Ajker Patrika

চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরসহ ৩ দাবি সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছেন সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন সমন্বয়ক কমিটি। দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়েছে।

দাবিগুলো হলো

১. সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। (শূন্য পদের বিপরীতে এবং নতুন পদ সৃজনের মাধ্যমে স্ব স্ব কলেজে অস্থায়ীভাবে কর্মরতদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাজস্ব খাতভুক্ত করতে হবে।)

২. কর্মরতদের ব্যতিরেকে নতুন নিয়োগ বন্ধ করতে হবে, অস্থায়ীভাবে কর্মরতদের চাকরির নিরাপত্তা দিতে হবে।

৩. রাজস্ব খাতভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সরকারি বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতাদি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

গোলটেবিল বৈঠকে সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীরা বলেন, আমরা বৈষম্যের শিকার। আমরা সরকারি কলেজের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু আমাদের চাকরি বেসরকারি রয়ে গেছে। আমাদের জীবনের মান উন্নয়ন হয়নি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তারা বলেন, আশা করি আপনারা আমাদের এই দাবিগুলো মেনে নেবেন। আপনারা দাবিগুলো মেনে নিলে আমাদের জীবনের মান উন্নয়ন হবে।

গোলটেবিল বৈঠকে সরকারি কলেজের বেসরকারি অসহায় কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এক লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি কামনায় ২১ আগস্ট একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনসহ প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তিনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন মর্মে তাঁর প্রেস সচিবের মাধ্যমে মৌখিক আশ্বাস দেন। প্রধান উপদেষ্টার মৌখিক আশ্বাস পেয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

পরবর্তীতে আমাদের বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না হওয়ায় ৪ সেপ্টেম্বর পুনরায় প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষাসচিবের কার্যালয়সহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, দুঃখের বিষয় ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, ১৮ দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন, সাংবাদিক সম্মেলন, নিজ নিজ কর্মস্থলে ১ ঘণ্টা প্রতীকী কর্মবিরতিসহ একাধিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তারপরও আমাদের বিষয়ে কোনো সরকারই এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। যার ফলে আমরা নিরুপায় হয়ে আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হব।

এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের জনগণের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে। এটাই তো স্বাধীনতা। এটাই তো গণতন্ত্র। এই পরিবর্তনকে স্থায়ী করতে চাই। কার্যকর করতে চাই। দাবি দাওয়া না থাকলেতো গণতন্ত্র থাকবে না। আপনাদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ধরনের বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না। লোকজনকে কম অধিকার, কম মজুরি দিয়ে খাঁটিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাকে বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রাজস্ব খাতে ব্যয় কমাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘৩০ বছর ধরে একজনের বেতন যদি সাড়ে ১২ হাজার থাকে, একটা দেশে যদি বাঁচার জন্য ন্যূনতম মজুরি না থাকে, অধিকার না থাকে তাহলে ওই দেশে গণতন্ত্র থাকতে পারে না। সে জন্য একটা নীতিমালা করা প্রয়োজন। আপনাদের জন্য ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করতে হবে।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সমাজে বৈষম্যের শেষ নেই। গত ৫ আগস্ট এ দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। যারা এই ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। সরকারি কলেজের সব কর্মকর্তা কর্মচারি সরকারি হবেন এটাইতো স্বাভাবিক। প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য থাকলে সেটি ভালোভাবে চলে না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপনারা যারা আন্দোলন করছেন, আমরা আপনাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি।

আপনাদের নিয়মতান্ত্রিক দাবি অব্যাহত রাখেন।’

গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. আজিম, সাধারণ সম্পাদক মো. মোক্তার হোসেন, সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো. আমিনুল ইসলাম, সদস্যসচিব মো. ফরিদুল ইসলাম, সমন্বয়ক মো. আব্দুর রশিদ, সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক দুলাল সরকারসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ থেকে আসা সমন্বয়করা বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত