কামরুল হাসান

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কেনাকাটা তখনো জমেনি। নিচতলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগারে লোকজন কম। পাঠাগারের সিঁড়ি ও প্রবেশমুখে অচেনা হকার, টুপিবিক্রেতা, চশমার ফেরিওয়ালা।সবারই শিকারি চোখ। কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন। আশপাশের দোকানিদের উৎসুক দৃষ্টি। ফিসফাস শব্দ, ‘এরা কারা?’
২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির সকাল। অপেক্ষার জবাব মেলে একটু পরে। ক্লিন শেভ, রঙিন চশমা, সবুজ শার্ট পরা এক ব্যক্তি আসেন পাঠাগারের গেটে। হেঁটে চলে যান গেট অবধি। পেছন থেকে একজন চেনার চেষ্টা করেন, আরেকজন নাম ধরে ডাকেন। আগন্তুক কোনো কথা না বলে হাত বাড়ান। হাত মেলান একজন, কিন্তু তিনি থামেন না। সোজা চলে যান ওপরে পাঠাগারের ভেতরে। কী মনে করে আবার বেরিয়ে আসার জন্য পা বাড়ান।
পাঠাগারের প্রথম টেবিলে বসে ছদ্মবেশী দুজন ক্যাপ্টেন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কর্নেল। আর অপেক্ষা নয়। সঙ্গীদের দিকে ইশারা করেন কর্নেল। শিকার হাতছাড়া হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে একটি রিভলবার এসে ঠেকে যায় আগন্তুকের পিঠে। এতক্ষণে তাঁর আর বুঝতে বাকি থাকে না, ধরা পড়ে গেছেন। গোয়েন্দাগিরির খেলায় এভাবেই হেরে যান জেএমবির মজলিশে সুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ ক্লু–শায়খ আবদুর রহমান সিলেটে আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান।
বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকদের দুপাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল আমাকে ফোন করেন, সেই চেনা আওয়াজ–‘ওস্তাদ ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আমাকে আগাম ক্লু দিয়ে রাখেন।
রসিকতা করে ‘ওস্তাদ’ বলা সেই লোকটির নাম কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ, বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ। সেদিনও তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে। তবে বড় কোনো খবরের জন্য নয়, জীবন ও মৃত্যুর শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে, যখন বিডিআরের উন্মত্ত সৈনিকেরা নির্বিচারে গুলি করে কর্মকর্তাদের হত্যা করছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্যই খুব সোজাসাপ্টা। কথায় কোনো প্যাঁচগোজ নেই, যা বিশ্বাস করেন বলেন। আর বন্ধুর জন্য দিলখোলা, নিবেদিতপ্রাণ। সেই ভাবনা থেকেই গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, তাও ২৫-২৬ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক সফরে গিয়ে। তখন আমি জনকণ্ঠে।
লম্বা ছিপছিপে এক মেজর। হাঁটলে মনে হয় যেন দূরের কাশবন। বাতাসে নুয়ে পড়ছে, তারপর আবার টানটান হয়ে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। খুবই হাসিখুশি, কোনো কিছুতেই রাখঢাক নেই। অল্পতেই ভাব জমে গেল। তারপর নিয়মিত যোগাযোগ, ফোনেই বেশি।
২০০৪ সালের প্রথম দিকে একদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিচতলায় লিফটের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। পেছন থেকে সেই ডাক, `ওস্তাদ…।’ তাকিয়ে দেখি পোশাক পরা গুলজার উদ্দিন আহমেদ। বললেন, র্যাব নামে নতুন একটি বাহিনী হচ্ছে, তিনি সেখানে আসছেন। তত দিনে তিনি মেজর থেকে লে. কর্নেল হয়েছেন। র্যাবে এসে ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়ে গেল। র্যাব-৩-এর অধিনায়ক হলেন। গণমাধ্যমের কাছে দারুণ জনপ্রিয়।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিকেলের দিকে চলে যেতাম উত্তরায়, কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্প করতাম। তাঁর জীবনের গল্প, বেড়ে ওঠার গল্প। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া মানুষটি কীভাবে ১৯৮৩ সালে পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন পেলেন, তারপর বিএমএ, সেনা সদর হয়ে মিশনে গেলেন—সেই সব গল্প। আর বলতেন স্ত্রী ফাতেমা সুলতানা, দুই মেয়ে তাসনিয়া ও লামিয়ার কথা। গল্পের সময় একটি সিগারেটের আগুন দিয়ে আরেকটি সিগারেট ধরাতেন। রিং করে ছুড়ে ফেলা সেই ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ে যেত ফেলে আসা দিনের স্মৃতি।
২০০৫ সালে র্যাব একটি গোয়েন্দা বিভাগ গঠন করে। গুলজার উদ্দিন সেই বিভাগের প্রথম প্রধান। হাটখোলায় র্যাব-৩-এর কার্যালয় ছেড়ে এলেন বিমানবন্দর এলাকায় র্যাব সদর দপ্তরে। আমারও যাতায়াত বেড়ে গেল। ২০০৬ সালে একদিন শুনি তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন। র্যাবে আর থাকছেন না। চলে গেলেন বাংলাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর)। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে মন খারাপের কারণ উবে গেল, তিনি আবার ফিরে এলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক হয়ে।
সারা দেশে তখন জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি শুরু করেছে জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় ৭৩ জন নিহত আর প্রায় ৮০০ লোক আহত হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। শেষ পর্যন্ত দেশে-বিদেশের চাপের মুখে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামেন গুলজার উদ্দিন। জঙ্গি দমন অভিযানে তিনি যে সাহস দেখাতেন, তা ছিল শিউরে ওঠার মতো।
এর মধ্যে একদিন একটি মজার ঘটনা ঘটে। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তখন রিমান্ডে। দুপুরের দিকে র্যাব সদর দপ্তরে গিয়ে দেখি সবার মুখ-চোখ শুকনো। পুরো অফিস থমথমে। একেবারে অন্য রকম একটি পরিবেশ। কী হয়েছে, কেউ বলছে না। খুব ঘনিষ্ঠ একজনকে অনুরোধ করতেই যা বললেন, শুনে পিলে চমকে গেল। তিনি বললেন, শায়খ আবদুর রহমান রিমান্ডে থাকা অবস্থায় র্যাব হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। কীভাবে তিনি পালালেন? বললেন, ফজরের নামাজের জন্য সেলের তালা খুলে দেওয়া হয়। তখন অজু করার নাম করে পালিয়ে যান। মাথায় যেন বাজ পড়ল। এত বড় খবর কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না। গেলাম তৎকালীন মহাপরিচালক আবদুল আজিজ সরকারের কাছে। তিনি যেন ভূত দেখলেন। গেলাম গুলজার উদ্দিনের কাছে। তিনি নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার পাশের চেয়ারে বসলেন। দুই হাত ধরে খুব অনুরোধ করলেন খবরটা যেন প্রকাশ না হয়। অনুরোধে মানুষ ঢেঁকিও গেলে। ছোটবেলায় শোনা সেই প্রবাদ আমার জীবনেও সত্যি হলো। পেশাদার সংবাদকর্মীরা হয়তো এখন এসে উচিত-অনুচিত নিয়ে বিতর্ক করতে পারেন। কিন্তু বন্ধুত্বের কাছে আমাকে হার মানতে হলো। অবশ্য সেদিন বিকেলেই টঙ্গীর একটি স্থান থেকে আবদুর রহমান ধরা পড়েন।
সবকিছুতেই ভালো-মন্দ দিক থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাই হলো। তিনি আমাকে গভীরভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করলেন, একজন সংবাদকর্মীর জন্য যা খুবই জরুরি। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে গুলজার উদ্দিন কর্নেল পদে পদোন্নতি পেলেন। চলে গেলেন ২০০৯ সালের জানুয়ারির দিকে। সিলেট থেকে একদিন ফোন করে বেড়াতে আসতে বললেন। বললাম, বড় ঘটনা ঘটুক, নিশ্চয় যাব। শুনে হো হো করে হাসলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। নাশতা করা শেষ হয়নি, ফোন দিলেন প্রথম আলোর টেলিফোন অপারেটর সুফলা। পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের নম্বরে ফোন করে বলেছেন সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে।
পিলখানায় সেদিন বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। বিডিআরের কয়েকজন পরিচিত কর্মকর্তা ছিলেন, তাঁদের ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। গুলজার উদ্দিনের ফোন লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, সেখানে গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে। আশপাশের বাসিন্দারা বারবার ফোন করছেন। অফিসে ফোন দিয়ে সবাইকে ঘটনা জানাতে বললাম। নিজেও বের হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। হঠাৎ ফোন—গুলজার উদ্দিনের ফোন। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়—ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব, কাকে ফোন দেব বুঝে উঠতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির তখনকার কমিশনার নাঈদ আহমেদকে। তাঁর ফোন ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই তিনি বললেন ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হচ্ছেন। ফোন দিলাম আইজিপি নূর মোহাম্মদকে।তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, তাঁর সদ্য বিয়ে হওয়া মেয়ে ও জামাতা আটকা পড়েছে। মেয়ে বারবার ফোন করে কাঁদছে। আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর। এরপর থেকে গুলজার উদ্দিনকে আর ফোনে পাইনি। অপেক্ষায় থেকেছি, ফোন আর বাজেনি।
পরের ইতিহাস সবারই জানা। বিদ্রোহের দুই দিন পর পিলখানার গণকবর থেকে অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে গুলজার উদ্দিনের লাশ পাওয়া যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গুলজার উদ্দিনের বোন শম্পা আফরোজ আমাদের জানান, বিডিআর সদর দপ্তরের সামনে থেকে ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে। বনানীর সামরিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
পিলখানায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের দিন এলেই বনানীর সামরিক কবরস্থানে যাই, মনটা ভারী হয়ে আসে। কয়েক বছর আগে একবার দেখি ছোট মেয়েকে নিয়ে গুলজার উদ্দিনের স্ত্রী কবরস্থানে। সালাম দিতেই বললেন, ‘আপনাকেও তো তিনি ফোন করেছিলেন, কই বাঁচাতে পারলেন না!’ তাঁর দুই চোখে পানি। আমি তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি, কোনো জবাব দিতে পারি না।
আসলেই, আমাদের মতো সাধারণ সংবাদকর্মীর বেশির ভাগ সময় চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। নিজেকে বড় অসহায় লাগে।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কেনাকাটা তখনো জমেনি। নিচতলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগারে লোকজন কম। পাঠাগারের সিঁড়ি ও প্রবেশমুখে অচেনা হকার, টুপিবিক্রেতা, চশমার ফেরিওয়ালা।সবারই শিকারি চোখ। কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন। আশপাশের দোকানিদের উৎসুক দৃষ্টি। ফিসফাস শব্দ, ‘এরা কারা?’
২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির সকাল। অপেক্ষার জবাব মেলে একটু পরে। ক্লিন শেভ, রঙিন চশমা, সবুজ শার্ট পরা এক ব্যক্তি আসেন পাঠাগারের গেটে। হেঁটে চলে যান গেট অবধি। পেছন থেকে একজন চেনার চেষ্টা করেন, আরেকজন নাম ধরে ডাকেন। আগন্তুক কোনো কথা না বলে হাত বাড়ান। হাত মেলান একজন, কিন্তু তিনি থামেন না। সোজা চলে যান ওপরে পাঠাগারের ভেতরে। কী মনে করে আবার বেরিয়ে আসার জন্য পা বাড়ান।
পাঠাগারের প্রথম টেবিলে বসে ছদ্মবেশী দুজন ক্যাপ্টেন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কর্নেল। আর অপেক্ষা নয়। সঙ্গীদের দিকে ইশারা করেন কর্নেল। শিকার হাতছাড়া হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে একটি রিভলবার এসে ঠেকে যায় আগন্তুকের পিঠে। এতক্ষণে তাঁর আর বুঝতে বাকি থাকে না, ধরা পড়ে গেছেন। গোয়েন্দাগিরির খেলায় এভাবেই হেরে যান জেএমবির মজলিশে সুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ ক্লু–শায়খ আবদুর রহমান সিলেটে আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান।
বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকদের দুপাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল আমাকে ফোন করেন, সেই চেনা আওয়াজ–‘ওস্তাদ ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আমাকে আগাম ক্লু দিয়ে রাখেন।
রসিকতা করে ‘ওস্তাদ’ বলা সেই লোকটির নাম কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ, বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ। সেদিনও তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে। তবে বড় কোনো খবরের জন্য নয়, জীবন ও মৃত্যুর শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে, যখন বিডিআরের উন্মত্ত সৈনিকেরা নির্বিচারে গুলি করে কর্মকর্তাদের হত্যা করছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্যই খুব সোজাসাপ্টা। কথায় কোনো প্যাঁচগোজ নেই, যা বিশ্বাস করেন বলেন। আর বন্ধুর জন্য দিলখোলা, নিবেদিতপ্রাণ। সেই ভাবনা থেকেই গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, তাও ২৫-২৬ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক সফরে গিয়ে। তখন আমি জনকণ্ঠে।
লম্বা ছিপছিপে এক মেজর। হাঁটলে মনে হয় যেন দূরের কাশবন। বাতাসে নুয়ে পড়ছে, তারপর আবার টানটান হয়ে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। খুবই হাসিখুশি, কোনো কিছুতেই রাখঢাক নেই। অল্পতেই ভাব জমে গেল। তারপর নিয়মিত যোগাযোগ, ফোনেই বেশি।
২০০৪ সালের প্রথম দিকে একদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিচতলায় লিফটের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। পেছন থেকে সেই ডাক, `ওস্তাদ…।’ তাকিয়ে দেখি পোশাক পরা গুলজার উদ্দিন আহমেদ। বললেন, র্যাব নামে নতুন একটি বাহিনী হচ্ছে, তিনি সেখানে আসছেন। তত দিনে তিনি মেজর থেকে লে. কর্নেল হয়েছেন। র্যাবে এসে ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়ে গেল। র্যাব-৩-এর অধিনায়ক হলেন। গণমাধ্যমের কাছে দারুণ জনপ্রিয়।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিকেলের দিকে চলে যেতাম উত্তরায়, কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্প করতাম। তাঁর জীবনের গল্প, বেড়ে ওঠার গল্প। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া মানুষটি কীভাবে ১৯৮৩ সালে পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন পেলেন, তারপর বিএমএ, সেনা সদর হয়ে মিশনে গেলেন—সেই সব গল্প। আর বলতেন স্ত্রী ফাতেমা সুলতানা, দুই মেয়ে তাসনিয়া ও লামিয়ার কথা। গল্পের সময় একটি সিগারেটের আগুন দিয়ে আরেকটি সিগারেট ধরাতেন। রিং করে ছুড়ে ফেলা সেই ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ে যেত ফেলে আসা দিনের স্মৃতি।
২০০৫ সালে র্যাব একটি গোয়েন্দা বিভাগ গঠন করে। গুলজার উদ্দিন সেই বিভাগের প্রথম প্রধান। হাটখোলায় র্যাব-৩-এর কার্যালয় ছেড়ে এলেন বিমানবন্দর এলাকায় র্যাব সদর দপ্তরে। আমারও যাতায়াত বেড়ে গেল। ২০০৬ সালে একদিন শুনি তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন। র্যাবে আর থাকছেন না। চলে গেলেন বাংলাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর)। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে মন খারাপের কারণ উবে গেল, তিনি আবার ফিরে এলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক হয়ে।
সারা দেশে তখন জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি শুরু করেছে জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় ৭৩ জন নিহত আর প্রায় ৮০০ লোক আহত হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। শেষ পর্যন্ত দেশে-বিদেশের চাপের মুখে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামেন গুলজার উদ্দিন। জঙ্গি দমন অভিযানে তিনি যে সাহস দেখাতেন, তা ছিল শিউরে ওঠার মতো।
এর মধ্যে একদিন একটি মজার ঘটনা ঘটে। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তখন রিমান্ডে। দুপুরের দিকে র্যাব সদর দপ্তরে গিয়ে দেখি সবার মুখ-চোখ শুকনো। পুরো অফিস থমথমে। একেবারে অন্য রকম একটি পরিবেশ। কী হয়েছে, কেউ বলছে না। খুব ঘনিষ্ঠ একজনকে অনুরোধ করতেই যা বললেন, শুনে পিলে চমকে গেল। তিনি বললেন, শায়খ আবদুর রহমান রিমান্ডে থাকা অবস্থায় র্যাব হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। কীভাবে তিনি পালালেন? বললেন, ফজরের নামাজের জন্য সেলের তালা খুলে দেওয়া হয়। তখন অজু করার নাম করে পালিয়ে যান। মাথায় যেন বাজ পড়ল। এত বড় খবর কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না। গেলাম তৎকালীন মহাপরিচালক আবদুল আজিজ সরকারের কাছে। তিনি যেন ভূত দেখলেন। গেলাম গুলজার উদ্দিনের কাছে। তিনি নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার পাশের চেয়ারে বসলেন। দুই হাত ধরে খুব অনুরোধ করলেন খবরটা যেন প্রকাশ না হয়। অনুরোধে মানুষ ঢেঁকিও গেলে। ছোটবেলায় শোনা সেই প্রবাদ আমার জীবনেও সত্যি হলো। পেশাদার সংবাদকর্মীরা হয়তো এখন এসে উচিত-অনুচিত নিয়ে বিতর্ক করতে পারেন। কিন্তু বন্ধুত্বের কাছে আমাকে হার মানতে হলো। অবশ্য সেদিন বিকেলেই টঙ্গীর একটি স্থান থেকে আবদুর রহমান ধরা পড়েন।
সবকিছুতেই ভালো-মন্দ দিক থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাই হলো। তিনি আমাকে গভীরভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করলেন, একজন সংবাদকর্মীর জন্য যা খুবই জরুরি। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে গুলজার উদ্দিন কর্নেল পদে পদোন্নতি পেলেন। চলে গেলেন ২০০৯ সালের জানুয়ারির দিকে। সিলেট থেকে একদিন ফোন করে বেড়াতে আসতে বললেন। বললাম, বড় ঘটনা ঘটুক, নিশ্চয় যাব। শুনে হো হো করে হাসলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। নাশতা করা শেষ হয়নি, ফোন দিলেন প্রথম আলোর টেলিফোন অপারেটর সুফলা। পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের নম্বরে ফোন করে বলেছেন সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে।
পিলখানায় সেদিন বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। বিডিআরের কয়েকজন পরিচিত কর্মকর্তা ছিলেন, তাঁদের ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। গুলজার উদ্দিনের ফোন লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, সেখানে গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে। আশপাশের বাসিন্দারা বারবার ফোন করছেন। অফিসে ফোন দিয়ে সবাইকে ঘটনা জানাতে বললাম। নিজেও বের হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। হঠাৎ ফোন—গুলজার উদ্দিনের ফোন। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়—ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব, কাকে ফোন দেব বুঝে উঠতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির তখনকার কমিশনার নাঈদ আহমেদকে। তাঁর ফোন ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই তিনি বললেন ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হচ্ছেন। ফোন দিলাম আইজিপি নূর মোহাম্মদকে।তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, তাঁর সদ্য বিয়ে হওয়া মেয়ে ও জামাতা আটকা পড়েছে। মেয়ে বারবার ফোন করে কাঁদছে। আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর। এরপর থেকে গুলজার উদ্দিনকে আর ফোনে পাইনি। অপেক্ষায় থেকেছি, ফোন আর বাজেনি।
পরের ইতিহাস সবারই জানা। বিদ্রোহের দুই দিন পর পিলখানার গণকবর থেকে অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে গুলজার উদ্দিনের লাশ পাওয়া যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গুলজার উদ্দিনের বোন শম্পা আফরোজ আমাদের জানান, বিডিআর সদর দপ্তরের সামনে থেকে ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে। বনানীর সামরিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
পিলখানায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের দিন এলেই বনানীর সামরিক কবরস্থানে যাই, মনটা ভারী হয়ে আসে। কয়েক বছর আগে একবার দেখি ছোট মেয়েকে নিয়ে গুলজার উদ্দিনের স্ত্রী কবরস্থানে। সালাম দিতেই বললেন, ‘আপনাকেও তো তিনি ফোন করেছিলেন, কই বাঁচাতে পারলেন না!’ তাঁর দুই চোখে পানি। আমি তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি, কোনো জবাব দিতে পারি না।
আসলেই, আমাদের মতো সাধারণ সংবাদকর্মীর বেশির ভাগ সময় চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। নিজেকে বড় অসহায় লাগে।
কামরুল হাসান

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কেনাকাটা তখনো জমেনি। নিচতলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগারে লোকজন কম। পাঠাগারের সিঁড়ি ও প্রবেশমুখে অচেনা হকার, টুপিবিক্রেতা, চশমার ফেরিওয়ালা।সবারই শিকারি চোখ। কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন। আশপাশের দোকানিদের উৎসুক দৃষ্টি। ফিসফাস শব্দ, ‘এরা কারা?’
২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির সকাল। অপেক্ষার জবাব মেলে একটু পরে। ক্লিন শেভ, রঙিন চশমা, সবুজ শার্ট পরা এক ব্যক্তি আসেন পাঠাগারের গেটে। হেঁটে চলে যান গেট অবধি। পেছন থেকে একজন চেনার চেষ্টা করেন, আরেকজন নাম ধরে ডাকেন। আগন্তুক কোনো কথা না বলে হাত বাড়ান। হাত মেলান একজন, কিন্তু তিনি থামেন না। সোজা চলে যান ওপরে পাঠাগারের ভেতরে। কী মনে করে আবার বেরিয়ে আসার জন্য পা বাড়ান।
পাঠাগারের প্রথম টেবিলে বসে ছদ্মবেশী দুজন ক্যাপ্টেন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কর্নেল। আর অপেক্ষা নয়। সঙ্গীদের দিকে ইশারা করেন কর্নেল। শিকার হাতছাড়া হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে একটি রিভলবার এসে ঠেকে যায় আগন্তুকের পিঠে। এতক্ষণে তাঁর আর বুঝতে বাকি থাকে না, ধরা পড়ে গেছেন। গোয়েন্দাগিরির খেলায় এভাবেই হেরে যান জেএমবির মজলিশে সুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ ক্লু–শায়খ আবদুর রহমান সিলেটে আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান।
বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকদের দুপাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল আমাকে ফোন করেন, সেই চেনা আওয়াজ–‘ওস্তাদ ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আমাকে আগাম ক্লু দিয়ে রাখেন।
রসিকতা করে ‘ওস্তাদ’ বলা সেই লোকটির নাম কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ, বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ। সেদিনও তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে। তবে বড় কোনো খবরের জন্য নয়, জীবন ও মৃত্যুর শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে, যখন বিডিআরের উন্মত্ত সৈনিকেরা নির্বিচারে গুলি করে কর্মকর্তাদের হত্যা করছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্যই খুব সোজাসাপ্টা। কথায় কোনো প্যাঁচগোজ নেই, যা বিশ্বাস করেন বলেন। আর বন্ধুর জন্য দিলখোলা, নিবেদিতপ্রাণ। সেই ভাবনা থেকেই গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, তাও ২৫-২৬ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক সফরে গিয়ে। তখন আমি জনকণ্ঠে।
লম্বা ছিপছিপে এক মেজর। হাঁটলে মনে হয় যেন দূরের কাশবন। বাতাসে নুয়ে পড়ছে, তারপর আবার টানটান হয়ে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। খুবই হাসিখুশি, কোনো কিছুতেই রাখঢাক নেই। অল্পতেই ভাব জমে গেল। তারপর নিয়মিত যোগাযোগ, ফোনেই বেশি।
২০০৪ সালের প্রথম দিকে একদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিচতলায় লিফটের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। পেছন থেকে সেই ডাক, `ওস্তাদ…।’ তাকিয়ে দেখি পোশাক পরা গুলজার উদ্দিন আহমেদ। বললেন, র্যাব নামে নতুন একটি বাহিনী হচ্ছে, তিনি সেখানে আসছেন। তত দিনে তিনি মেজর থেকে লে. কর্নেল হয়েছেন। র্যাবে এসে ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়ে গেল। র্যাব-৩-এর অধিনায়ক হলেন। গণমাধ্যমের কাছে দারুণ জনপ্রিয়।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিকেলের দিকে চলে যেতাম উত্তরায়, কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্প করতাম। তাঁর জীবনের গল্প, বেড়ে ওঠার গল্প। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া মানুষটি কীভাবে ১৯৮৩ সালে পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন পেলেন, তারপর বিএমএ, সেনা সদর হয়ে মিশনে গেলেন—সেই সব গল্প। আর বলতেন স্ত্রী ফাতেমা সুলতানা, দুই মেয়ে তাসনিয়া ও লামিয়ার কথা। গল্পের সময় একটি সিগারেটের আগুন দিয়ে আরেকটি সিগারেট ধরাতেন। রিং করে ছুড়ে ফেলা সেই ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ে যেত ফেলে আসা দিনের স্মৃতি।
২০০৫ সালে র্যাব একটি গোয়েন্দা বিভাগ গঠন করে। গুলজার উদ্দিন সেই বিভাগের প্রথম প্রধান। হাটখোলায় র্যাব-৩-এর কার্যালয় ছেড়ে এলেন বিমানবন্দর এলাকায় র্যাব সদর দপ্তরে। আমারও যাতায়াত বেড়ে গেল। ২০০৬ সালে একদিন শুনি তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন। র্যাবে আর থাকছেন না। চলে গেলেন বাংলাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর)। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে মন খারাপের কারণ উবে গেল, তিনি আবার ফিরে এলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক হয়ে।
সারা দেশে তখন জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি শুরু করেছে জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় ৭৩ জন নিহত আর প্রায় ৮০০ লোক আহত হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। শেষ পর্যন্ত দেশে-বিদেশের চাপের মুখে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামেন গুলজার উদ্দিন। জঙ্গি দমন অভিযানে তিনি যে সাহস দেখাতেন, তা ছিল শিউরে ওঠার মতো।
এর মধ্যে একদিন একটি মজার ঘটনা ঘটে। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তখন রিমান্ডে। দুপুরের দিকে র্যাব সদর দপ্তরে গিয়ে দেখি সবার মুখ-চোখ শুকনো। পুরো অফিস থমথমে। একেবারে অন্য রকম একটি পরিবেশ। কী হয়েছে, কেউ বলছে না। খুব ঘনিষ্ঠ একজনকে অনুরোধ করতেই যা বললেন, শুনে পিলে চমকে গেল। তিনি বললেন, শায়খ আবদুর রহমান রিমান্ডে থাকা অবস্থায় র্যাব হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। কীভাবে তিনি পালালেন? বললেন, ফজরের নামাজের জন্য সেলের তালা খুলে দেওয়া হয়। তখন অজু করার নাম করে পালিয়ে যান। মাথায় যেন বাজ পড়ল। এত বড় খবর কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না। গেলাম তৎকালীন মহাপরিচালক আবদুল আজিজ সরকারের কাছে। তিনি যেন ভূত দেখলেন। গেলাম গুলজার উদ্দিনের কাছে। তিনি নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার পাশের চেয়ারে বসলেন। দুই হাত ধরে খুব অনুরোধ করলেন খবরটা যেন প্রকাশ না হয়। অনুরোধে মানুষ ঢেঁকিও গেলে। ছোটবেলায় শোনা সেই প্রবাদ আমার জীবনেও সত্যি হলো। পেশাদার সংবাদকর্মীরা হয়তো এখন এসে উচিত-অনুচিত নিয়ে বিতর্ক করতে পারেন। কিন্তু বন্ধুত্বের কাছে আমাকে হার মানতে হলো। অবশ্য সেদিন বিকেলেই টঙ্গীর একটি স্থান থেকে আবদুর রহমান ধরা পড়েন।
সবকিছুতেই ভালো-মন্দ দিক থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাই হলো। তিনি আমাকে গভীরভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করলেন, একজন সংবাদকর্মীর জন্য যা খুবই জরুরি। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে গুলজার উদ্দিন কর্নেল পদে পদোন্নতি পেলেন। চলে গেলেন ২০০৯ সালের জানুয়ারির দিকে। সিলেট থেকে একদিন ফোন করে বেড়াতে আসতে বললেন। বললাম, বড় ঘটনা ঘটুক, নিশ্চয় যাব। শুনে হো হো করে হাসলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। নাশতা করা শেষ হয়নি, ফোন দিলেন প্রথম আলোর টেলিফোন অপারেটর সুফলা। পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের নম্বরে ফোন করে বলেছেন সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে।
পিলখানায় সেদিন বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। বিডিআরের কয়েকজন পরিচিত কর্মকর্তা ছিলেন, তাঁদের ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। গুলজার উদ্দিনের ফোন লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, সেখানে গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে। আশপাশের বাসিন্দারা বারবার ফোন করছেন। অফিসে ফোন দিয়ে সবাইকে ঘটনা জানাতে বললাম। নিজেও বের হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। হঠাৎ ফোন—গুলজার উদ্দিনের ফোন। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়—ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব, কাকে ফোন দেব বুঝে উঠতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির তখনকার কমিশনার নাঈদ আহমেদকে। তাঁর ফোন ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই তিনি বললেন ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হচ্ছেন। ফোন দিলাম আইজিপি নূর মোহাম্মদকে।তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, তাঁর সদ্য বিয়ে হওয়া মেয়ে ও জামাতা আটকা পড়েছে। মেয়ে বারবার ফোন করে কাঁদছে। আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর। এরপর থেকে গুলজার উদ্দিনকে আর ফোনে পাইনি। অপেক্ষায় থেকেছি, ফোন আর বাজেনি।
পরের ইতিহাস সবারই জানা। বিদ্রোহের দুই দিন পর পিলখানার গণকবর থেকে অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে গুলজার উদ্দিনের লাশ পাওয়া যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গুলজার উদ্দিনের বোন শম্পা আফরোজ আমাদের জানান, বিডিআর সদর দপ্তরের সামনে থেকে ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে। বনানীর সামরিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
পিলখানায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের দিন এলেই বনানীর সামরিক কবরস্থানে যাই, মনটা ভারী হয়ে আসে। কয়েক বছর আগে একবার দেখি ছোট মেয়েকে নিয়ে গুলজার উদ্দিনের স্ত্রী কবরস্থানে। সালাম দিতেই বললেন, ‘আপনাকেও তো তিনি ফোন করেছিলেন, কই বাঁচাতে পারলেন না!’ তাঁর দুই চোখে পানি। আমি তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি, কোনো জবাব দিতে পারি না।
আসলেই, আমাদের মতো সাধারণ সংবাদকর্মীর বেশির ভাগ সময় চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। নিজেকে বড় অসহায় লাগে।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কেনাকাটা তখনো জমেনি। নিচতলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগারে লোকজন কম। পাঠাগারের সিঁড়ি ও প্রবেশমুখে অচেনা হকার, টুপিবিক্রেতা, চশমার ফেরিওয়ালা।সবারই শিকারি চোখ। কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন। আশপাশের দোকানিদের উৎসুক দৃষ্টি। ফিসফাস শব্দ, ‘এরা কারা?’
২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির সকাল। অপেক্ষার জবাব মেলে একটু পরে। ক্লিন শেভ, রঙিন চশমা, সবুজ শার্ট পরা এক ব্যক্তি আসেন পাঠাগারের গেটে। হেঁটে চলে যান গেট অবধি। পেছন থেকে একজন চেনার চেষ্টা করেন, আরেকজন নাম ধরে ডাকেন। আগন্তুক কোনো কথা না বলে হাত বাড়ান। হাত মেলান একজন, কিন্তু তিনি থামেন না। সোজা চলে যান ওপরে পাঠাগারের ভেতরে। কী মনে করে আবার বেরিয়ে আসার জন্য পা বাড়ান।
পাঠাগারের প্রথম টেবিলে বসে ছদ্মবেশী দুজন ক্যাপ্টেন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কর্নেল। আর অপেক্ষা নয়। সঙ্গীদের দিকে ইশারা করেন কর্নেল। শিকার হাতছাড়া হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে একটি রিভলবার এসে ঠেকে যায় আগন্তুকের পিঠে। এতক্ষণে তাঁর আর বুঝতে বাকি থাকে না, ধরা পড়ে গেছেন। গোয়েন্দাগিরির খেলায় এভাবেই হেরে যান জেএমবির মজলিশে সুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ ক্লু–শায়খ আবদুর রহমান সিলেটে আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান।
বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকদের দুপাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল আমাকে ফোন করেন, সেই চেনা আওয়াজ–‘ওস্তাদ ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আমাকে আগাম ক্লু দিয়ে রাখেন।
রসিকতা করে ‘ওস্তাদ’ বলা সেই লোকটির নাম কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ, বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ। সেদিনও তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে। তবে বড় কোনো খবরের জন্য নয়, জীবন ও মৃত্যুর শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে, যখন বিডিআরের উন্মত্ত সৈনিকেরা নির্বিচারে গুলি করে কর্মকর্তাদের হত্যা করছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্যই খুব সোজাসাপ্টা। কথায় কোনো প্যাঁচগোজ নেই, যা বিশ্বাস করেন বলেন। আর বন্ধুর জন্য দিলখোলা, নিবেদিতপ্রাণ। সেই ভাবনা থেকেই গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, তাও ২৫-২৬ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক সফরে গিয়ে। তখন আমি জনকণ্ঠে।
লম্বা ছিপছিপে এক মেজর। হাঁটলে মনে হয় যেন দূরের কাশবন। বাতাসে নুয়ে পড়ছে, তারপর আবার টানটান হয়ে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। খুবই হাসিখুশি, কোনো কিছুতেই রাখঢাক নেই। অল্পতেই ভাব জমে গেল। তারপর নিয়মিত যোগাযোগ, ফোনেই বেশি।
২০০৪ সালের প্রথম দিকে একদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিচতলায় লিফটের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। পেছন থেকে সেই ডাক, `ওস্তাদ…।’ তাকিয়ে দেখি পোশাক পরা গুলজার উদ্দিন আহমেদ। বললেন, র্যাব নামে নতুন একটি বাহিনী হচ্ছে, তিনি সেখানে আসছেন। তত দিনে তিনি মেজর থেকে লে. কর্নেল হয়েছেন। র্যাবে এসে ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়ে গেল। র্যাব-৩-এর অধিনায়ক হলেন। গণমাধ্যমের কাছে দারুণ জনপ্রিয়।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিকেলের দিকে চলে যেতাম উত্তরায়, কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্প করতাম। তাঁর জীবনের গল্প, বেড়ে ওঠার গল্প। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া মানুষটি কীভাবে ১৯৮৩ সালে পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন পেলেন, তারপর বিএমএ, সেনা সদর হয়ে মিশনে গেলেন—সেই সব গল্প। আর বলতেন স্ত্রী ফাতেমা সুলতানা, দুই মেয়ে তাসনিয়া ও লামিয়ার কথা। গল্পের সময় একটি সিগারেটের আগুন দিয়ে আরেকটি সিগারেট ধরাতেন। রিং করে ছুড়ে ফেলা সেই ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ে যেত ফেলে আসা দিনের স্মৃতি।
২০০৫ সালে র্যাব একটি গোয়েন্দা বিভাগ গঠন করে। গুলজার উদ্দিন সেই বিভাগের প্রথম প্রধান। হাটখোলায় র্যাব-৩-এর কার্যালয় ছেড়ে এলেন বিমানবন্দর এলাকায় র্যাব সদর দপ্তরে। আমারও যাতায়াত বেড়ে গেল। ২০০৬ সালে একদিন শুনি তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন। র্যাবে আর থাকছেন না। চলে গেলেন বাংলাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর)। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে মন খারাপের কারণ উবে গেল, তিনি আবার ফিরে এলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক হয়ে।
সারা দেশে তখন জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি শুরু করেছে জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় ৭৩ জন নিহত আর প্রায় ৮০০ লোক আহত হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। শেষ পর্যন্ত দেশে-বিদেশের চাপের মুখে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামেন গুলজার উদ্দিন। জঙ্গি দমন অভিযানে তিনি যে সাহস দেখাতেন, তা ছিল শিউরে ওঠার মতো।
এর মধ্যে একদিন একটি মজার ঘটনা ঘটে। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তখন রিমান্ডে। দুপুরের দিকে র্যাব সদর দপ্তরে গিয়ে দেখি সবার মুখ-চোখ শুকনো। পুরো অফিস থমথমে। একেবারে অন্য রকম একটি পরিবেশ। কী হয়েছে, কেউ বলছে না। খুব ঘনিষ্ঠ একজনকে অনুরোধ করতেই যা বললেন, শুনে পিলে চমকে গেল। তিনি বললেন, শায়খ আবদুর রহমান রিমান্ডে থাকা অবস্থায় র্যাব হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। কীভাবে তিনি পালালেন? বললেন, ফজরের নামাজের জন্য সেলের তালা খুলে দেওয়া হয়। তখন অজু করার নাম করে পালিয়ে যান। মাথায় যেন বাজ পড়ল। এত বড় খবর কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না। গেলাম তৎকালীন মহাপরিচালক আবদুল আজিজ সরকারের কাছে। তিনি যেন ভূত দেখলেন। গেলাম গুলজার উদ্দিনের কাছে। তিনি নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার পাশের চেয়ারে বসলেন। দুই হাত ধরে খুব অনুরোধ করলেন খবরটা যেন প্রকাশ না হয়। অনুরোধে মানুষ ঢেঁকিও গেলে। ছোটবেলায় শোনা সেই প্রবাদ আমার জীবনেও সত্যি হলো। পেশাদার সংবাদকর্মীরা হয়তো এখন এসে উচিত-অনুচিত নিয়ে বিতর্ক করতে পারেন। কিন্তু বন্ধুত্বের কাছে আমাকে হার মানতে হলো। অবশ্য সেদিন বিকেলেই টঙ্গীর একটি স্থান থেকে আবদুর রহমান ধরা পড়েন।
সবকিছুতেই ভালো-মন্দ দিক থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাই হলো। তিনি আমাকে গভীরভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করলেন, একজন সংবাদকর্মীর জন্য যা খুবই জরুরি। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে গুলজার উদ্দিন কর্নেল পদে পদোন্নতি পেলেন। চলে গেলেন ২০০৯ সালের জানুয়ারির দিকে। সিলেট থেকে একদিন ফোন করে বেড়াতে আসতে বললেন। বললাম, বড় ঘটনা ঘটুক, নিশ্চয় যাব। শুনে হো হো করে হাসলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। নাশতা করা শেষ হয়নি, ফোন দিলেন প্রথম আলোর টেলিফোন অপারেটর সুফলা। পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের নম্বরে ফোন করে বলেছেন সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে।
পিলখানায় সেদিন বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। বিডিআরের কয়েকজন পরিচিত কর্মকর্তা ছিলেন, তাঁদের ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। গুলজার উদ্দিনের ফোন লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, সেখানে গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে। আশপাশের বাসিন্দারা বারবার ফোন করছেন। অফিসে ফোন দিয়ে সবাইকে ঘটনা জানাতে বললাম। নিজেও বের হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। হঠাৎ ফোন—গুলজার উদ্দিনের ফোন। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়—ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব, কাকে ফোন দেব বুঝে উঠতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির তখনকার কমিশনার নাঈদ আহমেদকে। তাঁর ফোন ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই তিনি বললেন ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হচ্ছেন। ফোন দিলাম আইজিপি নূর মোহাম্মদকে।তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, তাঁর সদ্য বিয়ে হওয়া মেয়ে ও জামাতা আটকা পড়েছে। মেয়ে বারবার ফোন করে কাঁদছে। আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর। এরপর থেকে গুলজার উদ্দিনকে আর ফোনে পাইনি। অপেক্ষায় থেকেছি, ফোন আর বাজেনি।
পরের ইতিহাস সবারই জানা। বিদ্রোহের দুই দিন পর পিলখানার গণকবর থেকে অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে গুলজার উদ্দিনের লাশ পাওয়া যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গুলজার উদ্দিনের বোন শম্পা আফরোজ আমাদের জানান, বিডিআর সদর দপ্তরের সামনে থেকে ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে। বনানীর সামরিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
পিলখানায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের দিন এলেই বনানীর সামরিক কবরস্থানে যাই, মনটা ভারী হয়ে আসে। কয়েক বছর আগে একবার দেখি ছোট মেয়েকে নিয়ে গুলজার উদ্দিনের স্ত্রী কবরস্থানে। সালাম দিতেই বললেন, ‘আপনাকেও তো তিনি ফোন করেছিলেন, কই বাঁচাতে পারলেন না!’ তাঁর দুই চোখে পানি। আমি তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি, কোনো জবাব দিতে পারি না।
আসলেই, আমাদের মতো সাধারণ সংবাদকর্মীর বেশির ভাগ সময় চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। নিজেকে বড় অসহায় লাগে।

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৫ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কেনাকাটা তখনো জমেনি। নিচতলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগারে লোকজন কম। পাঠাগারের সিঁড়ি ও প্রবেশমুখে অচেনা হকার, টুপিবিক্রেতা, চশমার ফেরিওয়ালা।সবারই শিকারি চোখ। কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন। আশপাশের দোকানিদের উৎসুক দৃষ্টি। ফিসফাস শব্দ, ‘এরা কারা?’
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কেনাকাটা তখনো জমেনি। নিচতলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগারে লোকজন কম। পাঠাগারের সিঁড়ি ও প্রবেশমুখে অচেনা হকার, টুপিবিক্রেতা, চশমার ফেরিওয়ালা।সবারই শিকারি চোখ। কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন। আশপাশের দোকানিদের উৎসুক দৃষ্টি। ফিসফাস শব্দ, ‘এরা কারা?’
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কেনাকাটা তখনো জমেনি। নিচতলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগারে লোকজন কম। পাঠাগারের সিঁড়ি ও প্রবেশমুখে অচেনা হকার, টুপিবিক্রেতা, চশমার ফেরিওয়ালা।সবারই শিকারি চোখ। কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন। আশপাশের দোকানিদের উৎসুক দৃষ্টি। ফিসফাস শব্দ, ‘এরা কারা?’
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৫ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কেনাকাটা তখনো জমেনি। নিচতলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগারে লোকজন কম। পাঠাগারের সিঁড়ি ও প্রবেশমুখে অচেনা হকার, টুপিবিক্রেতা, চশমার ফেরিওয়ালা।সবারই শিকারি চোখ। কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন। আশপাশের দোকানিদের উৎসুক দৃষ্টি। ফিসফাস শব্দ, ‘এরা কারা?’
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৫ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১৮ দিন আগে