Ajker Patrika

মানিকগঞ্জে তিন আসনে তিন জাহিদের পাল্লা ভারী

আব্দুর রাজ্জাক (ঘিওর) মানিকগঞ্জ 
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ৩৮
মানিকগঞ্জে তিন আসনে তিন জাহিদের পাল্লা ভারী

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মানিকগঞ্জ জেলায় তিনটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ২০ জন প্রার্থী। নির্বাচনী নানা বিষয় ছাপিয়ে একটি বিষয়ের মিল খুঁজে পাচ্ছেন তিনটি আসনের ভোটাররা। তা হলো—প্রতিটি আসনেই রয়েছেন একজন করে জাহিদ নামের প্রার্থী। তাঁরা ভোটের মাঠে রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে। এই তিন জাহিদই এবার নির্বাচনে চমক দেখাতে পারেন বলে ধারণা স্থানীয় ভোটারদের। 

এঁরা হলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ (প্রতীক ঈগল), মানিকগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু (প্রতীক ট্রাক) এবং মানিকগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক (নৌকা প্রতীক)। 

মানিকগঞ্জের তিনটি আসনের মধ্যে দুটি আসনে রয়েছেন নৌকার প্রার্থী আর মানিকগঞ্জ-১ আসনে নৌকার পরিবর্তে রয়েছেন শরিক জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী। রয়েছেন গণফোরাম, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, গণফ্রন্ট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী। বাকিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। 

আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটকে সামনে রেখে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটারদের কাছে টানতে দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি, করছেন বিগত সময়ের উন্নয়নের স্মৃতিচারণ। প্রার্থীদের অবস্থান-সামর্থ্য-জনপ্রিয়তার সঙ্গে অতীত-বর্তমান নানা ঘটনা-ইঙ্গিত নিয়ে ভোটাররাও কষছেন নানা হিসেব। 

মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলা) আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই মাঠে নৌকার প্রার্থী নেই। এই আসনে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও গণফ্রন্টসহ মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তবে একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ। ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল হক রুবেলের প্রতিপক্ষ তিনি। 

নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সালাম মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীই সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদের নির্বাচন করছেন। বিশেষ করে সাবেক দুই সংসদ সদস্য এ. এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং আনোয়ারুল হক তাঁকে সমর্থন দেওয়ার পর শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলার বেশির ভাগ নেতা-কর্মী জাহিদের পক্ষে ভোট চাইছেন। প্রকাশ্যে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। 

জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল হক রুবেল এই আসনের বাসিন্দা নন। এমনকি আগে তাঁর কোনো পদচারণও ছিল না এই অঞ্চলে। এ কারণে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী ও হাতে গোনা দু-একজন আওয়ামী লীগ নেতা ছাড়া তাঁর পাশে কেউ নেই। মাঠেও তাঁর নেই তেমন প্রচার-প্রচারণা। জহিরুল হক রুবেল তাঁর জন্মস্থান মানিকগঞ্জ-৩ (সদর) আসনেও প্রার্থী হয়েছেন। 

ভোটাররা জানান, মানিকগঞ্জ-১ আসনে মোট ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী একমাত্র জাহিদ। তাই তাঁর সঙ্গেই লড়াই হবে জাতীয় পার্টির। এ ক্ষেত্রে জাহিদই সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। 

ভোটের মাঠে চ্যালেঞ্জে পড়ার কথা স্বীকারও করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল হক রুবেল। তিনি জানান, আসনটি আমার জন্য নতুন হওয়ায় সেখানে কাজ না করায় কিছুটা কঠিন পরীক্ষায় (চ্যালেঞ্জ) পড়তে হবে। তবে যত কঠিনই হোক না কেন তা থেকে উত্তরণ হতে পারব। কারণ মাঠে দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণ আছেন। প্রশাসনও এবার নিরপেক্ষ থাকবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমরা আশাবাদী। 

মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর, হরিরামপুর ও সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন) আসনে মোট প্রার্থী ১০ জন। নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। তাঁর সঙ্গে স্বতন্ত্র হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট চার নেতা। এঁরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু, তাঁরই আপন চাচাতো ভাই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল, সিংগাইর উপজেলা পরিষদ থেকে সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্চাসেবক লীগ নেতা সাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল। এর মধ্যে কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদ টুলু আলোচনায় এগিয়ে। জাহিদ আহমেদ টুলুর সঙ্গে বেশির ভাগ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী থাকায় প্রচারণায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। স্থানীয়রা মনে করেন, নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা মমতাজ বেগম (নৌকা) এবং জাহিদ আহমেদ টুলুর (ট্টাক) সঙ্গেই হবে। 

মমতাজ বেগম জানান, দলের মধ্যে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনের মাঠ সরগরম। ভোটার উপস্থিতিও বাড়বে। এটাই চেয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তবে এ ক্ষেত্রে নৌকার কোনো সমস্যা হবে না। দিন শেষে মানুষ নৌকাকেই বিজয়ী করবেন। 

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে (সদর ও সাটুরিয়া উপজেলা) নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এই আসনে জাতীয় পার্টি, গণফোরাম, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থীসহ মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তবে মাঠে শক্ত প্রতিপক্ষ না থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহিদ মালেক। 

মানিকগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে মোট ২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। জেলায় মোট ভোটার ১২ লাখ ৬৩ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৮৩২ জন পুরুষ এবং ৬ লাখ ২৯ হাজার ৯৫১ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। হিজড়া ভোটার আছেন ৬ জন। তিনটি আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ৫১৬টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত