গোলাম ওয়াদুদ, ঢাকা

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে। মজার বিষয় হলো দুটি আন্দোলন থেকেই শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছে ফুটওভার ব্রিজ বা পদচারী-সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি শুনে। যেন দুর্ঘটনাস্থলে ফুটওভার ব্রিজ হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে।
প্রথম ঘটনার দিকে তাকানো যাক, ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ প্রতিদিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য ভোর ৭টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরার গেটে অপেক্ষা করছিলেন আবরার আহমেদ চৌধুরী। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আসার আগেই তাঁকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস। আবরারকে সেদিন বাসে তুলে দিতে সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর বাবা। আবরার পড়তেন ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিউপি)। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা করেন আবরারের বাবা।
আবরার নিহত হওয়ার পর তাঁর সহপাঠীরা রাস্তা বন্ধ করে এর বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলন প্রগতি সরণি ছাপিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মধ্যেই বাসচালক সিরাজুলকে (২৯) আটক করে পুলিশ। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিন তিনি আবরার আহমেদ চৌধুরী নামে সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এর দুই বছর পর রাজধানীর গুলিস্তানে নটর ডেম শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ধাক্কা দিলে সেখানেই মারা যায় নাঈম। তাঁর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। একে একে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে। এবারও আন্দোলনের মূল দাবি নিরাপদ সড়ক।
এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস ঘোষণা দেন, যেখানে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে সেখানে ‘শহীদ নাঈম’ নামে একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হবে।
উভয় প্রতিশ্রুতির পর শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছেন। তাঁদের ফিরতে হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই প্রতিশ্রুতিকে এমনভাবে সামনে হাজির করা হয়েছে, যেন ফুটওভার ব্রিজ করে দেওয়া হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে। শুধু এ দুই ক্ষেত্রেই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু রাজধানীতে ১১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছে।
এর মধ্যে পথচারী ৬২ জন, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ৩৩ জন এবং অন্যান্য যানবাহনের যাত্রী ও আরোহী ২৪ জন। এই প্রতিটি মৃত্যুতে মানুষ ফুঁসে ওঠেনি। যে দু-একটিতে মানুষ ফুঁসে ওঠে, তাতে ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার বা গতিরোধক স্থাপনের মতো প্রতিশ্রুতি আসে সমাধান হিসেবে।
সঙ্গে আরও নানা কথা বলা হয়। এই যেমন ২০১৯ সালে দু-তিন দিনের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডিএনসিসির মেয়র। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘এ ঘটনায় আপনাদের মাঝ থেকে ২-৫ জনকে নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করব। প্রয়োজনে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আপনাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করব।’ বলেছিলেন, ‘এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাসের মালিকদের সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব না। এ কাজটি আমরা খুব দ্রুত করব।’
কথিত সেই ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধনও করেছিলেন মেয়র। কিন্তু বাকি কোনো কিছুই আর সামনে আসেনি। সেই কমিটি, বাসমালিকদের সংযুক্ত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ বা সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন—কোনোটিই হয়নি। এবারও নাঈমের মৃত্যুর পর প্রায় একই প্রতিশ্রুতি সামনে এসেছে। কিন্তু এই ফুটওভার ব্রিজ বা স্পিড ব্রেকারই কি সড়ককে নিরাপদ করার জন্য যথেষ্ট?
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজ নিরাপদ সড়কের জন্য যথেষ্ট নয়। সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা শুধু মুখ দিয়ে কথাই বলেন, কাজ করেন না। সিটি করপোরেশনের গাড়িচালকদেরই ঠিক করতে পারলেন না তাঁরা, আবার মানুষকে ঠিক করবেন কীভাবে। নেতারা সারা জীবনই খালি মুখ দিয়ে মানুষকে সান্ত্বনা দিয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘আর দেখুন সিটি করপোরেশনের গাড়ি রাতে চলার কথা। কিন্তু তারা সব সময় চালায়। তারা একেকজন পাওয়ার দেখায় যে, তারা মেয়রের লোক।’
আবার বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও পথচারীদের সেগুলো ব্যবহার করতে দেখা যায় কম। অনেক সময় ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের রাস্তা পার হতে দেখা যায়। রাস্তা পারাপারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে ফুটওভার ব্রিজকে সমাধান হিসেবে দেখতে নারাজ ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজগুলো মানুষের জন্য খুব কষ্টদায়ক। আমি সব সময় সাজেস্ট করি আন্ডারপাস করার জন্য। আন্ডারপাস করলে মানুষের কষ্ট অর্ধেক হয়ে যায়। ফুটওভার ব্রিজ করতে নানা দিক ভাবতে হয়, বাস, ট্রাক ইত্যাদি, ট্রাকের ওপর মালপত্র নেয়। এগুলোর কথা চিন্তা করে এগুলো উঁচু করা হয়। তাই মানুষের উঠতে কষ্ট হয়। আর যদি আপনি আন্ডারগ্রাউন্ড করেন, একটা মানুষের যে উচ্চতা, তার থেকে ২ ফুট উঁচু রাখলেই চলে, যা মানুষের কষ্ট অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।’
দুর্ঘটনা ঘটলেই যে সমাধান হিসেবে ফুটওভার ব্রিজের কথা সামনে আসে—এ নিয়েও সমালোচনা করেন কাঞ্চন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এটা তাঁদের পলিসি। শহরে দুর্ঘটনা ঘটলে বলে ফুটওভার ব্রিজ; আর গ্রামে হলে স্পিড ব্রেকার। এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে শান্ত করার জন্য তারা বলে। যখন শান্ত হয়ে যায়, তখন আর এসবের দরকার পড়ে না। আবার যখন কেউ মরবে, তখন আবার উত্তপ্ত হয়ে যাবে। জনগণ তো বারবার একত্র হতে পারবে না। মেয়র সাহেবদের সময় পাঁচ বছর। যদি দুবার এই ঘটনা ঘটে, তাহলে তো দুবার ফুটওভার ব্রিজের কথা বলে সময় পার করে দিতে পারেন।’
নিরাপদ সড়ক নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাওয়া কর্মীরাও মনে করেন এই প্রতিশ্রুতিগুলো আদতে মানুষকে তাৎক্ষণিকভাবে শান্ত করার জন্যই করা হয়। সড়ক নিরাপদ করার কোনো উদ্যোগ প্রশাসনের নেই। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ওপরও কিছুটা দায় চাপাতে চান তাঁরা। তাঁদের ভাষ্য, মানুষ সবকিছুতেই তাৎক্ষণিক ফল চায়। তাঁরা ভাবেন, এক দিন ধর্মঘট করলেই, অবরোধ করলেই সমাধান আসবে। প্রশাসন এই সুযোগটিই নেয়। যেনতেনভাবে একটা সমাধান হাজির করে তারা। অথচ জনগণ এক হয়ে দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগ মেনে নিতে পারলে সমস্যা দূর হতো। না হলে বারবার ফুটওভার ব্রিজের মতো সমাধানই আসবে।
আবরার বা নাঈমের পরিবার কি এতে তাদের সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে থাকতে পারছেন? ভুলে থাকতে পারছে রাজীব ও দিয়ার পরিবার? সেটা অবশ্য ২০১৮ সালের ঘটনা। ২০১৮ সালে ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহত হয় এবং ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এই সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। সেই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা যে সংকট পেয়েছিল, সেই একই সংকট ২০২১ সালের শেষে এসেও বিদ্যমান। এখনো প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের গাড়িতে লাইসেন্সবিহীন চালক থাকে। এখনো বেপরোয়া যানবাহনের গতির প্রতিযোগিতায় জিম্মি সাধারণ যাত্রী ও পথচারী। নিরাপদ সড়কের যে প্রতিশ্রুতি ২০১৮ সালে সরকার দিয়েছিল, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বাস্তবায়ন হলে নাঈমকে চাপা দেওয়া গাড়িটি চালকই চালাতেন এবং তাঁর লাইসেন্সও থাকত। বাস্তবায়ন হলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এখনো রাস্তায় চলত না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘আগে সিস্টেমটাকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। আমাদের এখানে লিজ সিস্টেমে গাড়ি চলে, ব্যবসাটা করে চালক; মালিক এখানে নাই বললেই চলে। যখন চালক আয়ের চাপে গাড়ি চালান, তখন তিনি রাস্তার দিকে তাকাবেন নাকি যাত্রীর দিকে তাকাবেন? ওটাকে ঠিক না করে আমি যতই ফুটওভার ব্রিজ বানাই না কেন, তা হচ্ছে আনাড়িপনা।’
এসব প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আমরা যত ধরনের প্রতিশ্রুতি দেখি, তা উপসর্গ ধরে; কিন্তু রিফর্ম দরকার, এখানে বিনিয়োগ দরকার। পরিবহনে রিফর্ম দরকার। কেন চালক ব্যবসায় থাকবেন, তাঁকে তো সব সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হবে। তাঁর তো একজন বেতনভোগী কর্মচারী হওয়ার কথা। কেন এটা হচ্ছে না, তার উত্তর জেনে যদি সাজানো যায় হাতিরঝিলের মতো; অবশ্য সেখানে কিছু সমস্যা থাকলেও বিশৃঙ্খলা হয় না।’ তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনাটা আমরা সুন্দর করলাম, সেলফ এনফোর্স হলো। এতে পুলিশ অত্যন্ত বেজার হয়ে গেছে। তার একটা ইনকাম ছিল, তা সেখানে নেই।’
বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি, তাই রাস্তায় তারা প্রতিযোগিতা করছে। প্রতিযোগিতাবিহীন গণপরিবহনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ওপরমহলের লোক যদি না বোঝে, তাহলে সম্ভব না। বিশেষ করে মেয়র হচ্ছেন নগরপতি। তাঁর সব বোঝার দরকার নাই, তাঁর তো কিছু থিংক ট্যাংক থাকার কথা, যা দিয়ে তিনি দৃশ্যমান উন্নতি দেখাতে পারবেন।’
সবচেয়ে সরল জিনিস হলো অবকাঠামোর উন্নয়ন। এই অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যে কিছু দৃশ্যমান উন্নয়নের দিকেই অধিকাংশের নজর রয়েছে উল্লেখ করে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আন্দোলনকে ঠেকা দেওয়ার জন্য ফুটওভার ব্রিজ সামনে আসে। আমরা মুভমেন্ট করছি, আমাদের বিবেকের ভিত নড়ে গেছে, তোমরা দেখিয়ে দিয়েছ—এসবই বোঝানো হয়। (সে সময়) আমার সবচেয়ে বেশি আগ্রহটা ছিল পুলিশের বিষয়ে। এর আগে যে বড় মুভমেন্ট হলো, তখন পুলিশের আইজিপি বলল, তাঁরা একটা মডেল করিডর করছেন, নির্দিষ্ট বাসের জায়গায় চিহ্ন দেওয়া হবে, সেখানেই দাঁড়াতে হবে, পুলিশের নিজস্ব লোক থাকবে। ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি।’
এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গটিও জড়িত একটু ঘুরপথে। বিষয়টি সামনে আনলেন পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপকই। তিনি বলেন, ‘বড় সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের পরিকল্পনায় অভাব আছে অনেক; কিন্তু কেউ বলছে না—এটা ঠিক করা যাবে না। সবাই বলছে ঠিক হবে। এখানেই সমস্যা। তখন আপনারা-আমরা কথা বললে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকেরা মনে করে—“এরা উন্নয়ন চায় না, আমাদের লোকেরা তো সব ঠিকই করবে বলছে। ” আমাদের বিশৃঙ্খল অবস্থা রেখে যারা উন্নয়নের কথা বলে তারা এনজিওদের মতো। একসময় আমাদের অপুষ্টি দেখিয়ে বিদেশ থেকে লোন আনত তারা। যখন পুষ্টি সমস্যার সমাধান হলো, তখন তাদের ঝামেলা হয়ে গেল। সুতরাং যানজট বিশৃঙ্খলা যদি চলে যায়, তাহলে বিনিয়োগ তো আসবে না। কেন আমি হাতির ঝিলের মতো করব? পুলিশও এটা চাইবে না, যারা নেতা আছে, তাঁরাও এমনটা চাইবেন না। কারণ, চাঁদা তুলতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে। মজার বিষয় হলো দুটি আন্দোলন থেকেই শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছে ফুটওভার ব্রিজ বা পদচারী-সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি শুনে। যেন দুর্ঘটনাস্থলে ফুটওভার ব্রিজ হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে।
প্রথম ঘটনার দিকে তাকানো যাক, ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ প্রতিদিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য ভোর ৭টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরার গেটে অপেক্ষা করছিলেন আবরার আহমেদ চৌধুরী। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আসার আগেই তাঁকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস। আবরারকে সেদিন বাসে তুলে দিতে সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর বাবা। আবরার পড়তেন ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিউপি)। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা করেন আবরারের বাবা।
আবরার নিহত হওয়ার পর তাঁর সহপাঠীরা রাস্তা বন্ধ করে এর বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলন প্রগতি সরণি ছাপিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মধ্যেই বাসচালক সিরাজুলকে (২৯) আটক করে পুলিশ। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিন তিনি আবরার আহমেদ চৌধুরী নামে সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এর দুই বছর পর রাজধানীর গুলিস্তানে নটর ডেম শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ধাক্কা দিলে সেখানেই মারা যায় নাঈম। তাঁর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। একে একে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে। এবারও আন্দোলনের মূল দাবি নিরাপদ সড়ক।
এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস ঘোষণা দেন, যেখানে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে সেখানে ‘শহীদ নাঈম’ নামে একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হবে।
উভয় প্রতিশ্রুতির পর শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছেন। তাঁদের ফিরতে হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই প্রতিশ্রুতিকে এমনভাবে সামনে হাজির করা হয়েছে, যেন ফুটওভার ব্রিজ করে দেওয়া হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে। শুধু এ দুই ক্ষেত্রেই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু রাজধানীতে ১১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছে।
এর মধ্যে পথচারী ৬২ জন, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ৩৩ জন এবং অন্যান্য যানবাহনের যাত্রী ও আরোহী ২৪ জন। এই প্রতিটি মৃত্যুতে মানুষ ফুঁসে ওঠেনি। যে দু-একটিতে মানুষ ফুঁসে ওঠে, তাতে ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার বা গতিরোধক স্থাপনের মতো প্রতিশ্রুতি আসে সমাধান হিসেবে।
সঙ্গে আরও নানা কথা বলা হয়। এই যেমন ২০১৯ সালে দু-তিন দিনের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডিএনসিসির মেয়র। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘এ ঘটনায় আপনাদের মাঝ থেকে ২-৫ জনকে নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করব। প্রয়োজনে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আপনাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করব।’ বলেছিলেন, ‘এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাসের মালিকদের সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব না। এ কাজটি আমরা খুব দ্রুত করব।’
কথিত সেই ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধনও করেছিলেন মেয়র। কিন্তু বাকি কোনো কিছুই আর সামনে আসেনি। সেই কমিটি, বাসমালিকদের সংযুক্ত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ বা সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন—কোনোটিই হয়নি। এবারও নাঈমের মৃত্যুর পর প্রায় একই প্রতিশ্রুতি সামনে এসেছে। কিন্তু এই ফুটওভার ব্রিজ বা স্পিড ব্রেকারই কি সড়ককে নিরাপদ করার জন্য যথেষ্ট?
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজ নিরাপদ সড়কের জন্য যথেষ্ট নয়। সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা শুধু মুখ দিয়ে কথাই বলেন, কাজ করেন না। সিটি করপোরেশনের গাড়িচালকদেরই ঠিক করতে পারলেন না তাঁরা, আবার মানুষকে ঠিক করবেন কীভাবে। নেতারা সারা জীবনই খালি মুখ দিয়ে মানুষকে সান্ত্বনা দিয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘আর দেখুন সিটি করপোরেশনের গাড়ি রাতে চলার কথা। কিন্তু তারা সব সময় চালায়। তারা একেকজন পাওয়ার দেখায় যে, তারা মেয়রের লোক।’
আবার বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও পথচারীদের সেগুলো ব্যবহার করতে দেখা যায় কম। অনেক সময় ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের রাস্তা পার হতে দেখা যায়। রাস্তা পারাপারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে ফুটওভার ব্রিজকে সমাধান হিসেবে দেখতে নারাজ ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজগুলো মানুষের জন্য খুব কষ্টদায়ক। আমি সব সময় সাজেস্ট করি আন্ডারপাস করার জন্য। আন্ডারপাস করলে মানুষের কষ্ট অর্ধেক হয়ে যায়। ফুটওভার ব্রিজ করতে নানা দিক ভাবতে হয়, বাস, ট্রাক ইত্যাদি, ট্রাকের ওপর মালপত্র নেয়। এগুলোর কথা চিন্তা করে এগুলো উঁচু করা হয়। তাই মানুষের উঠতে কষ্ট হয়। আর যদি আপনি আন্ডারগ্রাউন্ড করেন, একটা মানুষের যে উচ্চতা, তার থেকে ২ ফুট উঁচু রাখলেই চলে, যা মানুষের কষ্ট অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।’
দুর্ঘটনা ঘটলেই যে সমাধান হিসেবে ফুটওভার ব্রিজের কথা সামনে আসে—এ নিয়েও সমালোচনা করেন কাঞ্চন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এটা তাঁদের পলিসি। শহরে দুর্ঘটনা ঘটলে বলে ফুটওভার ব্রিজ; আর গ্রামে হলে স্পিড ব্রেকার। এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে শান্ত করার জন্য তারা বলে। যখন শান্ত হয়ে যায়, তখন আর এসবের দরকার পড়ে না। আবার যখন কেউ মরবে, তখন আবার উত্তপ্ত হয়ে যাবে। জনগণ তো বারবার একত্র হতে পারবে না। মেয়র সাহেবদের সময় পাঁচ বছর। যদি দুবার এই ঘটনা ঘটে, তাহলে তো দুবার ফুটওভার ব্রিজের কথা বলে সময় পার করে দিতে পারেন।’
নিরাপদ সড়ক নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাওয়া কর্মীরাও মনে করেন এই প্রতিশ্রুতিগুলো আদতে মানুষকে তাৎক্ষণিকভাবে শান্ত করার জন্যই করা হয়। সড়ক নিরাপদ করার কোনো উদ্যোগ প্রশাসনের নেই। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ওপরও কিছুটা দায় চাপাতে চান তাঁরা। তাঁদের ভাষ্য, মানুষ সবকিছুতেই তাৎক্ষণিক ফল চায়। তাঁরা ভাবেন, এক দিন ধর্মঘট করলেই, অবরোধ করলেই সমাধান আসবে। প্রশাসন এই সুযোগটিই নেয়। যেনতেনভাবে একটা সমাধান হাজির করে তারা। অথচ জনগণ এক হয়ে দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগ মেনে নিতে পারলে সমস্যা দূর হতো। না হলে বারবার ফুটওভার ব্রিজের মতো সমাধানই আসবে।
আবরার বা নাঈমের পরিবার কি এতে তাদের সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে থাকতে পারছেন? ভুলে থাকতে পারছে রাজীব ও দিয়ার পরিবার? সেটা অবশ্য ২০১৮ সালের ঘটনা। ২০১৮ সালে ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহত হয় এবং ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এই সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। সেই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা যে সংকট পেয়েছিল, সেই একই সংকট ২০২১ সালের শেষে এসেও বিদ্যমান। এখনো প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের গাড়িতে লাইসেন্সবিহীন চালক থাকে। এখনো বেপরোয়া যানবাহনের গতির প্রতিযোগিতায় জিম্মি সাধারণ যাত্রী ও পথচারী। নিরাপদ সড়কের যে প্রতিশ্রুতি ২০১৮ সালে সরকার দিয়েছিল, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বাস্তবায়ন হলে নাঈমকে চাপা দেওয়া গাড়িটি চালকই চালাতেন এবং তাঁর লাইসেন্সও থাকত। বাস্তবায়ন হলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এখনো রাস্তায় চলত না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘আগে সিস্টেমটাকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। আমাদের এখানে লিজ সিস্টেমে গাড়ি চলে, ব্যবসাটা করে চালক; মালিক এখানে নাই বললেই চলে। যখন চালক আয়ের চাপে গাড়ি চালান, তখন তিনি রাস্তার দিকে তাকাবেন নাকি যাত্রীর দিকে তাকাবেন? ওটাকে ঠিক না করে আমি যতই ফুটওভার ব্রিজ বানাই না কেন, তা হচ্ছে আনাড়িপনা।’
এসব প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আমরা যত ধরনের প্রতিশ্রুতি দেখি, তা উপসর্গ ধরে; কিন্তু রিফর্ম দরকার, এখানে বিনিয়োগ দরকার। পরিবহনে রিফর্ম দরকার। কেন চালক ব্যবসায় থাকবেন, তাঁকে তো সব সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হবে। তাঁর তো একজন বেতনভোগী কর্মচারী হওয়ার কথা। কেন এটা হচ্ছে না, তার উত্তর জেনে যদি সাজানো যায় হাতিরঝিলের মতো; অবশ্য সেখানে কিছু সমস্যা থাকলেও বিশৃঙ্খলা হয় না।’ তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনাটা আমরা সুন্দর করলাম, সেলফ এনফোর্স হলো। এতে পুলিশ অত্যন্ত বেজার হয়ে গেছে। তার একটা ইনকাম ছিল, তা সেখানে নেই।’
বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি, তাই রাস্তায় তারা প্রতিযোগিতা করছে। প্রতিযোগিতাবিহীন গণপরিবহনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ওপরমহলের লোক যদি না বোঝে, তাহলে সম্ভব না। বিশেষ করে মেয়র হচ্ছেন নগরপতি। তাঁর সব বোঝার দরকার নাই, তাঁর তো কিছু থিংক ট্যাংক থাকার কথা, যা দিয়ে তিনি দৃশ্যমান উন্নতি দেখাতে পারবেন।’
সবচেয়ে সরল জিনিস হলো অবকাঠামোর উন্নয়ন। এই অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যে কিছু দৃশ্যমান উন্নয়নের দিকেই অধিকাংশের নজর রয়েছে উল্লেখ করে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আন্দোলনকে ঠেকা দেওয়ার জন্য ফুটওভার ব্রিজ সামনে আসে। আমরা মুভমেন্ট করছি, আমাদের বিবেকের ভিত নড়ে গেছে, তোমরা দেখিয়ে দিয়েছ—এসবই বোঝানো হয়। (সে সময়) আমার সবচেয়ে বেশি আগ্রহটা ছিল পুলিশের বিষয়ে। এর আগে যে বড় মুভমেন্ট হলো, তখন পুলিশের আইজিপি বলল, তাঁরা একটা মডেল করিডর করছেন, নির্দিষ্ট বাসের জায়গায় চিহ্ন দেওয়া হবে, সেখানেই দাঁড়াতে হবে, পুলিশের নিজস্ব লোক থাকবে। ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি।’
এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গটিও জড়িত একটু ঘুরপথে। বিষয়টি সামনে আনলেন পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপকই। তিনি বলেন, ‘বড় সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের পরিকল্পনায় অভাব আছে অনেক; কিন্তু কেউ বলছে না—এটা ঠিক করা যাবে না। সবাই বলছে ঠিক হবে। এখানেই সমস্যা। তখন আপনারা-আমরা কথা বললে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকেরা মনে করে—“এরা উন্নয়ন চায় না, আমাদের লোকেরা তো সব ঠিকই করবে বলছে। ” আমাদের বিশৃঙ্খল অবস্থা রেখে যারা উন্নয়নের কথা বলে তারা এনজিওদের মতো। একসময় আমাদের অপুষ্টি দেখিয়ে বিদেশ থেকে লোন আনত তারা। যখন পুষ্টি সমস্যার সমাধান হলো, তখন তাদের ঝামেলা হয়ে গেল। সুতরাং যানজট বিশৃঙ্খলা যদি চলে যায়, তাহলে বিনিয়োগ তো আসবে না। কেন আমি হাতির ঝিলের মতো করব? পুলিশও এটা চাইবে না, যারা নেতা আছে, তাঁরাও এমনটা চাইবেন না। কারণ, চাঁদা তুলতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:

নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-পরবর্তী দুর্নীতিও কমানো যাবে না। কিন্তু অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যয় মনিটরিং কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিবিড় নজরদারি করতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) উভয়ের তরফে অবহেলা হচ্ছে।
৪৩ মিনিট আগে
ফেনী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব সমাধানের আশায় স্থাপিত জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রটি এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোটি টাকার এই প্রকল্পটি এখন পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
জয়পুরহাটের দুটি আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর দলটির তীব্র অন্তঃকোন্দল সামনে আসে। দুই আসনেই প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা।
১ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-পরবর্তী দুর্নীতিও কমানো যাবে না। কিন্তু অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যয় মনিটরিং কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিবিড় নজরদারি করতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) উভয়ের তরফে অবহেলা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্রায়ণ, আর্থিক স্বচ্ছতা ও দলের সদস্যদের দায়বদ্ধতা, নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও কিছু সুপারিশ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) গ্রহণ করা হয়নি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার: অগ্রগতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তাদের কাছ থেকে এসব কথা উঠে আসে। বেসরকারি সংগঠন ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’ এ বৈঠকের আয়োজন করে।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সরকার ও ইসির প্রস্তাবের মাধ্যমে আরপিওর বিভিন্ন অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আবার অনেক বিষয়ই উপেক্ষা করা হয়েছে। কোনো আসনে মোট ভোটের ৪০ শতাংশ না পড়লে আবার ভোট গ্রহণের বিধান, পর পর দুটি নির্বাচনে অংশ না নিলে দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান বাতিল করা এবং প্রতি পাঁচ বছর পর দলের নিবন্ধন নবায়ন বাধ্যতামূলক করা, কোনো ব্যক্তির একাধিক আসনে প্রার্থী হওয়ার বিধান বাতিল করা, ২০২৩ সালে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ নিবন্ধন দেওয়া দলের নিবন্ধন বাতিল করাসহ অনেক সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে।
নির্বাচনী ব্যয়ের অর্থ পরে জনগণের কাছ থেকে আদায়ের চেষ্টা করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি মনে করেন, ইতিমধ্যে ‘মনোনয়ন-বাণিজ্যের মাধ্যমে’ নির্বাচনী ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার এবং আচরণবিধি লঙ্ঘনের আশঙ্কা রয়েছে।
নির্বাচনে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা থেকেও সুরক্ষা প্রয়োজন। জাতীয় ঐক্য ছাড়া একটি গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
সুজনের সম্পাদক এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, ভোট গণনা এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়টি একটি দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণ হিসেবে দেখা উচিত। নির্বাচন কমিশন এবং সরকার নির্বাচনের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করতে যে সংস্কারগুলো করেছে, তা সন্তোষজনক নয়।
বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, নির্বাচনসংক্রান্ত সুপারিশগুলোর মধ্যে মাত্র ৫০ শতাংশ গৃহীত হয়েছে। বাকি সুপারিশগুলো যাতে গ্রহণ করা হয়, সে জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং কমিশনকে চাপের মুখে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
ইসির সাবেক অতিরিক্তি সচিব জেসমিন টুলি বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা নির্বাচনী আচরণবিধির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এর অপব্যবহার বা ভোটারদের বিভ্রান্তি রোধে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ বা সীমাবদ্ধতাগুলো স্পষ্টভাবে থাকা উচিত ছিল। তা করা হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য সংস্কার কমিশনের তুলনায় নির্বাচনবিষয়ক কমিশনের অর্জন কিছুটা বেশি হতে পারে, তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বাদ পড়েছে বা গৃহীত হয়নি।
বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, অধ্যাপক ওয়ারেসুল করিম, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য মীর নাদিয়া নিভিন প্রমুখ।

নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-পরবর্তী দুর্নীতিও কমানো যাবে না। কিন্তু অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যয় মনিটরিং কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিবিড় নজরদারি করতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) উভয়ের তরফে অবহেলা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্রায়ণ, আর্থিক স্বচ্ছতা ও দলের সদস্যদের দায়বদ্ধতা, নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও কিছু সুপারিশ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) গ্রহণ করা হয়নি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার: অগ্রগতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তাদের কাছ থেকে এসব কথা উঠে আসে। বেসরকারি সংগঠন ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’ এ বৈঠকের আয়োজন করে।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সরকার ও ইসির প্রস্তাবের মাধ্যমে আরপিওর বিভিন্ন অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আবার অনেক বিষয়ই উপেক্ষা করা হয়েছে। কোনো আসনে মোট ভোটের ৪০ শতাংশ না পড়লে আবার ভোট গ্রহণের বিধান, পর পর দুটি নির্বাচনে অংশ না নিলে দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান বাতিল করা এবং প্রতি পাঁচ বছর পর দলের নিবন্ধন নবায়ন বাধ্যতামূলক করা, কোনো ব্যক্তির একাধিক আসনে প্রার্থী হওয়ার বিধান বাতিল করা, ২০২৩ সালে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ নিবন্ধন দেওয়া দলের নিবন্ধন বাতিল করাসহ অনেক সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে।
নির্বাচনী ব্যয়ের অর্থ পরে জনগণের কাছ থেকে আদায়ের চেষ্টা করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি মনে করেন, ইতিমধ্যে ‘মনোনয়ন-বাণিজ্যের মাধ্যমে’ নির্বাচনী ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার এবং আচরণবিধি লঙ্ঘনের আশঙ্কা রয়েছে।
নির্বাচনে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা থেকেও সুরক্ষা প্রয়োজন। জাতীয় ঐক্য ছাড়া একটি গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
সুজনের সম্পাদক এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, ভোট গণনা এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়টি একটি দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণ হিসেবে দেখা উচিত। নির্বাচন কমিশন এবং সরকার নির্বাচনের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করতে যে সংস্কারগুলো করেছে, তা সন্তোষজনক নয়।
বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, নির্বাচনসংক্রান্ত সুপারিশগুলোর মধ্যে মাত্র ৫০ শতাংশ গৃহীত হয়েছে। বাকি সুপারিশগুলো যাতে গ্রহণ করা হয়, সে জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং কমিশনকে চাপের মুখে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
ইসির সাবেক অতিরিক্তি সচিব জেসমিন টুলি বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা নির্বাচনী আচরণবিধির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এর অপব্যবহার বা ভোটারদের বিভ্রান্তি রোধে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ বা সীমাবদ্ধতাগুলো স্পষ্টভাবে থাকা উচিত ছিল। তা করা হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য সংস্কার কমিশনের তুলনায় নির্বাচনবিষয়ক কমিশনের অর্জন কিছুটা বেশি হতে পারে, তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বাদ পড়েছে বা গৃহীত হয়নি।
বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, অধ্যাপক ওয়ারেসুল করিম, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য মীর নাদিয়া নিভিন প্রমুখ।

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
ফেনী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব সমাধানের আশায় স্থাপিত জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রটি এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোটি টাকার এই প্রকল্পটি এখন পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
জয়পুরহাটের দুটি আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর দলটির তীব্র অন্তঃকোন্দল সামনে আসে। দুই আসনেই প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা।
১ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।
৩ ঘণ্টা আগেফেনী প্রতিনিধি

ফেনী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব সমাধানের আশায় স্থাপিত জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রটি এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোটি টাকার এই প্রকল্পটি এখন পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। নিয়মিত তদারকি ও নিরাপত্তা না থাকায় প্রকল্পের যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো চুরি হয়ে গেছে।
ফেনী পৌরসভার সুলতানপুরে প্রায় ৭০ শতক জমির ওপর স্থাপিত প্রকল্প এলাকাটি ঘুরে দেখা গেছে, উৎপাদন শেডগুলো ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। কোথাও দরজা নেই, কোথাও ছাউনি খুলে নেওয়া হয়েছে। যন্ত্রপাতির কোনো অস্তিত্ব নেই। ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ভাঙা কংক্রিট, মরিচা ধরা লোহার অংশ। আগাছায় ঢেকে পুরো এলাকাজুড়ে ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। ২০১৮ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সার উৎপাদন শুরু হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেবক এগ্রোভেট লিমিটেড।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যাশিত আয় না হওয়ায় ২০২৩ সালেই সার উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এগ্রোভেট লিমিটেড। পরে সেখানে কিছুদিন প্লাস্টিক পুড়িয়ে ফার্নেস অয়েল উৎপাদনের চেষ্টা চালানো হয়। ২০২৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর প্রকল্পটির সব কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘদিন কোনো তদারকি বা নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় একে একে যন্ত্রপাতিসহ অবকাঠামো চুরি হয়ে যায়।
প্রকল্প চলাকালে কেন্দ্রটির পাহারাদার হিসেবে কাজ করা ফরিদ আহমদ বলেন, ‘যখন এখানে সার উৎপাদন হতো, তখন আমি ছয় হাজার টাকা বেতনে পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতাম। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে আর কেউ এখানে আসেনি। আমিও পাহারা দেওয়া বন্ধ করে দিই। এখন এখানে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। সব ভেঙে নিয়ে গেছে চোরেরা।’ তিনি বলেন, ‘পৌরসভার কোনো পদক্ষেপ না থাকায় যে যেভাবে পেরেছে নিয়ে গেছে।’
পাশের পৌর কবরস্থানে দাফনকাজে নিয়োজিত ইমাম মোহাম্মদ আলী বলেন, কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত জায়গাটি মোটামুটি ভালো অবস্থায় ছিল। সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই চুরি শুরু হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘কারখানা স্থাপনের শুরু থেকেই আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে আশপাশে বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। লাভ না হওয়ায় যারা চালু করেছিল, তারাই আবার বন্ধ করে পালিয়েছে। ৫ আগস্টের পর এলাকার কিছু মাদকসেবী, চোর ও বহিরাগতরা মিলে ফ্যান, আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। কয়েকবার পৌরসভাকে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির উদ্দিন বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না দাবি করে পৌর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
পৌর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কৃষ্ণপদ সাহা বলেন, ‘২০১৮ সালে সুলতানপুরে বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন কেন্দ্রটি চালু করা হয়। চট্টগ্রামের একটি এনজিও পৌরসভার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এটি পরিচালনা করছিল। সম্ভবত লাভ না হওয়ায় তারা বন্ধ করে দেয়। তবে তারা প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করেনি। বর্তমানে প্রকল্পটির অবস্থা সম্পর্কে আমার জানা নেই।’
কেন পৌরসভার আওতাধীন কোটি টাকার প্রকল্পটি অচল হয়ে পড়েছে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিন। একপর্যায়ে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান সেবক এগ্রোভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. খালেদ আমিনকে ফোন করে আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তরের জন্য বলেন। তবে প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণে পৌরসভা কেন কোনো উদ্যোগ নেয়নি এই প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে সেবক এগ্রোভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. খালেদ আমিনকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ফেনী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব সমাধানের আশায় স্থাপিত জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রটি এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোটি টাকার এই প্রকল্পটি এখন পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। নিয়মিত তদারকি ও নিরাপত্তা না থাকায় প্রকল্পের যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো চুরি হয়ে গেছে।
ফেনী পৌরসভার সুলতানপুরে প্রায় ৭০ শতক জমির ওপর স্থাপিত প্রকল্প এলাকাটি ঘুরে দেখা গেছে, উৎপাদন শেডগুলো ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। কোথাও দরজা নেই, কোথাও ছাউনি খুলে নেওয়া হয়েছে। যন্ত্রপাতির কোনো অস্তিত্ব নেই। ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ভাঙা কংক্রিট, মরিচা ধরা লোহার অংশ। আগাছায় ঢেকে পুরো এলাকাজুড়ে ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। ২০১৮ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সার উৎপাদন শুরু হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেবক এগ্রোভেট লিমিটেড।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যাশিত আয় না হওয়ায় ২০২৩ সালেই সার উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এগ্রোভেট লিমিটেড। পরে সেখানে কিছুদিন প্লাস্টিক পুড়িয়ে ফার্নেস অয়েল উৎপাদনের চেষ্টা চালানো হয়। ২০২৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর প্রকল্পটির সব কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘদিন কোনো তদারকি বা নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় একে একে যন্ত্রপাতিসহ অবকাঠামো চুরি হয়ে যায়।
প্রকল্প চলাকালে কেন্দ্রটির পাহারাদার হিসেবে কাজ করা ফরিদ আহমদ বলেন, ‘যখন এখানে সার উৎপাদন হতো, তখন আমি ছয় হাজার টাকা বেতনে পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতাম। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে আর কেউ এখানে আসেনি। আমিও পাহারা দেওয়া বন্ধ করে দিই। এখন এখানে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। সব ভেঙে নিয়ে গেছে চোরেরা।’ তিনি বলেন, ‘পৌরসভার কোনো পদক্ষেপ না থাকায় যে যেভাবে পেরেছে নিয়ে গেছে।’
পাশের পৌর কবরস্থানে দাফনকাজে নিয়োজিত ইমাম মোহাম্মদ আলী বলেন, কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত জায়গাটি মোটামুটি ভালো অবস্থায় ছিল। সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই চুরি শুরু হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘কারখানা স্থাপনের শুরু থেকেই আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে আশপাশে বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। লাভ না হওয়ায় যারা চালু করেছিল, তারাই আবার বন্ধ করে পালিয়েছে। ৫ আগস্টের পর এলাকার কিছু মাদকসেবী, চোর ও বহিরাগতরা মিলে ফ্যান, আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। কয়েকবার পৌরসভাকে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির উদ্দিন বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না দাবি করে পৌর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
পৌর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কৃষ্ণপদ সাহা বলেন, ‘২০১৮ সালে সুলতানপুরে বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন কেন্দ্রটি চালু করা হয়। চট্টগ্রামের একটি এনজিও পৌরসভার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এটি পরিচালনা করছিল। সম্ভবত লাভ না হওয়ায় তারা বন্ধ করে দেয়। তবে তারা প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করেনি। বর্তমানে প্রকল্পটির অবস্থা সম্পর্কে আমার জানা নেই।’
কেন পৌরসভার আওতাধীন কোটি টাকার প্রকল্পটি অচল হয়ে পড়েছে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিন। একপর্যায়ে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান সেবক এগ্রোভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. খালেদ আমিনকে ফোন করে আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তরের জন্য বলেন। তবে প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণে পৌরসভা কেন কোনো উদ্যোগ নেয়নি এই প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে সেবক এগ্রোভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. খালেদ আমিনকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-পরবর্তী দুর্নীতিও কমানো যাবে না। কিন্তু অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যয় মনিটরিং কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিবিড় নজরদারি করতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) উভয়ের তরফে অবহেলা হচ্ছে।
৪৩ মিনিট আগে
জয়পুরহাটের দুটি আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর দলটির তীব্র অন্তঃকোন্দল সামনে আসে। দুই আসনেই প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা।
১ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।
৩ ঘণ্টা আগেমো. আতাউর রহমান, জয়পুরহাট

জয়পুরহাটের দুটি আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর দলটির তীব্র অন্তঃকোন্দল সামনে আসে। দুই আসনেই প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা। সভা-সমাবেশ থেকে শুরু করে সড়ক অবরোধ, রাস্তায় শুয়ে পড়া, টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ কিংবা মশাল মিছিল—কিছুই বাদ যায়নি। বিএনপির এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে সুযোগ হিসেবে দেখছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগেভাগেই মাঠে নেমে গণসংযোগ শুরু করেছেন। তৎপর এনসিপি ও এবি পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও।
জয়পুরহাট-১ (জেলা সদর ও পাঁচবিবি) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রধান। তবে এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সাল আলীম এবং কুসুম্বা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গফুর মণ্ডলের অনুসারীরা। তাঁরা বলছেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে প্রার্থী নির্ধারণ করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফয়সাল আলীম বলেন, ‘তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক আমার। অবহেলিত এ এলাকার উন্নয়ন এবং দলে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেওয়ার সবচেয়ে বেশি যোগ্যতা আমি রাখি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সব দিক বিশ্লেষণ করে দল আমাকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।’
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা আমির মো. ফজলুর রহমান সাঈদ। তিনি বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। অনিয়ম, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে তারা সোচ্চার। বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ভোটের মাঠে আমাদের জন্য ইতিবাচক।’ এনসিপির প্রার্থী হতে পারেন দলের জেলা শাখার আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া।
জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক সচিব আবদুল বারী। তাঁর প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা এবং সাবেক ছাত্রনেতা আব্বাস আলীর অনুসারীরা। আবদুল বারী বলেন, ‘সরকারি চাকরি করা সত্ত্বেও বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। প্রাথমিকভাবে দলের প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার আগে-পরে এলাকাবাসীর ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। নির্বাচিত হলে কৃষিভিত্তিক কারখানা গড়ে তুলব। কৃষিসংশ্লিষ্ট উপাদানের দাম সহনশীল রাখতে কাজ করব। এলাকা আলুপ্রধান। তাই আলুভিত্তিক চিপস ইন্ডাস্ট্রি করে তোলা হবে।’ প্রাথমিক মনোনয়নবঞ্চিত গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘যাঁকে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নাই। সাধারণ ভোটাররা তাঁকে অতিথি পাখি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি নেতা-কর্মীদের কোনো খোঁজ রাখেননি। এখন পর্যন্ত দলের প্রাথমিক সদস্যও নন। আমি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য। তৃণমূলের ৩ লাখ ৫১ হাজার নেতা-কর্মী ও ভোটাররা আমার সঙ্গে আছেন।’
জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা সহকারী সেক্রেটারি এস এম রাশেদুল আলম সবুজ। তিনি বলেন, ‘ভোটাররা বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়। তাঁদের বিশ্বাস, জামায়াতে ইসলামীর দ্বারাই এর বাস্তবায়ন সম্ভব। নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্ত জনবান্ধব প্রশাসন, মাদক, বৈষম্য ও চাঁদাবাজমুক্ত সমাজ তৈরির জন্য কাজ করব। কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে কাজ করব ইনশা আল্লাহ।’ এনসিপির মনোনয়ন পেতে পারেন জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল ওহাব দেওয়ান কাজল। এবি পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী এস এম জাহিদ সরকার। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবাই গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

জয়পুরহাটের দুটি আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর দলটির তীব্র অন্তঃকোন্দল সামনে আসে। দুই আসনেই প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা। সভা-সমাবেশ থেকে শুরু করে সড়ক অবরোধ, রাস্তায় শুয়ে পড়া, টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ কিংবা মশাল মিছিল—কিছুই বাদ যায়নি। বিএনপির এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে সুযোগ হিসেবে দেখছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগেভাগেই মাঠে নেমে গণসংযোগ শুরু করেছেন। তৎপর এনসিপি ও এবি পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও।
জয়পুরহাট-১ (জেলা সদর ও পাঁচবিবি) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রধান। তবে এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সাল আলীম এবং কুসুম্বা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গফুর মণ্ডলের অনুসারীরা। তাঁরা বলছেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে প্রার্থী নির্ধারণ করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফয়সাল আলীম বলেন, ‘তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক আমার। অবহেলিত এ এলাকার উন্নয়ন এবং দলে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেওয়ার সবচেয়ে বেশি যোগ্যতা আমি রাখি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সব দিক বিশ্লেষণ করে দল আমাকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।’
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা আমির মো. ফজলুর রহমান সাঈদ। তিনি বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। অনিয়ম, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে তারা সোচ্চার। বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ভোটের মাঠে আমাদের জন্য ইতিবাচক।’ এনসিপির প্রার্থী হতে পারেন দলের জেলা শাখার আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া।
জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক সচিব আবদুল বারী। তাঁর প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা এবং সাবেক ছাত্রনেতা আব্বাস আলীর অনুসারীরা। আবদুল বারী বলেন, ‘সরকারি চাকরি করা সত্ত্বেও বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। প্রাথমিকভাবে দলের প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার আগে-পরে এলাকাবাসীর ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। নির্বাচিত হলে কৃষিভিত্তিক কারখানা গড়ে তুলব। কৃষিসংশ্লিষ্ট উপাদানের দাম সহনশীল রাখতে কাজ করব। এলাকা আলুপ্রধান। তাই আলুভিত্তিক চিপস ইন্ডাস্ট্রি করে তোলা হবে।’ প্রাথমিক মনোনয়নবঞ্চিত গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘যাঁকে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নাই। সাধারণ ভোটাররা তাঁকে অতিথি পাখি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি নেতা-কর্মীদের কোনো খোঁজ রাখেননি। এখন পর্যন্ত দলের প্রাথমিক সদস্যও নন। আমি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য। তৃণমূলের ৩ লাখ ৫১ হাজার নেতা-কর্মী ও ভোটাররা আমার সঙ্গে আছেন।’
জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা সহকারী সেক্রেটারি এস এম রাশেদুল আলম সবুজ। তিনি বলেন, ‘ভোটাররা বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়। তাঁদের বিশ্বাস, জামায়াতে ইসলামীর দ্বারাই এর বাস্তবায়ন সম্ভব। নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্ত জনবান্ধব প্রশাসন, মাদক, বৈষম্য ও চাঁদাবাজমুক্ত সমাজ তৈরির জন্য কাজ করব। কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে কাজ করব ইনশা আল্লাহ।’ এনসিপির মনোনয়ন পেতে পারেন জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল ওহাব দেওয়ান কাজল। এবি পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী এস এম জাহিদ সরকার। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবাই গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-পরবর্তী দুর্নীতিও কমানো যাবে না। কিন্তু অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যয় মনিটরিং কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিবিড় নজরদারি করতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) উভয়ের তরফে অবহেলা হচ্ছে।
৪৩ মিনিট আগে
ফেনী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব সমাধানের আশায় স্থাপিত জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রটি এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোটি টাকার এই প্রকল্পটি এখন পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।
৩ ঘণ্টা আগেরাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।
সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।
সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-পরবর্তী দুর্নীতিও কমানো যাবে না। কিন্তু অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যয় মনিটরিং কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিবিড় নজরদারি করতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) উভয়ের তরফে অবহেলা হচ্ছে।
৪৩ মিনিট আগে
ফেনী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব সমাধানের আশায় স্থাপিত জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রটি এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোটি টাকার এই প্রকল্পটি এখন পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
জয়পুরহাটের দুটি আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর দলটির তীব্র অন্তঃকোন্দল সামনে আসে। দুই আসনেই প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা।
১ ঘণ্টা আগে