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু যানজটে আটকে আছি।’

শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন বলেন, মূলত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাড়ির অতিরিক্ত চাপ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন ধীরে চলাচল করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গজারিয়ায় পুলিশের টহল গাড়িতে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা, সার্জেন্টসহ আহত দুই

গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
আজ ভোরে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পুলিশের গাড়ি উল্টে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ ভোরে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পুলিশের গাড়ি উল্টে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় হাইওয়ে পুলিশ ও থানা-পুলিশের টহলরত দুটি গাড়িতে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় হাইওয়ে পুলিশের এক সার্জেন্টসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় কাভার্ড ভ্যানটির চালক ও হেলপারকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের বালুয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকামুখী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট আহসান হাবিব ও কনস্টেবল নয়ন। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ ভোরে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পুলিশের গাড়ি উল্টে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ ভোরে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পুলিশের গাড়ি উল্টে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহাসড়কে দায়িত্ব পালনকালে হাইওয়ে পুলিশ ও থানা-পুলিশের দুটি টহল গাড়ি বালুয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার পাশে অবস্থান করছিল। এ সময় দ্রুতগতিতে আসা একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টহলরত গাড়ি দুটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে পুলিশের দুটি গাড়ি উল্টে যায় এবং দুজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

দুর্ঘটনার পর পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। পরে কাভার্ড ভ্যানটির চালক ও হেলপারকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে কিছু সময়ের জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়।

আজ ভোরে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পুলিশের গাড়ি উল্টে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ ভোরে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পুলিশের গাড়ি উল্টে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গজারিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল সিকদার বলেন, টহলরত দুটি গাড়ি মহাসড়কের পাশে অবস্থান করছিল। এ সময় একটি কাভার্ড ভ্যান সজোরে ধাক্কা দিলে গাড়ি দুটি উল্টে যায়। এতে হাইওয়ে পুলিশের এক সার্জেন্ট ও এক কনস্টেবল আহত হন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শাহ কামাল আকন্দ বলেন, দুর্ঘটনার পর যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যশোর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তন, ধানের শীষের প্রার্থী নুরুজ্জামান লিটন

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি 
শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি নুরুজ্জামান লিটন। ছবি: সংগৃহীত
শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি নুরুজ্জামান লিটন। ছবি: সংগৃহীত

সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন করা হয়েছে। এই আসনে ধানের শীষের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি নুরুজ্জামান লিটন।

এর আগে এই আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক কেন্দ্রীয় বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে নুরুজ্জামান লিটনের চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নিশ্চিত করেন শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহীর। একই সঙ্গে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নুরুজ্জামান লিটন নিজেও।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহীর বলেন, ‘দল থেকে চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি নুরুজ্জামান লিটনকে দেওয়া হয়েছে।’

দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে নুরুজ্জামান লিটনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়।

এক মাস ধরে শার্শা উপজেলায় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছিল। এ সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহীর, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন ও দলের প্রধান উপদেষ্টা খায়রুজ্জামান মধুর সমর্থকেরা একযোগে আন্দোলনে অংশ নেন। তাঁদের দাবি ছিল, দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল রাজনীতিতে সক্রিয় ও নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে তাঁরা মফিকুল হাসান তৃপ্তির মনোনয়নের বিরোধিতা করেন।

শেষ পর্যন্ত স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা বিবেচনায় নিয়ে দল নুরুজ্জামান লিটনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়।

মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় নুরুজ্জামান লিটন বলেন, ‘শার্শার গণমানুষের চাওয়ার কারণেই আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। আমাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ায় দলের প্রতি কৃতজ্ঞ।’ একই সঙ্গে তিনি শার্শাবাসীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

নুরুজ্জামান লিটন বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিএনপিকে শক্তিশালী করা এবং দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয় তাঁর রয়েছে। মনোনয়নের খবর পাওয়ার পর তিনি মফিকুল হাসান তৃপ্তির বাসায় গিয়ে সাক্ষাৎ করে দোয়া নিয়েছেন বলেও জানান।

বর্তমানে নুরুজ্জামান লিটন ঢাকায় অবস্থান করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় অংশ নিতে। নির্বাচনী এলাকায় ফিরে তিনি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরু করবেন বলে জানান।

এদিকে মনোনয়ন পরিবর্তনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মফিকুল হাসান তৃপ্তির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজির সময় গণপিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান নিহত

রাজবাড়ী প্রতি‌নি‌ধি
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর পাংশায় চাঁদাবা‌জি করার সময় জনগ‌ণের পিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট নিহত হ‌য়েছেন। এ সময় দু‌টি অস্ত্রসহ তাঁর সহ‌যো‌গী সে‌লিম শেখ‌কে আটক ক‌রে পু‌লি‌শে দি‌য়েছে জনতা। বুধবার দিবাগত রাত পৌ‌নে ১১টার দি‌কে উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গা গ্রা‌মে এই ঘটনা ঘ‌টে। নিহত সম্রাট উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গার অক্ষয় মন্ড‌লের ছে‌লে। আটক সে‌লিম একই ইউনিয়‌নের বসাকু‌ষ্টিয়া গ্রা‌মের ইসলাম শে‌খের ছে‌লে।

সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরা‌ত দিয়ে পাংশা ম‌ডেল থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, সম্রাট নিজের না‌মেই এক‌টি বা‌হিনী গড়ে তু‌লে মানুষ‌কে ভয়ভী‌তি দে‌খি‌য়ে চাঁদাবা‌জি কর‌তেন। দীর্ঘদিন ভার‌তে পা‌লি‌য়ে থাকার পর সম্প্রতি এলাকায়‌ ফি‌রে এসে এক‌টি বাড়িতে চাঁদা দা‌বি ক‌রেন। কিন্তু তারা চাঁদার টাকা দি‌তে অস্বীকৃতি জানা‌য়। গত রা‌তে সম্রাট তাঁর বা‌হিনীর সদস‌্যদের নি‌য়ে ওই বাড়িতে চাঁদার টাকা আন‌তে যান। এ সময় ওই বাড়ির লোকজন ডাকাত ডাকাত ব‌লে চিৎকার দি‌লে আশপা‌শের লোকজন এসে ধ‌রে তাঁকে গণ‌পিটু‌নি দেয়। এতে ঘটনাস্থ‌লেই তাঁর মৃত‌্যু হয়। এ সময় তাঁর অন‌্য সহ‌যো‌গীরা পালি‌য়ে গে‌লেও অস্ত্রসহ ধরা প‌ড়েন সে‌লিম না‌মের একজন।

ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম আরও জানান, সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সে‌লিম‌ের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করা হয়ে‌ছে। নিহত সম্রা‌টের না‌মে হত‌্যা, চাঁদাবা‌জিসহ একা‌ধিক মামলা র‌য়ে‌ছে। সম্রা‌টের মর‌দেহ ময়ন‌াতদন্তের জন‌্য ম‌র্গে পাঠা‌নোর প্রস্তু‌তি চল‌ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত